মৌলভীবাজারে তরুণী, দিনাজপুরে শিশু ও চরফ্যাশনে গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার

মৌলভীবাজারে এক কলেজছাত্রী ও তার বান্ধবীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ যুবককে গ্রেফতার করেছে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ৩ যুবক ও অভিযোগকারী ভিকটিম গতকাল বিকেলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।

পুলিশ জানায়, মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযানে নামে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃরা হলো মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের উত্তর জগন্নাথপুর গ্রামের ইসমাইল মিয়ার ছেলে মুন্না মিয়া, হাসিব উদ্দিনের ছেলে আকাশ মিয়া ও ছুরুক মিয়ার ছেলে হুমায়ুন মিয়া।

গতকাল বিকেলে গ্রেফতারকৃতদের মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় গ্রেফতারকৃত আসামিদের এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারা অনুসারে অভিযোগকারী (বাদী) ভিকটিমের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। আসামিদের জবানবন্দি শেষে তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামিদের জন্য কোন জামিনের আবেদন ছিল না মর্মে কোর্ট পুলিশ নিশ্চিত করেছে। ধর্ষণের শিকার দুজন মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীর রয়েছে।

মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমদ গত রাতে সংবাদকে জানিয়েছেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে ৩ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যেই অন্যদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।

মৌলভীবাজার থানা পুলিশ সুত্র জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বিকেলের দিকে কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে কোর্ট রোডের মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সামনে এসে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় কলেজছাত্রী (১৮) ও তার বান্ধবী (২০) ওঠেন। কিছুক্ষণ পর আরও চারজন তরুণ সিএনজি অটোরিকশায় ওঠে। ওই তরুণরা তাদের জিম্মি করে চালককে দিয়ে অটোরিকশা ঘুরিয়ে চালিয়ে নিয়ে যায়। তারা শহরের রঘুনন্দনপুরে স্টেডিয়াম এলাকায় গিয়ে অটোরিকশা থামায়। এরপর ওই তরুণরা স্টেডিয়ামের পেছনের বনের ঝোপে দুই তরুণীকে জোরপূর্বক নিয়ে ধর্ষণ করে। ঘটনার পর তরুণীরা সেখান থেকে বেরিয়ে এসে বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুলিশ তাদের আত্মীয়স্বজনকে খবর দিয়ে ঘটনার শিকার তরুণীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ধর্ষণের শিকার দু’জনের বাড়িই মৌলভীবাজার সদর উপজেলায়। এ বিষয়ে ধর্ষের শিকার কলেজছাত্রী বাদী হয়ে ৫ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করেন।

দিনাজপুরে

শিশু ধর্ষণ

যুবক আটক

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, দিনাজপুর

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ছয় বছর বয়সের এক শিশু কন্যা। ধর্ষণের শিকার ওই শিশুটি বর্তমানে এম. আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

পুলিশ ধর্ষক মুরসালিন (২১) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত মুরসালিন চিরিরবন্দর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের নুর হোসেনের ছেলে।

পুলিশ জানায়, চিরিরবন্দর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামে মঙ্গলবার দুপুরে শিশু কন্যাটি বাড়ির সমানে অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে খেলা করছিল। এ সময় মুরসালিন তাকে কৌশলে জনৈক আশরাফ আলীর নির্মাণাধীন বাড়ির ভেতরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। শিশুটির চিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে আসলে ধর্ষক মুরসালিন পালিয়ে যায়।

পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে চিরিরবন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যায় তাকে দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ওসি সুব্রত কুমার সরকার জানান, ঘটনার পর চিরিরবন্দর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মুরসালিনকে আটক করে। গতকাল তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শিশুর পিতা বাদী হয়ে চিরিরবন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ

প্রতিনিধি, চরফ্যাশন (ভোলা)

চরফ্যাসনে স্বামীকে খুঁজতে এসে দুই সন্তানের জননী গণধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গণধর্ষণের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ধর্ষিতা নারী বাদী হয়ে তিন ধর্ষককে আসামি করে চরফ্যাশন থানায় মামলা দায়ের করেছেন। রাতেই পুলিশ দুই ধর্ষককে গ্রেফতার করে গতকাল সকালে চরফ্যাশন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে। গ্রেফতারকৃত ধর্ষকরা হলেন, চরফ্যাশন পৌরসভা ৬নং ওয়ার্ডের কামাল উদ্দিন মিস্ত্রির ছেলে নয়ন (২৩) এবং একই ওয়ার্ডের আনছল হক মাঝির ছেলে মনির (২২)। অপর ধর্ষক একই ওয়ার্ডের রাসেল পলাতক। ধর্ষকরা তিনজনই রিকশাচালক। মঙ্গলবার সকাল ১১টার পর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে এই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও ভিক্টিম জানান, তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ার চর থানায়। তিনি ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার ইয়ার ফ্যাশন নামের গার্মেন্টসে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। একই গার্মেন্টসে কাজ করতেন স্বামী মিজান। তার সঙ্গে পরিচয় প্রেম-প্রণয় হয়ে ৪ বছর আগে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। তাদের ঘরে দুটি সন্তান রয়েছে। চার বছরের দাম্পত্য জীবন কাটালেও স্বামীর গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনে এর চেয়ে বেশি কিছু তার জানা নাই।

গত মাসে স্বামী মিজান তাকে কিছু না বলে ঢাকা থেকে তার গ্রামের বাড়ি চরফ্যাশনে চলে আসেন। বন্ধ করে দেন ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও। উদ্বিগ্ন স্ত্রী স্বামীকে খুঁজতে গত সোমবার বিকেলে ঢাকা থেকে চরফ্যাশনগামী লঞ্চে উঠে বেতুয়াঘাটে আসেন। মঙ্গলবার সকালে চরফ্যাশনের বেতুয়াঘাটে লঞ্চ থেকে নেমে পরিচয় হয় রিকশাচালক নয়নের সঙ্গে। রিকশাচালক নয়ন তার স্বামী মিজানকে খুঁজে দেবেন এমন আশ্বাসে তাকে চরফ্যাশন সদরে নিয়ে আসেন। চরফ্যাশন সদরে অপর রিকশাচালক মনিরের সহয়তায় তাকে পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির নির্জন বাগানে নিয়ে তিনজন মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। বিকেলে (মঙ্গলবার) গণধর্ষণে নির্যাতিত গৃহবধূ ধর্ষকদের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে ঢাকার উদ্দেশে বেতুয়ালঞ্চ ঘটে রওয়ানা দেন। খবর পেয়ে চরফ্যাশন থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ বাদী হয়ে তিন ধর্ষককে আসামি করে চরফ্যাশন থানায় গণধর্ষণের অভিযোগ একটি মামলা দায়ের করেন।

চরফ্যাশন থানার ওসি শামসুল আরেফিন জানান, গণধর্ষণের ঘটনায় নির্যাতিতা নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পলাতক অপর ধর্ষক রাসেলকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২০ , ২ মাঘ ১৪২৬, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

ধর্ষণ থামছে না

মৌলভীবাজারে তরুণী, দিনাজপুরে শিশু ও চরফ্যাশনে গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার

প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজারে এক কলেজছাত্রী ও তার বান্ধবীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ যুবককে গ্রেফতার করেছে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ৩ যুবক ও অভিযোগকারী ভিকটিম গতকাল বিকেলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।

পুলিশ জানায়, মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযানে নামে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃরা হলো মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের উত্তর জগন্নাথপুর গ্রামের ইসমাইল মিয়ার ছেলে মুন্না মিয়া, হাসিব উদ্দিনের ছেলে আকাশ মিয়া ও ছুরুক মিয়ার ছেলে হুমায়ুন মিয়া।

গতকাল বিকেলে গ্রেফতারকৃতদের মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় গ্রেফতারকৃত আসামিদের এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারা অনুসারে অভিযোগকারী (বাদী) ভিকটিমের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। আসামিদের জবানবন্দি শেষে তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামিদের জন্য কোন জামিনের আবেদন ছিল না মর্মে কোর্ট পুলিশ নিশ্চিত করেছে। ধর্ষণের শিকার দুজন মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীর রয়েছে।

মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমদ গত রাতে সংবাদকে জানিয়েছেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে ৩ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যেই অন্যদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।

মৌলভীবাজার থানা পুলিশ সুত্র জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বিকেলের দিকে কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে কোর্ট রোডের মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সামনে এসে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় কলেজছাত্রী (১৮) ও তার বান্ধবী (২০) ওঠেন। কিছুক্ষণ পর আরও চারজন তরুণ সিএনজি অটোরিকশায় ওঠে। ওই তরুণরা তাদের জিম্মি করে চালককে দিয়ে অটোরিকশা ঘুরিয়ে চালিয়ে নিয়ে যায়। তারা শহরের রঘুনন্দনপুরে স্টেডিয়াম এলাকায় গিয়ে অটোরিকশা থামায়। এরপর ওই তরুণরা স্টেডিয়ামের পেছনের বনের ঝোপে দুই তরুণীকে জোরপূর্বক নিয়ে ধর্ষণ করে। ঘটনার পর তরুণীরা সেখান থেকে বেরিয়ে এসে বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুলিশ তাদের আত্মীয়স্বজনকে খবর দিয়ে ঘটনার শিকার তরুণীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ধর্ষণের শিকার দু’জনের বাড়িই মৌলভীবাজার সদর উপজেলায়। এ বিষয়ে ধর্ষের শিকার কলেজছাত্রী বাদী হয়ে ৫ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করেন।

দিনাজপুরে

শিশু ধর্ষণ

যুবক আটক

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, দিনাজপুর

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ছয় বছর বয়সের এক শিশু কন্যা। ধর্ষণের শিকার ওই শিশুটি বর্তমানে এম. আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

পুলিশ ধর্ষক মুরসালিন (২১) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত মুরসালিন চিরিরবন্দর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের নুর হোসেনের ছেলে।

পুলিশ জানায়, চিরিরবন্দর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামে মঙ্গলবার দুপুরে শিশু কন্যাটি বাড়ির সমানে অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে খেলা করছিল। এ সময় মুরসালিন তাকে কৌশলে জনৈক আশরাফ আলীর নির্মাণাধীন বাড়ির ভেতরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। শিশুটির চিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে আসলে ধর্ষক মুরসালিন পালিয়ে যায়।

পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে চিরিরবন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যায় তাকে দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ওসি সুব্রত কুমার সরকার জানান, ঘটনার পর চিরিরবন্দর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মুরসালিনকে আটক করে। গতকাল তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শিশুর পিতা বাদী হয়ে চিরিরবন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ

প্রতিনিধি, চরফ্যাশন (ভোলা)

চরফ্যাসনে স্বামীকে খুঁজতে এসে দুই সন্তানের জননী গণধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গণধর্ষণের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ধর্ষিতা নারী বাদী হয়ে তিন ধর্ষককে আসামি করে চরফ্যাশন থানায় মামলা দায়ের করেছেন। রাতেই পুলিশ দুই ধর্ষককে গ্রেফতার করে গতকাল সকালে চরফ্যাশন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে। গ্রেফতারকৃত ধর্ষকরা হলেন, চরফ্যাশন পৌরসভা ৬নং ওয়ার্ডের কামাল উদ্দিন মিস্ত্রির ছেলে নয়ন (২৩) এবং একই ওয়ার্ডের আনছল হক মাঝির ছেলে মনির (২২)। অপর ধর্ষক একই ওয়ার্ডের রাসেল পলাতক। ধর্ষকরা তিনজনই রিকশাচালক। মঙ্গলবার সকাল ১১টার পর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে এই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও ভিক্টিম জানান, তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ার চর থানায়। তিনি ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার ইয়ার ফ্যাশন নামের গার্মেন্টসে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। একই গার্মেন্টসে কাজ করতেন স্বামী মিজান। তার সঙ্গে পরিচয় প্রেম-প্রণয় হয়ে ৪ বছর আগে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। তাদের ঘরে দুটি সন্তান রয়েছে। চার বছরের দাম্পত্য জীবন কাটালেও স্বামীর গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনে এর চেয়ে বেশি কিছু তার জানা নাই।

গত মাসে স্বামী মিজান তাকে কিছু না বলে ঢাকা থেকে তার গ্রামের বাড়ি চরফ্যাশনে চলে আসেন। বন্ধ করে দেন ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও। উদ্বিগ্ন স্ত্রী স্বামীকে খুঁজতে গত সোমবার বিকেলে ঢাকা থেকে চরফ্যাশনগামী লঞ্চে উঠে বেতুয়াঘাটে আসেন। মঙ্গলবার সকালে চরফ্যাশনের বেতুয়াঘাটে লঞ্চ থেকে নেমে পরিচয় হয় রিকশাচালক নয়নের সঙ্গে। রিকশাচালক নয়ন তার স্বামী মিজানকে খুঁজে দেবেন এমন আশ্বাসে তাকে চরফ্যাশন সদরে নিয়ে আসেন। চরফ্যাশন সদরে অপর রিকশাচালক মনিরের সহয়তায় তাকে পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির নির্জন বাগানে নিয়ে তিনজন মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। বিকেলে (মঙ্গলবার) গণধর্ষণে নির্যাতিত গৃহবধূ ধর্ষকদের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে ঢাকার উদ্দেশে বেতুয়ালঞ্চ ঘটে রওয়ানা দেন। খবর পেয়ে চরফ্যাশন থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ বাদী হয়ে তিন ধর্ষককে আসামি করে চরফ্যাশন থানায় গণধর্ষণের অভিযোগ একটি মামলা দায়ের করেন।

চরফ্যাশন থানার ওসি শামসুল আরেফিন জানান, গণধর্ষণের ঘটনায় নির্যাতিতা নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পলাতক অপর ধর্ষক রাসেলকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।