লুটপাটের মহোৎসব

প্রধান প্রকৌশলীসহ ৬ জনকে তলব

পর্যটন জেলা কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়নের নামে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বেসমারিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রধান প্রকৌশলীসহ ৬ জনকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে ১১৯৩.৩২ কোটি ব্যয় দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাট অভিযোগে তাদের তলব করা হয়েছে।

এদিকে রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন প্রকল্পের এ দুর্নীতি অনুসন্ধানের পাশাপাশি এর সঙ্গে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করবে দুদক। গতকাল অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীসহ ৬ প্রকৌশলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে নোটিশ পাঠিয়েছে অনুসন্ধান টিম। অনুসন্ধান টিমের প্রধান এর আগে এ বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে এ বিষয়ে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে কমিশন। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান এবং সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকার।

দুদক সূত্র জানায়, প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু কুমার গোস্বামীসহ ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো নোটিশে তাদের আগামী ২০ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি হাজির হতে বলা হয়েছে। তলব করা প্রকৌশলীদের মধ্যে প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু কুমার গোস্বামী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী একেএম মাকসুদুল ইসলাম ও নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শরিফুল ইসলামকে ২০ ফেব্রুয়ারি এবং নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহীদুজ্জামান, মো. মোকাব্বর আলী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী কাজী বায়েজিদ আহমেদকে ২৩ ফেব্রুয়ারি দুদকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।

দুদক জানায়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু কুমার গোস্বামী ও কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আমিনুল হাসিবসহ (বর্তমানে বরখাস্ত) অন্যসব প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাদের দুর্নীতি, প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে দুদক অভিযোগ পেয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। অনুসন্ধানের জন্য দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিমও গঠন করা হয়। অন্য দুই সদস্য হলেন- উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান ও সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকার।

সূত্র জানায়, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীতকরণ প্রকল্পের কার্যক্রম ২০১৫ সালের ২ জুলাই উদ্ভোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরের রানওয়ে ৬৭৭৫ ফুট থেকে বাড়িয়ে ৯০০০ ফুট এ উন্নীত করা হয়েছে। গত ৬ মে প্রধানমন্ত্রী বোয়িং ৭৩৭ বিমান যোগে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন এবং কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের শুভ উদ্বোধন করেন। সূত্র জানায়, কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প-১ম পর্যায় (এলজিইডি অংশ) এর আওতায় সদর উপজেলাধীন বাঁকখালী নদীর উপর কস্তুরীঘাটে ৫৯৫মি. দীর্ঘ প্রি-স্ট্রেসড বক্স গার্ডার ব্রিজ এবং সংযোগ সড়ক নির্মাণাধীন রয়েছে। নির্মাণ কাজের জন্য মোট প্রকল্প ব্যয় থেকে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এক পর্যায়ে দুটি খামের টেন্ডারিং পদ্ধতি (এনসিটি) পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বানপূর্বক দরপত্র গ্রহণ করা হয়। দরপত্রের মূল্যায়ন প্রক্রিয়াধীন। ব্রিজের সংযোগ সড়কের ২৩ দশমিক ০২৬৬ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেয়ে এ কাজ করা হয়। বর্তমানে রানওয়ে প্রশস্থকরণ, রানওয়ের দৈর্ঘ্য বর্ধিতকরণ, রানওয়ের সোল্ডার নির্মাণ কাজ ও ৩৫ প্রান্তে ওভার রানওয়ে সমষ্টি বেস কোর্স কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে অ্যাসফল্ট বেস/বাইন্ডার কোর্সের কাজ চলছে। এছাড়াও এয়ারফিল্ড গ্রাউন্ড লাইটিং সিস্টেম, নাভ-এইডজিস এবং রানওয়ে ১৭ প্রান্তে রক্ষাপ্রদ বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। এর আগে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়নের লক্ষ্যে নেয়া প্রকল্পের আওতায় রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৬৭৭৫ ফুট হতে ৯০০০ ফুটে বর্ধিতকরণ, রানওয়ের চওড়া ১৫০ ফুট হতে ২০০ (শোল্ডারসহ) ফুটে বর্ধিতকরণ, রানওয়ের শক্তিবৃদ্ধিকরণ, এয়ারফিল্ড লাইটিং সিস্টেম স্থাপন, ফায়ার ফাইটিং ভেহিকেল ক্রয়, নব্যযোগাযোগ যন্ত্রপাতি যথা- আইএলএস, ডিভিও আর প্রভৃতি স্থাপনসহ অন্যসব কাজ নেয়া হয়।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বোয়িং-৭৭৭ জাতীয় বিমান চলাচল করতে পারবে। রাজধানী ঢাকা ও অন্যসব শহরসহ বহির্বিশ্বের সঙ্গে কক্সবাজারের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে, যা দেশের পর্যটন শিল্প বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কক্সবাজার আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারিত রানওয়েতে সুপরিসর ৭৩৭-৮০০ বোয়িং বিমান চলাচলের জন্য প্রাকল্লিত ব্যয় ১১৯৩ দশমিক ৩২ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। তহবিলের উৎস জিওবি থেকে ৮০২ দশমিক ৬৬ কোটি টাকা, সিএএবি’র নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৯১ দশমিক ৬৬ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। সংশোধিত দরপত্রে প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ধরা হয়। এজন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হয় ৩২১ দশমিক ৩৪ হেক্টর। প্রকল্পে ভূমি উন্নয়ন দেখানো হয়েছে ১৩,৫০,০০০ ঘনমিটার। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ দেয়া হয়েছে কোরিয়ান কোম্পানি হাল্লা করপোরেশন, বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান মীর আকতার হোসেন লি. এবং কোরিয়ার জেভির সিয়োকওয়াং লি.। প্রকেল্প বিদ্যমান রানওয়ে, টেক্সিওয়ে, রানওয়ে বৃদ্ধিকরণ, রানওয়ে প্রশস্তকরণ, রানওয়ে শোল্ডার, ওভাররান নির্মাণ ইত্যাদি, রানওয়ের দৈর্ঘ্য ২,০৬৫ মিটার (৬,৭৭৫ ফুট) হতে ২৭৪৩ মিটার (৯,০০০ফুট) এ বৃদ্ধিকরণ, রানওয়ের প্রস্থ ৩৮ মিটার (১২৫ ফুট) হতে ৪৫ মিটার (১৪৭ ফুট) এ বৃদ্ধিকরণ। রানওয়ের উভয় পার্শ্বে ৭.৫০ মিটার (২৫ফুট) চওড়া প্রায় ৫,৮০০ মিটার (১৯,০২৪ ফুট) সোল্ডার নির্মাণ, ৫০০ মিলিমিটার (প্রায় ২০ ইঞ্চি) পুরুত্বের এস্ফল্ট কনক্রিট দ্বারা রানওয়ের পিসিএন (পেভিমেন্ট ক্লাফিকেশন নম্বার) ১৯ হতে ৯০ এ উন্নীতকরণ উল্লেখ রয়েছে প্রকল্পে।

সূত্র জানায়, প্রকল্পে প্রথমে ২শ’ কোটি টাকা বরাদ্ধ ছিল। পরে ৩ দফায় বিভিন্ন ব্যয় দেখিয়ে ১১৯৩ দশমিক ৩২ কোটি টাকা প্রকল্পে ব্যয় দেখানো হয়। অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে পরস্পর যোগসাজগে বাড়তি অর্থ লুটপাট করা হয়। লুটপাটের ঘটনায় প্রকল্প পরিচালক বর্তমানে বরখাস্ত রয়েছে।

বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২৯ মাঘ ১৪২৬, ১৭ জমাদিউল সানি ১৪৪১

কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প

লুটপাটের মহোৎসব

প্রধান প্রকৌশলীসহ ৬ জনকে তলব

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

পর্যটন জেলা কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়নের নামে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বেসমারিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রধান প্রকৌশলীসহ ৬ জনকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে ১১৯৩.৩২ কোটি ব্যয় দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাট অভিযোগে তাদের তলব করা হয়েছে।

এদিকে রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন প্রকল্পের এ দুর্নীতি অনুসন্ধানের পাশাপাশি এর সঙ্গে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করবে দুদক। গতকাল অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীসহ ৬ প্রকৌশলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে নোটিশ পাঠিয়েছে অনুসন্ধান টিম। অনুসন্ধান টিমের প্রধান এর আগে এ বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে এ বিষয়ে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে কমিশন। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান এবং সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকার।

দুদক সূত্র জানায়, প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু কুমার গোস্বামীসহ ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো নোটিশে তাদের আগামী ২০ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি হাজির হতে বলা হয়েছে। তলব করা প্রকৌশলীদের মধ্যে প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু কুমার গোস্বামী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী একেএম মাকসুদুল ইসলাম ও নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শরিফুল ইসলামকে ২০ ফেব্রুয়ারি এবং নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহীদুজ্জামান, মো. মোকাব্বর আলী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী কাজী বায়েজিদ আহমেদকে ২৩ ফেব্রুয়ারি দুদকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।

দুদক জানায়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু কুমার গোস্বামী ও কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আমিনুল হাসিবসহ (বর্তমানে বরখাস্ত) অন্যসব প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাদের দুর্নীতি, প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে দুদক অভিযোগ পেয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। অনুসন্ধানের জন্য দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিমও গঠন করা হয়। অন্য দুই সদস্য হলেন- উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান ও সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকার।

সূত্র জানায়, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীতকরণ প্রকল্পের কার্যক্রম ২০১৫ সালের ২ জুলাই উদ্ভোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরের রানওয়ে ৬৭৭৫ ফুট থেকে বাড়িয়ে ৯০০০ ফুট এ উন্নীত করা হয়েছে। গত ৬ মে প্রধানমন্ত্রী বোয়িং ৭৩৭ বিমান যোগে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন এবং কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের শুভ উদ্বোধন করেন। সূত্র জানায়, কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প-১ম পর্যায় (এলজিইডি অংশ) এর আওতায় সদর উপজেলাধীন বাঁকখালী নদীর উপর কস্তুরীঘাটে ৫৯৫মি. দীর্ঘ প্রি-স্ট্রেসড বক্স গার্ডার ব্রিজ এবং সংযোগ সড়ক নির্মাণাধীন রয়েছে। নির্মাণ কাজের জন্য মোট প্রকল্প ব্যয় থেকে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এক পর্যায়ে দুটি খামের টেন্ডারিং পদ্ধতি (এনসিটি) পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বানপূর্বক দরপত্র গ্রহণ করা হয়। দরপত্রের মূল্যায়ন প্রক্রিয়াধীন। ব্রিজের সংযোগ সড়কের ২৩ দশমিক ০২৬৬ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেয়ে এ কাজ করা হয়। বর্তমানে রানওয়ে প্রশস্থকরণ, রানওয়ের দৈর্ঘ্য বর্ধিতকরণ, রানওয়ের সোল্ডার নির্মাণ কাজ ও ৩৫ প্রান্তে ওভার রানওয়ে সমষ্টি বেস কোর্স কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে অ্যাসফল্ট বেস/বাইন্ডার কোর্সের কাজ চলছে। এছাড়াও এয়ারফিল্ড গ্রাউন্ড লাইটিং সিস্টেম, নাভ-এইডজিস এবং রানওয়ে ১৭ প্রান্তে রক্ষাপ্রদ বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। এর আগে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়নের লক্ষ্যে নেয়া প্রকল্পের আওতায় রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৬৭৭৫ ফুট হতে ৯০০০ ফুটে বর্ধিতকরণ, রানওয়ের চওড়া ১৫০ ফুট হতে ২০০ (শোল্ডারসহ) ফুটে বর্ধিতকরণ, রানওয়ের শক্তিবৃদ্ধিকরণ, এয়ারফিল্ড লাইটিং সিস্টেম স্থাপন, ফায়ার ফাইটিং ভেহিকেল ক্রয়, নব্যযোগাযোগ যন্ত্রপাতি যথা- আইএলএস, ডিভিও আর প্রভৃতি স্থাপনসহ অন্যসব কাজ নেয়া হয়।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বোয়িং-৭৭৭ জাতীয় বিমান চলাচল করতে পারবে। রাজধানী ঢাকা ও অন্যসব শহরসহ বহির্বিশ্বের সঙ্গে কক্সবাজারের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে, যা দেশের পর্যটন শিল্প বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কক্সবাজার আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারিত রানওয়েতে সুপরিসর ৭৩৭-৮০০ বোয়িং বিমান চলাচলের জন্য প্রাকল্লিত ব্যয় ১১৯৩ দশমিক ৩২ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। তহবিলের উৎস জিওবি থেকে ৮০২ দশমিক ৬৬ কোটি টাকা, সিএএবি’র নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৯১ দশমিক ৬৬ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। সংশোধিত দরপত্রে প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ধরা হয়। এজন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হয় ৩২১ দশমিক ৩৪ হেক্টর। প্রকল্পে ভূমি উন্নয়ন দেখানো হয়েছে ১৩,৫০,০০০ ঘনমিটার। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ দেয়া হয়েছে কোরিয়ান কোম্পানি হাল্লা করপোরেশন, বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান মীর আকতার হোসেন লি. এবং কোরিয়ার জেভির সিয়োকওয়াং লি.। প্রকেল্প বিদ্যমান রানওয়ে, টেক্সিওয়ে, রানওয়ে বৃদ্ধিকরণ, রানওয়ে প্রশস্তকরণ, রানওয়ে শোল্ডার, ওভাররান নির্মাণ ইত্যাদি, রানওয়ের দৈর্ঘ্য ২,০৬৫ মিটার (৬,৭৭৫ ফুট) হতে ২৭৪৩ মিটার (৯,০০০ফুট) এ বৃদ্ধিকরণ, রানওয়ের প্রস্থ ৩৮ মিটার (১২৫ ফুট) হতে ৪৫ মিটার (১৪৭ ফুট) এ বৃদ্ধিকরণ। রানওয়ের উভয় পার্শ্বে ৭.৫০ মিটার (২৫ফুট) চওড়া প্রায় ৫,৮০০ মিটার (১৯,০২৪ ফুট) সোল্ডার নির্মাণ, ৫০০ মিলিমিটার (প্রায় ২০ ইঞ্চি) পুরুত্বের এস্ফল্ট কনক্রিট দ্বারা রানওয়ের পিসিএন (পেভিমেন্ট ক্লাফিকেশন নম্বার) ১৯ হতে ৯০ এ উন্নীতকরণ উল্লেখ রয়েছে প্রকল্পে।

সূত্র জানায়, প্রকল্পে প্রথমে ২শ’ কোটি টাকা বরাদ্ধ ছিল। পরে ৩ দফায় বিভিন্ন ব্যয় দেখিয়ে ১১৯৩ দশমিক ৩২ কোটি টাকা প্রকল্পে ব্যয় দেখানো হয়। অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে পরস্পর যোগসাজগে বাড়তি অর্থ লুটপাট করা হয়। লুটপাটের ঘটনায় প্রকল্প পরিচালক বর্তমানে বরখাস্ত রয়েছে।