দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে ৩২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব উদ্ধার করুন

মামলার জালে ৩২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আটকা পড়ে আছে বলে জানা গেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা রাজস্ব আদায় বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিলেও অনেক ক্ষেত্রে তা থমকে যাচ্ছে দীর্ঘ মামলার জালে। উচ্চ আদালত ও রাজস্ব সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালে ঝুলে আছে ২২ হাজারের বেশি মামলা। আইনজ্ঞরা বিশেষ ব্যবস্থায় বিষয়টি নিষ্পত্তির তাগিদ দিয়েছেন। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

জানা গেছে, এনবিআরের অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের দুটি আদালতে এক মাসে সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে সাতটি মামলার শুনানি সম্ভব হয়। আবার কোন কোন মাসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, সাক্ষীর অনুপস্থিতিসহ বিভিন্ন কারণে আরো কমসংখ্যক মামলার শুনানি হয়। বিপরীতে প্রতি মাসে গড়ে ১০০ থেকে ১৫০টি নতুন মামলা যুক্ত হয়। এভাবে নিষ্পত্তি হওয়া মামলার চেয়ে অনিষ্পন্ন মামলার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বিচারপতি মানিক বলেছেন, প্রয়োজনে হাইকোর্টে এ সংক্রান্ত বেঞ্চ আরো বাড়াতে হবে।

বেঞ্চ বাড়ানোর প্রয়োজন যে রয়েছে, সেটা আমরাও স্বীকার করি। কিন্তু বেঞ্চ বাড়ালেই যে সমস্যার সমাধান হবে তা কোনভাবেই বলা যায় না। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং সাক্ষীর অনুপস্থিতি থাকলে বেঞ্চ বাড়িয়ে যে কোন ফল পাওয়া যাবে না, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। উচিত ছিল হাইকোর্টে বেঞ্চ বাড়িয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করে সাক্ষীর উপস্থিতি নিশ্চিত করা। সেটা করা হয়নি বলেই ২২ হাজারের বেশি মামলার জালে ৩২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আটকে আছে।

এভাবেই সরকার প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশের উন্নয়নেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। রাজস্ব সংক্রান্ত মামলা বেশিদিন ঝুলে থাকার অর্থ হলো, সরকারের কোষাগারের ওপর ধারাবাহিক চাপ সৃষ্টি হওয়া; যার খেসারত দিতে হয় জনগণকেই।

আমরা চাই, হাইকোর্টে বেঞ্চ বাড়ানো হোক। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং সাক্ষীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এসব মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের সঙ্গে এনবিআরকে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষ আদালত করে সরকারি আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে দ্রুত মামলাগুলোর নিষ্পত্তি করতে হবে।

শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২০ , ১১ মাঘ ১৪২৬, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে ৩২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব উদ্ধার করুন

মামলার জালে ৩২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আটকা পড়ে আছে বলে জানা গেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা রাজস্ব আদায় বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিলেও অনেক ক্ষেত্রে তা থমকে যাচ্ছে দীর্ঘ মামলার জালে। উচ্চ আদালত ও রাজস্ব সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালে ঝুলে আছে ২২ হাজারের বেশি মামলা। আইনজ্ঞরা বিশেষ ব্যবস্থায় বিষয়টি নিষ্পত্তির তাগিদ দিয়েছেন। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

জানা গেছে, এনবিআরের অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের দুটি আদালতে এক মাসে সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে সাতটি মামলার শুনানি সম্ভব হয়। আবার কোন কোন মাসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, সাক্ষীর অনুপস্থিতিসহ বিভিন্ন কারণে আরো কমসংখ্যক মামলার শুনানি হয়। বিপরীতে প্রতি মাসে গড়ে ১০০ থেকে ১৫০টি নতুন মামলা যুক্ত হয়। এভাবে নিষ্পত্তি হওয়া মামলার চেয়ে অনিষ্পন্ন মামলার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বিচারপতি মানিক বলেছেন, প্রয়োজনে হাইকোর্টে এ সংক্রান্ত বেঞ্চ আরো বাড়াতে হবে।

বেঞ্চ বাড়ানোর প্রয়োজন যে রয়েছে, সেটা আমরাও স্বীকার করি। কিন্তু বেঞ্চ বাড়ালেই যে সমস্যার সমাধান হবে তা কোনভাবেই বলা যায় না। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং সাক্ষীর অনুপস্থিতি থাকলে বেঞ্চ বাড়িয়ে যে কোন ফল পাওয়া যাবে না, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। উচিত ছিল হাইকোর্টে বেঞ্চ বাড়িয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করে সাক্ষীর উপস্থিতি নিশ্চিত করা। সেটা করা হয়নি বলেই ২২ হাজারের বেশি মামলার জালে ৩২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আটকে আছে।

এভাবেই সরকার প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশের উন্নয়নেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। রাজস্ব সংক্রান্ত মামলা বেশিদিন ঝুলে থাকার অর্থ হলো, সরকারের কোষাগারের ওপর ধারাবাহিক চাপ সৃষ্টি হওয়া; যার খেসারত দিতে হয় জনগণকেই।

আমরা চাই, হাইকোর্টে বেঞ্চ বাড়ানো হোক। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং সাক্ষীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এসব মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের সঙ্গে এনবিআরকে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষ আদালত করে সরকারি আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে দ্রুত মামলাগুলোর নিষ্পত্তি করতে হবে।