জেল-জরিমানা
ক্যাবল সংযোগহীন টিভি দেখার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ডিরেক্ট টু হোমের (ডিটিএইচ) অবৈধ ব্যবহার এবং সরকারনিষিদ্ধ চ্যানেল প্রদর্শন করায় রাজধানীতে একটি ক্যাবল অপারেটরকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় প্রতিষ্ঠানের মালিক মাহমুদুল মামুন (৫২), এএইচএম আশরাফ (৫০) ও কর্মচারী ফরিদুল ইসলামকে (৩০) ২ মাস করে কারাদ- প্রদান করা হয়। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধভাবে নিষিদ্ধঘোষিত বিভিন্ন চ্যানেল পরিচালনা, পাইরেসি এবং মানিলন্ডারিং করে আসছিল।
গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর মিরপুরে ক্যাবল অপারেটর মিরপুর ডিজিটালের স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রতিষ্ঠানটি আমদানি নিষিদ্ধ ভারতীয় টাটা স্কাইয়ের মাধ্যমে প্রায় দেড় লাখ গ্রাহককে টিভি সংযোগ দেয়। এগুলোতে সরকার নিষিদ্ধ পিস টিভি, পোগো, হাঙ্গামাসহ বিভিন্ন চ্যানেল প্রদর্শন করে আসছিল।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম জানান, নিষিদ্ধ ডিটিএইচ ব্যবসা পরিচালনা এবং নিষিদ্ধ চ্যানেল প্রদর্শন করার দায়ে মিরপুর ডিজিটালের প্রতিষ্ঠানটির তিন মালিককে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মাহমুদুল মামুন (৫২), এএইচএম আশরাফ (৫০), ও কর্মচারী ফরিদুল ইসলামকে (৩০) ২ মাস করে কারাদ- প্রদান করা হয়।
ম্যাজিস্ট্রেট আরও জানান, টাটা স্কাইসহ আমদানিনিষিদ্ধ ভারতীয় ডিটিএইচ ডিভাইস ব্যবহার করে অসাধু ব্যবসায়ীরা নিষিদ্ধ চ্যানেল প্রদর্শন করছে। এর মাধ্যমে তারা একদিকে সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘন করছে। অন্যদিকে বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। নিষিদ্ধ চ্যানেল প্রদর্শন এবং অবৈধ বিদেশি ডিটিএইচ ব্যবসায় জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে আরও অভিযান পরিচালিত হবে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, দেশে বিদেশি কোম্পানির ডিটিএইচ বিক্রি নিষিদ্ধ। কিন্তু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অবৈধ ডিটিএইচ বিক্রি করছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। সারাদেশে বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ অবৈধ সংযোগ রয়েছে। আমদানিনিষিদ্ধ এ ডিটিএইচের কারণে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। দেশের বাইরে পাচার হচ্ছে বছরে অন্তত ৮০০ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, ভারত থেকে চোরাই পথে আসা টাটা স্কাই, ডিশ টিভি, সান ডিরেক্ট এবং এয়ারটেল ডিজিটালের মতো প্রায় ১২টি কোম্পানি-ব্রান্ডের ডিটিএচ সংযোগ অবৈধভাবে বিক্রি হচ্ছে। বাংলাদেশ-ভারতের স্থলবন্দরগুলো দিয়ে এগুলো অবৈধভাবে বাংলাদেশে পাচার করা হয়। দুই দেশের অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের এজেন্টরা মিলে এ অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছে। ভারতীয় এজেন্টরা বেশিভাগ ক্ষেত্রে কুমিল্লা ও যশোর সীমান্ত দিয়ে এগুলো বাংলাদেশে পাঠায়। বাংলাদেশি এজেন্টরা জেলায় জেলায় সেগুলো ছড়িয়ে দেন। বছরে একবার কিংবা দুইবার তারা খুচরা গ্রাহকদের কাছ থেকে আগাম বিল সংগ্রহ করেন।
তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ডিটিএইচ সংযোগে স্যাটেলাইট টিভির ছবি ও শব্দ বেশ উন্নতমানের হয়। গ্রাহকদের এ চাহিদার সুযোগে ভারতীয় ডিটিএইচগুলো বাংলাদেশে পাচার হয়ে আসে। কিন্তু সরকার বাংলাদেশি দুটি কোম্পানিকে ডিটিএইচ সেবা দেয়ার লাইসেন্স দিয়েছে। গতবছর থেকে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট থেকে ডিটিএইচ সেবা প্রদান শুরু করেছে দেশীয় ব্রান্ড আকাশ ডিটিএইচ। এ প্রেক্ষাপটে অবৈধ ডিটিএইচ বিক্রি ও বন্ধে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে দেশ থেকে টাকা পাচারও রোধ করা যাবে। দেশীয় টেলিভিশনগুলোও সুস্থ প্রতিযোগিতার পাশাপাশি সম্প্রচার মান উন্নত করার সুযোগ পাবে।
রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২০ , ১২ মাঘ ১৪২৬, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১
জেল-জরিমানা
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
ক্যাবল সংযোগহীন টিভি দেখার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ডিরেক্ট টু হোমের (ডিটিএইচ) অবৈধ ব্যবহার এবং সরকারনিষিদ্ধ চ্যানেল প্রদর্শন করায় রাজধানীতে একটি ক্যাবল অপারেটরকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় প্রতিষ্ঠানের মালিক মাহমুদুল মামুন (৫২), এএইচএম আশরাফ (৫০) ও কর্মচারী ফরিদুল ইসলামকে (৩০) ২ মাস করে কারাদ- প্রদান করা হয়। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধভাবে নিষিদ্ধঘোষিত বিভিন্ন চ্যানেল পরিচালনা, পাইরেসি এবং মানিলন্ডারিং করে আসছিল।
গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর মিরপুরে ক্যাবল অপারেটর মিরপুর ডিজিটালের স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রতিষ্ঠানটি আমদানি নিষিদ্ধ ভারতীয় টাটা স্কাইয়ের মাধ্যমে প্রায় দেড় লাখ গ্রাহককে টিভি সংযোগ দেয়। এগুলোতে সরকার নিষিদ্ধ পিস টিভি, পোগো, হাঙ্গামাসহ বিভিন্ন চ্যানেল প্রদর্শন করে আসছিল।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম জানান, নিষিদ্ধ ডিটিএইচ ব্যবসা পরিচালনা এবং নিষিদ্ধ চ্যানেল প্রদর্শন করার দায়ে মিরপুর ডিজিটালের প্রতিষ্ঠানটির তিন মালিককে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মাহমুদুল মামুন (৫২), এএইচএম আশরাফ (৫০), ও কর্মচারী ফরিদুল ইসলামকে (৩০) ২ মাস করে কারাদ- প্রদান করা হয়।
ম্যাজিস্ট্রেট আরও জানান, টাটা স্কাইসহ আমদানিনিষিদ্ধ ভারতীয় ডিটিএইচ ডিভাইস ব্যবহার করে অসাধু ব্যবসায়ীরা নিষিদ্ধ চ্যানেল প্রদর্শন করছে। এর মাধ্যমে তারা একদিকে সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘন করছে। অন্যদিকে বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। নিষিদ্ধ চ্যানেল প্রদর্শন এবং অবৈধ বিদেশি ডিটিএইচ ব্যবসায় জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে আরও অভিযান পরিচালিত হবে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, দেশে বিদেশি কোম্পানির ডিটিএইচ বিক্রি নিষিদ্ধ। কিন্তু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অবৈধ ডিটিএইচ বিক্রি করছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। সারাদেশে বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ অবৈধ সংযোগ রয়েছে। আমদানিনিষিদ্ধ এ ডিটিএইচের কারণে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। দেশের বাইরে পাচার হচ্ছে বছরে অন্তত ৮০০ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, ভারত থেকে চোরাই পথে আসা টাটা স্কাই, ডিশ টিভি, সান ডিরেক্ট এবং এয়ারটেল ডিজিটালের মতো প্রায় ১২টি কোম্পানি-ব্রান্ডের ডিটিএচ সংযোগ অবৈধভাবে বিক্রি হচ্ছে। বাংলাদেশ-ভারতের স্থলবন্দরগুলো দিয়ে এগুলো অবৈধভাবে বাংলাদেশে পাচার করা হয়। দুই দেশের অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের এজেন্টরা মিলে এ অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছে। ভারতীয় এজেন্টরা বেশিভাগ ক্ষেত্রে কুমিল্লা ও যশোর সীমান্ত দিয়ে এগুলো বাংলাদেশে পাঠায়। বাংলাদেশি এজেন্টরা জেলায় জেলায় সেগুলো ছড়িয়ে দেন। বছরে একবার কিংবা দুইবার তারা খুচরা গ্রাহকদের কাছ থেকে আগাম বিল সংগ্রহ করেন।
তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ডিটিএইচ সংযোগে স্যাটেলাইট টিভির ছবি ও শব্দ বেশ উন্নতমানের হয়। গ্রাহকদের এ চাহিদার সুযোগে ভারতীয় ডিটিএইচগুলো বাংলাদেশে পাচার হয়ে আসে। কিন্তু সরকার বাংলাদেশি দুটি কোম্পানিকে ডিটিএইচ সেবা দেয়ার লাইসেন্স দিয়েছে। গতবছর থেকে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট থেকে ডিটিএইচ সেবা প্রদান শুরু করেছে দেশীয় ব্রান্ড আকাশ ডিটিএইচ। এ প্রেক্ষাপটে অবৈধ ডিটিএইচ বিক্রি ও বন্ধে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে দেশ থেকে টাকা পাচারও রোধ করা যাবে। দেশীয় টেলিভিশনগুলোও সুস্থ প্রতিযোগিতার পাশাপাশি সম্প্রচার মান উন্নত করার সুযোগ পাবে।