শীত উপেক্ষা করে বোরো চাষের ধুম

বাগেরহাটের চিতলমারীতে চলতি বোরো মোসুমে জমি রোপণের কাজ শুরু করেছেন চাষিরা। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে মোকাবিলা করে চাষাবাদের মাধ্যমে ঘুরিয়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন তারা। পৌষ ও মাঘের হাড় কাঁপানো শীত তাদের দমাতে পারেনি। কাকডাকা ভোরে জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার কৃষাণ-কৃষাণিরা।

স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর ধরে ধান চাষ করে তাদের লোকশান গুনতে হয়েছে। সবজি ও অন্যান্য ফসলের চাষ করেও খরচের টাকা ঘরে তুলতে পারেননি। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে পর পর কয়েক দফা ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চাষিরা বোরো আবাদের প্রতি আগ্রহ হারালেও রোপা মৌসুম শুরু হলে তরা আর স্থির হয়ে ঘরে বসে থাকতে পারেন না। যার কারণে অনেক চাষিই সব কষ্ট ভুলে পুনরায় জমি চাষে নেমে পড়ছেন।

খড়ম খালি গ্রামের অম্বরিশ মণ্ডল, অসীম বিশ্বাস, কংকন মজুমদার, শুকলাল হীরাসহ অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, চাষাবাদ করে কয়েক বছর ধরে লোকসান গুণতে হয়েছে। খরচের টাকাও ঘরে আসে না ফলে দেনার বোঝা ঘাড়ে নিয়ে নতুন করে আবারও চাষাবাদে নেমেছি। বাপ-দাদার কয়েক পুরুষ ধরে চাষ করে আসা জমি ফেলে রাখতে বড় কষ্ট হয় বিধায় লোকসান জেনেও ঘরে বসে থাকতি পারছি না। প্রতি বিঘা জমি চাষ করতে হাল, ধানের চারা, কিষাণ, সার-কীট নাশকের দাম মিলিয়ে ১৫-১৬ হাজার টাকা ব্যয় হয়। অপরদিকে সার, কীটনাশকের দাম সব সময়েই বাড়তি থাকে। মণ প্রতি ধানের দাম থাকে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। তাতে সব মিলিয়ে বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার ধান বিক্রি হয়। উপজেলা কৃষি অফিসার ঋতুরাজ সরকার জানান, এ উপজেলায় ২৫ হাজারের মত কৃষক এবং কৃষি পরিবার রয়েছে। এ বছর ১১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে দেশীয় ও উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষ হচ্ছে। ভালো ফলনোর জন্য চাষিদের বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। যদি ধানের দাম মণপ্রতি ১০০০-১১০০ টাকা হয় তাহলে কৃষক সত্যি লাভবান হবে।

বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২০ , ৮ মাঘ ১৪২৬, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

শীত উপেক্ষা করে বোরো চাষের ধুম

প্রতিনিধি, চিতলমারী (বাগেরহাট)

image

চিতলমারী (বাগেরহাট) : বোরো রোপণের ছবিটি গতকাল খড়মখালী গ্রাম থেকে তোলা -সংবাদ

বাগেরহাটের চিতলমারীতে চলতি বোরো মোসুমে জমি রোপণের কাজ শুরু করেছেন চাষিরা। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে মোকাবিলা করে চাষাবাদের মাধ্যমে ঘুরিয়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন তারা। পৌষ ও মাঘের হাড় কাঁপানো শীত তাদের দমাতে পারেনি। কাকডাকা ভোরে জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার কৃষাণ-কৃষাণিরা।

স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর ধরে ধান চাষ করে তাদের লোকশান গুনতে হয়েছে। সবজি ও অন্যান্য ফসলের চাষ করেও খরচের টাকা ঘরে তুলতে পারেননি। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে পর পর কয়েক দফা ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চাষিরা বোরো আবাদের প্রতি আগ্রহ হারালেও রোপা মৌসুম শুরু হলে তরা আর স্থির হয়ে ঘরে বসে থাকতে পারেন না। যার কারণে অনেক চাষিই সব কষ্ট ভুলে পুনরায় জমি চাষে নেমে পড়ছেন।

খড়ম খালি গ্রামের অম্বরিশ মণ্ডল, অসীম বিশ্বাস, কংকন মজুমদার, শুকলাল হীরাসহ অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, চাষাবাদ করে কয়েক বছর ধরে লোকসান গুণতে হয়েছে। খরচের টাকাও ঘরে আসে না ফলে দেনার বোঝা ঘাড়ে নিয়ে নতুন করে আবারও চাষাবাদে নেমেছি। বাপ-দাদার কয়েক পুরুষ ধরে চাষ করে আসা জমি ফেলে রাখতে বড় কষ্ট হয় বিধায় লোকসান জেনেও ঘরে বসে থাকতি পারছি না। প্রতি বিঘা জমি চাষ করতে হাল, ধানের চারা, কিষাণ, সার-কীট নাশকের দাম মিলিয়ে ১৫-১৬ হাজার টাকা ব্যয় হয়। অপরদিকে সার, কীটনাশকের দাম সব সময়েই বাড়তি থাকে। মণ প্রতি ধানের দাম থাকে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। তাতে সব মিলিয়ে বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার ধান বিক্রি হয়। উপজেলা কৃষি অফিসার ঋতুরাজ সরকার জানান, এ উপজেলায় ২৫ হাজারের মত কৃষক এবং কৃষি পরিবার রয়েছে। এ বছর ১১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে দেশীয় ও উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষ হচ্ছে। ভালো ফলনোর জন্য চাষিদের বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। যদি ধানের দাম মণপ্রতি ১০০০-১১০০ টাকা হয় তাহলে কৃষক সত্যি লাভবান হবে।