ফিরতি টিকিট ৫০ শতাংশ করার দাবি

আজ থেকে সপ্তাহে ৫ দিন চলবে

আজ থেকে ঢাকা-কলকাতা রুটে চলাচল করা মৈত্রী এক্সপ্রেসের ট্রিপ (শিডিউল) বৃদ্ধি পাচ্ছে। সপ্তাহে চারদিন ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে এই ট্রেন চলাচল করে। আজ থেকে সপ্তাহে ৫ দিন চলাচল করবে। বর্তমানে সপ্তাহে শুক্রবার, শনিবার, রোববার ও বুধবার ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে কলকাতার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বিকেল ৪টায় কলকাতায় স্টেশনে পৌঁছায়। ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে মঙ্গলবারও ঢাকা-কলকাতা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচল করবে। কলকাতা স্টেশন থেকে সপ্তাহে শুক্রবার, শনিবার, সোমবার, ও মঙ্গলবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে বুধবারও কলকাতা-ঢাকা রুটের মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচল করবে। তবে মৈত্রী এক্সপ্রেসের ফিরতি টিকিট ৫০ শতাংশ করার দাবি জানান যাত্রীরা।

জানা গেছে, ‘দুই বাংলার বুকে মৈত্রী থাকুক সুখে’ এই স্লোগান নিয়ে ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল যাত্রা শুরু করেছিল ‘ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস’। দীর্ঘ ১২ বছর বা এক যুগ অতিক্রম করেছে দুই বাংলার এই মৈত্রী এক্সপ্রেস। দীর্ঘ সময়ে এই ট্রেনে যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছি। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাতায়াতের এখন জনপ্রিয় মাধ্যম এই রেলপথ। ২৯ দিন আগে ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী ট্রেনের টিকিট ছাড়া হয়। কিন্তু তারপরও যাত্রীদের চাহিদা মতো টিকিট দিতে পারে না রেলওয়ে। বর্তমানে ৪৫৬ আসনের বাংলাদেশ ও ভারতের ১টি করে রেক (ট্রেন) সপ্তাহে ৪ দিন দুই বাংলায় চলাচল করে। আজ থেকে সপ্তাহে ৫ দিন চলাচল করবে। তবে মৈত্রী ট্রেনের রিটার্ন (ফিরতি) টিকিটের চাহিদা থাকলেও তা পাওয়া যায় না। প্রতিটি ট্রেনে মাত্র ৩৬টি রিটার্ন টিকিট নির্ধারণ করা আছে। যা খুবেই সামান্য। তবে রিটার্ন টিকিটের সংখ্যা ৭৬টি করার জন্য রেলওয়ে পক্ষ থেকে ভারতের চাওয়া হয়েছে। মৈত্রী ট্রেনে বাংলাদেশে যাত্রীদের ৫০ শতাংশ রিটার্ন টিকিটের চাহিদা রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে রিটার্ন টিকিটের সংখ্যা বৃদ্ধি প্রস্তাব করা হলেও ভারতের রেলওয়ে পক্ষ কোন সাড়া পাওয়া যায় না বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।

এ বিষয়ে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে যে ৮টি ইন্টারচেঞ্জ রেলপথ ছিল তার মধ্যে ৪টি চালু আছে। ৪টি দিয়ে যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করছে। বাকি ৪টির মধ্যে একটির লাইন স্থাপন শেষ পর্যায়ে। বাকি তিনটি রুটে নতুন রেলপথ স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। দু’দেশের রেল যোগাযোগ বাড়াতে যাত্রীবাহী ট্রেনের ট্রিপ বাড়ানোর পাশাপাশি আরও দুটি রুটে নতুন ট্রেন পরিচালনার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। রহনপুর-সিঙ্গাবাদ ও চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুটে আরও দুটি নতুন ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। উভয় দেশ নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে- সবকয়টি লাইন দিয়েই যেন মালবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেন চালানো যায়। যাত্রীদের সুবিধার্থে ঢাকা-কলকাতা রুটে ট্রেনে একই দিনে আসা-যাওয়ার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।

জানা গেছে, ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’ উদ্বোধনের দিন থেকে বাংলাদেশ-ভারত রেলযাত্রীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই ট্রেন সার্ভিস। সপ্তাহে চারদিন ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে এই ট্রেন চলাচল করে। বর্তমানে একটি বৃদ্ধি করে ৫ দিন করে চলবে। বাংলাদেশি রেক দিয়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে শুক্রবার, রোববার ও মঙ্গলবার এবং কলকাতা থেকে শনিবার, সোমবার ও বুধবার চলাচল করবে। এছাড়া ভারতীয় রেক দিয়ে কলকাতা-ঢাকা রুটে চলাচল করবে শুক্রবার ও মঙ্গলবার এবং ঢাকা-কলকাতা রুটে চলাচল করবে শনিবার ও বুধবার। প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার ঢাকা-কলকাতা এবং রোববার ও বৃহস্পতিবার কলকাতা-ঢাকা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস বন্ধ থাকবে। অন্যদিকে, ২০১৭ সালের ৯ এপ্রিল চালু হওয়া ‘খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেস’ এত দিন সপ্তাহে একদিন চলাচল করত। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে আরও একদিন বাড়ানো হয়েছে। এটি সপ্তাহে ২ দিন চলাচল করবে। এরমধ্যে ভারতীয় রেক দিয়ে প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে ছেড়ে এসে দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকায় পৌঁছবে। খুলনা স্টেশন থেকে দুপুর দেড়টায় কলকাতার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সন্ধ্যা ৬টায় কলতাকায় পৌঁছবে বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।

এ বিষয়ে রেলওয়ে মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামান সংবাদকে বলেন, যাত্রীদের চাহিদার আলোকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মৈত্রী এক্সপ্রেস ও বন্ধন এক্সপ্রেসের ট্রিপ একটি করে বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে মৈত্রী ও ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে বন্ধনের ট্রিপ বৃদ্ধি পাবে। মৈত্রী আগে ৪ দিন চলাচল করত এখন ৫ দিন চলবে। এছাড়া বন্ধন এক্সপ্রেস ১ দিন চলাচল করত এখন ২ দিন করে চলবে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলাচলকারী যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন বেশ লাভজনক। ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসের আয়ের ৭৫ শতাংশ এবং খুলনা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের আয়ের ৫০ শতাংশ অর্থ পায় বাংলাদেশ। ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসের ভাড়া এসি সিট ৩ হাজার ৪৩৫ টাকা এবং এসি চেয়ার ২ হাজার ৪৫৫ টাকা। খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেসের ভাড়া এসি সিট ১ হাজার ৯৭০ টাকা এবং এসি চেয়ার ১ হাজার ৪৮০ টাকা। ট্রেনের কোন ট্রিপেই সিট খালি থাকে না। শুরুতে ঢাকা থেকে কলকাতায় যেতে ট্রেনের ১১-১২ ঘণ্টা সময় লগলেও এখন পৌনে ৮ ঘণ্টা সময় লাগছে। খুলনা-কলকাতা রুটে সময় লাগছে ৫ ঘণ্টা। একই দিনে ট্রেন আসা-যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে কলকাতা রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে রাত ১১টায় ট্রেনটি ছাড়লে দর্শনা হয়ে কলকাতা পৌঁছবে সকাল সাড়ে ৭টায়। আবার সকাল সাড়ে ১০টায় ট্রেনটি কলকাতা থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকায় পৌঁছবে। এছাড়া মৈত্রী ট্রেনের ফিরতি টিকিট ৭৬টি করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এই সব প্রস্তাব নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের রেলওয়ে কর্তকর্তাদের বৈঠকে আলোচনা করা হবে। এছাড়া বাংলাদেশ ভারতের ৮টি ইন্টারচেঞ্জ রুটের মধ্যে বেনাপোল-পেট্রোপোল, দর্শনা-গেদে, রহনপুর-সিঙ্গাবাদ ও বিরল-রাধিকাপুর রুটে রেলযোগাযোগ আছে। বাকি ৪টি- চিলাহাটি-হলদিবাড়ি, বুড়িমারী-চেংড়াবান্ধা, কুলাউড়া-মহিষাসন ও মোগলহাট-গিতলদহা লাইন নির্মাণে প্রকল্প নেয়া হয়েছে। চিলাহাটি-হলদিবাড়ি নতুন রেলপথ নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পথে। কয়েক মাসের মধ্যে এ পথেও নতুন একটি মৈত্রী এক্সপ্রেস চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মো. মিয়াজাহান সংবাদকে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের চলাচল করা যাত্রীবাহী ট্রেন সার্ভিস ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’ ও ‘বন্ধন এক্সপ্রেসে’র শিডিউল একদিন করে বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ঢাকা ও কলকাতা রুটের মৈত্রী এক্সপ্রেস আগে সপ্তাহে চারদিন চলাচল করত এখন থেকে ৫ দিন করে চলাচল করবে। এছাড়া খুলনা-কলকাতা রুটের বন্ধন এক্সপ্রেস আগে সপ্তাহে ১ দিন চলাচল করত এখন থেকে সপ্তাহে ২ দিন করে চলাচল করবে। বর্তমানে যে পরিমাণ ট্রেন চলছে তার তিনগুণ বাড়ালেও যাত্রীচাপ থাকবে। এখন তো ২০-২৫ দিন আগে টিকিট কেটেও সিট পাচ্ছেন না যাত্রীরা। এছাড়া যাত্রীদের ফিরতি টিকিটের চাহিদা আছে। কিন্তু আলোকে ফিরতি টিকিট পাওয়া যায় না। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতের কাছের ৫০ শতাংশ ফিরতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা তা দেয় নি। দুই দেশের রেলওয়ে কর্মকর্তাদের বৈঠকে এ বিষয়টি আবার উঠানো হবে বলে জানান তিনি।

আরও খবর
গণপরিবহনে লাগামহীন ভাড়া
বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা এখনও অনিশ্চিত
সড়ক দুর্ঘটনা ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে
বোনের মৃত্যু শোককে শক্তিতে পরিণত করে বিশ্বকাপ ছিনিয়ে এনেছে আকবর
আনন্দে মেতেছে সারাদেশ
আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয় মুজিববর্ষে জাতির জন্য উপহার প্রধানমন্ত্রী
বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারদের প্লট ও সম্মানি দেয়ার দাবি সংসদে
বিশ্বসেরা আরচার রোমান সানা
আনসার আল ইসলামের ৫ জঙ্গি গ্রেফতার
চীন থেকে আর কাউকে আনবে না সরকার
ভোট পুনর্যাচাই ঘুড়ি নয়, ঝুড়ি জিতেছে
চীন থেকে আসা একজনকে রংপুর থেকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে স্থানান্তর
দুই কিশোরী ধর্ষণ
তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়েই রয়ে গেছে
কলকাতা বইমেলা ২০২১ বঙ্গবন্ধুর নামে উৎসর্গ করা হবে
ক্ষণগণনা : আর ৩৪ দিন
আ-মরি বাংলা ভাষা

মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২৮ মাঘ ১৪২৬, ১৬ জমাদিউল সানি ১৪৪১

ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস

ফিরতি টিকিট ৫০ শতাংশ করার দাবি

আজ থেকে সপ্তাহে ৫ দিন চলবে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

আজ থেকে ঢাকা-কলকাতা রুটে চলাচল করা মৈত্রী এক্সপ্রেসের ট্রিপ (শিডিউল) বৃদ্ধি পাচ্ছে। সপ্তাহে চারদিন ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে এই ট্রেন চলাচল করে। আজ থেকে সপ্তাহে ৫ দিন চলাচল করবে। বর্তমানে সপ্তাহে শুক্রবার, শনিবার, রোববার ও বুধবার ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে কলকাতার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বিকেল ৪টায় কলকাতায় স্টেশনে পৌঁছায়। ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে মঙ্গলবারও ঢাকা-কলকাতা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচল করবে। কলকাতা স্টেশন থেকে সপ্তাহে শুক্রবার, শনিবার, সোমবার, ও মঙ্গলবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে বুধবারও কলকাতা-ঢাকা রুটের মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচল করবে। তবে মৈত্রী এক্সপ্রেসের ফিরতি টিকিট ৫০ শতাংশ করার দাবি জানান যাত্রীরা।

জানা গেছে, ‘দুই বাংলার বুকে মৈত্রী থাকুক সুখে’ এই স্লোগান নিয়ে ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল যাত্রা শুরু করেছিল ‘ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস’। দীর্ঘ ১২ বছর বা এক যুগ অতিক্রম করেছে দুই বাংলার এই মৈত্রী এক্সপ্রেস। দীর্ঘ সময়ে এই ট্রেনে যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছি। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাতায়াতের এখন জনপ্রিয় মাধ্যম এই রেলপথ। ২৯ দিন আগে ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী ট্রেনের টিকিট ছাড়া হয়। কিন্তু তারপরও যাত্রীদের চাহিদা মতো টিকিট দিতে পারে না রেলওয়ে। বর্তমানে ৪৫৬ আসনের বাংলাদেশ ও ভারতের ১টি করে রেক (ট্রেন) সপ্তাহে ৪ দিন দুই বাংলায় চলাচল করে। আজ থেকে সপ্তাহে ৫ দিন চলাচল করবে। তবে মৈত্রী ট্রেনের রিটার্ন (ফিরতি) টিকিটের চাহিদা থাকলেও তা পাওয়া যায় না। প্রতিটি ট্রেনে মাত্র ৩৬টি রিটার্ন টিকিট নির্ধারণ করা আছে। যা খুবেই সামান্য। তবে রিটার্ন টিকিটের সংখ্যা ৭৬টি করার জন্য রেলওয়ে পক্ষ থেকে ভারতের চাওয়া হয়েছে। মৈত্রী ট্রেনে বাংলাদেশে যাত্রীদের ৫০ শতাংশ রিটার্ন টিকিটের চাহিদা রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে রিটার্ন টিকিটের সংখ্যা বৃদ্ধি প্রস্তাব করা হলেও ভারতের রেলওয়ে পক্ষ কোন সাড়া পাওয়া যায় না বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।

এ বিষয়ে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে যে ৮টি ইন্টারচেঞ্জ রেলপথ ছিল তার মধ্যে ৪টি চালু আছে। ৪টি দিয়ে যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করছে। বাকি ৪টির মধ্যে একটির লাইন স্থাপন শেষ পর্যায়ে। বাকি তিনটি রুটে নতুন রেলপথ স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। দু’দেশের রেল যোগাযোগ বাড়াতে যাত্রীবাহী ট্রেনের ট্রিপ বাড়ানোর পাশাপাশি আরও দুটি রুটে নতুন ট্রেন পরিচালনার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। রহনপুর-সিঙ্গাবাদ ও চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুটে আরও দুটি নতুন ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। উভয় দেশ নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে- সবকয়টি লাইন দিয়েই যেন মালবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেন চালানো যায়। যাত্রীদের সুবিধার্থে ঢাকা-কলকাতা রুটে ট্রেনে একই দিনে আসা-যাওয়ার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।

জানা গেছে, ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’ উদ্বোধনের দিন থেকে বাংলাদেশ-ভারত রেলযাত্রীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই ট্রেন সার্ভিস। সপ্তাহে চারদিন ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে এই ট্রেন চলাচল করে। বর্তমানে একটি বৃদ্ধি করে ৫ দিন করে চলবে। বাংলাদেশি রেক দিয়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে শুক্রবার, রোববার ও মঙ্গলবার এবং কলকাতা থেকে শনিবার, সোমবার ও বুধবার চলাচল করবে। এছাড়া ভারতীয় রেক দিয়ে কলকাতা-ঢাকা রুটে চলাচল করবে শুক্রবার ও মঙ্গলবার এবং ঢাকা-কলকাতা রুটে চলাচল করবে শনিবার ও বুধবার। প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার ঢাকা-কলকাতা এবং রোববার ও বৃহস্পতিবার কলকাতা-ঢাকা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস বন্ধ থাকবে। অন্যদিকে, ২০১৭ সালের ৯ এপ্রিল চালু হওয়া ‘খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেস’ এত দিন সপ্তাহে একদিন চলাচল করত। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে আরও একদিন বাড়ানো হয়েছে। এটি সপ্তাহে ২ দিন চলাচল করবে। এরমধ্যে ভারতীয় রেক দিয়ে প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে ছেড়ে এসে দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকায় পৌঁছবে। খুলনা স্টেশন থেকে দুপুর দেড়টায় কলকাতার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সন্ধ্যা ৬টায় কলতাকায় পৌঁছবে বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।

এ বিষয়ে রেলওয়ে মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামান সংবাদকে বলেন, যাত্রীদের চাহিদার আলোকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মৈত্রী এক্সপ্রেস ও বন্ধন এক্সপ্রেসের ট্রিপ একটি করে বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে মৈত্রী ও ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে বন্ধনের ট্রিপ বৃদ্ধি পাবে। মৈত্রী আগে ৪ দিন চলাচল করত এখন ৫ দিন চলবে। এছাড়া বন্ধন এক্সপ্রেস ১ দিন চলাচল করত এখন ২ দিন করে চলবে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলাচলকারী যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন বেশ লাভজনক। ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসের আয়ের ৭৫ শতাংশ এবং খুলনা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের আয়ের ৫০ শতাংশ অর্থ পায় বাংলাদেশ। ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসের ভাড়া এসি সিট ৩ হাজার ৪৩৫ টাকা এবং এসি চেয়ার ২ হাজার ৪৫৫ টাকা। খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেসের ভাড়া এসি সিট ১ হাজার ৯৭০ টাকা এবং এসি চেয়ার ১ হাজার ৪৮০ টাকা। ট্রেনের কোন ট্রিপেই সিট খালি থাকে না। শুরুতে ঢাকা থেকে কলকাতায় যেতে ট্রেনের ১১-১২ ঘণ্টা সময় লগলেও এখন পৌনে ৮ ঘণ্টা সময় লাগছে। খুলনা-কলকাতা রুটে সময় লাগছে ৫ ঘণ্টা। একই দিনে ট্রেন আসা-যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে কলকাতা রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে রাত ১১টায় ট্রেনটি ছাড়লে দর্শনা হয়ে কলকাতা পৌঁছবে সকাল সাড়ে ৭টায়। আবার সকাল সাড়ে ১০টায় ট্রেনটি কলকাতা থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকায় পৌঁছবে। এছাড়া মৈত্রী ট্রেনের ফিরতি টিকিট ৭৬টি করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এই সব প্রস্তাব নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের রেলওয়ে কর্তকর্তাদের বৈঠকে আলোচনা করা হবে। এছাড়া বাংলাদেশ ভারতের ৮টি ইন্টারচেঞ্জ রুটের মধ্যে বেনাপোল-পেট্রোপোল, দর্শনা-গেদে, রহনপুর-সিঙ্গাবাদ ও বিরল-রাধিকাপুর রুটে রেলযোগাযোগ আছে। বাকি ৪টি- চিলাহাটি-হলদিবাড়ি, বুড়িমারী-চেংড়াবান্ধা, কুলাউড়া-মহিষাসন ও মোগলহাট-গিতলদহা লাইন নির্মাণে প্রকল্প নেয়া হয়েছে। চিলাহাটি-হলদিবাড়ি নতুন রেলপথ নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পথে। কয়েক মাসের মধ্যে এ পথেও নতুন একটি মৈত্রী এক্সপ্রেস চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মো. মিয়াজাহান সংবাদকে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের চলাচল করা যাত্রীবাহী ট্রেন সার্ভিস ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’ ও ‘বন্ধন এক্সপ্রেসে’র শিডিউল একদিন করে বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ঢাকা ও কলকাতা রুটের মৈত্রী এক্সপ্রেস আগে সপ্তাহে চারদিন চলাচল করত এখন থেকে ৫ দিন করে চলাচল করবে। এছাড়া খুলনা-কলকাতা রুটের বন্ধন এক্সপ্রেস আগে সপ্তাহে ১ দিন চলাচল করত এখন থেকে সপ্তাহে ২ দিন করে চলাচল করবে। বর্তমানে যে পরিমাণ ট্রেন চলছে তার তিনগুণ বাড়ালেও যাত্রীচাপ থাকবে। এখন তো ২০-২৫ দিন আগে টিকিট কেটেও সিট পাচ্ছেন না যাত্রীরা। এছাড়া যাত্রীদের ফিরতি টিকিটের চাহিদা আছে। কিন্তু আলোকে ফিরতি টিকিট পাওয়া যায় না। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতের কাছের ৫০ শতাংশ ফিরতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা তা দেয় নি। দুই দেশের রেলওয়ে কর্মকর্তাদের বৈঠকে এ বিষয়টি আবার উঠানো হবে বলে জানান তিনি।