৩ স্বজন হারিয়েও শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি বঞ্চিত অতুল : মানবেতর জীবনে

১৯৭১ সালের গণহত্যায় স্বজন হারানো যশোরের কেশবপুরে মধ্যকুল রাজবংশী পাড়ার অতুল সরকারের দিনকাটে অর্ধহার অনাহারে। বাবার রেখে যাওয়া মাটির ঘরই তার শেষ সম্বল। নিজের যৎসামান্য আয়ে ৩ ছেলে মেয়ের লেখাপড়া করানোর পাশাপাশি সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। ৭১ এর ক্ষতিগ্রস্ত অতুল সরকার পিতার স্বীকৃতি পেতে মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাক সেনারা যখন নির্বিচারে এ দেশের নিরীহ জনগণকে হত্যা শুরু করে। প্রাণ বাঁচাতে সে সময় বহুলোক এ দেশ ছেড়ে ভারতে পাড়ি জমাতে থাকে। এ সময় কেশবপুর সদর ইউনিয়নের মধ্যকুল রাজবংশী পাড়ার অশ্বিনী সরকার মুক্তিযোদ্ধে অংশগ্রহণ করতে তার স্ত্রী পারুল সরকার, ২ ছেলে অতুল সরকার, কার্তিক সরকার ও মেয়ে নির্মলা সরকারকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশে রওনা হন। পথিমধ্যে ঝিকরগাছা থানার হলদিপোতা গ্রামে পৌঁছলে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়। এ সময় অশ্বিনী সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ নিয়ে পাকসেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ওই যুদ্ধে অনেক মুক্তিযোদ্ধার মত অশ্বিনী সরকারও পাক বাহিনীর গণহত্যার শিকার হয়।

অশ্বিনী সরকারের ছেলে অতুল সরকার অভিযোগ করে বলেন, হলদিপোতা গ্রামে পাকসেনাদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধেও সময় তিনি শুধু বাবাকে হারাননি। মা পারুল সরকার, বোন নির্মলা সরকারকেও অদ্যাবধি খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার ধারণা ওই সময় মা, বোনও মারা গেছে। অতুল সরকারের ছেলে ও খুলনা সুন্দরবন কলেজের ৩ বর্ষের ছাত্র অভিজিৎ সরকার জানান, আমার পরিবারটি ৭১’র ক্ষতিগ্রস্ত। তার বাবা মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। অভাব অনটনের সংসার তাদের। খেয়ে না খেয়েই কোনভাবে দিন চলে। এরপরও পিতার যৎসামান্য আয়ে ৩ ভাই বোনের লেখাপড়া করানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২০ , ১৪ মাঘ ১৪২৬, ২ জমাদিউস সানি ১৪৪১

৩ স্বজন হারিয়েও শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি বঞ্চিত অতুল : মানবেতর জীবনে

প্রতিনিধি, কেশবপুর (যশোর)

১৯৭১ সালের গণহত্যায় স্বজন হারানো যশোরের কেশবপুরে মধ্যকুল রাজবংশী পাড়ার অতুল সরকারের দিনকাটে অর্ধহার অনাহারে। বাবার রেখে যাওয়া মাটির ঘরই তার শেষ সম্বল। নিজের যৎসামান্য আয়ে ৩ ছেলে মেয়ের লেখাপড়া করানোর পাশাপাশি সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। ৭১ এর ক্ষতিগ্রস্ত অতুল সরকার পিতার স্বীকৃতি পেতে মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাক সেনারা যখন নির্বিচারে এ দেশের নিরীহ জনগণকে হত্যা শুরু করে। প্রাণ বাঁচাতে সে সময় বহুলোক এ দেশ ছেড়ে ভারতে পাড়ি জমাতে থাকে। এ সময় কেশবপুর সদর ইউনিয়নের মধ্যকুল রাজবংশী পাড়ার অশ্বিনী সরকার মুক্তিযোদ্ধে অংশগ্রহণ করতে তার স্ত্রী পারুল সরকার, ২ ছেলে অতুল সরকার, কার্তিক সরকার ও মেয়ে নির্মলা সরকারকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশে রওনা হন। পথিমধ্যে ঝিকরগাছা থানার হলদিপোতা গ্রামে পৌঁছলে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়। এ সময় অশ্বিনী সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ নিয়ে পাকসেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ওই যুদ্ধে অনেক মুক্তিযোদ্ধার মত অশ্বিনী সরকারও পাক বাহিনীর গণহত্যার শিকার হয়।

অশ্বিনী সরকারের ছেলে অতুল সরকার অভিযোগ করে বলেন, হলদিপোতা গ্রামে পাকসেনাদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধেও সময় তিনি শুধু বাবাকে হারাননি। মা পারুল সরকার, বোন নির্মলা সরকারকেও অদ্যাবধি খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার ধারণা ওই সময় মা, বোনও মারা গেছে। অতুল সরকারের ছেলে ও খুলনা সুন্দরবন কলেজের ৩ বর্ষের ছাত্র অভিজিৎ সরকার জানান, আমার পরিবারটি ৭১’র ক্ষতিগ্রস্ত। তার বাবা মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। অভাব অনটনের সংসার তাদের। খেয়ে না খেয়েই কোনভাবে দিন চলে। এরপরও পিতার যৎসামান্য আয়ে ৩ ভাই বোনের লেখাপড়া করানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।