বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল প্রযুক্তি গড়ে তোলার অদম্য আয়োজন

মোস্তাফা জব্বার

২০১৯ সালের বিশ্ব মোবাইল কংগ্রেসে ৫জি কেন্দ্রিক কর্মকা- বস্তুত অনেক বিস্তৃত হয়ে পড়ে। আমরা যেমনি চীনা কোম্পানি জেডটিই ও হুয়াওয়ের সঙ্গে কথা বলি তেমনি নকিয়া এরিকসনের মতো কোম্পানির সঙ্গেও কথা বলি। চীনা প্রযুক্তি দেখার পাশাপাশি অন্যদের প্রযুক্তিও দেখার চেষ্টা করি। অন্যদিকে আমরা চেষ্টা করি বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগে আগ্রহ তৈরি করার জন্য। মাত্র এক বছর আগে ৫জি নামক একটি প্রযুক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ হবার পর আমরা ১৯ সালে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্য প্রদর্শনীতে পেলাম অসাধারণ অগ্রগতির স্বাক্ষর।

নকিয়ার’র প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন ও ঊর্ধ্বতন কর্মকতাগণের সঙ্গে বৈঠক : মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস চলাকালীন বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতা হিসেবে আমি ঘড়শরধ’র প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করি এবং তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সভায় মিলিত হই। এ সময় আমি প্যাভিলিয়ন এ প্রদর্শিত বিভিন্ন নতুন উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ও সেবা অবলোকন করি। নোকিয়া বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার প্রযুক্তি পণ্য ও সেবা প্রদানের জন্য চুক্তিবদ্ধ। টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠান কারিগরি সেবা প্রদান করে আসছে। এ বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সভা চলাকালীন টেলিটকের সেবার মান বৃদ্ধি এবং টেলিটকের মাধ্যমে ফাইভ জি সেবা প্রবর্তনে কারিগরি সহায়তার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সে সময় আমি এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত প্রস্তাবনা প্রদানের জন্য অনুরোধ জানালে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রস্তাবনা প্রেরণের বিষয়ে নোকিয়ার ঊর্ধ্বতন কর্মকতাগণ আমাকে আশ্বাস প্রদান করেন। এ সময়ে নোকিয়ার পক্ষে গ্লোবাল হেড এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠককালে বিটিআরসির চেয়ারম্যান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, টেলিটক বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর ও বিটিআরসির কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এরিকসনের প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক : মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস আমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল এরিকসনের প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করে এবং তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সভায় আমরা মিলিত হই। তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ খাতের বিবর্তনের চিত্র এবং ৫জি প্রবর্তনের মানব সভ্যতা বিকাশে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে বৈঠকে তার প্রর্দশনী করা হয়। এতে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অভিভূত হয়। পরবর্তীতে দ্বিপাক্ষিক সভা চলাকালীন বাংলাদেশে ৫জি প্রযুক্তি প্রচলনে যে সব প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা রয়েছে তার বিস্তারিত তথ্যভিত্তিক প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করা হয়। এ সময় এরিকসনের গ্লোবাল ও এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠককালে বিটিআরসির চেয়ারম্যান ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, টেলিটক বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর ও বিটিআরসির কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

টেলিনর গ্রুপের সঙ্গে বৈঠক : টেলিনর গ্রুপের গ্রুপ প্রেসিডেন্ট ও সিইও সিগভেৎ ব্রেককের আমন্ত্রণে আমি ও বিটিআরসির চেয়ারম্যান এক দ্বিপক্ষীয় সভায় মিলিত হই। সভায় বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ অপারেটরগণের সেবার মান, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং ৫জি প্রচলনের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। সভায় আমি টেলিনর গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোনের সেবার মান বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন কমপ্লায়েন্স ইস্যু মেনে চলার নির্দেশনা পালনের জন্য আহ্বান জানাই। আমি আরও বলেছি স্বল্প পরিমাণ স্পেকট্রাম বরাদ্দ নিয়ে গ্রামীণফোন অধিক সংখ্যক গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে যার ফলে সেবার মান কোন ক্রমে কাক্সিক্ষত মানের নয়। এ সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলা হলে টেলিনর কর্তৃপক্ষ দ্রুত সমস্যা সমাধানসহ স্পেকট্রাম ক্রয় করা হবে মর্মে আমাকে আশ্বাস প্রদান করেন। এছাড়াও টেলিনর গ্রুপের সিইও বাংলাদেশ সরকার এবং রেগুলেটরের সব নিয়মকানুন মেনে চলারও আশ্বাস প্রদান করেন। এ সময় আমি তাকে বাংলাদেশ ভ্রমণ করার আমন্ত্রণ জানাই এবং প্রয়োজনে স্পেকট্রাম ক্রয়ের বিষয়ে বৈঠক করার আহ্বান জানাই। একই সঙ্গে গ্রামীণফোনের কাছে সরকারের পাওনা আদায়ের কথাও বলা হয় এবং তারা এটি পরিশোধের আশ্বাস প্রদান করে। ২০২০ সালে এসে যদি সে বৈঠকের দিকে ফিরে তাকাই তবে অনেক ক্ষেত্রে শুধু প্রতিশ্রুতি বঙ্গের দৃষ্টান্তই পাব।

এক্সিয়াটা গ্রুপের সঙ্গে বৈঠক : বৈঠককালে এক্সিয়াটা গ্রুপের পক্ষ হতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ এবং তাদের সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে রেগুলেটরি নিয়ম কানুন সহজীকরণের বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়। এ সময় আমি সেবার মান বৃদ্ধি ও ৫জি প্রচলনের পরিকল্পনা গ্রহণের অনুরোধ জানাই। এ সময়ে এক্সিয়াটা গ্রুপের পক্ষ হতে এসএমপি চালু করায় আমাকে ও বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়। সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। এক্সিয়াটা গ্রুপের পক্ষে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং রবি এজিয়াটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

ভিয়নের সঙ্গে বৈঠক : বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন্সের স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান ভিয়নের প্রধান নির্বাহী মি. কেইল মর্টেন জনগণের আমন্ত্রণে মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস চলাকালীন আমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল এক সভায় মিলিত হয়। সভায় ভিয়নের পক্ষে তাদের প্রধান নির্বাহী, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন্সের সিইও এরিক অস ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তারা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা ও ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রীর অক্লান্ত পরিশ্রম সুদূর প্রসারি দিক নির্দেশনা ইত্যাদি বিষয়ে ভূয়সি প্রশংসা করেন। এ সময় আমি টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও সেবার মান উন্নয়নে ভিয়নের বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানাই। এ সময় তাদের পক্ষ হতে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। আমি তাদের নিকট বাংলাদেশের ৫জি প্রচলনের লক্ষ্যমাত্রা উল্লেখ পূর্বক এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই। সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ : ক) বাংলাদেশের টেলিকম খাতে বেশ বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করার আগ্রহ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রন্টেরা হোল্ডিংস। দেশের সরকারি অপারেটর টেলিটকে এই বিনিয়োগে বেশ আগ্রহী হয়েছে কোম্পানিটি। কোম্পানিটি টেলিকম খাতে বিনিয়োগে এতটাই আগ্রহী যে, এখানকার কোন একটি টেলিকম ব্র্যান্ড দিয়েই এ বাজারে ঢুকতে চাইছে তারা। এ বিষয়ে তারা মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস চলাকালীন আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের আগ্রহ ব্যক্ত করেন। আমি তাদের বাংলাদেশের বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশের বিষয়টি উল্লেখ পূর্বক বিনিয়োগের আহ্বান জানাই। এ সময় বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহাব উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

খ) বাংলাদেশে টেকনোলজি খাতে ডাচ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বাম্বল টেকনোলজিস বিডি লিং-এর চেয়ারম্যান ডেনিস মার্টিন মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস চলাকালীন আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার প্রতিষ্ঠানের নতুন একটি প্রজেক্টে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সাক্ষাৎকালে তিনি জানান যে, তার আরএফআইডি প্রকল্পে এ মুহূর্তে ৫ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ হবে। যাতে ১৫০ জন লোকের কর্মসংস্থান হবে। আরএফআইডি প্রডাক্টে বাংলাদেশ হতে বর্তমানে ৬০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি হয়। বর্তমানে আরএফআইডি এর লোকাল মার্কেট তৈরি হচ্ছে। আরএফআইডি প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে টেলিকম খাতের ইনভেন্টরি সিস্টেমসহ এ সংক্রান্ত সব কাজে আরএফআইডি পণ্য ব্যবহার করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি সরকারের নিকট সুবিধাজনক স্থানে ফ্যাক্টরি স্থাপনের অনুরোধ জানালে আমি তাদের কালিয়াকৈরে অবস্থিত হাই-টেক পার্কে জমি বরাদ্দ প্রদানের আশ্বাস প্রদান করি।

রিভ সিস্টেমের প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন : মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস চলাকালীন বিগত ২৭/০২/২০১৯ তারিখে আমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল মেলায় অংশগ্রহণকারী একমাত্র বাংলাদেশি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান রিভ সিস্টেমের প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করি। রিভ সিস্টেম বিগত ১৬ বছর যাবত বাংলাদেশে সফটওয়্যার খাতে ব্যবসা করে আসছে। এ প্রতিষ্ঠানটি ১৯ সালের মেলায় ১১তম অংশগ্রহণ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ১৯ সালে ১) সেশন বর্ডার কন্ট্রোলার ২) অ্যান্ড টু অ্যান্ড প্ল্যাটফরম যার কমিউনিকেশন ওটিটি ৩) লাইভ চ্যাট এবং ক্লায়েন্ট এনগেজমেন্ট সলিউশন ৪) অ্যান্ড পয়েন্ট সিকিউরিটি সিস্টেম ইত্যাদি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সলিউশনস নিয়ে মেলায় অংশ নেয়। আমি প্রতিষ্ঠানটির সফটওয়্যার ডেমো প্রত্যক্ষ করি। এ সময় রিভ সিস্টেমের গ্রুপ সিইও এস রেজাউল হাসান, চিফ কর্মাশিয়াল অফিসার রায়হান হোসেন এবং হেড অব সেলস জ্যাকব মাইয়ুরভ উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ব মোবাইল কংগ্রেস বস্তুত এমন একটি মেলা যাতে প্রতিটি সেকেন্ড কাজে লাগাতে হয়। আমাদের জন্য এই মেলায় প্রদর্শনী দেখার পাশাপাশি যে বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হয় তা প্রযুক্তি দেখার চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলোতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকার ফলে আলোচনা খুব সহজেই ফলপ্রসূ হয়ে ওঠে। আমরা লক্ষ্য করলাম ও আলোচনা করে জানলাম যে দুনিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে আমাদের আরও দ্রুতগতিতে পথ চলতে হবে। যদিও গত দশকটিতে আমাদের অগ্রযাত্রা বিস্ময়কর তথাপি আমরা যে খুব বেশি পথ চলিনি তার প্রমাণ যে এখনও মোবাইল বিশ্ব কংগ্রেসে একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণ করে। যেমনি করে এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ানো দরকার তেমনি করে উদ্ভাবনে মনযোগী হওয়া দরকার। ৫জির কথা মাথায় রেখে আমাদেরকে কার্যত প্রচলিত অবস্থানকে দ্রুতগতিতে বদলাতে হবে। সারা দুনিয়ার বাছাই করা যেসব প্রতিষ্ঠান ও তাদের উদ্ভাবিত যেসব পণ্য দেখে আমরা মুগ্ধ তাতে একটি কথা খুব স্পষ্ট করে বলা যায় যে এক অনবদ্য অদম্য গতিতে ধাবমান প্রযুক্তি বিশ্বের অংশ হতে হলে আমরা কেবলই কথামালার যুগে থাকতে পারব না। কাজ দিয়ে আমাদের দক্ষতা বা যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে।

ঢাকা, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ॥

মতামত লেখকের নিজস্ব।

[লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাসের চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক]

mustafajabbar@gmail.com

মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২৮ মাঘ ১৪২৬, ১৬ জমাদিউল সানি ১৪৪১

বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল প্রযুক্তি গড়ে তোলার অদম্য আয়োজন

মোস্তাফা জব্বার

২০১৯ সালের বিশ্ব মোবাইল কংগ্রেসে ৫জি কেন্দ্রিক কর্মকা- বস্তুত অনেক বিস্তৃত হয়ে পড়ে। আমরা যেমনি চীনা কোম্পানি জেডটিই ও হুয়াওয়ের সঙ্গে কথা বলি তেমনি নকিয়া এরিকসনের মতো কোম্পানির সঙ্গেও কথা বলি। চীনা প্রযুক্তি দেখার পাশাপাশি অন্যদের প্রযুক্তিও দেখার চেষ্টা করি। অন্যদিকে আমরা চেষ্টা করি বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগে আগ্রহ তৈরি করার জন্য। মাত্র এক বছর আগে ৫জি নামক একটি প্রযুক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ হবার পর আমরা ১৯ সালে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্য প্রদর্শনীতে পেলাম অসাধারণ অগ্রগতির স্বাক্ষর।

নকিয়ার’র প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন ও ঊর্ধ্বতন কর্মকতাগণের সঙ্গে বৈঠক : মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস চলাকালীন বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতা হিসেবে আমি ঘড়শরধ’র প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করি এবং তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সভায় মিলিত হই। এ সময় আমি প্যাভিলিয়ন এ প্রদর্শিত বিভিন্ন নতুন উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ও সেবা অবলোকন করি। নোকিয়া বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার প্রযুক্তি পণ্য ও সেবা প্রদানের জন্য চুক্তিবদ্ধ। টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠান কারিগরি সেবা প্রদান করে আসছে। এ বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সভা চলাকালীন টেলিটকের সেবার মান বৃদ্ধি এবং টেলিটকের মাধ্যমে ফাইভ জি সেবা প্রবর্তনে কারিগরি সহায়তার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সে সময় আমি এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত প্রস্তাবনা প্রদানের জন্য অনুরোধ জানালে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রস্তাবনা প্রেরণের বিষয়ে নোকিয়ার ঊর্ধ্বতন কর্মকতাগণ আমাকে আশ্বাস প্রদান করেন। এ সময়ে নোকিয়ার পক্ষে গ্লোবাল হেড এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠককালে বিটিআরসির চেয়ারম্যান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, টেলিটক বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর ও বিটিআরসির কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এরিকসনের প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক : মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস আমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল এরিকসনের প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করে এবং তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সভায় আমরা মিলিত হই। তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ খাতের বিবর্তনের চিত্র এবং ৫জি প্রবর্তনের মানব সভ্যতা বিকাশে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে বৈঠকে তার প্রর্দশনী করা হয়। এতে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অভিভূত হয়। পরবর্তীতে দ্বিপাক্ষিক সভা চলাকালীন বাংলাদেশে ৫জি প্রযুক্তি প্রচলনে যে সব প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা রয়েছে তার বিস্তারিত তথ্যভিত্তিক প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করা হয়। এ সময় এরিকসনের গ্লোবাল ও এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠককালে বিটিআরসির চেয়ারম্যান ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, টেলিটক বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর ও বিটিআরসির কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

টেলিনর গ্রুপের সঙ্গে বৈঠক : টেলিনর গ্রুপের গ্রুপ প্রেসিডেন্ট ও সিইও সিগভেৎ ব্রেককের আমন্ত্রণে আমি ও বিটিআরসির চেয়ারম্যান এক দ্বিপক্ষীয় সভায় মিলিত হই। সভায় বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ অপারেটরগণের সেবার মান, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং ৫জি প্রচলনের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। সভায় আমি টেলিনর গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোনের সেবার মান বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন কমপ্লায়েন্স ইস্যু মেনে চলার নির্দেশনা পালনের জন্য আহ্বান জানাই। আমি আরও বলেছি স্বল্প পরিমাণ স্পেকট্রাম বরাদ্দ নিয়ে গ্রামীণফোন অধিক সংখ্যক গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে যার ফলে সেবার মান কোন ক্রমে কাক্সিক্ষত মানের নয়। এ সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলা হলে টেলিনর কর্তৃপক্ষ দ্রুত সমস্যা সমাধানসহ স্পেকট্রাম ক্রয় করা হবে মর্মে আমাকে আশ্বাস প্রদান করেন। এছাড়াও টেলিনর গ্রুপের সিইও বাংলাদেশ সরকার এবং রেগুলেটরের সব নিয়মকানুন মেনে চলারও আশ্বাস প্রদান করেন। এ সময় আমি তাকে বাংলাদেশ ভ্রমণ করার আমন্ত্রণ জানাই এবং প্রয়োজনে স্পেকট্রাম ক্রয়ের বিষয়ে বৈঠক করার আহ্বান জানাই। একই সঙ্গে গ্রামীণফোনের কাছে সরকারের পাওনা আদায়ের কথাও বলা হয় এবং তারা এটি পরিশোধের আশ্বাস প্রদান করে। ২০২০ সালে এসে যদি সে বৈঠকের দিকে ফিরে তাকাই তবে অনেক ক্ষেত্রে শুধু প্রতিশ্রুতি বঙ্গের দৃষ্টান্তই পাব।

এক্সিয়াটা গ্রুপের সঙ্গে বৈঠক : বৈঠককালে এক্সিয়াটা গ্রুপের পক্ষ হতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ এবং তাদের সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে রেগুলেটরি নিয়ম কানুন সহজীকরণের বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়। এ সময় আমি সেবার মান বৃদ্ধি ও ৫জি প্রচলনের পরিকল্পনা গ্রহণের অনুরোধ জানাই। এ সময়ে এক্সিয়াটা গ্রুপের পক্ষ হতে এসএমপি চালু করায় আমাকে ও বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়। সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। এক্সিয়াটা গ্রুপের পক্ষে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং রবি এজিয়াটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

ভিয়নের সঙ্গে বৈঠক : বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন্সের স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান ভিয়নের প্রধান নির্বাহী মি. কেইল মর্টেন জনগণের আমন্ত্রণে মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস চলাকালীন আমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল এক সভায় মিলিত হয়। সভায় ভিয়নের পক্ষে তাদের প্রধান নির্বাহী, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন্সের সিইও এরিক অস ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তারা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা ও ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রীর অক্লান্ত পরিশ্রম সুদূর প্রসারি দিক নির্দেশনা ইত্যাদি বিষয়ে ভূয়সি প্রশংসা করেন। এ সময় আমি টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও সেবার মান উন্নয়নে ভিয়নের বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানাই। এ সময় তাদের পক্ষ হতে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। আমি তাদের নিকট বাংলাদেশের ৫জি প্রচলনের লক্ষ্যমাত্রা উল্লেখ পূর্বক এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই। সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ : ক) বাংলাদেশের টেলিকম খাতে বেশ বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করার আগ্রহ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রন্টেরা হোল্ডিংস। দেশের সরকারি অপারেটর টেলিটকে এই বিনিয়োগে বেশ আগ্রহী হয়েছে কোম্পানিটি। কোম্পানিটি টেলিকম খাতে বিনিয়োগে এতটাই আগ্রহী যে, এখানকার কোন একটি টেলিকম ব্র্যান্ড দিয়েই এ বাজারে ঢুকতে চাইছে তারা। এ বিষয়ে তারা মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস চলাকালীন আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের আগ্রহ ব্যক্ত করেন। আমি তাদের বাংলাদেশের বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশের বিষয়টি উল্লেখ পূর্বক বিনিয়োগের আহ্বান জানাই। এ সময় বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহাব উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

খ) বাংলাদেশে টেকনোলজি খাতে ডাচ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বাম্বল টেকনোলজিস বিডি লিং-এর চেয়ারম্যান ডেনিস মার্টিন মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস চলাকালীন আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার প্রতিষ্ঠানের নতুন একটি প্রজেক্টে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সাক্ষাৎকালে তিনি জানান যে, তার আরএফআইডি প্রকল্পে এ মুহূর্তে ৫ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ হবে। যাতে ১৫০ জন লোকের কর্মসংস্থান হবে। আরএফআইডি প্রডাক্টে বাংলাদেশ হতে বর্তমানে ৬০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি হয়। বর্তমানে আরএফআইডি এর লোকাল মার্কেট তৈরি হচ্ছে। আরএফআইডি প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে টেলিকম খাতের ইনভেন্টরি সিস্টেমসহ এ সংক্রান্ত সব কাজে আরএফআইডি পণ্য ব্যবহার করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি সরকারের নিকট সুবিধাজনক স্থানে ফ্যাক্টরি স্থাপনের অনুরোধ জানালে আমি তাদের কালিয়াকৈরে অবস্থিত হাই-টেক পার্কে জমি বরাদ্দ প্রদানের আশ্বাস প্রদান করি।

রিভ সিস্টেমের প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন : মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস চলাকালীন বিগত ২৭/০২/২০১৯ তারিখে আমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল মেলায় অংশগ্রহণকারী একমাত্র বাংলাদেশি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান রিভ সিস্টেমের প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করি। রিভ সিস্টেম বিগত ১৬ বছর যাবত বাংলাদেশে সফটওয়্যার খাতে ব্যবসা করে আসছে। এ প্রতিষ্ঠানটি ১৯ সালের মেলায় ১১তম অংশগ্রহণ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ১৯ সালে ১) সেশন বর্ডার কন্ট্রোলার ২) অ্যান্ড টু অ্যান্ড প্ল্যাটফরম যার কমিউনিকেশন ওটিটি ৩) লাইভ চ্যাট এবং ক্লায়েন্ট এনগেজমেন্ট সলিউশন ৪) অ্যান্ড পয়েন্ট সিকিউরিটি সিস্টেম ইত্যাদি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সলিউশনস নিয়ে মেলায় অংশ নেয়। আমি প্রতিষ্ঠানটির সফটওয়্যার ডেমো প্রত্যক্ষ করি। এ সময় রিভ সিস্টেমের গ্রুপ সিইও এস রেজাউল হাসান, চিফ কর্মাশিয়াল অফিসার রায়হান হোসেন এবং হেড অব সেলস জ্যাকব মাইয়ুরভ উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ব মোবাইল কংগ্রেস বস্তুত এমন একটি মেলা যাতে প্রতিটি সেকেন্ড কাজে লাগাতে হয়। আমাদের জন্য এই মেলায় প্রদর্শনী দেখার পাশাপাশি যে বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হয় তা প্রযুক্তি দেখার চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলোতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকার ফলে আলোচনা খুব সহজেই ফলপ্রসূ হয়ে ওঠে। আমরা লক্ষ্য করলাম ও আলোচনা করে জানলাম যে দুনিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে আমাদের আরও দ্রুতগতিতে পথ চলতে হবে। যদিও গত দশকটিতে আমাদের অগ্রযাত্রা বিস্ময়কর তথাপি আমরা যে খুব বেশি পথ চলিনি তার প্রমাণ যে এখনও মোবাইল বিশ্ব কংগ্রেসে একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণ করে। যেমনি করে এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ানো দরকার তেমনি করে উদ্ভাবনে মনযোগী হওয়া দরকার। ৫জির কথা মাথায় রেখে আমাদেরকে কার্যত প্রচলিত অবস্থানকে দ্রুতগতিতে বদলাতে হবে। সারা দুনিয়ার বাছাই করা যেসব প্রতিষ্ঠান ও তাদের উদ্ভাবিত যেসব পণ্য দেখে আমরা মুগ্ধ তাতে একটি কথা খুব স্পষ্ট করে বলা যায় যে এক অনবদ্য অদম্য গতিতে ধাবমান প্রযুক্তি বিশ্বের অংশ হতে হলে আমরা কেবলই কথামালার যুগে থাকতে পারব না। কাজ দিয়ে আমাদের দক্ষতা বা যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে।

ঢাকা, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ॥

মতামত লেখকের নিজস্ব।

[লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাসের চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক]

mustafajabbar@gmail.com