এই পুলিশ দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কাজ হবে কীভাবে

পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় করা এক মামলার বাদী ও সাক্ষীদের মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার একটি জাতীয় দৈনিক বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, রাজধানীর উত্তরার বাসিন্দা আলমগীর হোসেন গত মাসে পুলিশি হেফাজতে মারা যান। নিহতের স্ত্রী আলো বেগম অভিযোগ করেছেন যে, পুলিশি নির্যাতনে তার স্বামী মারা গেছেন। এ অভিযোগে তিনি মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি মামলাও করেছেন। এরপর থেকে তাকে ও মামলার সাক্ষীদের মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত বুধবার জাতীয় সংসদে বলেছেন, তার সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিতকরণের কার্যক্রম গ্রহণের কথাও তিনি বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কান পর্যন্ত পৌঁছায় কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ যাদের ওপর জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব সেই পুলিশেরই একশ্রেণির সদস্য জনগণের জানমাল হরণ করছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। উত্তরার উল্লিখিত ব্যবসায়ী পুলিশি হেফাজতে মারা গেছেন। তার স্বজনরা এর বিচার চাইতে গিয়ে একই পরিণতি বরণ করার হুমকি পাচ্ছেন। আমরা জানতে চাই, কে বা কারা আলো বেগমকেও থানা হাজতে নিয়ে তার স্বামীর মতো নির্যাতন করে মেরে ফেলতে চাচ্ছে।

মাত্র কয়েক দিন আগে পুলিশ হেফাজতে এফডিসির এক কর্মী মারা গেছেন বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। নিরীহ নাগরিকদের পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে এখনো একশ্রেণির পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার বাণিজ্য করে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে কীভাবে সেটা একটা প্রশ্ন। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, সরকার আন্তরিকভাবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। প্রশ্ন হচ্ছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কাজে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুত কিনা। বিচারবহির্ভূত হত্যা, হেফাজতে মৃত্যু, গ্রেপ্তার বাণিজ্য প্রভৃতি বন্ধ করা না হলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে না। পুলিশের একশ্রেণির সদস্যের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সুরাহাও করতে হবে। পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর উল্লিখিত ঘটনার দ্রুত বিচার করতে হবে। মামলার বাদী ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের কে বা কারা হুমকি দিচ্ছে- সেটা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২০ , ১১ মাঘ ১৪২৬, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

এই পুলিশ দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কাজ হবে কীভাবে

পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় করা এক মামলার বাদী ও সাক্ষীদের মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার একটি জাতীয় দৈনিক বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, রাজধানীর উত্তরার বাসিন্দা আলমগীর হোসেন গত মাসে পুলিশি হেফাজতে মারা যান। নিহতের স্ত্রী আলো বেগম অভিযোগ করেছেন যে, পুলিশি নির্যাতনে তার স্বামী মারা গেছেন। এ অভিযোগে তিনি মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি মামলাও করেছেন। এরপর থেকে তাকে ও মামলার সাক্ষীদের মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত বুধবার জাতীয় সংসদে বলেছেন, তার সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিতকরণের কার্যক্রম গ্রহণের কথাও তিনি বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কান পর্যন্ত পৌঁছায় কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ যাদের ওপর জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব সেই পুলিশেরই একশ্রেণির সদস্য জনগণের জানমাল হরণ করছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। উত্তরার উল্লিখিত ব্যবসায়ী পুলিশি হেফাজতে মারা গেছেন। তার স্বজনরা এর বিচার চাইতে গিয়ে একই পরিণতি বরণ করার হুমকি পাচ্ছেন। আমরা জানতে চাই, কে বা কারা আলো বেগমকেও থানা হাজতে নিয়ে তার স্বামীর মতো নির্যাতন করে মেরে ফেলতে চাচ্ছে।

মাত্র কয়েক দিন আগে পুলিশ হেফাজতে এফডিসির এক কর্মী মারা গেছেন বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। নিরীহ নাগরিকদের পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে এখনো একশ্রেণির পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার বাণিজ্য করে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে কীভাবে সেটা একটা প্রশ্ন। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, সরকার আন্তরিকভাবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। প্রশ্ন হচ্ছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কাজে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুত কিনা। বিচারবহির্ভূত হত্যা, হেফাজতে মৃত্যু, গ্রেপ্তার বাণিজ্য প্রভৃতি বন্ধ করা না হলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে না। পুলিশের একশ্রেণির সদস্যের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সুরাহাও করতে হবে। পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর উল্লিখিত ঘটনার দ্রুত বিচার করতে হবে। মামলার বাদী ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের কে বা কারা হুমকি দিচ্ছে- সেটা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।