চিঠিপত্র

চাই সুষ্ঠু ভোট

শনিবার রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন। জাতীয় কিংবা স্থানীয় সরকার, সব নির্বাচনের আগে অনেক প্রার্থীর কাছ থেকে নানা অভিযোগ পাওয়া যায়। বিশেষ করে বিরোধী রাজনীতির অনুসারী প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে থাকেন। তাদের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন সরকার সমর্থিত প্রার্থীদের বেশি সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, পক্ষান্তরে বিরোধী পক্ষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে এমন কোনো নির্বাচন হয়নি, যে নির্বাচনে সরকার পক্ষ বা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি। আশার কথা, এবার বড় রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রার্থী দিয়েছে। ঢাকার দুই সিটি এলাকায় পুরো মাসটিই নির্বাচনী আবহে কেটেছে।

নির্বাচনে জনগণ যাকে চাইবে তিনিই বিজয়ী হবেন- গণতন্ত্রে এটাই রীতি। তাই প্রত্যেক প্রার্থীরই জনগণের ওপর আস্থা থাকাটা জরুরি। জোরজবরদস্তি বা অগণতান্ত্রিক কোন পন্থা অবলম্বন করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার যে কোন অপচেষ্টা মানুষ অপছন্দ করে। নির্বাচনের পরিবেশও তাতে ব্যাহত হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো নিশ্চয় তেমন অপচেষ্টা মোকাবিলা করবে। পাশাপাশি জনগণও প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠবে। জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতেই নির্ধারিত হয় জয়-পরাজয়। কাজেই জয়ের জন্য নির্বাচনের মাঠে অবতীর্ণ হলেও পরাজয় মেনে নেয়ার মানসিকতা অবশ্যই সব দলের মধ্যে থাকতে হবে।

ভোট উৎসবে সবাই সমানভাবে অংশ নিতে পারে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। আমরা আশা করব, সবার জন্য সমান সুবিধা নিশ্চিত করবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন শব্দের মধ্যে একটা সর্বজনীনতা বিদ্যমান। এই সর্বজনীনতাকে পুঁজি করে একটি স্বতঃস্ফূর্ত, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন গণতন্ত্রের ভিতকে মজবুত করে তোলে ও বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে। মনে রাখা প্রয়োজন, ছোট্ট একটি ভুল ভবিষ্যতে বড় ভুলকে উৎসাহিত করে। ফলে দেশ ও সমাজের সর্বনাশে তা সহায়ক হয়।

নির্বাচনের ভোটাররা যেন অবাধে ভোট দিতে কেন্দ্রে আসতে পারেন, সে নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে, নির্বাচনের সামাজিক বাস্তবতা অনেক। এটি সমাজ নির্মাণের একটি শক্তিশালী ভিত্তি।

সবার অংশগ্রহণে একটি সুন্দর শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হোক। মেয়র বা কাউন্সিলর যেই হোক জনগণ তাদের নাগরিক অধিকারের নিশ্চয়তা পাক। এটাই কাম্য।

আর কে চৌধুরী

খেলাপি ঋণ রোধে আইন

ঋণ খেলাপ বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এক মূর্তমান অভিশাপ। এ অভিশাপ দেশের অর্থনীতিকে আপন মহিমায় আত্মপ্রকাশে বাধা সৃষ্টি করছে। দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ঋণখেলাপি নামের আপদেরা। ব্যাংক পরিচালনার সঙ্গে জড়িত শীর্ষ কর্তাদের একটি অসৎ অংশ, গুটিকয় অসৎ ব্যবসায়ী ও রাজনীতির সঙ্গে জড়িত সততার সংকটে ভোগা কিছু মানুষ দেশের ব্যাংকগুলোর অর্থকড়ি লোপাট করছে ব্যাংক ঋণ নিয়ে লোপাট করার ঘৃণ্য পদ্ধতিতে। ঋণখেলাপি দের সামাল দেওয়ার কোনো কর্তৃপক্ষ দেশে না থাকায় অপরাধবান্ধব পরিবেশে তারা লুট চালিয়ে যাচ্ছে। এ নৈরাজ্য ঠেকাতে ঋণখেলাপিদের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করা, গাড়ি রেজিস্ট্রেশন, ট্রেড লাইসেন্সপ্রাপ্তি ও বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারির বিধান রেখে নতুন ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২০-এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। নতুন এ আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যারা স্বেচ্ছায় ঋণখেলাপি হবেন তারা রাজনৈতিক কোন পদ পাবেন না। এমনকি এরা বিদেশ ভ্রমণ কিংবা গাড়ি, বাড়ি রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন না। ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু থেকে শুরু করে কোম্পানি নিবন্ধন করতেও পারবেন না তারা। এ ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারবে সরকার।

ঋণখেলাপি ঠেকাতে এ অপকর্মের হোতাদের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করার প্রস্তাব দৃশ্যত একটি ভালো উদ্যোগ। তবে ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত মতলববাজদের বাদ সাধতে আইনটি কতটা সুফল দেবে, তা স্পষ্ট নয়। আমাদের মতে, শুধু ঋণখেলাপি নয়, তার পরিবারের সদস্যদের ক্ষেত্রে একই ধরনের বিধিনিষেধ আরোপের কথা ভাবতে হবে। তা না হলে কোটি কোটি টাকা লুটের হোতাদের বাদ সাধা আসলেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

শুভ্র ঘোষ

নতুন বাজার, কলকলিয়াপাড়া, মাগুরা।

নির্বাচন কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

ঢাকা সিটি নির্বাচনে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের দুজন কমিশনার প্রার্থী অন্যায়ভাবে নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভুয়া মেজিস্ট্রেটকে ১২ লাখ টাকা দিয়েছেন। টাকা দেয়ার পর যখন বুঝতে পারলেন মাধ্যমটি ভুয়া তখন আবার থানায় অভিযোগ করেছেন। এর প্রক্ষিতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খোঁজ করার আশ্বাস দিয়েছেন।

এরকম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়ার মানসিকতা সম্পন্ন কোন লোক কি নির্বাচনের প্রার্থী থাকতে পারে? সেজন্য নির্বাচনের এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনারের কাছ থেকে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করছি।

দুলাল চন্দ্র মজুমদার

সহকারী অধ্যাপক

হিসাববাজ্ঞান বিভাগ

অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয়

বরিশাল

আরও খবর

শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২০ , ১৭ মাঘ ১৪২৬, ৫ জমাদিউল সানি ১৪৪১

চিঠিপত্র

চাই সুষ্ঠু ভোট

শনিবার রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন। জাতীয় কিংবা স্থানীয় সরকার, সব নির্বাচনের আগে অনেক প্রার্থীর কাছ থেকে নানা অভিযোগ পাওয়া যায়। বিশেষ করে বিরোধী রাজনীতির অনুসারী প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে থাকেন। তাদের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন সরকার সমর্থিত প্রার্থীদের বেশি সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, পক্ষান্তরে বিরোধী পক্ষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে এমন কোনো নির্বাচন হয়নি, যে নির্বাচনে সরকার পক্ষ বা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি। আশার কথা, এবার বড় রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রার্থী দিয়েছে। ঢাকার দুই সিটি এলাকায় পুরো মাসটিই নির্বাচনী আবহে কেটেছে।

নির্বাচনে জনগণ যাকে চাইবে তিনিই বিজয়ী হবেন- গণতন্ত্রে এটাই রীতি। তাই প্রত্যেক প্রার্থীরই জনগণের ওপর আস্থা থাকাটা জরুরি। জোরজবরদস্তি বা অগণতান্ত্রিক কোন পন্থা অবলম্বন করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার যে কোন অপচেষ্টা মানুষ অপছন্দ করে। নির্বাচনের পরিবেশও তাতে ব্যাহত হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো নিশ্চয় তেমন অপচেষ্টা মোকাবিলা করবে। পাশাপাশি জনগণও প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠবে। জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতেই নির্ধারিত হয় জয়-পরাজয়। কাজেই জয়ের জন্য নির্বাচনের মাঠে অবতীর্ণ হলেও পরাজয় মেনে নেয়ার মানসিকতা অবশ্যই সব দলের মধ্যে থাকতে হবে।

ভোট উৎসবে সবাই সমানভাবে অংশ নিতে পারে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। আমরা আশা করব, সবার জন্য সমান সুবিধা নিশ্চিত করবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন শব্দের মধ্যে একটা সর্বজনীনতা বিদ্যমান। এই সর্বজনীনতাকে পুঁজি করে একটি স্বতঃস্ফূর্ত, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন গণতন্ত্রের ভিতকে মজবুত করে তোলে ও বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে। মনে রাখা প্রয়োজন, ছোট্ট একটি ভুল ভবিষ্যতে বড় ভুলকে উৎসাহিত করে। ফলে দেশ ও সমাজের সর্বনাশে তা সহায়ক হয়।

নির্বাচনের ভোটাররা যেন অবাধে ভোট দিতে কেন্দ্রে আসতে পারেন, সে নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে, নির্বাচনের সামাজিক বাস্তবতা অনেক। এটি সমাজ নির্মাণের একটি শক্তিশালী ভিত্তি।

সবার অংশগ্রহণে একটি সুন্দর শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হোক। মেয়র বা কাউন্সিলর যেই হোক জনগণ তাদের নাগরিক অধিকারের নিশ্চয়তা পাক। এটাই কাম্য।

আর কে চৌধুরী

খেলাপি ঋণ রোধে আইন

ঋণ খেলাপ বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এক মূর্তমান অভিশাপ। এ অভিশাপ দেশের অর্থনীতিকে আপন মহিমায় আত্মপ্রকাশে বাধা সৃষ্টি করছে। দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ঋণখেলাপি নামের আপদেরা। ব্যাংক পরিচালনার সঙ্গে জড়িত শীর্ষ কর্তাদের একটি অসৎ অংশ, গুটিকয় অসৎ ব্যবসায়ী ও রাজনীতির সঙ্গে জড়িত সততার সংকটে ভোগা কিছু মানুষ দেশের ব্যাংকগুলোর অর্থকড়ি লোপাট করছে ব্যাংক ঋণ নিয়ে লোপাট করার ঘৃণ্য পদ্ধতিতে। ঋণখেলাপি দের সামাল দেওয়ার কোনো কর্তৃপক্ষ দেশে না থাকায় অপরাধবান্ধব পরিবেশে তারা লুট চালিয়ে যাচ্ছে। এ নৈরাজ্য ঠেকাতে ঋণখেলাপিদের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করা, গাড়ি রেজিস্ট্রেশন, ট্রেড লাইসেন্সপ্রাপ্তি ও বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারির বিধান রেখে নতুন ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২০-এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। নতুন এ আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যারা স্বেচ্ছায় ঋণখেলাপি হবেন তারা রাজনৈতিক কোন পদ পাবেন না। এমনকি এরা বিদেশ ভ্রমণ কিংবা গাড়ি, বাড়ি রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন না। ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু থেকে শুরু করে কোম্পানি নিবন্ধন করতেও পারবেন না তারা। এ ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারবে সরকার।

ঋণখেলাপি ঠেকাতে এ অপকর্মের হোতাদের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করার প্রস্তাব দৃশ্যত একটি ভালো উদ্যোগ। তবে ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত মতলববাজদের বাদ সাধতে আইনটি কতটা সুফল দেবে, তা স্পষ্ট নয়। আমাদের মতে, শুধু ঋণখেলাপি নয়, তার পরিবারের সদস্যদের ক্ষেত্রে একই ধরনের বিধিনিষেধ আরোপের কথা ভাবতে হবে। তা না হলে কোটি কোটি টাকা লুটের হোতাদের বাদ সাধা আসলেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

শুভ্র ঘোষ

নতুন বাজার, কলকলিয়াপাড়া, মাগুরা।

নির্বাচন কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

ঢাকা সিটি নির্বাচনে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের দুজন কমিশনার প্রার্থী অন্যায়ভাবে নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভুয়া মেজিস্ট্রেটকে ১২ লাখ টাকা দিয়েছেন। টাকা দেয়ার পর যখন বুঝতে পারলেন মাধ্যমটি ভুয়া তখন আবার থানায় অভিযোগ করেছেন। এর প্রক্ষিতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খোঁজ করার আশ্বাস দিয়েছেন।

এরকম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়ার মানসিকতা সম্পন্ন কোন লোক কি নির্বাচনের প্রার্থী থাকতে পারে? সেজন্য নির্বাচনের এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনারের কাছ থেকে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করছি।

দুলাল চন্দ্র মজুমদার

সহকারী অধ্যাপক

হিসাববাজ্ঞান বিভাগ

অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয়

বরিশাল