এনসিটিবির পাঠ্যবই সংরক্ষণ প্রসঙ্গে

পাঠ্যপুস্তক সংরক্ষণ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। গত রোববার প্রকাশিত সংবাদ-এর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ৩৬ কোটি পাঠ্যবই সংরক্ষণের জন্য এনসিটিবির নিজস্ব কোন সংরক্ষণাগার নেই। স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এনসিটিবির বই সাময়িকভাবে সংরক্ষণ করা হয়। স্থানাভাবে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বই সংরক্ষণ করতে আগ্রহ হারাচ্ছে। ফলে বিপুলসংখ্যক বই সংরক্ষণ করা নিয়ে এনসিটিবি বড় ধরনের সংকটে পড়েছে।

এনসিটিবিকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ পাঠ্যবই ছাপতে হয়। পাঠ্যবইয়ের চাহিদা প্রতিবছরই বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বই ছাপার হারও বাড়ছে। ছাপা হওয়া বই বিতরণের আগ পর্যন্ত দীর্ঘ একটা সময় সংরক্ষণ করতে হয়। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বই বিতরণ করা হলেও ছাপার কাজ শুরু হয় আগের বছর আগস্টে। সংরক্ষণাগার ছাড়া দীর্ঘ সময় কোটি কোটি পাঠ্যবই রাখা দুরূহ কাজ। দুরূহ এ কাজ বছরের পর বছর প্রতিষ্ঠানটি করছে কীভাবে সেটা ভেবে বিস্মিত হতে হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানের বই রাখার জন্য নিজস্ব সংরক্ষণাগার নেই কেন। বছরের পর বছর বিষয়টি উপেক্ষিত থাকে কী করে। সংরক্ষণাগারের অভাবে আগাম বই ছাপতেও বেগ পেতে হয়।

জানা গেছে, বছর দশেক আগে পাঠ্যপুস্তক সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রতি উপজেলায় একটি করে গুদাম তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। সেই উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি কেন সেটা একটা প্রশ্ন। আমলারা কোন কাজ সময়মতো করেছে তার নজির দেশে নেই। তাই বলে বই সংরক্ষণের জন্য গুদাম তৈরির মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ এক দশক ধরে ঝুলে থাকবে সেটা মেনে নেয়া যায় না। আমলাদের কর্মকাণ্ডে মনে হয়, শিক্ষার সম্মুখযাত্রা আটকাবার পণ নিয়েই তারা কাজ করছেন। শিক্ষা খাতের আমলাদের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আদায়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর আগ্রহ আছে বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় না।

আমরা বলতে চাই, অবিলম্বে প্রতি উপজেলায় অন্তত একটি করে সংরক্ষণাগার তৈরি করতে হবে। আগামী শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই ছাপা শুরু হওয়ার আগেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। নিজস্ব সংরক্ষণাগার অবিলম্বে তৈরি করা না হলে আগামীতে আরও বড় ধরনের সংকটে পড়তে হবে এনসিটিবিকে। কাজেই এ নিয়ে আর কোন গাফিলতি আমরা দেখতে চাই না।

সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২৭ মাঘ ১৪২৬, ১৫ জমাদিউল সানি ১৪৪১

এনসিটিবির পাঠ্যবই সংরক্ষণ প্রসঙ্গে

পাঠ্যপুস্তক সংরক্ষণ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। গত রোববার প্রকাশিত সংবাদ-এর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ৩৬ কোটি পাঠ্যবই সংরক্ষণের জন্য এনসিটিবির নিজস্ব কোন সংরক্ষণাগার নেই। স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এনসিটিবির বই সাময়িকভাবে সংরক্ষণ করা হয়। স্থানাভাবে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বই সংরক্ষণ করতে আগ্রহ হারাচ্ছে। ফলে বিপুলসংখ্যক বই সংরক্ষণ করা নিয়ে এনসিটিবি বড় ধরনের সংকটে পড়েছে।

এনসিটিবিকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ পাঠ্যবই ছাপতে হয়। পাঠ্যবইয়ের চাহিদা প্রতিবছরই বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বই ছাপার হারও বাড়ছে। ছাপা হওয়া বই বিতরণের আগ পর্যন্ত দীর্ঘ একটা সময় সংরক্ষণ করতে হয়। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বই বিতরণ করা হলেও ছাপার কাজ শুরু হয় আগের বছর আগস্টে। সংরক্ষণাগার ছাড়া দীর্ঘ সময় কোটি কোটি পাঠ্যবই রাখা দুরূহ কাজ। দুরূহ এ কাজ বছরের পর বছর প্রতিষ্ঠানটি করছে কীভাবে সেটা ভেবে বিস্মিত হতে হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানের বই রাখার জন্য নিজস্ব সংরক্ষণাগার নেই কেন। বছরের পর বছর বিষয়টি উপেক্ষিত থাকে কী করে। সংরক্ষণাগারের অভাবে আগাম বই ছাপতেও বেগ পেতে হয়।

জানা গেছে, বছর দশেক আগে পাঠ্যপুস্তক সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রতি উপজেলায় একটি করে গুদাম তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। সেই উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি কেন সেটা একটা প্রশ্ন। আমলারা কোন কাজ সময়মতো করেছে তার নজির দেশে নেই। তাই বলে বই সংরক্ষণের জন্য গুদাম তৈরির মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ এক দশক ধরে ঝুলে থাকবে সেটা মেনে নেয়া যায় না। আমলাদের কর্মকাণ্ডে মনে হয়, শিক্ষার সম্মুখযাত্রা আটকাবার পণ নিয়েই তারা কাজ করছেন। শিক্ষা খাতের আমলাদের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আদায়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর আগ্রহ আছে বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় না।

আমরা বলতে চাই, অবিলম্বে প্রতি উপজেলায় অন্তত একটি করে সংরক্ষণাগার তৈরি করতে হবে। আগামী শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই ছাপা শুরু হওয়ার আগেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। নিজস্ব সংরক্ষণাগার অবিলম্বে তৈরি করা না হলে আগামীতে আরও বড় ধরনের সংকটে পড়তে হবে এনসিটিবিকে। কাজেই এ নিয়ে আর কোন গাফিলতি আমরা দেখতে চাই না।