সূচক বাড়লেও লেনদেন কমেছে পুঁজিবাজারে

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে মিশ্রভাব দেখা গেছে দেশের পুঁজিবাজারে। গতকাল রোববার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্য সূচক বেড়েছে। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এ নিয়ে টানা তিন কার্যদিবস মূল্যসূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকল। এছাড়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দরও কমেছে। গতকাল ডিএসই’র প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ১৪ পয়েন্ট বেড়েছে। আর সিএসইতে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৮ পয়েন্ট বেড়েছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন কমেছে ৪০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। সিএসইতে কমেছে ৭৯ লাখ টাকা।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবস লেনদেনের মধ্যে প্রথম দুই কার্যদিবস বড় উত্থান হয়। এর পর মঙ্গলবার বড় পতন হলে বিনিয়োগকারীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। কিন্তু পরদিনই ঘুরে দাঁড়ায় বাজার। বুধ ও বৃহস্পতিবার সূচকের বড় উত্থানে পার করলে সাপ্তাহিক বাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসে। গতকাল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস আগের দুই কার্যদিবসের মতো লেনদেন শুরুতে ডিএসইতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ে। দুপুর ২টা পর্যন্ত লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছিল। এর পর বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়। শেষ আধাঘণ্টার লেনদেনে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়। এতে সূচক ঋণাত্মকও হয়ে পড়ে। এতে দিনের লেনদেন শেষে যে কয়টি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। তবে শেয়ারের দামের দিক থেকে শীর্ষে থাকা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ায় সূচক ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে।

দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৫০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৮টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৮টির। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৫২৮ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই ৩০ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৫৪৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক দশমিক ২৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান ও বাছাই করা সূচক বাড়লেও ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৭৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫১৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৪০ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে লাফার্জ-হোলসিমের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এসএস স্টিলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৯০ লাখ টাকার। ১৪ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এডিএন টেলিকম। এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, ন্যাশনাল টিউবস, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স এবং ন্যাশনাল পলিমার।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৭৯২ পয়েন্টে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সে হিসেবে বাজারটিতে লেনদেন কমেছে ৭৯ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ২৪৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১১২টির, কমেছে ১০২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩২টির।

লভ্যাংশ জমা : ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত হিসাব বছরে ঘোষিত ক্যাশ ডিভিডেন্ড (নগদ লভ্যাংশ) বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক হিসাবে পাঠিয়েছে তালিকাভুক্ত ১০ কোম্পানি। কোম্পানিগুলো হলো : আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, বিকন ফার্মা, নিউ লাইন, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, জেনেক্স ইনফোসিস, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ এবং আমান ফিড লিমিটেড।

সূত্র মতে, কোম্পানিগুলোর ঘোষিত ক্যাশ ডিভিডেন্ড বাংলাদেশ ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্কের (বিইএফটিএন) মাধ্যমে ক্যাশ শেয়ার হোল্ডারদের ব্যাংক হিসাবে পাঠিয়েছে। যেসব বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড বিইএফটিএন নেটওয়ার্কসের মাধ্যমে পাঠানো সম্ভব না তাদের লভ্যাংশ কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে নিজস্ব ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে।

সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২০ , ১৩ মাঘ ১৪২৬, ১ জমাদিউস সানি ১৪৪১

সূচক বাড়লেও লেনদেন কমেছে পুঁজিবাজারে

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে মিশ্রভাব দেখা গেছে দেশের পুঁজিবাজারে। গতকাল রোববার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্য সূচক বেড়েছে। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এ নিয়ে টানা তিন কার্যদিবস মূল্যসূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকল। এছাড়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দরও কমেছে। গতকাল ডিএসই’র প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ১৪ পয়েন্ট বেড়েছে। আর সিএসইতে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৮ পয়েন্ট বেড়েছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন কমেছে ৪০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। সিএসইতে কমেছে ৭৯ লাখ টাকা।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবস লেনদেনের মধ্যে প্রথম দুই কার্যদিবস বড় উত্থান হয়। এর পর মঙ্গলবার বড় পতন হলে বিনিয়োগকারীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। কিন্তু পরদিনই ঘুরে দাঁড়ায় বাজার। বুধ ও বৃহস্পতিবার সূচকের বড় উত্থানে পার করলে সাপ্তাহিক বাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসে। গতকাল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস আগের দুই কার্যদিবসের মতো লেনদেন শুরুতে ডিএসইতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ে। দুপুর ২টা পর্যন্ত লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছিল। এর পর বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়। শেষ আধাঘণ্টার লেনদেনে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়। এতে সূচক ঋণাত্মকও হয়ে পড়ে। এতে দিনের লেনদেন শেষে যে কয়টি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। তবে শেয়ারের দামের দিক থেকে শীর্ষে থাকা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ায় সূচক ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে।

দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৫০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৮টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৮টির। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৫২৮ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই ৩০ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৫৪৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক দশমিক ২৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান ও বাছাই করা সূচক বাড়লেও ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৭৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫১৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৪০ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে লাফার্জ-হোলসিমের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এসএস স্টিলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৯০ লাখ টাকার। ১৪ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এডিএন টেলিকম। এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, ন্যাশনাল টিউবস, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স এবং ন্যাশনাল পলিমার।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৭৯২ পয়েন্টে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সে হিসেবে বাজারটিতে লেনদেন কমেছে ৭৯ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ২৪৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১১২টির, কমেছে ১০২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩২টির।

লভ্যাংশ জমা : ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত হিসাব বছরে ঘোষিত ক্যাশ ডিভিডেন্ড (নগদ লভ্যাংশ) বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক হিসাবে পাঠিয়েছে তালিকাভুক্ত ১০ কোম্পানি। কোম্পানিগুলো হলো : আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, বিকন ফার্মা, নিউ লাইন, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, জেনেক্স ইনফোসিস, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ এবং আমান ফিড লিমিটেড।

সূত্র মতে, কোম্পানিগুলোর ঘোষিত ক্যাশ ডিভিডেন্ড বাংলাদেশ ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্কের (বিইএফটিএন) মাধ্যমে ক্যাশ শেয়ার হোল্ডারদের ব্যাংক হিসাবে পাঠিয়েছে। যেসব বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড বিইএফটিএন নেটওয়ার্কসের মাধ্যমে পাঠানো সম্ভব না তাদের লভ্যাংশ কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে নিজস্ব ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে।