কেজরিওয়ালই থাকছেন দিল্লিতে

আবারও দিল্লির ক্ষমতায় থাকছেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি (এএপি)। গতকাল রাজ্যটির বিধানসভা নির্বাচনে বুথফেরত জরিপ থেকে এমন আভাস মিলেছে। দিল্লিতে ৩৬টি আসন পেলেই সরকার গঠন করা যাবে। তবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য রাজ্যটিতে কারা সরকার গড়বে, তার ফলাফল জানা যাবে মঙ্গলবার।

দিল্লিতে গতকাল সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। বিধানসভার মোট ৭০টি আসনে এবার ৬৭২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এদিন দেশটির ১ কোটি ৪৭ লাখ ভোটার নির্ধারণ করবেন প্রার্থীদের ভাগ্য। এর মধ্যে ৮১ লাখ পুরুষ ও ৬৬ লাখ নারী। এবারই নতুন ২ কোটি ৩২ লাখ ভোটারের প্রথমবারের মতো ভোট দেয়ার কথা । এর মধ্যে নয়াদিল্লি আসনে সর্বোচ্চ ২৮ জন প্রার্থী মাঠে আছেন। প্যাটেল নগর আসনে প্রার্থীর সংখ্যা সর্বনিম্ন মাত্র ৪ জন। বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ৫২ দশমিক ৯৫ শতাংশ ভোট পড়েছে দিল্লিতে। নির্বাচনী মাঠে আম আদমি পার্টি, বিজেপি ও কংগ্রেসের ত্রিমুখী লড়াই। এবার ৭০টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে এএপি। তবে শরিকদের সঙ্গে নিয়ে লড়ছে বিজেপি ও কংগ্রেস। মূল লড়াইটা হবে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহের বিজেপি বনাম অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির মধ্যে।

নির্বাচন শেষে একাধিক বুথফেরত জরিপ বলা হচ্ছে, ২০১৫ সালের মতো সাফল্য না পেলেও ৭০টি আসনের মধ্যে ৪৯টি আসনেই জয়ী হবে এএপি। আর ২০টির মতো আসন পেতে পারে দেশটির কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। কংগ্রেস ১টি আসনে জয়ী হতে পারে।

তবে ভোটগ্রহণের আগে থেকেই আপাতত জয় নিয়ে দু’পক্ষই আশাবাদী। এএপি ও বিজেপির অভ্যন্তরীণ জরিপের ফলাফলে আশাবাদী হওয়ার মতো আভাস পাওয়া গেছে। এএপির জরিপে বলছে, তারা ৪৮ থেকে ৫২টি আসন পাবে। সংখ্যাটা ৫৫ বা তারও বেশি হতে পারে। এদিকে বিজেপির অভ্যন্তরীণ জরিপ অনুযায়ী, তারা ৪৩টি আসনই পাচ্ছে। এএপি ও বিজেপির অভ্যন্তরীণ জরিপে নতুনত্বের কিছু নেই। তবে এবার একটা পরিবর্তন হয়েছে। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার মতে, বিজেপি ৪১টি আসনে জয় পেতে পারে। তবে এএপি মনে করছে, খুব খারাপ ফল হলে তারা ৪৫টি আসনে জিতবে। এএপি নেতারা স্বীকার করছেন, গত সাত-দশ দিনে পরিস্থিতি অনেটাই পাল্টে গেছে। আগে মনে হচ্ছিল, বিজেপি কোনভাবেই ১০ আসন ছুঁতে পারবে না। কিন্তু এখন এএপি নেতাদের একাংশ বলছেন, বিজেপি অত খারাপ ফল করবে না। ১৫-২০টি আসনও পেতে পারে। কারণ অবশ্যই ধর্মীয় মেরুকরণ। দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে তাৎপর্য ভিন্ন। কেজরিওয়াল জয় পেলে তিনি যে শুধু শীর্ষেই থাকবেন তাই নয়, একটি রাজ্যে মোদি-শাহ তাদের সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করেও জয় ছিনিয়ে নিতে পারলেন না তা প্রমাণ হয়ে যাবে। এর ফলে বিজেপিতে হতাশা আসতে পারে। এটাও প্রমাণিত হবে, মোদি-শাহ অপরাজেয় নন। দিল্লির মতো জায়গায় কেজরিওয়াল যদি একা বিজেপির শক্তির সঙ্গে লড়ে জিততে পারেন, তা হলে অন্য রাজ্যের জন্যও তা উদাহরণ সৃষ্টি করবে ।

আর কেজরিওয়াল যদি পরাজিত হন, তা হলে বোঝা যাবে মোদি-শাহ আবারও অপরাজেয় হয়ে উঠেছেন। দিল্লির অবধারিত পরাজয়কে তারা জয়ে পরিণত করলে অন্য রাজ্যেও সেটা করে দেখাতে পারবেন। ফলে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের চিন্তা বাড়তে পারে। সবচেয়ে বড় কথা দিল্লিতে জয়ী হলে, বিজেপি দাবি করবে, তারা সিএএ, এনআরসি ও এনপিআর নিয়ে জনগণের সমর্থন পেয়ে গেছে। তারা মোদির সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন।

রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২৬ মাঘ ১৪২৬, ১৪ জমাদিউল সানি ১৪৪১

দিল্লি বিধানসভা

কেজরিওয়ালই থাকছেন দিল্লিতে

সংবাদ ডেস্ক |

আবারও দিল্লির ক্ষমতায় থাকছেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি (এএপি)। গতকাল রাজ্যটির বিধানসভা নির্বাচনে বুথফেরত জরিপ থেকে এমন আভাস মিলেছে। দিল্লিতে ৩৬টি আসন পেলেই সরকার গঠন করা যাবে। তবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য রাজ্যটিতে কারা সরকার গড়বে, তার ফলাফল জানা যাবে মঙ্গলবার।

দিল্লিতে গতকাল সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। বিধানসভার মোট ৭০টি আসনে এবার ৬৭২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এদিন দেশটির ১ কোটি ৪৭ লাখ ভোটার নির্ধারণ করবেন প্রার্থীদের ভাগ্য। এর মধ্যে ৮১ লাখ পুরুষ ও ৬৬ লাখ নারী। এবারই নতুন ২ কোটি ৩২ লাখ ভোটারের প্রথমবারের মতো ভোট দেয়ার কথা । এর মধ্যে নয়াদিল্লি আসনে সর্বোচ্চ ২৮ জন প্রার্থী মাঠে আছেন। প্যাটেল নগর আসনে প্রার্থীর সংখ্যা সর্বনিম্ন মাত্র ৪ জন। বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ৫২ দশমিক ৯৫ শতাংশ ভোট পড়েছে দিল্লিতে। নির্বাচনী মাঠে আম আদমি পার্টি, বিজেপি ও কংগ্রেসের ত্রিমুখী লড়াই। এবার ৭০টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে এএপি। তবে শরিকদের সঙ্গে নিয়ে লড়ছে বিজেপি ও কংগ্রেস। মূল লড়াইটা হবে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহের বিজেপি বনাম অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির মধ্যে।

নির্বাচন শেষে একাধিক বুথফেরত জরিপ বলা হচ্ছে, ২০১৫ সালের মতো সাফল্য না পেলেও ৭০টি আসনের মধ্যে ৪৯টি আসনেই জয়ী হবে এএপি। আর ২০টির মতো আসন পেতে পারে দেশটির কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। কংগ্রেস ১টি আসনে জয়ী হতে পারে।

তবে ভোটগ্রহণের আগে থেকেই আপাতত জয় নিয়ে দু’পক্ষই আশাবাদী। এএপি ও বিজেপির অভ্যন্তরীণ জরিপের ফলাফলে আশাবাদী হওয়ার মতো আভাস পাওয়া গেছে। এএপির জরিপে বলছে, তারা ৪৮ থেকে ৫২টি আসন পাবে। সংখ্যাটা ৫৫ বা তারও বেশি হতে পারে। এদিকে বিজেপির অভ্যন্তরীণ জরিপ অনুযায়ী, তারা ৪৩টি আসনই পাচ্ছে। এএপি ও বিজেপির অভ্যন্তরীণ জরিপে নতুনত্বের কিছু নেই। তবে এবার একটা পরিবর্তন হয়েছে। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার মতে, বিজেপি ৪১টি আসনে জয় পেতে পারে। তবে এএপি মনে করছে, খুব খারাপ ফল হলে তারা ৪৫টি আসনে জিতবে। এএপি নেতারা স্বীকার করছেন, গত সাত-দশ দিনে পরিস্থিতি অনেটাই পাল্টে গেছে। আগে মনে হচ্ছিল, বিজেপি কোনভাবেই ১০ আসন ছুঁতে পারবে না। কিন্তু এখন এএপি নেতাদের একাংশ বলছেন, বিজেপি অত খারাপ ফল করবে না। ১৫-২০টি আসনও পেতে পারে। কারণ অবশ্যই ধর্মীয় মেরুকরণ। দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে তাৎপর্য ভিন্ন। কেজরিওয়াল জয় পেলে তিনি যে শুধু শীর্ষেই থাকবেন তাই নয়, একটি রাজ্যে মোদি-শাহ তাদের সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করেও জয় ছিনিয়ে নিতে পারলেন না তা প্রমাণ হয়ে যাবে। এর ফলে বিজেপিতে হতাশা আসতে পারে। এটাও প্রমাণিত হবে, মোদি-শাহ অপরাজেয় নন। দিল্লির মতো জায়গায় কেজরিওয়াল যদি একা বিজেপির শক্তির সঙ্গে লড়ে জিততে পারেন, তা হলে অন্য রাজ্যের জন্যও তা উদাহরণ সৃষ্টি করবে ।

আর কেজরিওয়াল যদি পরাজিত হন, তা হলে বোঝা যাবে মোদি-শাহ আবারও অপরাজেয় হয়ে উঠেছেন। দিল্লির অবধারিত পরাজয়কে তারা জয়ে পরিণত করলে অন্য রাজ্যেও সেটা করে দেখাতে পারবেন। ফলে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের চিন্তা বাড়তে পারে। সবচেয়ে বড় কথা দিল্লিতে জয়ী হলে, বিজেপি দাবি করবে, তারা সিএএ, এনআরসি ও এনপিআর নিয়ে জনগণের সমর্থন পেয়ে গেছে। তারা মোদির সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন।