ভোটের রাজনীতির প্রতি অনীহা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয় কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভোটের রাজনীতির প্রতি মানুষের অনীহা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যে হারে ভোট পড়েছে তা নিয়ে ভাবতে হবে। আওয়ামী লীগের যে জনসমর্থন সে বিবেচনায় আরও বেশি ভোট আশা করেছিলাম। আওয়ামী লীগের যে পার্সেন্টেজ সেই তুলনায় তো উপস্থিতি আশানুরূপ নয়। তবে এই নির্বাচনে পরাজিত বিএনপির প্রার্থীরা যে ভোট পেয়েছেন, তা ‘খারাপ নয়’ বলে মন্তব্য করে তিনি। গতকাল সচিবালয়ে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে তিনি একথা বলেন।

গত ৩১ জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তির পর এটাই তার প্রথম অফিস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুপুর ১২টার দিকে সরাসরি সচিবালয়ে আসেন তিনি। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ সময়ও তার বাম হাতে ক্যানুলা লাগানো ছিল।

ঢাকার দুই সিটিতে নির্বাচন ভোট কম পড়া নিয়ে মূল্যায়ন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরে এলে আমরা মূল্যায়ন করার জন্য ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং করব। সেখানে নির্বাচন নিয়ে পরিবীক্ষণ, আমাদের অবজারভেশন, পর্যবেক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। পরশু দিন নেত্রীর সঙ্গে আমার ফোনে যখন কথা হয়, তিনি আমাকে বলেছিলেন ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং করা জরুরি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি মনে করি, এখানে আমাদের গভীরভাবে ভাবনার বিষয় আছে। আমাদের ভোটের যে পার্সেন্টেজ সেই অনুযায়ী, যে ভোট পড়ার কথা ছিল, সেটা তো হয়নি। নিজেদের ‘সাংগঠনিক দুর্বলতার’ পাশাপাশি দুই-তিন দিন ছুটি থাকায় ‘অনেকের গ্রামের বাড়ি যাওয়া’ এবং পরিবহন সংকট ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন তিনি।

সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের কমিটিগুলো হয়েছে, পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। ঢাকা সিটিতে ওয়ার্ড পর্যন্ত কমিটিগুলোকে ঢেলে সাজানো দরকার। অনতিবিলম্বে ঢাকা সিটির ওয়ার্ড, থানার সম্মেলনগুলো করা দরকার। এখানে বড় না হলেও সাংগঠনিক দুর্বলতার পরিচয় পাওয়া গেছে। এটা হল বাস্তবতা, বাস্তবতা অস্বীকার করে তো লাভ নেই। একটা বিষয় হচ্ছে, ভোট নিয়ে আগেভাগেই শঙ্কা তৈরি করা-এই সিস্টেম খারাপ, এই সিস্টেমে ভোট দেয়া যাবে না। এই রকম অবস্থায় কিছু মানুষের আগ্রহ তো কমতেই পারে। কারণ ভোট সম্পর্কে অপপ্রচারটা অনেক বেশি হয়েছে।

প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপিকে নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির যে পারফরমেন্স এই ভোটের মধ্যেও তাদের ভোটসংখ্যা একেবারে কম নয়। অনেক ভোট পেয়েছে। সেই দিক থেকে বিরোধী দল হিসেবে তারা ভোটে একেবারে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে এমন নয়। তারা ভালো ভোট পেয়েছেন। এটা গণতন্ত্রের জন্যই ভালো। সরকারি দলের প্রস্তুতি, বিরোধী দলও সতর্ক পাহারায় থাকবে, তারা ঢাকার বাইরে থেকে লোক জড়ো করেছে- এ ধরনের ইনফরমেশন তো ছিলই। আমার মনে হয়, সব কিছু মিলিয়ে একটা ভালো ইলেকশন হয়েছে। এই ভুল-ত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে অভিজ্ঞতার আলোকে আমার মনে হয়, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক দলগুলো জনমত সৃষ্টিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। রাজনীতির প্রতি মানুষের আগ্রহ আরও বেশি হওয়া উচিত। ভোটের রাজনীতির প্রতি মানুষের অনীহা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়।

বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২২ মাঘ ১৪২৬, ১০ জমাদিউল সানি ১৪৪১

ভোটের রাজনীতির প্রতি অনীহা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয় কাদের

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভোটের রাজনীতির প্রতি মানুষের অনীহা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যে হারে ভোট পড়েছে তা নিয়ে ভাবতে হবে। আওয়ামী লীগের যে জনসমর্থন সে বিবেচনায় আরও বেশি ভোট আশা করেছিলাম। আওয়ামী লীগের যে পার্সেন্টেজ সেই তুলনায় তো উপস্থিতি আশানুরূপ নয়। তবে এই নির্বাচনে পরাজিত বিএনপির প্রার্থীরা যে ভোট পেয়েছেন, তা ‘খারাপ নয়’ বলে মন্তব্য করে তিনি। গতকাল সচিবালয়ে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে তিনি একথা বলেন।

গত ৩১ জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তির পর এটাই তার প্রথম অফিস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুপুর ১২টার দিকে সরাসরি সচিবালয়ে আসেন তিনি। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ সময়ও তার বাম হাতে ক্যানুলা লাগানো ছিল।

ঢাকার দুই সিটিতে নির্বাচন ভোট কম পড়া নিয়ে মূল্যায়ন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরে এলে আমরা মূল্যায়ন করার জন্য ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং করব। সেখানে নির্বাচন নিয়ে পরিবীক্ষণ, আমাদের অবজারভেশন, পর্যবেক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। পরশু দিন নেত্রীর সঙ্গে আমার ফোনে যখন কথা হয়, তিনি আমাকে বলেছিলেন ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং করা জরুরি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি মনে করি, এখানে আমাদের গভীরভাবে ভাবনার বিষয় আছে। আমাদের ভোটের যে পার্সেন্টেজ সেই অনুযায়ী, যে ভোট পড়ার কথা ছিল, সেটা তো হয়নি। নিজেদের ‘সাংগঠনিক দুর্বলতার’ পাশাপাশি দুই-তিন দিন ছুটি থাকায় ‘অনেকের গ্রামের বাড়ি যাওয়া’ এবং পরিবহন সংকট ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন তিনি।

সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের কমিটিগুলো হয়েছে, পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। ঢাকা সিটিতে ওয়ার্ড পর্যন্ত কমিটিগুলোকে ঢেলে সাজানো দরকার। অনতিবিলম্বে ঢাকা সিটির ওয়ার্ড, থানার সম্মেলনগুলো করা দরকার। এখানে বড় না হলেও সাংগঠনিক দুর্বলতার পরিচয় পাওয়া গেছে। এটা হল বাস্তবতা, বাস্তবতা অস্বীকার করে তো লাভ নেই। একটা বিষয় হচ্ছে, ভোট নিয়ে আগেভাগেই শঙ্কা তৈরি করা-এই সিস্টেম খারাপ, এই সিস্টেমে ভোট দেয়া যাবে না। এই রকম অবস্থায় কিছু মানুষের আগ্রহ তো কমতেই পারে। কারণ ভোট সম্পর্কে অপপ্রচারটা অনেক বেশি হয়েছে।

প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপিকে নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির যে পারফরমেন্স এই ভোটের মধ্যেও তাদের ভোটসংখ্যা একেবারে কম নয়। অনেক ভোট পেয়েছে। সেই দিক থেকে বিরোধী দল হিসেবে তারা ভোটে একেবারে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে এমন নয়। তারা ভালো ভোট পেয়েছেন। এটা গণতন্ত্রের জন্যই ভালো। সরকারি দলের প্রস্তুতি, বিরোধী দলও সতর্ক পাহারায় থাকবে, তারা ঢাকার বাইরে থেকে লোক জড়ো করেছে- এ ধরনের ইনফরমেশন তো ছিলই। আমার মনে হয়, সব কিছু মিলিয়ে একটা ভালো ইলেকশন হয়েছে। এই ভুল-ত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে অভিজ্ঞতার আলোকে আমার মনে হয়, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক দলগুলো জনমত সৃষ্টিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। রাজনীতির প্রতি মানুষের আগ্রহ আরও বেশি হওয়া উচিত। ভোটের রাজনীতির প্রতি মানুষের অনীহা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়।