পুকুর থেকে বালু উত্তোলনে নষ্ট ক্ষেত, ভাঙছে সড়ক-বাড়ি

যশোরের কেশবপুরে কালিয়ারই গ্রামে বালু উত্তোলন নীতিমালা উপেক্ষা করে জনবসতিপূর্ণ এলাকার একটি পুকুর থেকে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি জোরপূর্বকভাবে বালু উত্তোলন করছেন। প্রায় ১ মাস ধরে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে ওই পুকুর পাড়ের সরকারি রাস্তাসহ ১০টি বসতভিটা ও সদ্য রোপণকৃত বোরো ধান ক্ষেত।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাস থেকে উপজেলার কালিয়ারই গ্রামের রিশিপাড়া সড়ক পাকাকরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকাদার বাবুল আক্তার। রাস্তায় বালু সরবরাহের দায়িত্ব নেয় এলাকার প্রভাবশালী নুরুল ইসলাম গাজী। গত ৭ জানুয়ারি থেকে তিনি কালিয়ারই সরকারি রাস্তার পাশের জনবসতিপূর্ণ এলাকার নলপুকুর থেকে বালু উত্তোলন শুরু করেন। এ সময় আশপাশের বসতভিটাসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কায় ৮ জানুয়ারি এলাকাবাসীর পক্ষে ফারুক হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তিনি অভিযোগটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে উপজেলা সহকারী কমীশনার’কে (ভূমি) নির্দেশ দেন। এ নির্দেশনা পেয়ে বাউশলা ইউনিয়ন সহকারী তহশীলদার কার্তিক রায় সরেজমিনে গিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর অজ্ঞাত কারণে আবারও বালু উত্তোলন শুরু হয়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

৩ ফেব্রুয়ারি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, যে পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তার চারপাশে জনবসতিপূর্ণ এলাকা। কালিয়ারই গ্রামে প্রবেশের একমাত্র সরকারি রাস্তার পাশেই নলপুকুরটি। এই পুকুর থেকে অবৈধভাবে বালূ উত্তোলন করে পাইপের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রিশিপাড়া সড়কে। কিন্তু ঠিকাদার রাস্তার দু’পাশে যেনতেনভাবে বাঁধ দিয়ে বালুমিশ্রিত পানি ফেলায় রাস্তার দু’পাশে সদ্য রোপণকৃত বোরো ধান ক্ষেতে বালু জমে আলাল গাজী, শাহাবুদ্দীন, আবুল কাশেম, আবুল গাজী, কার্তিক পালসহ কমপক্ষে ১০-১২ জন কৃষকের ধান ক্ষেত নষ্ট হচ্ছে। ধসে নষ্ট হচ্ছে বসতভিটার জমি।

ফারুক হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ৪-৫ বছর আগে নুরুল ইসলাম পেশীশক্তি বলে ওই পুকুর থেকে অনুরূপভাবে বালু উত্তোলন করেছিলেন। ফলে তার বসতভিটাসহ রাস্তা ধসে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আবারও সে বালু উত্তোলন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ঘটনায় তিনি অভিযোগ দিয়েও কোন বিচার পাননি।

এ ব্যাপারে নুরুল ইসলাম বলেন, আমি বালু উত্তোলন করছি না। তার পুকুর থেকে অনুমতি নিয়ে বালু উত্তোলন করছেন ঠিকাদার বাবুল আক্তার। আপনি তার সঙ্গে কথা বলেন। ঠিকাদার বাবুল আক্তার বলেন, সরকারি কাজের জন্য বালু ওঠানো হচ্ছে। তবে আজ (৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে আর বালু ওঠানো হবে না।

উপজেলা সহকারী কমীশনার (ভূমি) এনামুল হক বলেন, এলাকা থেকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবহিত করার পর বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এরপরও বালু উঠানো হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

image

কেশবপুর (যশোর) : বালু উত্তোলন (উপরে)। (নিচে) বালুতে বিনষ্ট ধান ক্ষেত -সংবাদ

আরও খবর
গড়াইয়ের উজানে খনন, ভাটিতে ডুবুচর : দুর্ভোগে ১০ গ্রাম
ফরেনসিক ল্যাবের ফল প্রভাবিত করার সুযোগ নেই : আইজিপি
হবিগঞ্জে চাঁদা না পেলে হত্যার হুমকি
টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে রোহিঙ্গা ডাকাত হত
সাতক্ষীরার ভাটা শ্রমিকের রহস্যজনক মৃত্যু
গ্রাহক হয়রানি : রূপালী ব্যাংক ক্যাশিয়ারকে বদলি
ভাঙ্গায় জমি বিবাদে সংঘর্ষ আহত ১০
মোরেলগঞ্জে সেই স্কুল পেল চেক ঢেউটিন
হবিগঞ্জে উত্ত্যক্ত দুই বখাটের অর্থদণ্ড
বাগেরহাটে দারোগা হত : ধৃত চালক
সুগন্ধা-বিষখালীতে অকালে অঢেল মিলছে বড় বড় ইলিশ
স্কুলের মাঠে পুকুর খনন জরিমানা ১,০০,০০০ টাকা
দোহারে গৃহবধূর মরদেহ
জমি বিবাদে অর্ধ শতাধিক বৃক্ষ কর্তন প্রাচীর ভাঙচুর

বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২২ মাঘ ১৪২৬, ১০ জমাদিউল সানি ১৪৪১

পুকুর থেকে বালু উত্তোলনে নষ্ট ক্ষেত, ভাঙছে সড়ক-বাড়ি

প্রতিনিধি, কেশবপুর (যশোর)

image

কেশবপুর (যশোর) : বালু উত্তোলন (উপরে)। (নিচে) বালুতে বিনষ্ট ধান ক্ষেত -সংবাদ

যশোরের কেশবপুরে কালিয়ারই গ্রামে বালু উত্তোলন নীতিমালা উপেক্ষা করে জনবসতিপূর্ণ এলাকার একটি পুকুর থেকে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি জোরপূর্বকভাবে বালু উত্তোলন করছেন। প্রায় ১ মাস ধরে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে ওই পুকুর পাড়ের সরকারি রাস্তাসহ ১০টি বসতভিটা ও সদ্য রোপণকৃত বোরো ধান ক্ষেত।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাস থেকে উপজেলার কালিয়ারই গ্রামের রিশিপাড়া সড়ক পাকাকরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকাদার বাবুল আক্তার। রাস্তায় বালু সরবরাহের দায়িত্ব নেয় এলাকার প্রভাবশালী নুরুল ইসলাম গাজী। গত ৭ জানুয়ারি থেকে তিনি কালিয়ারই সরকারি রাস্তার পাশের জনবসতিপূর্ণ এলাকার নলপুকুর থেকে বালু উত্তোলন শুরু করেন। এ সময় আশপাশের বসতভিটাসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কায় ৮ জানুয়ারি এলাকাবাসীর পক্ষে ফারুক হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তিনি অভিযোগটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে উপজেলা সহকারী কমীশনার’কে (ভূমি) নির্দেশ দেন। এ নির্দেশনা পেয়ে বাউশলা ইউনিয়ন সহকারী তহশীলদার কার্তিক রায় সরেজমিনে গিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর অজ্ঞাত কারণে আবারও বালু উত্তোলন শুরু হয়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

৩ ফেব্রুয়ারি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, যে পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তার চারপাশে জনবসতিপূর্ণ এলাকা। কালিয়ারই গ্রামে প্রবেশের একমাত্র সরকারি রাস্তার পাশেই নলপুকুরটি। এই পুকুর থেকে অবৈধভাবে বালূ উত্তোলন করে পাইপের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রিশিপাড়া সড়কে। কিন্তু ঠিকাদার রাস্তার দু’পাশে যেনতেনভাবে বাঁধ দিয়ে বালুমিশ্রিত পানি ফেলায় রাস্তার দু’পাশে সদ্য রোপণকৃত বোরো ধান ক্ষেতে বালু জমে আলাল গাজী, শাহাবুদ্দীন, আবুল কাশেম, আবুল গাজী, কার্তিক পালসহ কমপক্ষে ১০-১২ জন কৃষকের ধান ক্ষেত নষ্ট হচ্ছে। ধসে নষ্ট হচ্ছে বসতভিটার জমি।

ফারুক হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ৪-৫ বছর আগে নুরুল ইসলাম পেশীশক্তি বলে ওই পুকুর থেকে অনুরূপভাবে বালু উত্তোলন করেছিলেন। ফলে তার বসতভিটাসহ রাস্তা ধসে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আবারও সে বালু উত্তোলন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ঘটনায় তিনি অভিযোগ দিয়েও কোন বিচার পাননি।

এ ব্যাপারে নুরুল ইসলাম বলেন, আমি বালু উত্তোলন করছি না। তার পুকুর থেকে অনুমতি নিয়ে বালু উত্তোলন করছেন ঠিকাদার বাবুল আক্তার। আপনি তার সঙ্গে কথা বলেন। ঠিকাদার বাবুল আক্তার বলেন, সরকারি কাজের জন্য বালু ওঠানো হচ্ছে। তবে আজ (৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে আর বালু ওঠানো হবে না।

উপজেলা সহকারী কমীশনার (ভূমি) এনামুল হক বলেন, এলাকা থেকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবহিত করার পর বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এরপরও বালু উঠানো হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।