ঢাকা সিটি নির্বাচন : আর ৪ দিন

আ’লীগ-বিএনপি সমর্থকদের সংঘর্ষ

ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা-সংশয় বাড়ছে

প্রচারণার শেষ সময়ে এসে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় সিটি নির্বাচনের পরিবেশ উত্তপ্ত ও অস্থির হয়ে উঠেছে; ভোটারদের শঙ্কা-সংশয় বাড়ছে। প্রচারণার আর ২ দিন (সোমবার বাদে) এবং ভোটের ৪ দিন বাকি। গতকাল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনের নির্বাচনী প্রচারের সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কয়েকদিন আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের নির্বাচনী প্রচারের সময়ও সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এদিকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা লেগেই আছে।

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি দুই সিটির সবগুলো কেন্দ্রে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট প্রদানের মাধ্যমে অর্ধ কোটিরও বেশি ভোটার তাদের পছন্দের মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচন করার সুযোগ পাবেন। তবে শেষ সময়ে এসে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনায় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের পরিবেশ বজায় থাকা নিয়ে সংশয়ে আছেন দুই সিটির ভোটাররা।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলী মোড় থেকে ধানের শীষের প্রার্থী ইশরাক হোসেন কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মিছিল সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের গলিতে ঢোকার সময় কলেজের মূল ফটকে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। সেখানে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ৩৯নং ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলর প্রার্থী রোকনউদ্দিন আহমেদের সমর্থকদের সঙ্গে ইশরাকের কর্মী-সমর্থকদের বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে দুই পক্ষই একে ওপরের উদ্দেশ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। লাঠিসোঁটা নিয়েও হামলা হয়। এর মধ্যে অন্তত ১০টি গুলি ছোড়ার শব্দও শোনা গেছে। বেলা পৌনে একটার দিকে শুরু হয়ে প্রায় দেড়টা পর্যন্ত সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। হামলায় উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন কর্মী-সমর্থকসহ একাধিক গণমাধ্যম কর্মীও আহত হন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

আওয়ামী লীগের সমর্থকরা বলছেন, ইশরাকের মিছিল থেকে উসকানিমূলক স্লোগান দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বিএনপির সমর্থকরা বলছেন, তারা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে হামলা চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইশরাকের মিছিল যখন ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ব্যাডমিন্টন মার্কার রোকন উদ্দিন আহমেদ এবং সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর পদের প্রার্থী লাভলী চৌধুরীর কর্মীরা উপস্থিত হন ওই মোড়ে। এ সময় দুই পক্ষই স্লোগান-পাল্টা স্লোগান দিতে থাকে। হ্যান্ডমাইকেও ধানের শীষ ও নৌকা প্রতীকের স্লোগান দিতে থাকেন কর্মীরা। এ সময় বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেনের নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিপক্ষের হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ঢিল ছোড়াছুড়ি এবং সংঘর্ষ শুরু হয়। সময় কর্মী-সমর্থকরা রাস্তার পাশে থাকা চেয়ারও ছুড়ে মারেন।

সংঘর্ষ শেষে মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেন নিজ বাসায় এক তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গণসংযোগ থেকে বাসায় ফেরার পথে তার ওপর হামলা হয়। তার একজন কর্মীকে প্রতিপক্ষ আটকে রাখার অভিযোগ পেলে তিনি এগিয়ে গেলে হামলার মুখে পড়েন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, কেবল ইটপাটকেল না, তাদের দিকে গুলিও ছোড়া হয়েছে।

ইশরাক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে যাচ্ছিলাম। আওয়ামী লীগ-সমর্থিত স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীর এখানে কার্যালয় রয়েছে। সেখান থেকে হামলা করা হয়েছে। আমি আমার কর্মীদের শান্ত থাকতে বলেছি। ১ ফেব্রুয়ারি ভোটের মাধ্যমে আমরা এর জবাব দেব। পরে তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই হামলার উদ্দেশ্য বিএনপিকে মাঠছাড়া করা, নির্বাচন বানচাল করা। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে থাকবে। এই হামলার ব্যাপারে মামলা করা হবে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইশরাক হোসেন যে এ সময় প্রচারণা চালাবেন, তা পুলিশকে জানানো হয়নি। আগে জানতে পারলে তারা নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নিতে পারতেন।

কিছুদিন আগে গাবতলীতে ঢাকা উত্তরে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের প্রচারণায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলরের কর্মী-সমর্থকরা হামলা চালায়। গতকাল দক্ষিণে ইশরাকের প্রচারণায় হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে উত্তরের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, ধানের শীষের জয় নিশ্চিত। এই ভয় থেকেই হামলাগুলো শুরু হয়েছে। কিন্তু ভয়কে জয় করতে হবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তাবিথ বলেন, ভোটের মাধ্যমে জনগণের রায় খালেদা জিয়ার পক্ষে যাবে। সরকার এ রায় ঠেকাতে পারবে না। এরপরই আন্দোলন ত্বরান্বিত করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনব। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব, দেশকে মুক্তির পথে নিয়ে আসব।

ইশরাকের প্রচারে হামলার ঘটনার কথা উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তাবিথ আউয়াল বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনকে বারবার অনুরোধ করছি, আপনারা আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নিন। আগামী ছয় দিন দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য এবং ইসির সদিচ্ছা প্রমাণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিন।

বিএনপির দাবি গতকাল টিকটুলীতে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনের কর্মী বিল্লাল হোসেন, রকী, জাহিদ, ফয়সল, ইকরামসহ ১৪/১৫ জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ সময় কয়েজন গণমাধ্যমকর্মীও আহত হন।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী রোকন উদ্দিন আহমেদ পাল্টা অভিযোগ, বিএনপির প্রার্থী ইশরাকের লোকজন স্থানীয় কাউন্সিল প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যম্পের দরজা ভেঙে আওয়ামী লীগ কর্মীদের ওপর হামলা করে। এ সময় ইশরাকের লোকজন আট রাউন্ড গুলি ছোড়ে। তাদের হামলায় আওয়ামী লীগের সাত-আট জন কর্মী আহত হন। এর মধ্যে মো. রমজান (৩৫), সোরহাব হোসেন (৫৬), ইয়াছিন আরাফাত রকি (৩৫), মশিউর রহমান (৩০), রেজুয়ান ইসলাম রাতুল (২৬) ও রাসেল (৩০) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দাবি, ভোটের পরিবেশ খুবই ভালো রয়েছে। গোপীবাগে সংঘর্ষের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসি সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২০ , ১৩ মাঘ ১৪২৬, ১ জমাদিউস সানি ১৪৪১

ঢাকা সিটি নির্বাচন : আর ৪ দিন

আ’লীগ-বিএনপি সমর্থকদের সংঘর্ষ

ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা-সংশয় বাড়ছে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

ঢাকা দক্ষিণের গোপীবাগে গতকাল আওয়ামী লীগ-বিএনপি সমর্থকদের সংঘর্ষ -সংবাদ

প্রচারণার শেষ সময়ে এসে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় সিটি নির্বাচনের পরিবেশ উত্তপ্ত ও অস্থির হয়ে উঠেছে; ভোটারদের শঙ্কা-সংশয় বাড়ছে। প্রচারণার আর ২ দিন (সোমবার বাদে) এবং ভোটের ৪ দিন বাকি। গতকাল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনের নির্বাচনী প্রচারের সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কয়েকদিন আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের নির্বাচনী প্রচারের সময়ও সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এদিকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা লেগেই আছে।

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি দুই সিটির সবগুলো কেন্দ্রে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট প্রদানের মাধ্যমে অর্ধ কোটিরও বেশি ভোটার তাদের পছন্দের মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচন করার সুযোগ পাবেন। তবে শেষ সময়ে এসে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনায় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের পরিবেশ বজায় থাকা নিয়ে সংশয়ে আছেন দুই সিটির ভোটাররা।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলী মোড় থেকে ধানের শীষের প্রার্থী ইশরাক হোসেন কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মিছিল সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের গলিতে ঢোকার সময় কলেজের মূল ফটকে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। সেখানে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ৩৯নং ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলর প্রার্থী রোকনউদ্দিন আহমেদের সমর্থকদের সঙ্গে ইশরাকের কর্মী-সমর্থকদের বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে দুই পক্ষই একে ওপরের উদ্দেশ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। লাঠিসোঁটা নিয়েও হামলা হয়। এর মধ্যে অন্তত ১০টি গুলি ছোড়ার শব্দও শোনা গেছে। বেলা পৌনে একটার দিকে শুরু হয়ে প্রায় দেড়টা পর্যন্ত সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। হামলায় উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন কর্মী-সমর্থকসহ একাধিক গণমাধ্যম কর্মীও আহত হন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

আওয়ামী লীগের সমর্থকরা বলছেন, ইশরাকের মিছিল থেকে উসকানিমূলক স্লোগান দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বিএনপির সমর্থকরা বলছেন, তারা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে হামলা চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইশরাকের মিছিল যখন ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ব্যাডমিন্টন মার্কার রোকন উদ্দিন আহমেদ এবং সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর পদের প্রার্থী লাভলী চৌধুরীর কর্মীরা উপস্থিত হন ওই মোড়ে। এ সময় দুই পক্ষই স্লোগান-পাল্টা স্লোগান দিতে থাকে। হ্যান্ডমাইকেও ধানের শীষ ও নৌকা প্রতীকের স্লোগান দিতে থাকেন কর্মীরা। এ সময় বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেনের নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিপক্ষের হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ঢিল ছোড়াছুড়ি এবং সংঘর্ষ শুরু হয়। সময় কর্মী-সমর্থকরা রাস্তার পাশে থাকা চেয়ারও ছুড়ে মারেন।

সংঘর্ষ শেষে মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেন নিজ বাসায় এক তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গণসংযোগ থেকে বাসায় ফেরার পথে তার ওপর হামলা হয়। তার একজন কর্মীকে প্রতিপক্ষ আটকে রাখার অভিযোগ পেলে তিনি এগিয়ে গেলে হামলার মুখে পড়েন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, কেবল ইটপাটকেল না, তাদের দিকে গুলিও ছোড়া হয়েছে।

ইশরাক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে যাচ্ছিলাম। আওয়ামী লীগ-সমর্থিত স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীর এখানে কার্যালয় রয়েছে। সেখান থেকে হামলা করা হয়েছে। আমি আমার কর্মীদের শান্ত থাকতে বলেছি। ১ ফেব্রুয়ারি ভোটের মাধ্যমে আমরা এর জবাব দেব। পরে তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই হামলার উদ্দেশ্য বিএনপিকে মাঠছাড়া করা, নির্বাচন বানচাল করা। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে থাকবে। এই হামলার ব্যাপারে মামলা করা হবে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইশরাক হোসেন যে এ সময় প্রচারণা চালাবেন, তা পুলিশকে জানানো হয়নি। আগে জানতে পারলে তারা নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নিতে পারতেন।

কিছুদিন আগে গাবতলীতে ঢাকা উত্তরে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের প্রচারণায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলরের কর্মী-সমর্থকরা হামলা চালায়। গতকাল দক্ষিণে ইশরাকের প্রচারণায় হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে উত্তরের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, ধানের শীষের জয় নিশ্চিত। এই ভয় থেকেই হামলাগুলো শুরু হয়েছে। কিন্তু ভয়কে জয় করতে হবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তাবিথ বলেন, ভোটের মাধ্যমে জনগণের রায় খালেদা জিয়ার পক্ষে যাবে। সরকার এ রায় ঠেকাতে পারবে না। এরপরই আন্দোলন ত্বরান্বিত করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনব। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব, দেশকে মুক্তির পথে নিয়ে আসব।

ইশরাকের প্রচারে হামলার ঘটনার কথা উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তাবিথ আউয়াল বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনকে বারবার অনুরোধ করছি, আপনারা আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নিন। আগামী ছয় দিন দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য এবং ইসির সদিচ্ছা প্রমাণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিন।

বিএনপির দাবি গতকাল টিকটুলীতে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনের কর্মী বিল্লাল হোসেন, রকী, জাহিদ, ফয়সল, ইকরামসহ ১৪/১৫ জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ সময় কয়েজন গণমাধ্যমকর্মীও আহত হন।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী রোকন উদ্দিন আহমেদ পাল্টা অভিযোগ, বিএনপির প্রার্থী ইশরাকের লোকজন স্থানীয় কাউন্সিল প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যম্পের দরজা ভেঙে আওয়ামী লীগ কর্মীদের ওপর হামলা করে। এ সময় ইশরাকের লোকজন আট রাউন্ড গুলি ছোড়ে। তাদের হামলায় আওয়ামী লীগের সাত-আট জন কর্মী আহত হন। এর মধ্যে মো. রমজান (৩৫), সোরহাব হোসেন (৫৬), ইয়াছিন আরাফাত রকি (৩৫), মশিউর রহমান (৩০), রেজুয়ান ইসলাম রাতুল (২৬) ও রাসেল (৩০) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দাবি, ভোটের পরিবেশ খুবই ভালো রয়েছে। গোপীবাগে সংঘর্ষের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসি সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে।