বাস্তব রূপ দিতে উদ্যোগ নেই কেন

বিনা খরচে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে চাচ্ছে মালয়েশিয়া। দেশটি এ সংক্রান্ত প্রস্তাবও দিয়েছে। এক বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশ এ প্রস্তাব সম্পর্কে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেয়নি। বিভিন্ন সময়ে মালয়েশিয়া বলেছে, অভিবাসন ব্যয় অত্যন্ত বেশি হওয়ায় বাংলাদেশি কর্মীরা বলপূর্বক শ্রমের শিকার হচ্ছে, ঋণে জর্জরিত হচ্ছে। উল্লেখ্য, মালয়েশিয়া যেতে একজন বাংলাদেশি কর্মীর খরচ হয় কমবেশি ৪ লাখ টাকা। যদিও সরকার নির্ধারিত খরচ ৪০ হাজার টাকা। এ নিয়ে গত শনিবার একটি জাতীয় দৈনিক বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

বিনা খরচে কর্মী পাঠানোর মতো একটি প্রস্তাব পেয়েও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা উদ্যোগী হয়ে কাজ করছেন না কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে। সরকার নির্ধারিত খরচের চেয়ে ২০ গুণ বেশি খরচ দিয়ে মালয়েশিয়া গিয়ে বাংলাদেশের কর্মীরা কী সংকটে পড়েছে সেটা সবাই জানে। বাংলাদেশি কর্মীদের এই সংকট নিয়ে মালয়েশিয়াও বিভিন্ন সময় কথা বলেছে, তারা বিনা খরচে কর্মী নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। কিন্তু নিজ দেশের কর্মীদের সমস্যা নিয়ে কোন মাথাব্যথা বা সম্ভাবনা নিয়ে কোন আগ্রহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আছে বলে মনে হয় না। মালয়েশিয়ার বাজার যে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ আছে সেটা নিয়েও তাদের কোন চিন্তা আছে বলে মনে হয় না। নইলে বিনা খরচে কর্মী পাঠানোর প্রস্তাব পেয়েও সংশ্লিষ্টরা নিশ্চেষ্ট হয়ে বসে থাকবে কেন। তাদের মনোভাব হচ্ছে- দেখি না মালয়েশিয়া কী করে। আমরা জেনেছি, মালয়েশিয়া নেপালের সঙ্গে বিনা খরচে কর্মী নেয়ার চুক্তি করেছে। এই খবর জানার পর সরকারের কর্তাব্যক্তিদের উদ্যোগী হয়ে কাজ করা বাঞ্ছনীয়।

প্রশ্ন উঠেছে যে, বিনা খরচে কর্মী পাঠানোর প্রস্তাব কি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিদের মনঃপূত হয়নি। তারা কি এর চেয়ে উত্তম প্রস্তাবের অপেক্ষায় আছেন। নাকি ওই প্রস্তাব যেন বাস্তব রূপ না পায় সেটা চাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, সরকারের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর দহরম-মহরম সম্পর্ক আছে। রিক্রুটিং এজেন্সির কোন কোন মালিক সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে রয়েছেন। এ কারণে সংশয় দেখা দিয়েছে যে, স্বার্থান্বেষী কোন গোষ্ঠী চায় মালয়েশিয়ার প্রস্তাব মাঠে মারা যাক। বিনা খরচে কর্মী পাঠানো শুরু হলে তাদের ১০ গুণ বেশি মুনাফা করার পথ বন্ধ হয়ে যাবে।

রিক্রুটিং এজেন্সির অশুভ চক্র বহু বছর ধরে বাংলাদেশি কর্মীদের জিম্মি করে নিজেদের পকেট ভারি করে চলেছে। তাদের বিরুদ্ধে সরকার কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়া না। মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো বন্ধ হয়েছে যেসব প্রতিষ্ঠানের কারণে, সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আমরা বলতে চাই, বিদেশে কর্র্মী পাঠানোর প্রশ্নে সরকারকে দেশ ও নাগরিকদের স্বার্থ অগ্রগণ্য করতে হবে। মালয়েশিয়ার উক্ত প্রস্তাবকে বাস্তব রূপ দিতে হলে উদ্যোগী হয়ে কাজ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে রিক্রুটিং এজেন্সির প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে হবে। এ নিয়ে কালক্ষেপণ কাম্য নয়।

রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২০ , ১২ মাঘ ১৪২৬, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

মালয়েশিয়ায় বিনা খরচে কর্মী নেয়ার প্রস্তাব

বাস্তব রূপ দিতে উদ্যোগ নেই কেন

বিনোদন প্রতিবেদক |

বিনা খরচে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে চাচ্ছে মালয়েশিয়া। দেশটি এ সংক্রান্ত প্রস্তাবও দিয়েছে। এক বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশ এ প্রস্তাব সম্পর্কে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেয়নি। বিভিন্ন সময়ে মালয়েশিয়া বলেছে, অভিবাসন ব্যয় অত্যন্ত বেশি হওয়ায় বাংলাদেশি কর্মীরা বলপূর্বক শ্রমের শিকার হচ্ছে, ঋণে জর্জরিত হচ্ছে। উল্লেখ্য, মালয়েশিয়া যেতে একজন বাংলাদেশি কর্মীর খরচ হয় কমবেশি ৪ লাখ টাকা। যদিও সরকার নির্ধারিত খরচ ৪০ হাজার টাকা। এ নিয়ে গত শনিবার একটি জাতীয় দৈনিক বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

বিনা খরচে কর্মী পাঠানোর মতো একটি প্রস্তাব পেয়েও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা উদ্যোগী হয়ে কাজ করছেন না কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে। সরকার নির্ধারিত খরচের চেয়ে ২০ গুণ বেশি খরচ দিয়ে মালয়েশিয়া গিয়ে বাংলাদেশের কর্মীরা কী সংকটে পড়েছে সেটা সবাই জানে। বাংলাদেশি কর্মীদের এই সংকট নিয়ে মালয়েশিয়াও বিভিন্ন সময় কথা বলেছে, তারা বিনা খরচে কর্মী নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। কিন্তু নিজ দেশের কর্মীদের সমস্যা নিয়ে কোন মাথাব্যথা বা সম্ভাবনা নিয়ে কোন আগ্রহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আছে বলে মনে হয় না। মালয়েশিয়ার বাজার যে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ আছে সেটা নিয়েও তাদের কোন চিন্তা আছে বলে মনে হয় না। নইলে বিনা খরচে কর্মী পাঠানোর প্রস্তাব পেয়েও সংশ্লিষ্টরা নিশ্চেষ্ট হয়ে বসে থাকবে কেন। তাদের মনোভাব হচ্ছে- দেখি না মালয়েশিয়া কী করে। আমরা জেনেছি, মালয়েশিয়া নেপালের সঙ্গে বিনা খরচে কর্মী নেয়ার চুক্তি করেছে। এই খবর জানার পর সরকারের কর্তাব্যক্তিদের উদ্যোগী হয়ে কাজ করা বাঞ্ছনীয়।

প্রশ্ন উঠেছে যে, বিনা খরচে কর্মী পাঠানোর প্রস্তাব কি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিদের মনঃপূত হয়নি। তারা কি এর চেয়ে উত্তম প্রস্তাবের অপেক্ষায় আছেন। নাকি ওই প্রস্তাব যেন বাস্তব রূপ না পায় সেটা চাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, সরকারের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর দহরম-মহরম সম্পর্ক আছে। রিক্রুটিং এজেন্সির কোন কোন মালিক সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে রয়েছেন। এ কারণে সংশয় দেখা দিয়েছে যে, স্বার্থান্বেষী কোন গোষ্ঠী চায় মালয়েশিয়ার প্রস্তাব মাঠে মারা যাক। বিনা খরচে কর্মী পাঠানো শুরু হলে তাদের ১০ গুণ বেশি মুনাফা করার পথ বন্ধ হয়ে যাবে।

রিক্রুটিং এজেন্সির অশুভ চক্র বহু বছর ধরে বাংলাদেশি কর্মীদের জিম্মি করে নিজেদের পকেট ভারি করে চলেছে। তাদের বিরুদ্ধে সরকার কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়া না। মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো বন্ধ হয়েছে যেসব প্রতিষ্ঠানের কারণে, সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আমরা বলতে চাই, বিদেশে কর্র্মী পাঠানোর প্রশ্নে সরকারকে দেশ ও নাগরিকদের স্বার্থ অগ্রগণ্য করতে হবে। মালয়েশিয়ার উক্ত প্রস্তাবকে বাস্তব রূপ দিতে হলে উদ্যোগী হয়ে কাজ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে রিক্রুটিং এজেন্সির প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে হবে। এ নিয়ে কালক্ষেপণ কাম্য নয়।