ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

তদন্তে মন্ত্রণালয়কে দুদকের চিঠি

ব্রুনাই প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সেবার বিনিময়ে ঘুষ নেয়া, হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। তার তদন্তে মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে দুদক কমিশন এ বিষয়ে তদন্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠায়। চিঠিতে মন্ত্রণালয়কে ১ মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে অনুরোধ করা হয়। স্থানটির মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) সাঈদ মাহবুব খান স্বাক্ষরিত ওই চিঠি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ব্রুনাই প্রবাসীদের হয়রানি, নির্যাতন ও ঘুষ গ্রহণ সংক্রান্ত অভিযোগটির বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কাছ হতে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন চাওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন কমিশনে পাঠানোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (লেবার কাউন্সিলর) জিলাল হোসেন ও লেবার উইংয়ের কর্মকর্তা (দোভাষী) আবু নাঈমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও শ্রমিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এতে বলা হয়, এই দু’জনের সিন্ডিকেট প্রবাসী শ্রমিক বা ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সুরক্ষা না করে উল্টো শোষণ করছেন। নিজেদের দুর্নীতি ও ব্যর্থতা ঢাকতে প্রবাসীদের হয়রানি করছেন। প্রবাসী মজুরি সংক্রান্ত জটিলতা কিংবা হয়রানির বিষয়ে হাইকমিশনে অভিযোগ করলে সমাধান পাওয়া যায় না- এমন অভিযোগও তোলা হয়েছে। এর প্রতিবাদ মানবপাচার বা চুরির মিথ্যে মামলার আসামি হয়ে দেশে ফিরতে হয়েছে অনেক শ্রমিককে। দুদক সূত্র বলছে, তাদের কাছে তথ্য আছে গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্ধশতাধিক প্রবাসী শ্রমিক ও ব্যবসায়ী দেশে ফিরেছেন মামলায় আসামি হয়ে। অনেকের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে মানবপাচারসহ নানা অভিযোগে। ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোতে অভিযোগ করে প্রতিকার না পেয়ে দুদকের শরণাপন্ন হয়েছেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

ভুক্তভোগীদের বক্তব্য ও দুদকের নিজস্ব অনুসন্ধানে দেখা গেছে, হাইকমিশনের কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করলে প্রবাসীদের পাল্টা আক্রমণ এবং নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে এমন ১৫ প্রবাসীদের পাসপোর্ট নম্বরসহ নামের তালিকা পাওয়া গেছে। তালিকার একজন কামরুল হাসান। অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তাকে র্নিমম নির্যাতন শিকার হতে হয় ব্রুনাই হাইকমিশনের ভেতরেই। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। নির্যাতনের শিকার কামরুল হাসান হাইকমিশনের দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরবর্তীতে মামলা উঠানোর জন্য হাইকমিশন থেকে ভয়ভীতি দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

২০১৮ সালের ৭ মার্চ অন্যায়ভাবে হাইকমিশন ভবনে মনির হোসেনকে নির্যাতন করা হয়। ঘুষ না দেয়া এবং অনৈতিক দাবির প্রতিবাদ করায় তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় মনির হোসেন বাদী হয়ে ব্রুনাই ব্রাকাস থানায় মেডিকেল রিপোর্টসহ ২০১৮ সালের ৮ মার্চ মামলা করেন। মামলায় নির্যাতনের তথ্য উপাত্ত তুলে ধরা হয়। মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে হুমকি দেয়া হয়। কিন্তু হুমকির পরও মামলা তুলে না নেয়ায় মানবপাচারের সাজানো অভিযোগ করা হয় তা নামে। পরে তাকে জোর করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। শুধু কামরুল আর মনিরই নয়। প্রতিনিয়ত এমনই নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে বলে ব্রুনাই ফেরত বাংলাদেশিরা জানিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে জিলাল হোসেন ও লেবার উইংয়ের কর্মকর্তা আবু নাঈম সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। নির্যাতনের শিকার হওয়ার পরও অনেক প্রবাসী নীরব থাকলেও মামলা করছে না দেশে ফেরত পাঠানোর ভয়ে।

নির্যাতনের শিকার প্রবাসী ব্যবসায়ী সবুজ মির্জা এ বিষয়ে বলেন, তাকে ৩০ অক্টোবর দেশে পাঠানো হয়েছে। ব্রুনাইতে প্রায় ১৫ বছর ধরে ব্যবসা করছেন। সেখানে তার পুরো পরিবার থাকে। তার ৫টি দোকান ছিল। গত ২৭ অক্টোবর হঠাৎ ব্রুনাই পররাষ্ট্র দফতর জানায়, তার বিরুদ্ধে অবৈধ মানবপাচার ব্যবসা ও ভিসা জালিয়াতির অভিযোগ করেছে বাংলাদেশি হাইকমিশন। তাকে ব্রুনাই ছাড়তে হবে। পরে তাকে দোকান থেকে তুলে নিয়ে ২৮ ও ২৯ অক্টোবর জেলে রেখে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় তিনি সর্বশান্ত হয়ে গেছেন। ব্যবসায়ীকভাবেও লাখ লাখ ডলারের লোকসান হয়েছে। তিনি বলেন, ব্রুনাই বাংলাদেশি হাইকমিশনে লেবার কাউন্সিলার জিলাল ও তার বিশ্বস্ত সহযোগী আবু নাইমসহ কয়েকজন কর্মকর্তা এসব কাজ করছেন। মানবপাচারসহ বিভিন্ন মামলার আসামি হয়ে দেশে ফেরত এসেছেন এমন কয়েকজনের মধ্যে রয়েছেন আসিফ (পাসপোর্ট নম্বর : ইঋ০৭৮৯৪৬৬), শাহেদ মজুমদার মুন্না (পাসপোর্ট নম্বর : ইঘ০৪৯০২১২), জাকির হোসেন (পাসপোর্ট নম্বর : ইগ০৪২১৮২১), জসিম সরকার (পাসপোর্ট নম্বর : ইজ০৭৭৩৪৬০), সোহরাব খান (পাসপোর্ট নম্বর : ইঔ০৭৩৭৮১৮), মো. মেহেদী হাসান (পাসপোর্ট নম্বর : ইজ০৬৭১৯৫৮), মো. মনির হোসেন, আবদুর রহিম (পাসপোর্ট নম্বর : ইজ০১৯১৫০৬), মো. ইসমাইল সরদার (পাসপোর্ট নম্বর : ইগ০১৯৩২৭৭), জাজ মিয়া, সবুজ মির্জা, কামরুল হাসান (পাসপোর্ট নম্বর : ইচ০১২১৪৭৭) এবং মো. আনোয়ার হোসেন (পাসপোর্ট নম্বর : ইঋ০৫৮২৯৬৯)।

গত নভেম্বরে ফেরত আসা ময়মনসিংহের জাজ মিয়া বলেন, গত নভেম্বর তাকে চুরির মামলা দিয়ে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা খরচ করে তিনি ব্রুনাই গিয়েছিলেন। নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। সেখানে কাজ করে যে টাকা বেতন পেতেন সে টাকায় দেশে তার পরিবার চলত। একদিন তার ব্রনাইয়ের এজেন্ট খোরশেদ তাকে জানান যে তিনি চুরির মামলার আসামি। পরে তাকে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

দুদক সূত্র জানায়, তারা চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বলেছে। মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া পরই এ বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করবে। অনুসন্ধান প্রতিবেদনের পর এ বিষয়ে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও কথা বলবে দুদক।

সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২০ মাঘ ১৪২৬, ৮ জমাদিউল সানি ১৪৪১

ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

তদন্তে মন্ত্রণালয়কে দুদকের চিঠি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

ব্রুনাই প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সেবার বিনিময়ে ঘুষ নেয়া, হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। তার তদন্তে মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে দুদক কমিশন এ বিষয়ে তদন্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠায়। চিঠিতে মন্ত্রণালয়কে ১ মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে অনুরোধ করা হয়। স্থানটির মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) সাঈদ মাহবুব খান স্বাক্ষরিত ওই চিঠি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ব্রুনাই প্রবাসীদের হয়রানি, নির্যাতন ও ঘুষ গ্রহণ সংক্রান্ত অভিযোগটির বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কাছ হতে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন চাওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন কমিশনে পাঠানোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (লেবার কাউন্সিলর) জিলাল হোসেন ও লেবার উইংয়ের কর্মকর্তা (দোভাষী) আবু নাঈমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও শ্রমিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এতে বলা হয়, এই দু’জনের সিন্ডিকেট প্রবাসী শ্রমিক বা ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সুরক্ষা না করে উল্টো শোষণ করছেন। নিজেদের দুর্নীতি ও ব্যর্থতা ঢাকতে প্রবাসীদের হয়রানি করছেন। প্রবাসী মজুরি সংক্রান্ত জটিলতা কিংবা হয়রানির বিষয়ে হাইকমিশনে অভিযোগ করলে সমাধান পাওয়া যায় না- এমন অভিযোগও তোলা হয়েছে। এর প্রতিবাদ মানবপাচার বা চুরির মিথ্যে মামলার আসামি হয়ে দেশে ফিরতে হয়েছে অনেক শ্রমিককে। দুদক সূত্র বলছে, তাদের কাছে তথ্য আছে গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্ধশতাধিক প্রবাসী শ্রমিক ও ব্যবসায়ী দেশে ফিরেছেন মামলায় আসামি হয়ে। অনেকের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে মানবপাচারসহ নানা অভিযোগে। ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোতে অভিযোগ করে প্রতিকার না পেয়ে দুদকের শরণাপন্ন হয়েছেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

ভুক্তভোগীদের বক্তব্য ও দুদকের নিজস্ব অনুসন্ধানে দেখা গেছে, হাইকমিশনের কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করলে প্রবাসীদের পাল্টা আক্রমণ এবং নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে এমন ১৫ প্রবাসীদের পাসপোর্ট নম্বরসহ নামের তালিকা পাওয়া গেছে। তালিকার একজন কামরুল হাসান। অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তাকে র্নিমম নির্যাতন শিকার হতে হয় ব্রুনাই হাইকমিশনের ভেতরেই। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। নির্যাতনের শিকার কামরুল হাসান হাইকমিশনের দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরবর্তীতে মামলা উঠানোর জন্য হাইকমিশন থেকে ভয়ভীতি দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

২০১৮ সালের ৭ মার্চ অন্যায়ভাবে হাইকমিশন ভবনে মনির হোসেনকে নির্যাতন করা হয়। ঘুষ না দেয়া এবং অনৈতিক দাবির প্রতিবাদ করায় তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় মনির হোসেন বাদী হয়ে ব্রুনাই ব্রাকাস থানায় মেডিকেল রিপোর্টসহ ২০১৮ সালের ৮ মার্চ মামলা করেন। মামলায় নির্যাতনের তথ্য উপাত্ত তুলে ধরা হয়। মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে হুমকি দেয়া হয়। কিন্তু হুমকির পরও মামলা তুলে না নেয়ায় মানবপাচারের সাজানো অভিযোগ করা হয় তা নামে। পরে তাকে জোর করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। শুধু কামরুল আর মনিরই নয়। প্রতিনিয়ত এমনই নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে বলে ব্রুনাই ফেরত বাংলাদেশিরা জানিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে জিলাল হোসেন ও লেবার উইংয়ের কর্মকর্তা আবু নাঈম সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। নির্যাতনের শিকার হওয়ার পরও অনেক প্রবাসী নীরব থাকলেও মামলা করছে না দেশে ফেরত পাঠানোর ভয়ে।

নির্যাতনের শিকার প্রবাসী ব্যবসায়ী সবুজ মির্জা এ বিষয়ে বলেন, তাকে ৩০ অক্টোবর দেশে পাঠানো হয়েছে। ব্রুনাইতে প্রায় ১৫ বছর ধরে ব্যবসা করছেন। সেখানে তার পুরো পরিবার থাকে। তার ৫টি দোকান ছিল। গত ২৭ অক্টোবর হঠাৎ ব্রুনাই পররাষ্ট্র দফতর জানায়, তার বিরুদ্ধে অবৈধ মানবপাচার ব্যবসা ও ভিসা জালিয়াতির অভিযোগ করেছে বাংলাদেশি হাইকমিশন। তাকে ব্রুনাই ছাড়তে হবে। পরে তাকে দোকান থেকে তুলে নিয়ে ২৮ ও ২৯ অক্টোবর জেলে রেখে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় তিনি সর্বশান্ত হয়ে গেছেন। ব্যবসায়ীকভাবেও লাখ লাখ ডলারের লোকসান হয়েছে। তিনি বলেন, ব্রুনাই বাংলাদেশি হাইকমিশনে লেবার কাউন্সিলার জিলাল ও তার বিশ্বস্ত সহযোগী আবু নাইমসহ কয়েকজন কর্মকর্তা এসব কাজ করছেন। মানবপাচারসহ বিভিন্ন মামলার আসামি হয়ে দেশে ফেরত এসেছেন এমন কয়েকজনের মধ্যে রয়েছেন আসিফ (পাসপোর্ট নম্বর : ইঋ০৭৮৯৪৬৬), শাহেদ মজুমদার মুন্না (পাসপোর্ট নম্বর : ইঘ০৪৯০২১২), জাকির হোসেন (পাসপোর্ট নম্বর : ইগ০৪২১৮২১), জসিম সরকার (পাসপোর্ট নম্বর : ইজ০৭৭৩৪৬০), সোহরাব খান (পাসপোর্ট নম্বর : ইঔ০৭৩৭৮১৮), মো. মেহেদী হাসান (পাসপোর্ট নম্বর : ইজ০৬৭১৯৫৮), মো. মনির হোসেন, আবদুর রহিম (পাসপোর্ট নম্বর : ইজ০১৯১৫০৬), মো. ইসমাইল সরদার (পাসপোর্ট নম্বর : ইগ০১৯৩২৭৭), জাজ মিয়া, সবুজ মির্জা, কামরুল হাসান (পাসপোর্ট নম্বর : ইচ০১২১৪৭৭) এবং মো. আনোয়ার হোসেন (পাসপোর্ট নম্বর : ইঋ০৫৮২৯৬৯)।

গত নভেম্বরে ফেরত আসা ময়মনসিংহের জাজ মিয়া বলেন, গত নভেম্বর তাকে চুরির মামলা দিয়ে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা খরচ করে তিনি ব্রুনাই গিয়েছিলেন। নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। সেখানে কাজ করে যে টাকা বেতন পেতেন সে টাকায় দেশে তার পরিবার চলত। একদিন তার ব্রনাইয়ের এজেন্ট খোরশেদ তাকে জানান যে তিনি চুরির মামলার আসামি। পরে তাকে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

দুদক সূত্র জানায়, তারা চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বলেছে। মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া পরই এ বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করবে। অনুসন্ধান প্রতিবেদনের পর এ বিষয়ে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও কথা বলবে দুদক।