রোহিঙ্গা নিয়ন্ত্রণ ও মানবপাচার ঠেকাতে কাঁটাতারের বেড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রোহিঙ্গা শিবিরে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শিবির থেকে বেরিয়ে যাওয়া আটকাতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আমাদের সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার কাজ শুরু করেছে। মূল উদ্দেশ্য তারা যেন শিবির থেকে বের হয়ে আমাদের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে না যায়। গতকাল দুপুরে আগারগাঁও কোস্টগার্ড সদর দফতরে ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, কোস্টগার্ড মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল এম আশরাফুল হকসহ নৌবাহিনী প্রধান, বিজিবি প্রধান, পুলিশ মহাপরিদর্শক, র‌্যাব মহাপরিচালকসহ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় কোস্টগার্ডের ৪০ জনকে পদক প্রদান করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মায়ানমারের সঙ্গে আলোচনা থেমে যায়নি, আলোচনা চলছে। আশা করছি একদিন রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে মায়ানমার। প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গাদের ওপর নজরদারি রাখা হচ্ছে। এদেশে ১১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে, যা টেকনাফের জনগণের তিনগুণ। তাদের নজরদারিতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসারসহ সব বাহিনী কাজ করছে। রোহিঙ্গাদের ওপর নজরদারি আরও শক্তিশালী করতে ওয়াচ টাওয়ার এবং সিসিটিভি স্থাপন করা হচ্ছে। তারা যেন বের হতে না পারে সেজন্য আমাদের সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। শীঘ্রই উপকূলীয় এলাকায় একটি সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম চালু করা হবে। এজন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। গভীর সমুদ্র সীমায় সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ অপারেশন চালানো হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কোস্টগার্ড আজ আর ঠুঁটো জগন্নাথ নেই। দেশি-বিদেশি জাহাজ, স্পিডবোট ও পেট্রল বোটের সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে আমরা কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী বাহিনীতে পরিণত করেছি। কোস্টাল এরিয়া তো বটেই, মাদক, মানবপাচার, অবৈধ মৎস্য আহরণ, চোরাচালান রোধসহ নিরাপত্তা বিধানে কোস্টগার্ড সফলভাবে কাজ করছে। সম্প্রতি কোস্টগার্ডের দায়িত্বে নতুন নতুন কাজ যুক্ত করা হয়েছে। পরিবেশ রক্ষার জন্য কোস্টগার্ড কাজ করছে। এখন কোস্টগার্ডের রয়েছে ৪টি অফসোর পেট্রল হেসেল, ৬টি ইনসোর পেট্রল হেসেল, ২৩টি জাহাজ, ৯০টি বিভিন্ন শ্রেণীর বোট, ৫৪টি আউট পোস্ট স্টেশন। উপকূলীয় এলাকায় জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও ইলিশ রক্ষায় কাজ করছে। ২০১৯ সালে প্রায় ৭৭ কোটি টাকার চোলচালানকৃত পণ্য আটক, প্রায় ১৯০০ কোটি টাকার মৎস্য ও অবৈধ জাল, প্রায় ১৬২ কোটি টাকার অবৈধ মাদক আটক করেছে কোস্টগার্ড। বনজ সম্পদ রক্ষায় ২ কোটি ২১ লাখ টাকা সমমূল্যের বিভিন্ন ধরনের চোরাকারবারি মালামাল জব্দ করেছে।

কোস্টগার্ড পদক পেল ৪০ জন

অনুষ্ঠানে উন্নয়ন ও অপারেশানে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ৪০ জনকে কোস্টগার্ড পদক প্রদান করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। চারটি ক্যাটাগরিতে ১৮ জন কর্মকর্তা, ২১ জন নাবিক এবং একজন অসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারী পদক লাভ করেন। এগুলো হচ্ছে- কোস্টগার্ড পদক, প্রেসিডেন্ট কোস্টগার্ড পদক, কোস্টগার্ড (সেবা) পদক ও প্রেসিডেন্ট কোস্টগার্ড (সেবা) পদক। পদকপ্রাপ্ত কয়েকজন হলেন- লে. এম হায়াত ইবনে সিদ্দিক, লে. কমান্ডার এম হামিদুল ইমলাম, এম আবদুল কাদের, ইয়াছিন আরাফাত প্রমুখ।

রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৩ ফল্গুন ১৪২৬, ২১ জমাদিউল সানি ১৪৪১

রোহিঙ্গা নিয়ন্ত্রণ ও মানবপাচার ঠেকাতে কাঁটাতারের বেড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রোহিঙ্গা শিবিরে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শিবির থেকে বেরিয়ে যাওয়া আটকাতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আমাদের সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার কাজ শুরু করেছে। মূল উদ্দেশ্য তারা যেন শিবির থেকে বের হয়ে আমাদের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে না যায়। গতকাল দুপুরে আগারগাঁও কোস্টগার্ড সদর দফতরে ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, কোস্টগার্ড মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল এম আশরাফুল হকসহ নৌবাহিনী প্রধান, বিজিবি প্রধান, পুলিশ মহাপরিদর্শক, র‌্যাব মহাপরিচালকসহ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় কোস্টগার্ডের ৪০ জনকে পদক প্রদান করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মায়ানমারের সঙ্গে আলোচনা থেমে যায়নি, আলোচনা চলছে। আশা করছি একদিন রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে মায়ানমার। প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গাদের ওপর নজরদারি রাখা হচ্ছে। এদেশে ১১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে, যা টেকনাফের জনগণের তিনগুণ। তাদের নজরদারিতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসারসহ সব বাহিনী কাজ করছে। রোহিঙ্গাদের ওপর নজরদারি আরও শক্তিশালী করতে ওয়াচ টাওয়ার এবং সিসিটিভি স্থাপন করা হচ্ছে। তারা যেন বের হতে না পারে সেজন্য আমাদের সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। শীঘ্রই উপকূলীয় এলাকায় একটি সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম চালু করা হবে। এজন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। গভীর সমুদ্র সীমায় সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ অপারেশন চালানো হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কোস্টগার্ড আজ আর ঠুঁটো জগন্নাথ নেই। দেশি-বিদেশি জাহাজ, স্পিডবোট ও পেট্রল বোটের সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে আমরা কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী বাহিনীতে পরিণত করেছি। কোস্টাল এরিয়া তো বটেই, মাদক, মানবপাচার, অবৈধ মৎস্য আহরণ, চোরাচালান রোধসহ নিরাপত্তা বিধানে কোস্টগার্ড সফলভাবে কাজ করছে। সম্প্রতি কোস্টগার্ডের দায়িত্বে নতুন নতুন কাজ যুক্ত করা হয়েছে। পরিবেশ রক্ষার জন্য কোস্টগার্ড কাজ করছে। এখন কোস্টগার্ডের রয়েছে ৪টি অফসোর পেট্রল হেসেল, ৬টি ইনসোর পেট্রল হেসেল, ২৩টি জাহাজ, ৯০টি বিভিন্ন শ্রেণীর বোট, ৫৪টি আউট পোস্ট স্টেশন। উপকূলীয় এলাকায় জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও ইলিশ রক্ষায় কাজ করছে। ২০১৯ সালে প্রায় ৭৭ কোটি টাকার চোলচালানকৃত পণ্য আটক, প্রায় ১৯০০ কোটি টাকার মৎস্য ও অবৈধ জাল, প্রায় ১৬২ কোটি টাকার অবৈধ মাদক আটক করেছে কোস্টগার্ড। বনজ সম্পদ রক্ষায় ২ কোটি ২১ লাখ টাকা সমমূল্যের বিভিন্ন ধরনের চোরাকারবারি মালামাল জব্দ করেছে।

কোস্টগার্ড পদক পেল ৪০ জন

অনুষ্ঠানে উন্নয়ন ও অপারেশানে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ৪০ জনকে কোস্টগার্ড পদক প্রদান করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। চারটি ক্যাটাগরিতে ১৮ জন কর্মকর্তা, ২১ জন নাবিক এবং একজন অসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারী পদক লাভ করেন। এগুলো হচ্ছে- কোস্টগার্ড পদক, প্রেসিডেন্ট কোস্টগার্ড পদক, কোস্টগার্ড (সেবা) পদক ও প্রেসিডেন্ট কোস্টগার্ড (সেবা) পদক। পদকপ্রাপ্ত কয়েকজন হলেন- লে. এম হায়াত ইবনে সিদ্দিক, লে. কমান্ডার এম হামিদুল ইমলাম, এম আবদুল কাদের, ইয়াছিন আরাফাত প্রমুখ।