ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ভোট পুনর্যাচাইয়ে ঘুড়ি নয়, ঝুড়ি প্রতীকের প্রার্থী শেখ মো. আলমগীর জয়লাভ করেছেন। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন স্থগিত এই ওয়ার্ডের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন।
রিটানিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন বলেন, গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণের পর ফল প্রকাশের সময় প্রিজাইডিং কর্মকর্তার ‘ভুলে’ টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকের প্রার্থী জুবায়েদ আদেলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। তিনি জানান, আরমানিটোলা উচ্চবিদ্যালয়ের পুরুষ ভোটকেন্দ্রে ঝুড়ি প্রতীকে ভোট পড়েছিল ৪৩৯ ভোট আর ঘুড়িতে ২০২ ভোট। কিন্তু সেটি উল্টে গিয়ে ফল এসেছে। ফলে পুরো রেজাল্টে টিফিন ক্যারিয়ারের প্রার্থী জিতে গিয়েছিলেন। পরে ঝুড়ি প্রতীকের প্রার্থী অভিযোগ দেয়ার পর এটি যাচাই করে দেখা গেছে প্রার্থী ও প্রিজাইডিং অফিসারের ফলাফল ভিন্ন। পরে আমরা বাধ্য হয়ে ফল স্থগিত করেছি, বিধি ও আইন দেখেছি। প্রিজাইডিং অফিসার বলেছে, তিনি লিখতে ভুল করেছেন, তিনি লিখিতও দিয়েছেন সেটি। আবদুল বাতেন বলেন, ইভিএমের রেজাল্টই সত্য, আর প্রিজাইডিং অফিসার যেহেতু স্বীকার করেছে ভুল হয়েছে, তাই আমরা ইভিএমের ফলাফলই গ্রহণ করেছি। যেহেতু শেখ মোহাম্মদ আলমগীর ঝুড়ি প্রতীকে ৯টি কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ২৪৭২ ভোট পেয়েছেন, সেজন্য আমি সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত হিসেবে ৩১ নাম্বর ওয়ার্ডে শেখ আলমগীরকে বিজয়ী ঘোষণা করলাম।
ভোট গণনায় যে ভুল : ১ ফেব্রুয়ারির ভোটে আদেলের টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকে সর্বোচ্চ ২৪৪৫ ভোট পড়েছে জানিয়ে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। তখন শেখ আলমগীরের ঝুড়ি প্রতীকে দেখানো হয়েছিল ২২৩৫ ভোট। ইরোজ আহমেদ ঘুড়ি প্রতীকে ১৬৭৫ ভোট পান বলে ফল ঘোষণার সময় দেখানো হয়। ওইদিন ফল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ আলমগীর তা চ্যালেঞ্জ করে বলেন, আরমানিটোলা উচ্চবিদ্যালয়ের পুরুষ ভোটকেন্দ্রে (কেন্দ্র-৫২০) তার প্রাপ্ত ভোট ঘুড়ি প্রতীকের প্রার্থী ইরোজ আহমেদের ভোটের সঙ্গে যোগ হয়ে গেছে। অন্যদিকে ঘুড়ি প্রতীকের ভোট যোগ হয়েছে তার ভোটের সঙ্গে। আরমানিটোলার ওই কেন্দ্রে তার ঘুড়ি প্রতীকে প্রাপ্ত ভোট দেখানো হয়েছিল ৪৩৯। ফলাফল পুনর্যাচাইয়ে আরমানিটোলার ৪৩৯ ভোট ঝুড়ি প্রতীকে যোগ করায় শেখ আলমগীরের ভোট দাঁড়িয়েছে ২৪৭২ ভোট, যা জুবায়েদ আদেলের (টিফিন ক্যারিয়ার) ২৪৪৫ ভোটের চেয়ে বেশি।
ইভিএম আগের সব পদ্ধতির চেয়ে নির্ভরযোগ্য-এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক : ফলাফল ঘোষণার সময় উপস্থিত জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ইভিএম নতুন পদ্ধতি, যার কারণে কিছু কনফিউশন থাকতে পারে। তবে এটি আগের সব পদ্ধতির চেয়ে নির্ভরযোগ্য। তিনি বলেন, একটি কেন্দ্রে যে কয়টি বুথ থাকবে, তার সব ইনডিভিজুয়াল ফলাফল অডিট কার্ডে সংরক্ষিত থাকে। এছাড়াও কতজন ভোটারের ফিঙ্গারপ্রিন্ট মেলেনি, তাদের তথ্যসহ কার্ডে সংরক্ষিত থাকে। কেন্দ্রে কতজন ভোটার আছে, আর কতজন ভোট দিয়েছে, কোন প্রতীকে কত ভোট পড়েছে সব তথ্যই সংরক্ষিত থাকে এই কার্ডে।
আদালতে যাবেন আদেল : এদিকে নতুন করে ফল ঘোষণায় আপত্তি জানিয়ে জুবায়েদ আদেল সাংবাদিকদের বলেন, এই ফলাফল আমি মানি না। কারণ আমাকে আগে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। আমাকে এ সংক্রান্ত কাগজও দেয়া হয়েছে। এখন আবার নতুনভাবে যে ফল ঘোষণা হল, সেটা আমি মানি না। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দেন আদেল।
মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২৮ মাঘ ১৪২৬, ১৬ জমাদিউল সানি ১৪৪১
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ভোট পুনর্যাচাইয়ে ঘুড়ি নয়, ঝুড়ি প্রতীকের প্রার্থী শেখ মো. আলমগীর জয়লাভ করেছেন। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন স্থগিত এই ওয়ার্ডের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন।
রিটানিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন বলেন, গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণের পর ফল প্রকাশের সময় প্রিজাইডিং কর্মকর্তার ‘ভুলে’ টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকের প্রার্থী জুবায়েদ আদেলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। তিনি জানান, আরমানিটোলা উচ্চবিদ্যালয়ের পুরুষ ভোটকেন্দ্রে ঝুড়ি প্রতীকে ভোট পড়েছিল ৪৩৯ ভোট আর ঘুড়িতে ২০২ ভোট। কিন্তু সেটি উল্টে গিয়ে ফল এসেছে। ফলে পুরো রেজাল্টে টিফিন ক্যারিয়ারের প্রার্থী জিতে গিয়েছিলেন। পরে ঝুড়ি প্রতীকের প্রার্থী অভিযোগ দেয়ার পর এটি যাচাই করে দেখা গেছে প্রার্থী ও প্রিজাইডিং অফিসারের ফলাফল ভিন্ন। পরে আমরা বাধ্য হয়ে ফল স্থগিত করেছি, বিধি ও আইন দেখেছি। প্রিজাইডিং অফিসার বলেছে, তিনি লিখতে ভুল করেছেন, তিনি লিখিতও দিয়েছেন সেটি। আবদুল বাতেন বলেন, ইভিএমের রেজাল্টই সত্য, আর প্রিজাইডিং অফিসার যেহেতু স্বীকার করেছে ভুল হয়েছে, তাই আমরা ইভিএমের ফলাফলই গ্রহণ করেছি। যেহেতু শেখ মোহাম্মদ আলমগীর ঝুড়ি প্রতীকে ৯টি কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ২৪৭২ ভোট পেয়েছেন, সেজন্য আমি সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত হিসেবে ৩১ নাম্বর ওয়ার্ডে শেখ আলমগীরকে বিজয়ী ঘোষণা করলাম।
ভোট গণনায় যে ভুল : ১ ফেব্রুয়ারির ভোটে আদেলের টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকে সর্বোচ্চ ২৪৪৫ ভোট পড়েছে জানিয়ে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। তখন শেখ আলমগীরের ঝুড়ি প্রতীকে দেখানো হয়েছিল ২২৩৫ ভোট। ইরোজ আহমেদ ঘুড়ি প্রতীকে ১৬৭৫ ভোট পান বলে ফল ঘোষণার সময় দেখানো হয়। ওইদিন ফল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ আলমগীর তা চ্যালেঞ্জ করে বলেন, আরমানিটোলা উচ্চবিদ্যালয়ের পুরুষ ভোটকেন্দ্রে (কেন্দ্র-৫২০) তার প্রাপ্ত ভোট ঘুড়ি প্রতীকের প্রার্থী ইরোজ আহমেদের ভোটের সঙ্গে যোগ হয়ে গেছে। অন্যদিকে ঘুড়ি প্রতীকের ভোট যোগ হয়েছে তার ভোটের সঙ্গে। আরমানিটোলার ওই কেন্দ্রে তার ঘুড়ি প্রতীকে প্রাপ্ত ভোট দেখানো হয়েছিল ৪৩৯। ফলাফল পুনর্যাচাইয়ে আরমানিটোলার ৪৩৯ ভোট ঝুড়ি প্রতীকে যোগ করায় শেখ আলমগীরের ভোট দাঁড়িয়েছে ২৪৭২ ভোট, যা জুবায়েদ আদেলের (টিফিন ক্যারিয়ার) ২৪৪৫ ভোটের চেয়ে বেশি।
ইভিএম আগের সব পদ্ধতির চেয়ে নির্ভরযোগ্য-এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক : ফলাফল ঘোষণার সময় উপস্থিত জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ইভিএম নতুন পদ্ধতি, যার কারণে কিছু কনফিউশন থাকতে পারে। তবে এটি আগের সব পদ্ধতির চেয়ে নির্ভরযোগ্য। তিনি বলেন, একটি কেন্দ্রে যে কয়টি বুথ থাকবে, তার সব ইনডিভিজুয়াল ফলাফল অডিট কার্ডে সংরক্ষিত থাকে। এছাড়াও কতজন ভোটারের ফিঙ্গারপ্রিন্ট মেলেনি, তাদের তথ্যসহ কার্ডে সংরক্ষিত থাকে। কেন্দ্রে কতজন ভোটার আছে, আর কতজন ভোট দিয়েছে, কোন প্রতীকে কত ভোট পড়েছে সব তথ্যই সংরক্ষিত থাকে এই কার্ডে।
আদালতে যাবেন আদেল : এদিকে নতুন করে ফল ঘোষণায় আপত্তি জানিয়ে জুবায়েদ আদেল সাংবাদিকদের বলেন, এই ফলাফল আমি মানি না। কারণ আমাকে আগে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। আমাকে এ সংক্রান্ত কাগজও দেয়া হয়েছে। এখন আবার নতুনভাবে যে ফল ঘোষণা হল, সেটা আমি মানি না। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দেন আদেল।