১২০০ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধার

মোংলা-ঘষিয়াখালীসহ গুরুত্বপূর্র্ণ নৌরুটে নাব্যতা ফিরেছে ২১ সালের জুনে প্রকল্প শেষ

সারাদেশের নদী খননের মাধ্যমে ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধার করেছে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এর ফলে বরিশাল-পটুয়াখালী নৌরুটেসহ গুরুত্বপূর্ণ নৌপথে নৌযান চলাচলের উন্মুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি নদীর খননে উত্তোলনকৃত মাটি দিয়ে ৫ হাজার একর অকৃষি জমিকে কৃষি জমিতে রূপান্তর করা হয়েছে। এছাড়া ৫০০টি ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিচু স্থান, খেলার মাঠ, ঈদগা, স্টেডিয়াম, কবরস্থান, গির্জা-মন্দির তীর্থস্থান ভরাট করা হয়েছে। হাওর অঞ্চলে প্রায় ১০ কিলোমিটার নিচু জায়গা ভরাট করে গবাদি পশু পালন ও স্থানীয় বাসিন্দারের বসবাসের উপযোগী করা হয়েছে। ৫৩টি নৌরুটের ১২ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের জন্য প্রথম পর্যায় ২৪টি নদী খনন প্রকল্পের আওতায় এই নৌপথ উদ্ধার করা হয়। ১ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৯৯৭ লাখ ঘনমিটার মাটি অপসারণ করে ২ হাজার ৩৮৬ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধার করা হবে বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়।

জানা গেছে, সারাদেশে অভ্যন্তরীণ নৌপথের ৫৩টি রুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং ২য় সংশোধিত প্রকল্পের আওতায় ২০১১ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া মোংলা-ঘষিয়াখালী (এমজি) চ্যানেল ড্রেজিং করে ২০১৫ সালে নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এই চ্যানেল দিয়ে বর্তমানে ১ লাখ ৩৯ হাজার টি ভেসেল(বড় জাহাজ) ৮-১৪ ফুট গভীরতায় চলাচল করছে। বর্তমানে এ চ্যানেলে সর্বনিম্ন ১২ ফুট এবং জোয়াড়ের সময় ২০ ফুট পর্যন্ত গভীরতা থাকে এবং প্রস্থ ২০০-৩০০ ফুট রয়েছে। নাব্যতা সংকটে খাগদোন, লাউকাঠি, ভোলা নালা, কীর্তনখোলা, ইছামতি, কর্নতলী দিয়ে কার্গো লঞ্চ চলাচল করতে পারত না প্রকল্পে আওতায় ড্রেজিং এর নাব্যতা ফিরিয়ে এনে এখন সারাবছর চলাচল করছে। ভৈরব-ছাতক নৌপথে শুকনা মৌসুমে হাফলোড (অর্ধবোঝাই) দিয়ে কার্গো চলাচল করত। এই নৌরুটে ড্রেজিং পর সারাবছর ফুললোডে কার্গো চলাচল করছে। খুলনা-নোয়াপাড়া নৌপথে প্রকট নাব্যতা সংকট ছিল, জোয়াড়ের সুবিধা ছাড়া এ গুরুত্ব রুট দিয়ে কার্গো চলাচল করতে পারত না। প্রকল্পের আওতায় ড্রেজিং-এর পর সার্বক্ষণিক কার্গো জাহাজ চলাচল করছে। মৃত বা মৃত প্রায় গাগলাজোড়-মোহনগঞ্জ, আনোয়ারপুর-তাহেরপুর, বরিশাল-পটুয়াখালী নৌপথের সাহেবেরহাট নালা ড্রেজিং করে নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পের ড্রেজিংয়ের মাটি দ্বারা পতিত ও নিচু জমি ভরাট করে প্রায় ৫০০০ একর অকৃষি জমিকে কৃষি জমিতে রূপান্তর করা হয়েছে। ড্রেজিংয়ের মাটি দ্বারা ৫০০টির মতো শিক্ষা-ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এর নিচু জায়গা ভরাট করা হয়েছে। এছাড়া হাওর অঞ্চলের তাহেরপুর, বিশ্বম্বপুর, মদন, নিকলি, গাগলাজোড়-ধর্মপাশা- মোহনগঞ্জ, বাঞ্ছারামপুর ইত্যাদি এলাকায় প্রায় ১০ কিলোমিটার নিচু জায়গা ভরাট করে গ্রামের গরিব মানুষের, গবাদি পশুর বসবাসের জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা জানায়।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ও বিআইডব্লিউটিএ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মো. সাইদুর রহমান সংবাদকে বলেন, সরকারি ও বেসরকারি ড্রেজারের মাধ্যমে এই নৌপথ খনন কাজ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২ হাজার ৩৮৬ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধার করা হবে। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। বর্তমানে ১৬টি রুটে ৩৩টি ড্রেজার ড্রেজিং কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এমজি চ্যানেল, খগদোন, লাউকাঠি, ভোলা নালা, কীর্তনখোলা, তিতাস, সুরমা, বাউলাই, নতুন নদী, রক্তি, রকশা নালা, মগড়া, কংস, ভোগাই-কংস, বুড়ি, ইছামতি, কর্নতলী, পালরদি, ধলেশ্বরী, কালিগঙ্গা, মধুমতি, ভৈরব, আত্রাই, দুধকুমার, নরসিংদী জেলার পুরাতন ব্রহ্মপুত্র ও আড়িয়াল খাঁ নদ খনন করা হয়েছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া এমজি চ্যানেল খনন করে নাব্যতা ফিরিয়ে এনে কার্গো তথা সব প্রকার নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। খাগদোন, লাউকাঠি, ভোলা নালা, কীর্তনখোলা, ইছামতি, কর্নতলী, সুরমা নদীর কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এসব নদীতে সারাবছর কার্গোসহ নৌযান চলাচল করছে।

বিআইডব্লিউটিএ’র সূত্র জানায়, প্রকল্পটি ২০১২ সালে একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পের সংশোধিত ব্যয় ১ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা। মেয়াদ জুলাই ২০১২ হতে জুন ২০২১ পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় ২৪টি নৌপথে মোট ৯৯৭ লাখ ঘনমিটার মাটি খনন করা হবে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৬৮ শতাংশ। আর্থিক অগ্রগতি ১ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। বর্তমানে ১৬টি রুটে ৩৩টি ড্রেজার ড্রেজিং কাজ করছে। এর মধ্যে বেসরকারি ড্রেজার দ্বারা ৪৭৪ দশমিক ৭৪ লাখ ঘনমিটার, বিআইডব্লিউটিএ’র নিজস্ব ড্রেজার দ্বারা ৭০ দশমিক ৭০ লাখ ঘনমিটার এবং এক্সকাভেটর দ্বারা প্রায় ২৫ লাখ ঘনমিটার অর্থাৎ সর্বমোট ৫৭০ দশমিক ৪৪ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং করে ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার নৌপথ নাব্য করা হয়েছে। ২৪টি নৌরুটের মধ্যে ৮টি রুটের কাজ কাজ শেষ করা হয়েছে এবং ১৬টি নৌরুটে কাজ চলছে। এর মধ্যে ১০টি রুটের অগ্রগতি ৭০ শতাংশের বেশি এবং ৩টি রুটের ৫০ শতাংশ এবং ৩টি রুটের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে উত্তোলনকৃত মাটি দিয়ে নরসিংদী বেলাবো’র ভাওয়ালের চর সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয়ের, টেকপারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাধাখালি জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়, পোড়াদিয়া বাজারের পূর্ব পাশের সরকারি খাস জমি, উত্তর পোড়াদিয়া ব্রিজ জামে মসজিদ, পোড়াদিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ প্রায় ৫০০টি ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিচু স্থান ভরাট করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সদ্য বিদায়ী বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর এম মাহবুব উল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ৫৩টি নৌরুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং আওতায় সারাদেশে নদী খনন কাজ চলছে। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। বর্তমানে ১৬টি রুটে ৩৩টি ড্রেজার ড্রেজিং কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় গত ১ বছরে ৬০০ কিলোমিটার নৌপথ খনন করা হয়েছে। প্রকল্প শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১২০০ কিলোমিটার নৌপথে নাব্য করা হয়েছে। এছাড়া ড্রেজিংকৃত মাটি দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় নিচু জমি ভরাট করা হয়েছে। ১ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৯৯৭ লাখ ঘনমিটার মাটি অপসারণ করে ২ হাজার ৩৮৬ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধার করা হবে বলে জানান তিনি।

সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২০ , ১৩ মাঘ ১৪২৬, ১ জমাদিউস সানি ১৪৪১

সারাদেশে নদী খননের মাধ্যমে

১২০০ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধার

মোংলা-ঘষিয়াখালীসহ গুরুত্বপূর্র্ণ নৌরুটে নাব্যতা ফিরেছে ২১ সালের জুনে প্রকল্প শেষ

ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ

সারাদেশের নদী খননের মাধ্যমে ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধার করেছে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এর ফলে বরিশাল-পটুয়াখালী নৌরুটেসহ গুরুত্বপূর্ণ নৌপথে নৌযান চলাচলের উন্মুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি নদীর খননে উত্তোলনকৃত মাটি দিয়ে ৫ হাজার একর অকৃষি জমিকে কৃষি জমিতে রূপান্তর করা হয়েছে। এছাড়া ৫০০টি ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিচু স্থান, খেলার মাঠ, ঈদগা, স্টেডিয়াম, কবরস্থান, গির্জা-মন্দির তীর্থস্থান ভরাট করা হয়েছে। হাওর অঞ্চলে প্রায় ১০ কিলোমিটার নিচু জায়গা ভরাট করে গবাদি পশু পালন ও স্থানীয় বাসিন্দারের বসবাসের উপযোগী করা হয়েছে। ৫৩টি নৌরুটের ১২ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের জন্য প্রথম পর্যায় ২৪টি নদী খনন প্রকল্পের আওতায় এই নৌপথ উদ্ধার করা হয়। ১ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৯৯৭ লাখ ঘনমিটার মাটি অপসারণ করে ২ হাজার ৩৮৬ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধার করা হবে বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়।

জানা গেছে, সারাদেশে অভ্যন্তরীণ নৌপথের ৫৩টি রুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং ২য় সংশোধিত প্রকল্পের আওতায় ২০১১ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া মোংলা-ঘষিয়াখালী (এমজি) চ্যানেল ড্রেজিং করে ২০১৫ সালে নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এই চ্যানেল দিয়ে বর্তমানে ১ লাখ ৩৯ হাজার টি ভেসেল(বড় জাহাজ) ৮-১৪ ফুট গভীরতায় চলাচল করছে। বর্তমানে এ চ্যানেলে সর্বনিম্ন ১২ ফুট এবং জোয়াড়ের সময় ২০ ফুট পর্যন্ত গভীরতা থাকে এবং প্রস্থ ২০০-৩০০ ফুট রয়েছে। নাব্যতা সংকটে খাগদোন, লাউকাঠি, ভোলা নালা, কীর্তনখোলা, ইছামতি, কর্নতলী দিয়ে কার্গো লঞ্চ চলাচল করতে পারত না প্রকল্পে আওতায় ড্রেজিং এর নাব্যতা ফিরিয়ে এনে এখন সারাবছর চলাচল করছে। ভৈরব-ছাতক নৌপথে শুকনা মৌসুমে হাফলোড (অর্ধবোঝাই) দিয়ে কার্গো চলাচল করত। এই নৌরুটে ড্রেজিং পর সারাবছর ফুললোডে কার্গো চলাচল করছে। খুলনা-নোয়াপাড়া নৌপথে প্রকট নাব্যতা সংকট ছিল, জোয়াড়ের সুবিধা ছাড়া এ গুরুত্ব রুট দিয়ে কার্গো চলাচল করতে পারত না। প্রকল্পের আওতায় ড্রেজিং-এর পর সার্বক্ষণিক কার্গো জাহাজ চলাচল করছে। মৃত বা মৃত প্রায় গাগলাজোড়-মোহনগঞ্জ, আনোয়ারপুর-তাহেরপুর, বরিশাল-পটুয়াখালী নৌপথের সাহেবেরহাট নালা ড্রেজিং করে নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পের ড্রেজিংয়ের মাটি দ্বারা পতিত ও নিচু জমি ভরাট করে প্রায় ৫০০০ একর অকৃষি জমিকে কৃষি জমিতে রূপান্তর করা হয়েছে। ড্রেজিংয়ের মাটি দ্বারা ৫০০টির মতো শিক্ষা-ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এর নিচু জায়গা ভরাট করা হয়েছে। এছাড়া হাওর অঞ্চলের তাহেরপুর, বিশ্বম্বপুর, মদন, নিকলি, গাগলাজোড়-ধর্মপাশা- মোহনগঞ্জ, বাঞ্ছারামপুর ইত্যাদি এলাকায় প্রায় ১০ কিলোমিটার নিচু জায়গা ভরাট করে গ্রামের গরিব মানুষের, গবাদি পশুর বসবাসের জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা জানায়।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ও বিআইডব্লিউটিএ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মো. সাইদুর রহমান সংবাদকে বলেন, সরকারি ও বেসরকারি ড্রেজারের মাধ্যমে এই নৌপথ খনন কাজ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২ হাজার ৩৮৬ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধার করা হবে। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। বর্তমানে ১৬টি রুটে ৩৩টি ড্রেজার ড্রেজিং কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এমজি চ্যানেল, খগদোন, লাউকাঠি, ভোলা নালা, কীর্তনখোলা, তিতাস, সুরমা, বাউলাই, নতুন নদী, রক্তি, রকশা নালা, মগড়া, কংস, ভোগাই-কংস, বুড়ি, ইছামতি, কর্নতলী, পালরদি, ধলেশ্বরী, কালিগঙ্গা, মধুমতি, ভৈরব, আত্রাই, দুধকুমার, নরসিংদী জেলার পুরাতন ব্রহ্মপুত্র ও আড়িয়াল খাঁ নদ খনন করা হয়েছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া এমজি চ্যানেল খনন করে নাব্যতা ফিরিয়ে এনে কার্গো তথা সব প্রকার নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। খাগদোন, লাউকাঠি, ভোলা নালা, কীর্তনখোলা, ইছামতি, কর্নতলী, সুরমা নদীর কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এসব নদীতে সারাবছর কার্গোসহ নৌযান চলাচল করছে।

বিআইডব্লিউটিএ’র সূত্র জানায়, প্রকল্পটি ২০১২ সালে একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পের সংশোধিত ব্যয় ১ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা। মেয়াদ জুলাই ২০১২ হতে জুন ২০২১ পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় ২৪টি নৌপথে মোট ৯৯৭ লাখ ঘনমিটার মাটি খনন করা হবে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৬৮ শতাংশ। আর্থিক অগ্রগতি ১ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। বর্তমানে ১৬টি রুটে ৩৩টি ড্রেজার ড্রেজিং কাজ করছে। এর মধ্যে বেসরকারি ড্রেজার দ্বারা ৪৭৪ দশমিক ৭৪ লাখ ঘনমিটার, বিআইডব্লিউটিএ’র নিজস্ব ড্রেজার দ্বারা ৭০ দশমিক ৭০ লাখ ঘনমিটার এবং এক্সকাভেটর দ্বারা প্রায় ২৫ লাখ ঘনমিটার অর্থাৎ সর্বমোট ৫৭০ দশমিক ৪৪ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং করে ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার নৌপথ নাব্য করা হয়েছে। ২৪টি নৌরুটের মধ্যে ৮টি রুটের কাজ কাজ শেষ করা হয়েছে এবং ১৬টি নৌরুটে কাজ চলছে। এর মধ্যে ১০টি রুটের অগ্রগতি ৭০ শতাংশের বেশি এবং ৩টি রুটের ৫০ শতাংশ এবং ৩টি রুটের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে উত্তোলনকৃত মাটি দিয়ে নরসিংদী বেলাবো’র ভাওয়ালের চর সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয়ের, টেকপারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাধাখালি জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়, পোড়াদিয়া বাজারের পূর্ব পাশের সরকারি খাস জমি, উত্তর পোড়াদিয়া ব্রিজ জামে মসজিদ, পোড়াদিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ প্রায় ৫০০টি ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিচু স্থান ভরাট করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সদ্য বিদায়ী বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর এম মাহবুব উল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ৫৩টি নৌরুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং আওতায় সারাদেশে নদী খনন কাজ চলছে। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। বর্তমানে ১৬টি রুটে ৩৩টি ড্রেজার ড্রেজিং কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় গত ১ বছরে ৬০০ কিলোমিটার নৌপথ খনন করা হয়েছে। প্রকল্প শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১২০০ কিলোমিটার নৌপথে নাব্য করা হয়েছে। এছাড়া ড্রেজিংকৃত মাটি দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় নিচু জমি ভরাট করা হয়েছে। ১ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৯৯৭ লাখ ঘনমিটার মাটি অপসারণ করে ২ হাজার ৩৮৬ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধার করা হবে বলে জানান তিনি।