সূচকও বেড়েছে উভয় শেয়ারবাজারে

ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনের পর উত্থান শুরু হয়েছে শেয়ারবাজারে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বড় উত্থানে শেষ হয়েছে শেয়ারবাজারের লেনদেন। এদিন সব সূচক বেড়ছে, বেড়েছে টাকার পরিমাণে লেনদেন এবং বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১ বছরের মধ্যে লেনদেন সর্বোচ্চ হয়েছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের সঙ্গে বেড়েছে টাকার পরিমাণে লেনদেন। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৭৩০ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট যা ১১ মাস ২৫ দিন বা ২৩৪ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগের ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি গতকালকের চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল। ওইদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৮৯১ কোটি টাকার। গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৫৬৫ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১৫ পয়েন্ট, ডিএসই-৩০ সূচক ২১ পয়েন্ট এবং সিডিএসইটি সূচক ১২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১০৪৬, ১৫৩৭ ও ৯১৬ পয়েন্টে। ডিএসইতে গতকাল ৩৫৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৫৯টির বা ৭২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ৬৫টির বা ১৮ শতাংশের এবং ৩২টি বা ১০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

টাকার অংকে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে খুলনা পাওয়ারের শেয়ার। এদিন কোম্পানিটির ২৮ কোটি ৬১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা লাফার্জহোলসিমের ২৩ কোটি ৯৫ টাকার এবং ১৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে উঠে আসে ইন্দো-বাংলা ফার্মা। ডিএসইর টপটেন লেনদেনে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে : শেফার্ড, এসএস স্টিল, ওরিয়ন ইনফিউশন, ডরিন পাওয়ার, এডিএন টেলিকম, সামিট পাওয়ার এবং বেক্সিমকো।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ২৭৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৯১২ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৬০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১৯৪টির, কমেছে ৪২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪টির দর। গতকাল সিএসইতে ৭৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

ব্লক মার্কেট : ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ১৩টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ১৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর ৯৮ লাখ ৯৬ হাজার ২১২টি শেয়ার ২৯ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ১৭ কোটি ১৫ লাখ ৯৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৬ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে লাফার্জহোলসিমের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২ কোটি ৬৬ লাখ টাকার আরএন স্পিনিংয়ের এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ২ কোটি ৩৭ লাখ ৫২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে এসকে ট্রিমসের। এছাড়া ব্যাংক এশিয়ার ১ কোটি ১১ লাখ ৮৭ হাজার টাকার, ব্র্যাক ব্যাংকের ৭৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকার, ডিবিএইচের ১ কোটি ৯ লাখ ১০ হাজার টাকার, ডরিন পাওয়ারের ২৬ লাখ ১৭ হাজার টাকার, ইস্টার্ন কেবলসের ১৫ লাখ ৯২ হাজার টাকার, ইন্ট্রাকোর ৮ লাখ টাকার, ওয়াইম্যাক্সের ৫ লাখ ৭১ হাজার টাকার, ওরিয়ন ফার্মার ৬৮ লাখ ২০ হাজার টাকার, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের ১৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকার এবং স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের ৯২ লাখ ৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

ইপিএস গণনায় ‘শেয়ার মানি ডিপোজিট’ : ‘শেয়ার মানি ডিপোজিট’-কে মূলধনে রূপান্তরের পূর্ব পর্যন্ত সম্ভাব্য শেয়ার হিসেবে বিবেচিত হবে বলে এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি)। এ হিসাবে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) গণনায় ‘শেয়ার মানি ডিপোজিট’-কে বিবেচনায় নিতে হবে। গত মঙ্গলবার এফআরসির নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ আনওয়ারুল করিম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ‘শেয়ার মানি ডিপোজিট’ হিসাবে প্রাপ্ত অর্থকে ৬ মাসের মধ্যে মূলধনে রূপান্তর করতে হবে। এছাড়া শেয়ার মানি ডিপোজিট বা অন্য যেকোন নামেই মূলধন খাতে সংগৃহীত অর্থ ফেরত বা প্রত্যাহার করার সুযোগ থাকবে না। ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট (এফআরএ)-২০১৫ দ্ধারা বাংলাদেশে পরিগৃহীত ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএফআরএস) এ উল্লেখিত মূলধন বা ইক্যুইটি সংজ্ঞা এর কার্যকরি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই গাইডলাইন জারি করা হয়েছে। এই গাইডলাইন পালনে ব্যত্যয়ের ক্ষেত্রে এফআরএ-২০১৫ এর ৪৮ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ১ ফল্গুন ১৪২৬, ১৯ জমাদিউল সানি ১৪৪১

ডিএসইতে ১ বছরে সর্বোচ্চ লেনদেন

সূচকও বেড়েছে উভয় শেয়ারবাজারে

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনের পর উত্থান শুরু হয়েছে শেয়ারবাজারে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বড় উত্থানে শেষ হয়েছে শেয়ারবাজারের লেনদেন। এদিন সব সূচক বেড়ছে, বেড়েছে টাকার পরিমাণে লেনদেন এবং বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১ বছরের মধ্যে লেনদেন সর্বোচ্চ হয়েছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের সঙ্গে বেড়েছে টাকার পরিমাণে লেনদেন। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৭৩০ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট যা ১১ মাস ২৫ দিন বা ২৩৪ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগের ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি গতকালকের চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল। ওইদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৮৯১ কোটি টাকার। গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৫৬৫ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১৫ পয়েন্ট, ডিএসই-৩০ সূচক ২১ পয়েন্ট এবং সিডিএসইটি সূচক ১২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১০৪৬, ১৫৩৭ ও ৯১৬ পয়েন্টে। ডিএসইতে গতকাল ৩৫৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৫৯টির বা ৭২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ৬৫টির বা ১৮ শতাংশের এবং ৩২টি বা ১০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

টাকার অংকে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে খুলনা পাওয়ারের শেয়ার। এদিন কোম্পানিটির ২৮ কোটি ৬১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা লাফার্জহোলসিমের ২৩ কোটি ৯৫ টাকার এবং ১৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে উঠে আসে ইন্দো-বাংলা ফার্মা। ডিএসইর টপটেন লেনদেনে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে : শেফার্ড, এসএস স্টিল, ওরিয়ন ইনফিউশন, ডরিন পাওয়ার, এডিএন টেলিকম, সামিট পাওয়ার এবং বেক্সিমকো।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ২৭৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৯১২ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৬০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১৯৪টির, কমেছে ৪২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪টির দর। গতকাল সিএসইতে ৭৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

ব্লক মার্কেট : ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ১৩টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ১৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর ৯৮ লাখ ৯৬ হাজার ২১২টি শেয়ার ২৯ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ১৭ কোটি ১৫ লাখ ৯৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৬ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে লাফার্জহোলসিমের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২ কোটি ৬৬ লাখ টাকার আরএন স্পিনিংয়ের এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ২ কোটি ৩৭ লাখ ৫২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে এসকে ট্রিমসের। এছাড়া ব্যাংক এশিয়ার ১ কোটি ১১ লাখ ৮৭ হাজার টাকার, ব্র্যাক ব্যাংকের ৭৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকার, ডিবিএইচের ১ কোটি ৯ লাখ ১০ হাজার টাকার, ডরিন পাওয়ারের ২৬ লাখ ১৭ হাজার টাকার, ইস্টার্ন কেবলসের ১৫ লাখ ৯২ হাজার টাকার, ইন্ট্রাকোর ৮ লাখ টাকার, ওয়াইম্যাক্সের ৫ লাখ ৭১ হাজার টাকার, ওরিয়ন ফার্মার ৬৮ লাখ ২০ হাজার টাকার, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের ১৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকার এবং স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের ৯২ লাখ ৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

ইপিএস গণনায় ‘শেয়ার মানি ডিপোজিট’ : ‘শেয়ার মানি ডিপোজিট’-কে মূলধনে রূপান্তরের পূর্ব পর্যন্ত সম্ভাব্য শেয়ার হিসেবে বিবেচিত হবে বলে এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি)। এ হিসাবে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) গণনায় ‘শেয়ার মানি ডিপোজিট’-কে বিবেচনায় নিতে হবে। গত মঙ্গলবার এফআরসির নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ আনওয়ারুল করিম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ‘শেয়ার মানি ডিপোজিট’ হিসাবে প্রাপ্ত অর্থকে ৬ মাসের মধ্যে মূলধনে রূপান্তর করতে হবে। এছাড়া শেয়ার মানি ডিপোজিট বা অন্য যেকোন নামেই মূলধন খাতে সংগৃহীত অর্থ ফেরত বা প্রত্যাহার করার সুযোগ থাকবে না। ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট (এফআরএ)-২০১৫ দ্ধারা বাংলাদেশে পরিগৃহীত ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএফআরএস) এ উল্লেখিত মূলধন বা ইক্যুইটি সংজ্ঞা এর কার্যকরি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই গাইডলাইন জারি করা হয়েছে। এই গাইডলাইন পালনে ব্যত্যয়ের ক্ষেত্রে এফআরএ-২০১৫ এর ৪৮ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।