স্কুলের বিদায় সংবর্ধনায় যোগ দিতে এসে

ওয়াসার লরির ধাক্কায় চিরবিদায় আবিরের

সড়ক অবরোধ সহপাঠীদের

পরিবারের অনেক স্বপ্ন ছিল ছেলে আবীর হোসেনকে নিয়ে। একদিন অনেক বড় হবে তাদের ছেলে। প্রকৃত মানুষের মতো মানুষ হয়ে পরিবারের পাশাপাশি দেশের মুখও উজ্জল করবে। বাবা-মায়ের স্বপ্নপূরণে ঠিকমতো পড়াশুনাও করছিল আবীর। এ বছর রাজধানীর ওয়ারী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল তার। পরীক্ষার বাকি এক সপ্তাহেরও কম। এ উপলক্ষে স্কুল কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীদের জন্য গতকাল বিদায় সংবর্ধনা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠান শেষে প্রবেশপত্রও দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওয়াসার পানিবাহী বেপরোয়া একটি লরির চাপায় পরিবারের স্বপ্নের সঙ্গে চিরতরে নিভে গেছে আবীরের জীবন প্রদীপ। এদিকে, আবীরের নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই পরীক্ষার্থীদের উল্লাস রূপ নেয় বিষাদে। সহপাঠীর এমন করুণ মৃত্যুতে বিচার চেয়ে রাজপথে নেমে আসে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ঘটনার পর ঘাতক চালককে আটক করেছে পুলিশ।

পরিবার ও স্কুল সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা। এ উপলক্ষে সোমবার বেলা ১১টা থেকে ওয়ারী উচ্চবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীদের জন্য বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করে। সকাল থেকেই পরীক্ষার্থীরা দল বেঁধে আসতে থাকে স্কুল প্রাঙ্গণে। নেচে গেয়ে, উচ্ছ্বাস-আনন্দে মাতিয়ে তুলছিল পুরো স্কুল। অন্যসব শিক্ষার্থীদের মতো সকালের দিকে আবীরও বাসা থেকে বের হয় বিদায়ী সংবর্ধনায় যোগ দিতে। কিন্তু দুপুরের আগে লরির চাপায় তার মৃত্যুতে আনন্দ-উৎসব মুহূর্তেই বিষাদে রূপ নেয়।

সহপাঠীরা জানায়, গতকাল সকালে ৫৩/৪ জয়কালী মন্দির এলাকায় নিজের বাসা থেকে পাঞ্জাবি-পায়জামা পড়ে বন্ধুদের সঙ্গে স্কুলের উদ্দেশে বের হয় আবীর। কয়েক বন্ধুকে নিয়ে ওয়ারী এলাকায় বলধা গার্ডেনের পাশে সড়ক দিয়ে ঘুরে যাচ্ছিল সে। এই বলধা গার্ডেনের উত্তর পাশের গেটের সামনেই ওয়াসার পানির পাম্প স্টেশন। সেখান থেকে পানি নেয়ার পর বেপরোয়া গতিতে থাকা ওয়াসার একটি পানির লরি চাপা দেয় আবীরকে। শুধু চাপা দিয়েই ক্ষ্যান্ত হয়নি, মাটিতে লুটিয়ে পড়া শিক্ষার্থীর মাথার ওপরে উঠিয়ে দেয়া হয় লরিটির চাকা। মুহূর্তেই হাস্যোজ্জল আবীরের শরীর রক্তাক্ত-ক্ষতবিক্ষত হয়ে রাস্তার ওপরে পরে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশের সহায়তায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর আবীরের সঙ্গে থাকা সহপাঠী ও এলাকাবাসী লরির চালক চুন্নু মিয়াকে (৪৯) আটক করে পুলিশের হস্তান্তর করে।

ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের (পূর্ব) ওয়ারী জোনের সহকারী কমিশনার তারিকুল ইসলাম বলেন, দুপুর ১২টার পর দুর্ঘটনাটি ঘটে। ওয়াসার পানিবাহী লরিসহ (ঢাকা মেট্রো ঢ ১১-০১১৪) চালককে আটক করে ওয়ারী থানা হেফাজতে আনা হয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, মাত্র ১১ মাস আগে আবীরের মা মিনু বেগম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পাঁচ বছর আগে পানিতে ডুবে প্রাণ হারান তার বড় ভাই ফয়সাল হোসেন। আবীরের বাবা মো. হানিফ মিয়া পুরান ঢাকার নবাবপুরে খুচরা যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ী। বড় ছেলের মৃত্যুর পর হানিফ মিয়ার তিন সন্তানের মধ্যে আবীর ছিল সবার ছোট। বাকি দুই বোন তার চেয়ে বড়। মায়ের আকস্মিক মৃত্যুর পর শোকার্ত এই কিশোর অধিকাংশ সময় কাটাত বড় বোন আমেনা বেগমের বাসায়। বড় ছেলেকে হারালে ছোট ছেলেকে নিয়েই নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন হানিফ মিয়া।

গতকাল দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের নিথর দেহ দেখে ডুকরে ওঠেন তিনি। চিৎকার করে কাঁদছিলেন আর বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। বেশ কিছুক্ষণ পর সম্বিত ফিরে এলে হানিফ মিয়া বলেন- বড় ছেলের মৃত্যুর পর ছোট ছেলেকেই নিয়ে সব আশা ভরসা ছিল। তার স্ত্রী অসুস্থ অবস্থায় সব সময় আবীরকে নিয়ে ভাবতেন। কিন্তু ঘাতক লরি তার ছেলেকে কেড়ে নিয়ে সব স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে। বিলাপ করে তিনি আরও বলেন, সকালে ছেলেকে বাসায় রেখে আমি দোকানে গেলাম। কিছুক্ষণ পরেই ফোন আসলো ছেলে আমার গাড়ির নিচে পড়েছে। আমার আর কিছুই থাকল না। এখন আমি কী নিয়ে বাঁচমু। আমার তো সব শেষ হয়ে গেল। তিনি ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেন।

এদিকে, আবীরের মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে তার সহপাঠীরা রাস্তায় নেমে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এতে বেশ কিছু সময় যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে ওয়ারী উচ্চবিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা রাস্তা থেকে সরে গিয়ে স্কুলের সামনে মানববন্ধন করে দোষি চালকের শাস্তির দাবি জানায়। ওয়ারী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল কুদ্দুস বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা ছাড়াও স্কুলে বার্ষিক মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল। মিলাদের পর পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্রও দেওয়ার কথা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে স্থানীয় সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদেরও আসার কথা ছিল। বেলা ১১টার পর অনুষ্ঠান শুরু হয়। কিন্তু অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ পর আবীরের দুর্ঘটনার সংবাদ জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে শনাক্ত করি। পরে স্কুলের সব কর্মসূচি বন্ধ রেখে কেবল আবীরের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল করা হয়।

দুর্ঘটনার কারণ জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, আমরা আবীরের সহপাঠীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি- ওয়াসার গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে চলছিল। ওয়ারী একটি আবাসিক এলাকা হলেও এখানে ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন বেপরোয়াভাবেই চলাচল করে। ওয়ারী থানার ওসি আজিজুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীকে দাফন শেষে তার বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। এই মামলা লরির চালক ও সহকারীকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২০ , ১৪ মাঘ ১৪২৬, ২ জমাদিউস সানি ১৪৪১

স্কুলের বিদায় সংবর্ধনায় যোগ দিতে এসে

ওয়াসার লরির ধাক্কায় চিরবিদায় আবিরের

সড়ক অবরোধ সহপাঠীদের

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

পরিবারের অনেক স্বপ্ন ছিল ছেলে আবীর হোসেনকে নিয়ে। একদিন অনেক বড় হবে তাদের ছেলে। প্রকৃত মানুষের মতো মানুষ হয়ে পরিবারের পাশাপাশি দেশের মুখও উজ্জল করবে। বাবা-মায়ের স্বপ্নপূরণে ঠিকমতো পড়াশুনাও করছিল আবীর। এ বছর রাজধানীর ওয়ারী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল তার। পরীক্ষার বাকি এক সপ্তাহেরও কম। এ উপলক্ষে স্কুল কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীদের জন্য গতকাল বিদায় সংবর্ধনা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠান শেষে প্রবেশপত্রও দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওয়াসার পানিবাহী বেপরোয়া একটি লরির চাপায় পরিবারের স্বপ্নের সঙ্গে চিরতরে নিভে গেছে আবীরের জীবন প্রদীপ। এদিকে, আবীরের নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই পরীক্ষার্থীদের উল্লাস রূপ নেয় বিষাদে। সহপাঠীর এমন করুণ মৃত্যুতে বিচার চেয়ে রাজপথে নেমে আসে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ঘটনার পর ঘাতক চালককে আটক করেছে পুলিশ।

পরিবার ও স্কুল সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা। এ উপলক্ষে সোমবার বেলা ১১টা থেকে ওয়ারী উচ্চবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীদের জন্য বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করে। সকাল থেকেই পরীক্ষার্থীরা দল বেঁধে আসতে থাকে স্কুল প্রাঙ্গণে। নেচে গেয়ে, উচ্ছ্বাস-আনন্দে মাতিয়ে তুলছিল পুরো স্কুল। অন্যসব শিক্ষার্থীদের মতো সকালের দিকে আবীরও বাসা থেকে বের হয় বিদায়ী সংবর্ধনায় যোগ দিতে। কিন্তু দুপুরের আগে লরির চাপায় তার মৃত্যুতে আনন্দ-উৎসব মুহূর্তেই বিষাদে রূপ নেয়।

সহপাঠীরা জানায়, গতকাল সকালে ৫৩/৪ জয়কালী মন্দির এলাকায় নিজের বাসা থেকে পাঞ্জাবি-পায়জামা পড়ে বন্ধুদের সঙ্গে স্কুলের উদ্দেশে বের হয় আবীর। কয়েক বন্ধুকে নিয়ে ওয়ারী এলাকায় বলধা গার্ডেনের পাশে সড়ক দিয়ে ঘুরে যাচ্ছিল সে। এই বলধা গার্ডেনের উত্তর পাশের গেটের সামনেই ওয়াসার পানির পাম্প স্টেশন। সেখান থেকে পানি নেয়ার পর বেপরোয়া গতিতে থাকা ওয়াসার একটি পানির লরি চাপা দেয় আবীরকে। শুধু চাপা দিয়েই ক্ষ্যান্ত হয়নি, মাটিতে লুটিয়ে পড়া শিক্ষার্থীর মাথার ওপরে উঠিয়ে দেয়া হয় লরিটির চাকা। মুহূর্তেই হাস্যোজ্জল আবীরের শরীর রক্তাক্ত-ক্ষতবিক্ষত হয়ে রাস্তার ওপরে পরে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশের সহায়তায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর আবীরের সঙ্গে থাকা সহপাঠী ও এলাকাবাসী লরির চালক চুন্নু মিয়াকে (৪৯) আটক করে পুলিশের হস্তান্তর করে।

ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের (পূর্ব) ওয়ারী জোনের সহকারী কমিশনার তারিকুল ইসলাম বলেন, দুপুর ১২টার পর দুর্ঘটনাটি ঘটে। ওয়াসার পানিবাহী লরিসহ (ঢাকা মেট্রো ঢ ১১-০১১৪) চালককে আটক করে ওয়ারী থানা হেফাজতে আনা হয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, মাত্র ১১ মাস আগে আবীরের মা মিনু বেগম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পাঁচ বছর আগে পানিতে ডুবে প্রাণ হারান তার বড় ভাই ফয়সাল হোসেন। আবীরের বাবা মো. হানিফ মিয়া পুরান ঢাকার নবাবপুরে খুচরা যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ী। বড় ছেলের মৃত্যুর পর হানিফ মিয়ার তিন সন্তানের মধ্যে আবীর ছিল সবার ছোট। বাকি দুই বোন তার চেয়ে বড়। মায়ের আকস্মিক মৃত্যুর পর শোকার্ত এই কিশোর অধিকাংশ সময় কাটাত বড় বোন আমেনা বেগমের বাসায়। বড় ছেলেকে হারালে ছোট ছেলেকে নিয়েই নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন হানিফ মিয়া।

গতকাল দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের নিথর দেহ দেখে ডুকরে ওঠেন তিনি। চিৎকার করে কাঁদছিলেন আর বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। বেশ কিছুক্ষণ পর সম্বিত ফিরে এলে হানিফ মিয়া বলেন- বড় ছেলের মৃত্যুর পর ছোট ছেলেকেই নিয়ে সব আশা ভরসা ছিল। তার স্ত্রী অসুস্থ অবস্থায় সব সময় আবীরকে নিয়ে ভাবতেন। কিন্তু ঘাতক লরি তার ছেলেকে কেড়ে নিয়ে সব স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে। বিলাপ করে তিনি আরও বলেন, সকালে ছেলেকে বাসায় রেখে আমি দোকানে গেলাম। কিছুক্ষণ পরেই ফোন আসলো ছেলে আমার গাড়ির নিচে পড়েছে। আমার আর কিছুই থাকল না। এখন আমি কী নিয়ে বাঁচমু। আমার তো সব শেষ হয়ে গেল। তিনি ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেন।

এদিকে, আবীরের মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে তার সহপাঠীরা রাস্তায় নেমে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এতে বেশ কিছু সময় যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে ওয়ারী উচ্চবিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা রাস্তা থেকে সরে গিয়ে স্কুলের সামনে মানববন্ধন করে দোষি চালকের শাস্তির দাবি জানায়। ওয়ারী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল কুদ্দুস বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা ছাড়াও স্কুলে বার্ষিক মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল। মিলাদের পর পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্রও দেওয়ার কথা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে স্থানীয় সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদেরও আসার কথা ছিল। বেলা ১১টার পর অনুষ্ঠান শুরু হয়। কিন্তু অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ পর আবীরের দুর্ঘটনার সংবাদ জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে শনাক্ত করি। পরে স্কুলের সব কর্মসূচি বন্ধ রেখে কেবল আবীরের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল করা হয়।

দুর্ঘটনার কারণ জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, আমরা আবীরের সহপাঠীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি- ওয়াসার গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে চলছিল। ওয়ারী একটি আবাসিক এলাকা হলেও এখানে ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন বেপরোয়াভাবেই চলাচল করে। ওয়ারী থানার ওসি আজিজুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীকে দাফন শেষে তার বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। এই মামলা লরির চালক ও সহকারীকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।