পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলুন রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ পরিবেশ বিরোধী পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে নৈতিক ও সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে স্নাতক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আজ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পিএসটিইউ) ২য় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে চ্যান্সেলর হিসেবে প্রদত্ত বক্তব্যে এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ও পরিবেশ বিপন্নকারী পলিথিন দিয়ে তৈরি পানির বোতল, শপিং ব্যাগের যত্রতত্র ব্যবহার সরকারিভাবে নিষিদ্ধ করা উচিত।’

রাষ্ট্রপতি সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারীদের পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার, প্লাস্টিক বোতল, ফাস্টফুডসহ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কমল পানির বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে প্রচার প্রচারণা চালাতে শপথ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা খালি হাতে মার্কেটে যাই, আর ফিরে আসি হাতভর্তি পলিথিন ব্যাগ নিয়ে। শিশুরা ফাস্টফুড খেয়ে ও কোমল পানীয় পান করে শরীরে মেদ জমাচ্ছে। কিন্তু আমাদের এই খাদ্যাভ্যাস অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে।’ বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় খাপ খওয়াতে শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বমানের নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ¯স্নাতক সনদপ্রাপ্তদের নিজেকে সুসজ্জিত হতে হবে। তিনি বলেন, ‘আগামীতে বিশ্বব্যাপী চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে মানিয়ে নিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার কোন বিকল্প থাকবে না।’ রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশকে বিদেশে উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরতে এবং প্রিয় মাতৃভূমির জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করার আহ্বান জানান। তিনি চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বিষয়টি মাথায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে শিক্ষা কারিকুলাম সময়োপযোগী করে ঢেলে সাজাতে নির্দেশনা দেন। রাষ্ট্রপ্রধান উচ্চ শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র সনদ লাভের জন্য শিক্ষা গ্রহণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মানসম্মত শিক্ষা ব্যতিত শিক্ষার কোন মূল্য নেই। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে মানসম্মত শিক্ষা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ।’ তিনি ¯স্নাতক ডিগ্রি অর্জনকারীদের দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানান। সমাবর্তনে মোট ৩ হাজার ৭০৬ জন পোস্ট গ্রাজুয়েট এবং গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থী সনদ লাভ করেন। ৬৩ জন তাদের সাফল্যের জন্য স্বর্ণপদক এবং ১১ জন গবেষণার জন্য ডক্টর অব ফিলোসফি (পিএইচডি) ডিগ্রি লাভ করেন। পিএসটিইউ সমাবর্তনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এছাড়াও অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন সাবেক ইউজিসি চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ একাডেমি অব সাইন্স এমেরিটাস এর সভাপতি প্রফেসর ড. একে আজাদ চৌধুরী। পিএসটিইউর ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ ও প্রোভিসি প্রফেসর মোহাম্মদ আলিও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। আন্তর্জাতিক গবেষণা জার্নালের মতে দেশের বিজ্ঞান ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পিএসটিউ দ্বিতীয় স্থান অধিকার করায় রাষ্ট্রপতি সন্তোষ প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, আগামী দিনগুলোতে শিক্ষার্থীদের দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে নেতৃত্ব দিতে হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘তোমাদের সাহায্যে আমাদের এই দেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ হিসেবে গড়ে উঠবে।’ জ্ঞান ও প্রতিভার যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে সময় সাশ্রয়ী কারিগরি উদ্ভাবনের মাধ্যমে তোমরা সরকারের ‘রূপকল্প-২০২১’ ও ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।’ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, পিএসটিইউ’র বোর্ড সদস্য এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, আইনপ্রণেতা অ্যাডভোকেট শাহ্জাহান মিয়া, এএসএম ফিরোজ, মোহিবুর রহমান, এসএম শাহজাদা, পটুয়াখালী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান মোহন, রাষ্ট্রপতি সংশ্লিষ্ট সচিব এবং বরিশাল বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২৩ মাঘ ১৪২৬, ১১ জমাদিউল সানি ১৪৪১

পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলুন রাষ্ট্রপতি

বাসস

image

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ গতকাল পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনে বক্তব্য রাখেন

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ পরিবেশ বিরোধী পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে নৈতিক ও সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে স্নাতক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আজ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পিএসটিইউ) ২য় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে চ্যান্সেলর হিসেবে প্রদত্ত বক্তব্যে এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ও পরিবেশ বিপন্নকারী পলিথিন দিয়ে তৈরি পানির বোতল, শপিং ব্যাগের যত্রতত্র ব্যবহার সরকারিভাবে নিষিদ্ধ করা উচিত।’

রাষ্ট্রপতি সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারীদের পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার, প্লাস্টিক বোতল, ফাস্টফুডসহ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কমল পানির বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে প্রচার প্রচারণা চালাতে শপথ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা খালি হাতে মার্কেটে যাই, আর ফিরে আসি হাতভর্তি পলিথিন ব্যাগ নিয়ে। শিশুরা ফাস্টফুড খেয়ে ও কোমল পানীয় পান করে শরীরে মেদ জমাচ্ছে। কিন্তু আমাদের এই খাদ্যাভ্যাস অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে।’ বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় খাপ খওয়াতে শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বমানের নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ¯স্নাতক সনদপ্রাপ্তদের নিজেকে সুসজ্জিত হতে হবে। তিনি বলেন, ‘আগামীতে বিশ্বব্যাপী চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে মানিয়ে নিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার কোন বিকল্প থাকবে না।’ রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশকে বিদেশে উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরতে এবং প্রিয় মাতৃভূমির জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করার আহ্বান জানান। তিনি চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বিষয়টি মাথায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে শিক্ষা কারিকুলাম সময়োপযোগী করে ঢেলে সাজাতে নির্দেশনা দেন। রাষ্ট্রপ্রধান উচ্চ শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র সনদ লাভের জন্য শিক্ষা গ্রহণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মানসম্মত শিক্ষা ব্যতিত শিক্ষার কোন মূল্য নেই। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে মানসম্মত শিক্ষা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ।’ তিনি ¯স্নাতক ডিগ্রি অর্জনকারীদের দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানান। সমাবর্তনে মোট ৩ হাজার ৭০৬ জন পোস্ট গ্রাজুয়েট এবং গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থী সনদ লাভ করেন। ৬৩ জন তাদের সাফল্যের জন্য স্বর্ণপদক এবং ১১ জন গবেষণার জন্য ডক্টর অব ফিলোসফি (পিএইচডি) ডিগ্রি লাভ করেন। পিএসটিইউ সমাবর্তনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এছাড়াও অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন সাবেক ইউজিসি চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ একাডেমি অব সাইন্স এমেরিটাস এর সভাপতি প্রফেসর ড. একে আজাদ চৌধুরী। পিএসটিইউর ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ ও প্রোভিসি প্রফেসর মোহাম্মদ আলিও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। আন্তর্জাতিক গবেষণা জার্নালের মতে দেশের বিজ্ঞান ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পিএসটিউ দ্বিতীয় স্থান অধিকার করায় রাষ্ট্রপতি সন্তোষ প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, আগামী দিনগুলোতে শিক্ষার্থীদের দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে নেতৃত্ব দিতে হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘তোমাদের সাহায্যে আমাদের এই দেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ হিসেবে গড়ে উঠবে।’ জ্ঞান ও প্রতিভার যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে সময় সাশ্রয়ী কারিগরি উদ্ভাবনের মাধ্যমে তোমরা সরকারের ‘রূপকল্প-২০২১’ ও ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।’ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, পিএসটিইউ’র বোর্ড সদস্য এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, আইনপ্রণেতা অ্যাডভোকেট শাহ্জাহান মিয়া, এএসএম ফিরোজ, মোহিবুর রহমান, এসএম শাহজাদা, পটুয়াখালী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান মোহন, রাষ্ট্রপতি সংশ্লিষ্ট সচিব এবং বরিশাল বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা।