অ্যানেস্থেসিস্ট নেই : দুই মাস ধরে অস্ত্রোপচার বন্ধ!

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের প্রায় ২ মাস ধরে অজ্ঞান চিকিৎসক না থাকায় অচল হয়ে আছে অপারেশন থিয়ারটার। অন্যদিকে ডিজিটাল এক্সরে মেশিনটি নষ্ট ৫ মাস ধরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও কাজ হচ্ছে না প্রায় ২ বছর। এ কারণে জেলার দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। এতে হয়রানির শিকার হচ্ছে গরিব অসহায় রোগীরা। সচ্ছল রোগীরা অর্থের বিনিময়ে বাহির থেকে অপারেশন করাতে পারলেও চরম ভোগান্তিতে পড়ের অসহায় দরিদ্র রোগীরা। অপরদিকে একটি স্বার্থান্বেষী মহল এ সুযোগে রোগীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে। তাই ভুক্তভোগীদের অভিমত জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে জেলা প্রশাসককে এ বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দ্রুত অবগত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া উচিত।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ নবেম্বর থেকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের অপারেশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৩ জন চিকিৎসক বদলি হয়ে চলে যায়। এরা হলো অজ্ঞান চিকিৎসক ফকরুল আলম, গাইনী চিকিৎসক মৃণাল কান্তি ও সার্জারি চিকিৎসক প্রদীপ কুমার। এদের মধ্যে সার্জারি চিকিৎসক মিতু দেবনাথকে ঝালকাঠিতে পোস্টিং দেয়া হলেও অজ্ঞান ও গাইনী চিকিৎসক পদে নিয়োগ না দেয়ায় অপারেশন থিয়েটার চালু করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় চরম বিপাকে পড়েছে জেলার দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীরা। তাই অপারেশনের রোগী নিয়ে বরিশালে চিকিৎসা করাতে স্বজনদের ৪-৫ গুণ বেশি টাকা গুণতে হচ্ছে বলে জানা যায়। সূত্র জানায়, সদর হাসপাতালে সিজার অপারেশন করাতে খরচ পরে মাত্র ১ থেকে ২ হাজার টাকা। একই অপারেশন করাতে বাইরে দিতে হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। সার্জারি অপারেশন করাতে সদর হাসপাতালে খরচ হয় ১ হাজার টাকা। বাহিরে প্রয়োজন হয় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ডিজিটাল এক্সরে মেশিন নষ্ট হয়ে আছে ৫ মাস ধরে। সরকারিভাবে মেশিনটি সচল করতে চিঠি চালাচালি করতেই এত মাস পার হলেও দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এ সুযোগে বাহিরে এক্সরে করাতে ২-৩ গুণ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে প্যাথলজি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে। এ হাসপাতালের আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন নষ্ট হয়ে আছে প্রায় ২ বছর ধরে। চার চারটি অত্যাধুনিক মেশিন থাকলেও সেগুলো অকেজ পরে থাকায় নষ্ট হবার উপক্রম হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. শ্যামল কৃষ্ণ হাওলাদার বলেন, এই মুহূর্তে মেজর কোন অপারেশন হচ্ছে না। কারণ অজ্ঞান ও সিজার চিকিৎসক নেই। গত ৩০ নভেম্বর থেকে এ দু’জনের সঙ্গে সার্জারি চিকিৎসকও বদলি হয়ে যায়। এরপর নতুন সার্জারি চিকিৎসক যোগদান করলেও অন্য দু’জনের পদ এখনও খালি। এ বিষয়ে আমি মন্ত্রণালয়ে বার বার চিঠি লেখা ছাড়াও সরাসরি সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছি। কবে নাগাদ ডাক্তার পাওয়া যাবে তা বলা যাচ্ছে না।

শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২০ , ১৭ মাঘ ১৪২৬, ৫ জমাদিউল সানি ১৪৪১

অ্যানেস্থেসিস্ট নেই : দুই মাস ধরে অস্ত্রোপচার বন্ধ!

দিলীপ মণ্ডল, ঝালকাঠি

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের প্রায় ২ মাস ধরে অজ্ঞান চিকিৎসক না থাকায় অচল হয়ে আছে অপারেশন থিয়ারটার। অন্যদিকে ডিজিটাল এক্সরে মেশিনটি নষ্ট ৫ মাস ধরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও কাজ হচ্ছে না প্রায় ২ বছর। এ কারণে জেলার দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। এতে হয়রানির শিকার হচ্ছে গরিব অসহায় রোগীরা। সচ্ছল রোগীরা অর্থের বিনিময়ে বাহির থেকে অপারেশন করাতে পারলেও চরম ভোগান্তিতে পড়ের অসহায় দরিদ্র রোগীরা। অপরদিকে একটি স্বার্থান্বেষী মহল এ সুযোগে রোগীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে। তাই ভুক্তভোগীদের অভিমত জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে জেলা প্রশাসককে এ বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দ্রুত অবগত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া উচিত।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ নবেম্বর থেকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের অপারেশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৩ জন চিকিৎসক বদলি হয়ে চলে যায়। এরা হলো অজ্ঞান চিকিৎসক ফকরুল আলম, গাইনী চিকিৎসক মৃণাল কান্তি ও সার্জারি চিকিৎসক প্রদীপ কুমার। এদের মধ্যে সার্জারি চিকিৎসক মিতু দেবনাথকে ঝালকাঠিতে পোস্টিং দেয়া হলেও অজ্ঞান ও গাইনী চিকিৎসক পদে নিয়োগ না দেয়ায় অপারেশন থিয়েটার চালু করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় চরম বিপাকে পড়েছে জেলার দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীরা। তাই অপারেশনের রোগী নিয়ে বরিশালে চিকিৎসা করাতে স্বজনদের ৪-৫ গুণ বেশি টাকা গুণতে হচ্ছে বলে জানা যায়। সূত্র জানায়, সদর হাসপাতালে সিজার অপারেশন করাতে খরচ পরে মাত্র ১ থেকে ২ হাজার টাকা। একই অপারেশন করাতে বাইরে দিতে হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। সার্জারি অপারেশন করাতে সদর হাসপাতালে খরচ হয় ১ হাজার টাকা। বাহিরে প্রয়োজন হয় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ডিজিটাল এক্সরে মেশিন নষ্ট হয়ে আছে ৫ মাস ধরে। সরকারিভাবে মেশিনটি সচল করতে চিঠি চালাচালি করতেই এত মাস পার হলেও দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এ সুযোগে বাহিরে এক্সরে করাতে ২-৩ গুণ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে প্যাথলজি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে। এ হাসপাতালের আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন নষ্ট হয়ে আছে প্রায় ২ বছর ধরে। চার চারটি অত্যাধুনিক মেশিন থাকলেও সেগুলো অকেজ পরে থাকায় নষ্ট হবার উপক্রম হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. শ্যামল কৃষ্ণ হাওলাদার বলেন, এই মুহূর্তে মেজর কোন অপারেশন হচ্ছে না। কারণ অজ্ঞান ও সিজার চিকিৎসক নেই। গত ৩০ নভেম্বর থেকে এ দু’জনের সঙ্গে সার্জারি চিকিৎসকও বদলি হয়ে যায়। এরপর নতুন সার্জারি চিকিৎসক যোগদান করলেও অন্য দু’জনের পদ এখনও খালি। এ বিষয়ে আমি মন্ত্রণালয়ে বার বার চিঠি লেখা ছাড়াও সরাসরি সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছি। কবে নাগাদ ডাক্তার পাওয়া যাবে তা বলা যাচ্ছে না।