পাবনার সুজানগরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সমর্থিত দুই গ্রুপের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি গঠন কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও বাড়ি-ঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার দুপুরে জেলার সুজানগর উপজেলার আহমেদপুর ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ১৫ জন আহত ও ১০/১২টি বাড়ি ভাঙচুরের পর লুটপাট চালানো হয় বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের।
পাবনার আমিনপুর থানার উপ-পরিদর্শক মফিজুল ইসলাম ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে গত শনিবার সন্ধ্যায় আহমেদপুর ইউনিয়নের বিরাহীমপুর মীর্জা আবদুর রশিদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এক বর্ধিত সভার আয়োজন করে। সভায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি গঠন কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন বাবু গ্রুপ এবং আবদুর রশিদ গ্রুপের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওহাব লাঞ্ছিত হয়। এরই জের ধরে রোববার দুপুর দেড়টার দিকে বাবু গ্রুপের লোকজন রশিদ গ্রুপের ওপর হামলা চালিয়ে উপর্যুপরি মারধর করে। এতে রশিদসহ তার গ্রুপের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। এ সময় হামলাকারীরা রশিদ গ্রুপের লোকজনের প্রায় ১০/১২টি বাড়ি-ঘর ভাঙচুর এবং লুটপাট চালায় বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্থ মজিদের স্ত্রী আফরোজা খাতুনের। ক্ষতিগ্রস্থ দেলোয়ারের স্ত্রী শাহানাজ খাতুন অভিযোগ করেন, রশিদ গ্রুপের সমর্থক হওয়ায় আমার স্বামী দেলোয়ার হোসেনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাঁত ঘরে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ১০টি তাঁতের সুতার রিম কেটে নষ্ট করে দেয় সন্ত্রাসীরা। আমরা এই ঘঁনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। আওয়ামী লীগ করে বলেওই সন্ত্রাসীরা আমাদের এমন ক্ষতি করে দিলেন। এ বিষয়ে স্থানীয় আ’লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন বাবু বলেন, আমি বা আমার লোকজন হামলা করে নাই। উল্টো রশিদ গ্রুপের লোকজন হামলা চালিয়ে আমার ৪ জন লোককে মারধর করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তবে এই ঘটনায় আবদুর রশিদের বাড়ি গিয়ে ভাঙচুর দেখা যায় এবং উপস্থিত লোকজন বলেন, রশিদ চিকিৎসার জন্যে হাসপাতালে আছেন। তবে কোন হাসপাতালে আছেন কেউই বলতে পারেননি।
রশিদ গ্রুপের নেতৃত্ব দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সুজানগর পৌর মেয়র আবদুল ওহাব এবং বাবু গ্রুপের নেতৃত্ব দেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহিন বলেন, আমি ওই সভায় উপস্থিত ছিলাম না। তবে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে যেটুকু শুনেছি তাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দায়িত্বশীল আচরণ করেননি। এই ঘটনার সঙ্গে আমার লোকজনের সম্পৃক্ততা নেই।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওহাব বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনের লোকজন উত্তেজিত হয়ে মঞ্চে চেয়ার ছুড়ে মারেন। তারই জের ধরে রোববার দলের ত্যাগী লোকজনের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও হামলা চালিয়েছেন। চেয়ারম্যান শাহিন এসব কাজ করাচ্ছেন। আমার লোকজনকে মারধর করে পুলিশ দিয়েও হয়রানি করাচ্ছেন। সব সময় এমপি তাদের সঙ্গে আছেন বলে উদ্ধত্য আচরণ করেন, যা কখনওই কাম্য নয়। পরে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণে আসে এবং কমিটি গঠন স্থগিত হয়ে যায়। এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবিরের মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। আমিনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোমিনুল ইসলাম পিপিএম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২০ , ১৪ মাঘ ১৪২৬, ২ জমাদিউস সানি ১৪৪১
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, পাবনা
পাবনার সুজানগরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সমর্থিত দুই গ্রুপের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি গঠন কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও বাড়ি-ঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার দুপুরে জেলার সুজানগর উপজেলার আহমেদপুর ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ১৫ জন আহত ও ১০/১২টি বাড়ি ভাঙচুরের পর লুটপাট চালানো হয় বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের।
পাবনার আমিনপুর থানার উপ-পরিদর্শক মফিজুল ইসলাম ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে গত শনিবার সন্ধ্যায় আহমেদপুর ইউনিয়নের বিরাহীমপুর মীর্জা আবদুর রশিদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এক বর্ধিত সভার আয়োজন করে। সভায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি গঠন কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন বাবু গ্রুপ এবং আবদুর রশিদ গ্রুপের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওহাব লাঞ্ছিত হয়। এরই জের ধরে রোববার দুপুর দেড়টার দিকে বাবু গ্রুপের লোকজন রশিদ গ্রুপের ওপর হামলা চালিয়ে উপর্যুপরি মারধর করে। এতে রশিদসহ তার গ্রুপের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। এ সময় হামলাকারীরা রশিদ গ্রুপের লোকজনের প্রায় ১০/১২টি বাড়ি-ঘর ভাঙচুর এবং লুটপাট চালায় বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্থ মজিদের স্ত্রী আফরোজা খাতুনের। ক্ষতিগ্রস্থ দেলোয়ারের স্ত্রী শাহানাজ খাতুন অভিযোগ করেন, রশিদ গ্রুপের সমর্থক হওয়ায় আমার স্বামী দেলোয়ার হোসেনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাঁত ঘরে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ১০টি তাঁতের সুতার রিম কেটে নষ্ট করে দেয় সন্ত্রাসীরা। আমরা এই ঘঁনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। আওয়ামী লীগ করে বলেওই সন্ত্রাসীরা আমাদের এমন ক্ষতি করে দিলেন। এ বিষয়ে স্থানীয় আ’লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন বাবু বলেন, আমি বা আমার লোকজন হামলা করে নাই। উল্টো রশিদ গ্রুপের লোকজন হামলা চালিয়ে আমার ৪ জন লোককে মারধর করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তবে এই ঘটনায় আবদুর রশিদের বাড়ি গিয়ে ভাঙচুর দেখা যায় এবং উপস্থিত লোকজন বলেন, রশিদ চিকিৎসার জন্যে হাসপাতালে আছেন। তবে কোন হাসপাতালে আছেন কেউই বলতে পারেননি।
রশিদ গ্রুপের নেতৃত্ব দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সুজানগর পৌর মেয়র আবদুল ওহাব এবং বাবু গ্রুপের নেতৃত্ব দেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহিন বলেন, আমি ওই সভায় উপস্থিত ছিলাম না। তবে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে যেটুকু শুনেছি তাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দায়িত্বশীল আচরণ করেননি। এই ঘটনার সঙ্গে আমার লোকজনের সম্পৃক্ততা নেই।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওহাব বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনের লোকজন উত্তেজিত হয়ে মঞ্চে চেয়ার ছুড়ে মারেন। তারই জের ধরে রোববার দলের ত্যাগী লোকজনের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও হামলা চালিয়েছেন। চেয়ারম্যান শাহিন এসব কাজ করাচ্ছেন। আমার লোকজনকে মারধর করে পুলিশ দিয়েও হয়রানি করাচ্ছেন। সব সময় এমপি তাদের সঙ্গে আছেন বলে উদ্ধত্য আচরণ করেন, যা কখনওই কাম্য নয়। পরে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণে আসে এবং কমিটি গঠন স্থগিত হয়ে যায়। এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবিরের মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। আমিনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোমিনুল ইসলাম পিপিএম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।