নদীর পানি দূষণমুক্ত রাখতে সুয়্যারেজ মাস্টারপ্লান

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ঢাকার চারপাশে নদীর পানি দূষণমুক্ত রাখতে ঢাকা ওয়াসা ইতোমধ্যে একটি সুয়্যারেজ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করেছে। এই প্ল্যানের আলোকে রাজধানীর চারপাশে চারটি সুয়্যারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, নির্মাণধীন ‘দাশেরকান্দি সুয়্যারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ নামের পয়ঃশোধনাগারের কাজ শেষ হলে, সরাসরি পয়ঃবর্র্জ্য নদীতে গিয়ে যে দূষণ হয় তা অনেকাংশে বন্ধ হবে। গত মঙ্গলবার একাদশ জাতীয় সংসদের ৬ষ্ঠ অধিবেশনের ৪র্থ কার্যদিবসে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য বেগম সালমা ইসলামের প্রশ্নর জবাবে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান। এর আগে বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়।

ঢাকাবাসীর ৭০ ভাগ পানি ভূ-পৃষ্ঠস্থ উৎস থেকে : সরকারি দলের সদস্য রতœা আহমেদের প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার ঢাকা শহরে ‘পরিবেশ-বান্ধব, টেকসই ও গণমুখী’ পানি সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২১ সালের (আগামী বছরের) মধ্যে রাজধানীর ভূ-গর্ভস্থ পানির উৎসের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে ভূ-পৃষ্ঠস্থ উৎসের ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বৃহৎ তিনটি পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ৭০ ভাগ ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানি আর ৩০ ভাগ ভূ-গর্ভস্থ পানি ঢাকাবাসীর মধ্যে সরবরাহ করা হবে।

ঝরনার পানি সংরক্ষণ : মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে পদ্মা পানি শোধনাগার প্রকল্প (ফেজ-১) এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া আরো দুটি পানি শোধনাগার প্রকল্প হলো- সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার প্রকল্প ( ফেজ-৩) ও গন্ধর্বপুর পানি শোধনাগার প্রকল্প। তিনি বলেন, গ্রামীণ এলাকায় ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ২০০টি নতুন পুকুর এবং ৯৫২টি পুকুর পুনঃখননের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পার্বত্য তিনটি জেলায় ঝরনার পানি সংরক্ষণপূর্বক ৫০টি গ্রাভিটি ফিল্ড সিস্টেম (জিএফএস) স্থাপনের সংস্থান রয়েছে। এরমধ্যে ৪০টি গ্রাভিটি ফিল্ড সিস্টেম (জিএফএস) স্থাপিত হয়েছে।

বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ : মন্ত্রী বলেন, রাঙ্গামাটি, বাগেরহাট ও ফরিদপুর জেলার ১৭টি উপজেলায় কমিউনিটি ভিত্তিতে ২০০টি ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার ইউনিট স্থাপন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মন্ত্রী জানান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফরের বাস্তবায়নাধীন ৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে ১২ হাজার ২৩৫টি রেইন ওয়াটার হারভেস্ট স্থাপন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এরমধ্যে ৭ হাজার ৯৩২টি রেইন ওয়াটার হারভেস্ট স্থাপিত হয়েছে। ৪শ’ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ‘উপকূলীয় জেলাসমূহে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে পানি সরবরাহ প্রকল্প’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাবিত রয়েছে। এই প্রকল্পে প্রায় ৭৬ হাজার রেইন ওয়াটার হারভেস্ট নির্মাণের সংস্থান রয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২০ , ২ মাঘ ১৪২৬, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

সংসদে তাজুল

নদীর পানি দূষণমুক্ত রাখতে সুয়্যারেজ মাস্টারপ্লান

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ঢাকার চারপাশে নদীর পানি দূষণমুক্ত রাখতে ঢাকা ওয়াসা ইতোমধ্যে একটি সুয়্যারেজ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করেছে। এই প্ল্যানের আলোকে রাজধানীর চারপাশে চারটি সুয়্যারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, নির্মাণধীন ‘দাশেরকান্দি সুয়্যারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ নামের পয়ঃশোধনাগারের কাজ শেষ হলে, সরাসরি পয়ঃবর্র্জ্য নদীতে গিয়ে যে দূষণ হয় তা অনেকাংশে বন্ধ হবে। গত মঙ্গলবার একাদশ জাতীয় সংসদের ৬ষ্ঠ অধিবেশনের ৪র্থ কার্যদিবসে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য বেগম সালমা ইসলামের প্রশ্নর জবাবে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান। এর আগে বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়।

ঢাকাবাসীর ৭০ ভাগ পানি ভূ-পৃষ্ঠস্থ উৎস থেকে : সরকারি দলের সদস্য রতœা আহমেদের প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার ঢাকা শহরে ‘পরিবেশ-বান্ধব, টেকসই ও গণমুখী’ পানি সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২১ সালের (আগামী বছরের) মধ্যে রাজধানীর ভূ-গর্ভস্থ পানির উৎসের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে ভূ-পৃষ্ঠস্থ উৎসের ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বৃহৎ তিনটি পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ৭০ ভাগ ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানি আর ৩০ ভাগ ভূ-গর্ভস্থ পানি ঢাকাবাসীর মধ্যে সরবরাহ করা হবে।

ঝরনার পানি সংরক্ষণ : মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে পদ্মা পানি শোধনাগার প্রকল্প (ফেজ-১) এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া আরো দুটি পানি শোধনাগার প্রকল্প হলো- সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার প্রকল্প ( ফেজ-৩) ও গন্ধর্বপুর পানি শোধনাগার প্রকল্প। তিনি বলেন, গ্রামীণ এলাকায় ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ২০০টি নতুন পুকুর এবং ৯৫২টি পুকুর পুনঃখননের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পার্বত্য তিনটি জেলায় ঝরনার পানি সংরক্ষণপূর্বক ৫০টি গ্রাভিটি ফিল্ড সিস্টেম (জিএফএস) স্থাপনের সংস্থান রয়েছে। এরমধ্যে ৪০টি গ্রাভিটি ফিল্ড সিস্টেম (জিএফএস) স্থাপিত হয়েছে।

বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ : মন্ত্রী বলেন, রাঙ্গামাটি, বাগেরহাট ও ফরিদপুর জেলার ১৭টি উপজেলায় কমিউনিটি ভিত্তিতে ২০০টি ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার ইউনিট স্থাপন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মন্ত্রী জানান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফরের বাস্তবায়নাধীন ৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে ১২ হাজার ২৩৫টি রেইন ওয়াটার হারভেস্ট স্থাপন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এরমধ্যে ৭ হাজার ৯৩২টি রেইন ওয়াটার হারভেস্ট স্থাপিত হয়েছে। ৪শ’ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ‘উপকূলীয় জেলাসমূহে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে পানি সরবরাহ প্রকল্প’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাবিত রয়েছে। এই প্রকল্পে প্রায় ৭৬ হাজার রেইন ওয়াটার হারভেস্ট নির্মাণের সংস্থান রয়েছে।