এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা কক্ষে সিসি ক্যামেরা

শঙ্কিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা কেন্দ্র ও কক্ষে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। তবে এ পদক্ষেপে শঙ্কিত হয়ে উঠেছে পরীক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা।

আসন্ন এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা নকল মুক্ত রাখতে খোকসা উপজেলার তিন কেন্দ্র ও দুটি উপকেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষে প্রায় শতাধিক সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ তড়িৎ গতিতে এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে খোকসা জানিপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণের গোপনীয় শাখাসহ এসএসসি কেন্দ্রে ৩২টি কক্ষ ও খোকসা জানিপুর পাইলট বালিকা বিদ্যালয় এসএসসি উপকেন্দ্রের ১২টি কক্ষের সবগুলোই সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। শোমসপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় এসএসসি কেন্দ্র ১৬টি ও শোমসপুর বালিকা বিদ্যালয় ভেনুতে ৭টি কক্ষের ৫টি ও সদর উদ্দিন খান দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ১০টি সিসি ক্যামের লাগানোর কাজ শেষ পর্যায়ে। একটি ভকেশনাল শাখাসহ এসব কেন্দ্রে ২ হাজার ৮৮ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তুতি চূড়ান্ত। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সভায় জেলার সবকটি কেন্দ্র ও হলসমূহে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে খোকসা জানিপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মহম্মদ আলীসহ একাধিক কেন্দ্র সচিব জানান। সেই সিদ্ধান্তের আলোকেই প্রতিটি কেন্দ্র ও ভেনু বিদ্যালয়ের কতৃপক্ষ নিজস্ব তহবিল থেকে সিসি ক্যামেরা লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। এসব ক্যামেরার মাধ্যমে সরাসরি কেন্দ্র সচিবের কক্ষে মনিটর লাগানো হয়েছে। সেখান থেকে মনিটরিং করা হবে।

হঠাৎ এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রের কক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করায় শঙ্কিত হয়ে পরেছে পরীক্ষার্থী অভিভাবক ও শিক্ষকরা। তারা দাবি করছেন, পরীক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বাধাগ্রস্ত হবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে মনিটরিং ভীতি কাজ করবে। ফলে ফলাফল বিপর্যয় হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

ধোকরাকোল কলেজের দুইজন প্রভাষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনেক শিক্ষার্থীর কাছে সিসি ক্যামেরা ভয়ের ব্যাপার। অনেকেই এই প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত নয়। পরীক্ষা কক্ষে এই প্রযুক্তির অপব্যবহার হতে পারে। এ ছাড়া ক্যামেরায় মনিটরিংয়ের কথা মাথায় আসার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয় গভীর হবে। এতে করে রেজাল্ট খারাপ হতে পারে। একটি বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সাবেক সদস্য নাফিজ আহম্মেদ খান রাজু ওই শিক্ষকদের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন। প্রতিটি কক্ষে সিসি ক্যামেরা প্রযুক্তির অপব্যবহারের আশঙ্কা করছে তিনি। সিসি ক্যামেরা বসিয়ে লাভ-ক্ষতির হিসাব করছে না শোমসপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষাক শরিফুজ্জামান। তিনি উপরের নির্দেশ বাস্তবায়ন করেছেন।

‘ওরা (পরীক্ষার্থীরা) বুঝতেই পারবে না, কোথায় ক্যামেরা আছে।’ ভয়-ভীতিতো দূরের কথা। এমনভাবেই মন্তব্য করলেন খোকসা জানিপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন জেলার নির্দেশ পালন করছেন। সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান মনে করছেন, এই পদ্ধতিতে কেন্দ্র পরিদর্শকদের নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। এ ছাড়া ভালো পরীক্ষার্থীদের দুর্বল পরীক্ষার্থীরা নানাভাবে সমস্যায় ফেলে। ক্যামেরার ভয়ে এটা করার সাহস পাবে না।

খোকসা (কুষ্টিয়া) খোকসা জানিপুর পাইলট বালিকা বিদ্যালয় ভেন্যু কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে।

রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ১৯ মাঘ ১৪২৬, ৭ জমাদিউল সানি ১৪৪১

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা কক্ষে সিসি ক্যামেরা

শঙ্কিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা

সুমন কুমার মণ্ডল, খোকসা (কুষ্টিয়া)

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা কেন্দ্র ও কক্ষে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। তবে এ পদক্ষেপে শঙ্কিত হয়ে উঠেছে পরীক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা।

আসন্ন এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা নকল মুক্ত রাখতে খোকসা উপজেলার তিন কেন্দ্র ও দুটি উপকেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষে প্রায় শতাধিক সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ তড়িৎ গতিতে এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে খোকসা জানিপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণের গোপনীয় শাখাসহ এসএসসি কেন্দ্রে ৩২টি কক্ষ ও খোকসা জানিপুর পাইলট বালিকা বিদ্যালয় এসএসসি উপকেন্দ্রের ১২টি কক্ষের সবগুলোই সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। শোমসপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় এসএসসি কেন্দ্র ১৬টি ও শোমসপুর বালিকা বিদ্যালয় ভেনুতে ৭টি কক্ষের ৫টি ও সদর উদ্দিন খান দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ১০টি সিসি ক্যামের লাগানোর কাজ শেষ পর্যায়ে। একটি ভকেশনাল শাখাসহ এসব কেন্দ্রে ২ হাজার ৮৮ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তুতি চূড়ান্ত। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সভায় জেলার সবকটি কেন্দ্র ও হলসমূহে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে খোকসা জানিপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মহম্মদ আলীসহ একাধিক কেন্দ্র সচিব জানান। সেই সিদ্ধান্তের আলোকেই প্রতিটি কেন্দ্র ও ভেনু বিদ্যালয়ের কতৃপক্ষ নিজস্ব তহবিল থেকে সিসি ক্যামেরা লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। এসব ক্যামেরার মাধ্যমে সরাসরি কেন্দ্র সচিবের কক্ষে মনিটর লাগানো হয়েছে। সেখান থেকে মনিটরিং করা হবে।

হঠাৎ এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রের কক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করায় শঙ্কিত হয়ে পরেছে পরীক্ষার্থী অভিভাবক ও শিক্ষকরা। তারা দাবি করছেন, পরীক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বাধাগ্রস্ত হবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে মনিটরিং ভীতি কাজ করবে। ফলে ফলাফল বিপর্যয় হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

ধোকরাকোল কলেজের দুইজন প্রভাষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনেক শিক্ষার্থীর কাছে সিসি ক্যামেরা ভয়ের ব্যাপার। অনেকেই এই প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত নয়। পরীক্ষা কক্ষে এই প্রযুক্তির অপব্যবহার হতে পারে। এ ছাড়া ক্যামেরায় মনিটরিংয়ের কথা মাথায় আসার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয় গভীর হবে। এতে করে রেজাল্ট খারাপ হতে পারে। একটি বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সাবেক সদস্য নাফিজ আহম্মেদ খান রাজু ওই শিক্ষকদের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন। প্রতিটি কক্ষে সিসি ক্যামেরা প্রযুক্তির অপব্যবহারের আশঙ্কা করছে তিনি। সিসি ক্যামেরা বসিয়ে লাভ-ক্ষতির হিসাব করছে না শোমসপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষাক শরিফুজ্জামান। তিনি উপরের নির্দেশ বাস্তবায়ন করেছেন।

‘ওরা (পরীক্ষার্থীরা) বুঝতেই পারবে না, কোথায় ক্যামেরা আছে।’ ভয়-ভীতিতো দূরের কথা। এমনভাবেই মন্তব্য করলেন খোকসা জানিপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন জেলার নির্দেশ পালন করছেন। সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান মনে করছেন, এই পদ্ধতিতে কেন্দ্র পরিদর্শকদের নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। এ ছাড়া ভালো পরীক্ষার্থীদের দুর্বল পরীক্ষার্থীরা নানাভাবে সমস্যায় ফেলে। ক্যামেরার ভয়ে এটা করার সাহস পাবে না।

খোকসা (কুষ্টিয়া) খোকসা জানিপুর পাইলট বালিকা বিদ্যালয় ভেন্যু কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে।