নারী মুক্তিযোদ্ধা সাফিনা লোহানীর মৃত্যু

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠক সাফিনা লোহানী। গত সোমবার সন্ধ্যা রাতে শহরের এসএস রোডস্থ নিজ বাড়িতে ৬৭ বছর বয়সে মারা যান তিনি।

তার মৃত্যুতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা, সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ গভীর শোকপ্রকাশ করেছে। এক শোক বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘৭১’র যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সূচিত শহীদ জননী জাহানারা ইমামের আন্দোলনের সূচনা থেকে সাফিনা লোহানী সিরাজগঞ্জে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী সব নাগরিক আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। সিরাজগঞ্জে ’৭১’র নির্যাতিতা নারীদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে সাফিনা লোহানী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার স্বামী সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী নির্মূল কমিটির সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তার মৃত্যুতে আমাদের আন্দোলনে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা সহজে পূরণ করা যাবে না। আমরা তার পরিবারের শোকসন্তপ্ত সদস্য ও সহযোদ্ধাদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি।

বিবৃতিতে, বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম, বিচারপতি শামসুল হুদা, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, লেখক সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী, সাংবাদিক কামাল লোহানী, অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, অধ্যাপক অনুপম সেন, কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হক, শিল্পী হাশেম খান, শিল্পী রফিকুননবী, অধ্যাপিকা পান্না কায়সার, অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম প্রমুখ স্বাক্ষর করেছেন।

সাফিনা ১৯৫৩ সালে ১ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জ শহরে লোহানী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। মুক্তিযুদ্ধের সময় দুই মাসের সন্তান কোলে নিয়েও মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেন তিনি।শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গঠিত ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সিরাজগঞ্জ কমিটির সদস্য হিসেবেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন।

তার স্বামী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম চৌধুরী দীর্ঘদিন দৈনিক ইত্তেফাকের উত্তরাঞ্চলের ব্যুরো প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি স্বামী ছাড়াও এক ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

সিরাজগঞ্জ জেলা বার্তা পরিশেক জানান, গতকাল বাদ জোহর স্থানীয় মালশাপাড়া কবরস্থানে জানাজা শেষে তার লাশ দাফন করা হয় । তার জানাজায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ বিশ্বাস, সিরাজগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবদুর রউফ মুক্তা, সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি হেলাল উদ্দিনসহ বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন ।

বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২৯ মাঘ ১৪২৬, ১৭ জমাদিউল সানি ১৪৪১

নারী মুক্তিযোদ্ধা সাফিনা লোহানীর মৃত্যু

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠক সাফিনা লোহানী। গত সোমবার সন্ধ্যা রাতে শহরের এসএস রোডস্থ নিজ বাড়িতে ৬৭ বছর বয়সে মারা যান তিনি।

তার মৃত্যুতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা, সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ গভীর শোকপ্রকাশ করেছে। এক শোক বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘৭১’র যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সূচিত শহীদ জননী জাহানারা ইমামের আন্দোলনের সূচনা থেকে সাফিনা লোহানী সিরাজগঞ্জে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী সব নাগরিক আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। সিরাজগঞ্জে ’৭১’র নির্যাতিতা নারীদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে সাফিনা লোহানী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার স্বামী সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী নির্মূল কমিটির সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তার মৃত্যুতে আমাদের আন্দোলনে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা সহজে পূরণ করা যাবে না। আমরা তার পরিবারের শোকসন্তপ্ত সদস্য ও সহযোদ্ধাদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি।

বিবৃতিতে, বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম, বিচারপতি শামসুল হুদা, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, লেখক সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী, সাংবাদিক কামাল লোহানী, অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, অধ্যাপক অনুপম সেন, কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হক, শিল্পী হাশেম খান, শিল্পী রফিকুননবী, অধ্যাপিকা পান্না কায়সার, অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম প্রমুখ স্বাক্ষর করেছেন।

সাফিনা ১৯৫৩ সালে ১ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জ শহরে লোহানী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। মুক্তিযুদ্ধের সময় দুই মাসের সন্তান কোলে নিয়েও মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেন তিনি।শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গঠিত ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সিরাজগঞ্জ কমিটির সদস্য হিসেবেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন।

তার স্বামী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম চৌধুরী দীর্ঘদিন দৈনিক ইত্তেফাকের উত্তরাঞ্চলের ব্যুরো প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি স্বামী ছাড়াও এক ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

সিরাজগঞ্জ জেলা বার্তা পরিশেক জানান, গতকাল বাদ জোহর স্থানীয় মালশাপাড়া কবরস্থানে জানাজা শেষে তার লাশ দাফন করা হয় । তার জানাজায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ বিশ্বাস, সিরাজগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবদুর রউফ মুক্তা, সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি হেলাল উদ্দিনসহ বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন ।