আ-মরি বাংলা ভাষা

আজ ৬ ফেব্রুয়ারি। ফেব্রুয়ারির প্রতিটি দিনই আমাদের জন্য অহঙ্কার আর গৌরবের। ইতিহাসের পাতায় আজকের এই দিনটির ভিন্নতা আছে। ১৯৫২ সালের এইদিনে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে ১৫০ মোগলটুলির পূর্ববঙ্গ কর্মীশিবির অফিসে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় সিদ্ধান্ত হয় আন্দোলনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করার বিষয়ে। অলি আহাদের লেখা বইয়ের সূত্র অনুযায়ী এই সভায় সিদ্ধান্ত হয় আন্দোলনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে ১১ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শহরে পতাকা দিবস পালনের।

নানা পরিস্থিতির কারণে বেশি টাকা সংগ্রহ না হলেও পতাকা দিবসকে সামনে রেখে অনেক নতুন নতুন কর্মী এসে আন্দোলনে যোগ দেন। তখন ৫০০ পোস্টার লেখার দায়িত্ব¡ দেয়া হয়েছিল নাদিরা বেগম ও ডাক্তার সাফিয়াকে। এই দু’জন তাদের অন্য বন্ধুদের নিয়ে পোস্টার লেখার কাজ সম্পন্ন করেন। এইদিন মাদারীপুরের প্রতিবাদী ছাত্ররা সাফল্যের সঙ্গে ধর্মঘট পালন করেন। তখনকার সময়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত সাপ্তাহিক ইত্তেফাকে এই খবরটি প্রকাশিত হয়। ভাষা আন্দোলনের দাবিতে পূর্ববাংলার আন্দোলনকে নিয়ে তখনকার সময়ে পাকিস্তানি পত্রিকায় অনেক কল্পকাহিনী ছাপা হতো। ৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের ডন পত্রিকায় প্রাদেশিকতা শিরোনামে এক সম্পাদকীয়তে লেখা হয় বাংলাকে অন্যতম পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্ররা যে আন্দোলন করছেন তা আন্দোলনের নামে রাষ্ট্রদ্রোহিতা। ডন ছাড়া পাকিস্তানের অন্যান্য পত্রিকাও এ ধরনের সংবাদ বা সম্পাদকীয় প্রকাশ করা হতো। ডন পত্রিকার সম্পাদকীয়র প্রতিবাদ করেন, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অলি আহাদ। এভাবে ফেব্রুয়ারির দিনগুলোতে সবাই নিজ অবস্থান থেকে অবদান রেখেছেন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেয়ার জন্য।

এসব জানা-অজানা ইতিহাস নবীন-প্রবীণ লেখকদের লেখায় বছরের পর বছর তুলে ধরছেন বিশিষ্টজনরা। আর ফেব্রুয়ারি মাস এলে ভাষা আন্দোলনের সংগ্রামী দুঃসাহসী সন্তানদের স্মরণে প্রতিবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আয়োজিত হয় মহান একুশে বইমেলা। মেলা প্রাঙ্গণে বিশেষজ্ঞরা তুলে ধরেন বাঙালি জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি।

বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২৩ মাঘ ১৪২৬, ১১ জমাদিউল সানি ১৪৪১

আ-মরি বাংলা ভাষা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

আজ ৬ ফেব্রুয়ারি। ফেব্রুয়ারির প্রতিটি দিনই আমাদের জন্য অহঙ্কার আর গৌরবের। ইতিহাসের পাতায় আজকের এই দিনটির ভিন্নতা আছে। ১৯৫২ সালের এইদিনে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে ১৫০ মোগলটুলির পূর্ববঙ্গ কর্মীশিবির অফিসে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় সিদ্ধান্ত হয় আন্দোলনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করার বিষয়ে। অলি আহাদের লেখা বইয়ের সূত্র অনুযায়ী এই সভায় সিদ্ধান্ত হয় আন্দোলনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে ১১ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শহরে পতাকা দিবস পালনের।

নানা পরিস্থিতির কারণে বেশি টাকা সংগ্রহ না হলেও পতাকা দিবসকে সামনে রেখে অনেক নতুন নতুন কর্মী এসে আন্দোলনে যোগ দেন। তখন ৫০০ পোস্টার লেখার দায়িত্ব¡ দেয়া হয়েছিল নাদিরা বেগম ও ডাক্তার সাফিয়াকে। এই দু’জন তাদের অন্য বন্ধুদের নিয়ে পোস্টার লেখার কাজ সম্পন্ন করেন। এইদিন মাদারীপুরের প্রতিবাদী ছাত্ররা সাফল্যের সঙ্গে ধর্মঘট পালন করেন। তখনকার সময়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত সাপ্তাহিক ইত্তেফাকে এই খবরটি প্রকাশিত হয়। ভাষা আন্দোলনের দাবিতে পূর্ববাংলার আন্দোলনকে নিয়ে তখনকার সময়ে পাকিস্তানি পত্রিকায় অনেক কল্পকাহিনী ছাপা হতো। ৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের ডন পত্রিকায় প্রাদেশিকতা শিরোনামে এক সম্পাদকীয়তে লেখা হয় বাংলাকে অন্যতম পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্ররা যে আন্দোলন করছেন তা আন্দোলনের নামে রাষ্ট্রদ্রোহিতা। ডন ছাড়া পাকিস্তানের অন্যান্য পত্রিকাও এ ধরনের সংবাদ বা সম্পাদকীয় প্রকাশ করা হতো। ডন পত্রিকার সম্পাদকীয়র প্রতিবাদ করেন, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অলি আহাদ। এভাবে ফেব্রুয়ারির দিনগুলোতে সবাই নিজ অবস্থান থেকে অবদান রেখেছেন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেয়ার জন্য।

এসব জানা-অজানা ইতিহাস নবীন-প্রবীণ লেখকদের লেখায় বছরের পর বছর তুলে ধরছেন বিশিষ্টজনরা। আর ফেব্রুয়ারি মাস এলে ভাষা আন্দোলনের সংগ্রামী দুঃসাহসী সন্তানদের স্মরণে প্রতিবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আয়োজিত হয় মহান একুশে বইমেলা। মেলা প্রাঙ্গণে বিশেষজ্ঞরা তুলে ধরেন বাঙালি জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি।