বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে ডিসিসিআই’র বৈঠক

সব খাতকে সমান সুবিধা দেয়ার আশ্বাস

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)’র সভাপতি শামস মাহমুদের নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে গতকাল বিডা’র কার্যালয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে বর্তমানে দেশের পোশাক খাত যেসব সুবিধা পাচ্ছে সে সব সুবিধা অন্য খাতসমূহেও দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সরকারের বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

বৈঠকে সালমান এফ রহমান বলেন, ব্যবসা পরিচালনা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান উন্নয়নে সরকার বেশকিছু কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং ভবিষ্যতে এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। ব্যবসা পরিচালনার সূচকে উন্নতি করতে হলে শুধু সংস্কার কার্যক্রম চলালেই হবে না বরং এর সুবিধা ব্যবসায়ীদের দ্বারগোড়ায় পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে। তিনি দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে করপোরেট করের হার কমানোর উচিত বলে মত প্রকাশ করেন। উপদেষ্টা দেশের অর্থনীতির বিকাশের লক্ষ্যে কৃষি, চামড়া, তথ্য-প্রযুক্তিসহ অন্য সম্ভাবনাময় খাতসমূহকে তৈরি পোশাক খাতে প্রদত্ত ব্যাক টু ব্যাক এলসি, বন্ডেড ওয়ারহাউস সুবিধাসহ অন্য সুবিধা নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি ঢাকা চেম্বার কর্তৃক গৃহীত ‘আরএনআই (গবেষণা এবং উদ্ভাবন)’ কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানান এবং আগামী বাজেটে গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতে আর্থিক বরাদ্দের আশ্বাস প্রদান করেন।

সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মাহমুদ সম্প্রতি প্রকাশিত ইজ অব ডুয়িং বিজনেস সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আট ধাপ উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে আগামীতে বাংলাদেশের শিল্প ও বিনিয়োগ পরিবেশ আরও উন্নত হবে। দেশের বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ উন্নয়নে দ্রুততম সময়ে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালুকরণ, বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট নীতিমালার প্রয়োজনীয় সংশোধন ও দ্রততর কার্যকর করার প্রস্তাব করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি। এছাড়াও ঢাকা চেম্বারের সভাপতি দেশের অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে প্রতিবেশি প্রতিযোগী দেশগুলোর ন্যায় অকঠামো খাতে জিডিপির ৬-৮ শতাংশ বাজেট বরাদ্দ রাখার পাশাপাশি অবকাঠামো খাতে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য বন্ড মার্কেট উন্নয়ন, বন্ড ব্যবস্থার প্রবর্তন এবং গ্রিন ফিল্ড অবকাঠামো প্রকল্পগুলোকে শেয়ার মার্কেটে অন্তর্ভুক্তকরণের প্রস্তাব করেন। ডিসিসিআই’র সভাপতি সম্ভবনাময় দেশসমূহ যেমন দক্ষিণপূর্ব এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশসমূহে বাজার সম্প্রাসারণে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপাক্ষিক বাণিজ্যিক চুক্তি সম্পাদন করার জন্য অর্থনৈতিক কূটনীতি আরও শক্তিশালী করা, বন্দরের কার্যক্রমকে দ্রুত এবং সহজীকরণ করার প্রস্তাব করেন। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বিদ্যমান কোম্পানি আইনে কোম্পানির ঋণ গ্রহণে পরিচালকের ব্যক্তিগত গ্যারান্টি বিলোপ, কোম্পানির বিলোপ, একীভূতকরণ, কোম্পানির সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তি বিশেষত ইভোটিং, ভিডিও কনফারেন্সিং-এর ব্যবহার প্রভৃতি অন্তর্ভুক্তকরণের মাধ্যমে আইনটি সহজীকরণের আহ্বান জানান।

ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এনকেএ মবিন, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ বাশিরউদ্দিন, পরিচালক ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী, আন্দালিব হাসান, নূহের লতিফ খান, ইঞ্জিনিয়ার মো. আল আমিন, আশরাফ আহমেদ, আরমান হক, মো. জিয়া উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার শামসুজ্জোহা চৌধুরী, এসএম জিল্লুর রহমান, এনামুল হক পাটোয়ারি, মনোয়ার হোসেন এবং মো. শাহীদ হোসেন প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২২ মাঘ ১৪২৬, ১০ জমাদিউল সানি ১৪৪১

বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে ডিসিসিআই’র বৈঠক

সব খাতকে সমান সুবিধা দেয়ার আশ্বাস

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)’র সভাপতি শামস মাহমুদের নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে গতকাল বিডা’র কার্যালয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে বর্তমানে দেশের পোশাক খাত যেসব সুবিধা পাচ্ছে সে সব সুবিধা অন্য খাতসমূহেও দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সরকারের বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

বৈঠকে সালমান এফ রহমান বলেন, ব্যবসা পরিচালনা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান উন্নয়নে সরকার বেশকিছু কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং ভবিষ্যতে এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। ব্যবসা পরিচালনার সূচকে উন্নতি করতে হলে শুধু সংস্কার কার্যক্রম চলালেই হবে না বরং এর সুবিধা ব্যবসায়ীদের দ্বারগোড়ায় পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে। তিনি দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে করপোরেট করের হার কমানোর উচিত বলে মত প্রকাশ করেন। উপদেষ্টা দেশের অর্থনীতির বিকাশের লক্ষ্যে কৃষি, চামড়া, তথ্য-প্রযুক্তিসহ অন্য সম্ভাবনাময় খাতসমূহকে তৈরি পোশাক খাতে প্রদত্ত ব্যাক টু ব্যাক এলসি, বন্ডেড ওয়ারহাউস সুবিধাসহ অন্য সুবিধা নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি ঢাকা চেম্বার কর্তৃক গৃহীত ‘আরএনআই (গবেষণা এবং উদ্ভাবন)’ কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানান এবং আগামী বাজেটে গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতে আর্থিক বরাদ্দের আশ্বাস প্রদান করেন।

সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মাহমুদ সম্প্রতি প্রকাশিত ইজ অব ডুয়িং বিজনেস সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আট ধাপ উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে আগামীতে বাংলাদেশের শিল্প ও বিনিয়োগ পরিবেশ আরও উন্নত হবে। দেশের বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ উন্নয়নে দ্রুততম সময়ে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালুকরণ, বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট নীতিমালার প্রয়োজনীয় সংশোধন ও দ্রততর কার্যকর করার প্রস্তাব করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি। এছাড়াও ঢাকা চেম্বারের সভাপতি দেশের অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে প্রতিবেশি প্রতিযোগী দেশগুলোর ন্যায় অকঠামো খাতে জিডিপির ৬-৮ শতাংশ বাজেট বরাদ্দ রাখার পাশাপাশি অবকাঠামো খাতে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য বন্ড মার্কেট উন্নয়ন, বন্ড ব্যবস্থার প্রবর্তন এবং গ্রিন ফিল্ড অবকাঠামো প্রকল্পগুলোকে শেয়ার মার্কেটে অন্তর্ভুক্তকরণের প্রস্তাব করেন। ডিসিসিআই’র সভাপতি সম্ভবনাময় দেশসমূহ যেমন দক্ষিণপূর্ব এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশসমূহে বাজার সম্প্রাসারণে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপাক্ষিক বাণিজ্যিক চুক্তি সম্পাদন করার জন্য অর্থনৈতিক কূটনীতি আরও শক্তিশালী করা, বন্দরের কার্যক্রমকে দ্রুত এবং সহজীকরণ করার প্রস্তাব করেন। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বিদ্যমান কোম্পানি আইনে কোম্পানির ঋণ গ্রহণে পরিচালকের ব্যক্তিগত গ্যারান্টি বিলোপ, কোম্পানির বিলোপ, একীভূতকরণ, কোম্পানির সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তি বিশেষত ইভোটিং, ভিডিও কনফারেন্সিং-এর ব্যবহার প্রভৃতি অন্তর্ভুক্তকরণের মাধ্যমে আইনটি সহজীকরণের আহ্বান জানান।

ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এনকেএ মবিন, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ বাশিরউদ্দিন, পরিচালক ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী, আন্দালিব হাসান, নূহের লতিফ খান, ইঞ্জিনিয়ার মো. আল আমিন, আশরাফ আহমেদ, আরমান হক, মো. জিয়া উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার শামসুজ্জোহা চৌধুরী, এসএম জিল্লুর রহমান, এনামুল হক পাটোয়ারি, মনোয়ার হোসেন এবং মো. শাহীদ হোসেন প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।