দুই প্রার্থী খুইয়েছেন লাখ লাখ টাকা

দু’জন গ্রেফতারের পর তথ্য প্রকাশ

সদ্য সমাপ্ত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন চলাকালে সময়ে প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে সরকার দলীয় দুই প্রার্থী খুইয়েছেন লাখ লাখ টাকা। এ ঘটনায় গতকাল দুই প্রতারককে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো, চক্রের মূলহোতা সাইদুল ইসলাম বিপ্লব ও তার সহযোগী পলাশ ইসলাম। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিভিন্ন অপারেটরের ২৯টি সিম, মোবাইল, ব্যাংকের চেক, নগদ ৪০ হাজার টাকা ও ১২শ’ মার্কিন ডলার।

মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রওশানুল হক সৈকত জানান, চক্রটি ডিএমপির দুই থানার ওসির মুঠোফোন ক্লোন করে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিন কাউন্সিলর প্রার্থীকে জিতিয়ে দেয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাৎ করে। প্রতারক চক্রটি সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও থানার ওসিদের নম্বর ক্লোন করে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল।

তিনি জানান, গত ১৯ জানুয়ারি ডিএনসিসির ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কাশেমকে এবং ২২ জানুয়ারি একই ওয়ার্ডের ইয়াছিন মোল্লাকে আদাবর থানার ওসি মোবাইল নম্বর থেকে ফোন দিয়ে জিতিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয় প্রতারকরা। বিনিময়ে দু’জনের কাছে ১৫ লাখ টাকা দাবি করে তারা। দুই প্রার্থী টাকা দিতে রাজি হন। তাদের মধ্যে আবুল কাশেম সাত লাখ এবং ইয়াছিন মোল্লা পাঁচ লাখ টাকা বিকাশ, নগদ ও রকেটের মাধ্যমে পরিশোধ করেন। দু’দিন পর ২৪ জানুয়ারি ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ডেইজি সারোয়ারকে মোহাম্মদপুর ওসি নম্বর থেকে ফোন দেয়া হয়। তার কাছেও মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে প্রতারকরা। তিনিও একই কায়দায় পাঁচ লাখ টাকা দেন। পরে দ্বিতীয় দফায় আবারও টাকা চাইলে ওই তিন প্রার্থী বুঝতে পারেন যে, তারা প্রতারিত হয়েছেন। এরপর তারা পৃথকভাবে বিষয়টি থানা পুলিশকে জানান। তিনজনই এই ঘটনায় মামলা করেন।

সহকারী কমিশনার রওশানুল হক বলেন, মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানার ওসির নম্বর স্পুফিং (কল স্পুফিং হলো প্রকৃত নম্বর গোপন রেখে অন্য এক ব্যবহারকারীর নম্বর অথবা বিশেষ কোন নম্বর দিয়ে কল করার প্রযুক্তি) করে চক্রটি তিনজন কাউন্সিলর প্রার্থীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনার অনুসন্ধানে মাঠে নামে পুলিশ। ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসব বেশ কয়েকটি জেলায় অভিযান চালানো হয়। শনিবার রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা থেকে প্রথমে সাইদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পলাশ ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চক্রটি বিশেষ দুটি অ্যাপস ব্যবহার করে ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর স্পুফিং করে ৮১১টি প্রতারণা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংসহ বিভিন্ন বিষয়ে অনুসন্ধান করা হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

আরও খবর
সামাজিক অভিশাপগুলোর বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে
২০২১ সালের মধ্যে ই-গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠায় কাজ চলছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি পথভ্রষ্ট হয়েছে তথ্যমন্ত্রী
হার্নিয়ার পরিবর্তে অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন
গ্রেড উন্নীত হলো প্রাথমিক শিক্ষকদের
সাক্ষ্য চলাকালে আদালতে ধর্ষিতা কান্নায় ভেঙে পড়ে
গ্রেফতার ৪ জন রিমান্ডে
পুরানা পল্টনে কারখানা পরিদর্শন কার্যালয়ের সামনে শ্রমিকদের অবস্থান
জমে উঠছে প্রাণের মেলা বইমেলা
অষ্টম দিনে নতুন বই এসেছে ১১৬টি
‘কালি ও কলম’ বঙ্গবন্ধু সংখ্যার মোড়ক উন্মেচন
‘জিপিএ-৫ এর দিকে ঝুঁকছে শিক্ষার্থীরা বই পড়ার দিকে নয়’
দুই দিনব্যাপী নৃত্যোৎসব

সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২৭ মাঘ ১৪২৬, ১৫ জমাদিউল সানি ১৪৪১

ওসির নাম্বার ক্নোন করে প্রতারণা

দুই প্রার্থী খুইয়েছেন লাখ লাখ টাকা

দু’জন গ্রেফতারের পর তথ্য প্রকাশ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

সদ্য সমাপ্ত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন চলাকালে সময়ে প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে সরকার দলীয় দুই প্রার্থী খুইয়েছেন লাখ লাখ টাকা। এ ঘটনায় গতকাল দুই প্রতারককে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো, চক্রের মূলহোতা সাইদুল ইসলাম বিপ্লব ও তার সহযোগী পলাশ ইসলাম। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিভিন্ন অপারেটরের ২৯টি সিম, মোবাইল, ব্যাংকের চেক, নগদ ৪০ হাজার টাকা ও ১২শ’ মার্কিন ডলার।

মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রওশানুল হক সৈকত জানান, চক্রটি ডিএমপির দুই থানার ওসির মুঠোফোন ক্লোন করে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিন কাউন্সিলর প্রার্থীকে জিতিয়ে দেয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাৎ করে। প্রতারক চক্রটি সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও থানার ওসিদের নম্বর ক্লোন করে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল।

তিনি জানান, গত ১৯ জানুয়ারি ডিএনসিসির ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কাশেমকে এবং ২২ জানুয়ারি একই ওয়ার্ডের ইয়াছিন মোল্লাকে আদাবর থানার ওসি মোবাইল নম্বর থেকে ফোন দিয়ে জিতিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয় প্রতারকরা। বিনিময়ে দু’জনের কাছে ১৫ লাখ টাকা দাবি করে তারা। দুই প্রার্থী টাকা দিতে রাজি হন। তাদের মধ্যে আবুল কাশেম সাত লাখ এবং ইয়াছিন মোল্লা পাঁচ লাখ টাকা বিকাশ, নগদ ও রকেটের মাধ্যমে পরিশোধ করেন। দু’দিন পর ২৪ জানুয়ারি ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ডেইজি সারোয়ারকে মোহাম্মদপুর ওসি নম্বর থেকে ফোন দেয়া হয়। তার কাছেও মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে প্রতারকরা। তিনিও একই কায়দায় পাঁচ লাখ টাকা দেন। পরে দ্বিতীয় দফায় আবারও টাকা চাইলে ওই তিন প্রার্থী বুঝতে পারেন যে, তারা প্রতারিত হয়েছেন। এরপর তারা পৃথকভাবে বিষয়টি থানা পুলিশকে জানান। তিনজনই এই ঘটনায় মামলা করেন।

সহকারী কমিশনার রওশানুল হক বলেন, মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানার ওসির নম্বর স্পুফিং (কল স্পুফিং হলো প্রকৃত নম্বর গোপন রেখে অন্য এক ব্যবহারকারীর নম্বর অথবা বিশেষ কোন নম্বর দিয়ে কল করার প্রযুক্তি) করে চক্রটি তিনজন কাউন্সিলর প্রার্থীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনার অনুসন্ধানে মাঠে নামে পুলিশ। ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসব বেশ কয়েকটি জেলায় অভিযান চালানো হয়। শনিবার রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা থেকে প্রথমে সাইদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পলাশ ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চক্রটি বিশেষ দুটি অ্যাপস ব্যবহার করে ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর স্পুফিং করে ৮১১টি প্রতারণা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংসহ বিভিন্ন বিষয়ে অনুসন্ধান করা হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।