সর্বস্তরে জবাবদিহিতা ও আইনের সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হবে পঙ্কজ ভট্টাচার্য

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডিয়াম সদস্য পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশে লুটেরা, মাফিয়া ও সাম্প্রদায়িক শক্তিসমূহ অর্থপাচার, ব্যাংক লুট, সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদীদের গডফাদার হয়ে জনগণকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। আওয়ামী লীগের মতো দল থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি নির্বাসনে যাচ্ছে। গতকাল সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষের উদযাপন নিয়ে দেশবাসী যতটা উৎসাহ উদ্দীপনা থাকা দরকার ছিল আমাদের বিবেচনায় তা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। মূলত, বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে আজকের বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে যে দৈন্যতা, নিপীড়ন, বৈষম্য, শোষণ চলছে তা সম্ভব হতো না। খোদ আওয়ামী লীগের মতো দল থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি নির্বাসনে চলে যাচ্ছে, মাফিয়া, সন্ত্রাসবাদী, পেশিশক্তি ও সাম্প্রদায়িকতাবাদীরা আওয়ামী লীগে বিভিন্ন পর্যায়ে অবস্থান নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টার লিপ্ত রয়েছে। অন্যদিকে দেশে লুটেরা মাফিয়া ও সাম্প্রদায়িক শক্তিসমূহ অর্থপাচার, ব্যাংক লুট, সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদীদের গডফাদার হয়ে গণতন্ত্র ও জনমানুষের অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। নারী-শিশু নিপীড়ন সব সময় থেকে এখন প্রকট সংকটে নিষ্পতিত। মানুষ কোমলমতি শিশুদের নিয়ে নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রয়েছে। গণতন্ত্রের নামে ভোটার বিহীন নির্বাচন প্রক্রিয়া আমাদের ইতিহাসকে বিকৃত করতে বিশেষ ভূমিকায় ষড়যন্ত্রকারীরা এখন অবতীর্ণ। ভোটের গণতন্ত্রের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে এবং নির্বাচন কমিশন এর পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিতে হবে। সর্বস্তরে জবাবদিহিতা ও আইনের সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এখন দরকার অসাম্প্রদায়িক চেতনার শক্তির উদ্যোগে জাতীয় জাগরণ গড়ে তোলা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে শ্রেণী-পেশার ছাত্র-যুব সংস্কৃতির শক্তিসমুহের উদ্যোগে দেশ বাঁচাও, মুক্তিযুদ্ধ বাঁচাও স্লোগান সামনে নিয়ে অগ্রসর হতে হবে। সংগঠনের সভাপতি জিয়াউদ্দিন তারেক আলীর সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তিনি বলেন, আমরা দেশের নিরীহ জনগণের অধিকার নিশ্চিত করার তাগিদ থেকে দীর্ঘ দুই দশক সময় থেকে জনমত গঠনে নিয়োজিত আছে। আমরা মনে করি, সমাজের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বা, সংখ্যালঘু, আদিবাসীসহ সব নাগরিকদের সমান অধিকার নিশ্চিত করা না গেলে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বাঁচানো যাবে না, এখানে শোষণ-বৈষম্যের পাহাড় তৈরি করে রাষ্ট্র ব্যবস্থা আমাদের অসাম্প্রদায়িক ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশের চেতনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। আমরা মানবিক রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠার দেশবাসীকে সোচ্চার হবার আহ্বান জানাই।

সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও স্বয়ং অর্থমন্ত্রীর সংশয়ের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতির-সামগ্রিক অবস্থা আমাদের উদ্বিগ্ন করছে। এখানে কর্মক্ষম ও সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী বেকারত্বের হার ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে শিল্প উৎপাদন ব্যবসা-বাণিজ্যে বিশ্বব্যাপী যে স্থবিরতা তৈরি হচ্ছে তার প্রভাব আমাদের দেশেও পড়তে শুরু করেছে। দেশে দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণহীনতা নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনকে সংকটাপন্ন করে তুলছে। প্রতিনিয়ত বাজার ব্যবস্থার ঊর্ধ্বমুখীতা, মজুতদারী ও অসৎ ব্যবসায়ী নিয়ন্ত্রিত ব্যবসা-বাণিজ্য সারাদেশে সামাজিক সংকটকে ঘণীভূত করছে। সঞ্চয় পত্রের সুদের হার কমানোর ঘোষণা দেশে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে হতাশা তৈরি করবে, বিশেষ করে অবসর প্রাপ্ত শ্রেণী-পেশার মানুষদের জীবন-জীবিকার অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা দেখা দেবে। অন্যদিকে শিক্ষা ব্যবস্থার বানিজ্যিকীকরণ, নারী-শিশু নিপীড়ন, সাম্প্রদায়িকতাবাদীদের সঙ্গে গাটছাড়া নীতি দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে বিপদগ্রস্থ করে তুলবে, ইতোমধ্যে ধর্মসভার নাম করে সাম্প্রদায়িক শক্তিসমুহ তৃণমূলে কৌশলে-জঙ্গিবাদীদের অবস্থান সুদৃঢ় করার কাজে সক্রিয় রয়েছে। এই কাজে ক্ষমতাসীন দলের তৃণমূল নেতারা ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের মন্ত্রী আমলারাও সাম্প্রদায়িক শক্তির সহায়তা দিয়ে থাকেন।

সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডা. সারওয়ার আলী, অধ্যাপক এমএম আকাশ, খুশি কবীর, অ্যাডভোকেট এসএমএ সবুর, নুরুর রহমান সেলিম, রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, মফিজুল ইসলাম কামাল, এমএ সামাদ, রোবায়েত ফেরদৌস সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ।

রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৩ ফল্গুন ১৪২৬, ২১ জমাদিউল সানি ১৪৪১

সর্বস্তরে জবাবদিহিতা ও আইনের সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হবে পঙ্কজ ভট্টাচার্য

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডিয়াম সদস্য পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশে লুটেরা, মাফিয়া ও সাম্প্রদায়িক শক্তিসমূহ অর্থপাচার, ব্যাংক লুট, সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদীদের গডফাদার হয়ে জনগণকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। আওয়ামী লীগের মতো দল থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি নির্বাসনে যাচ্ছে। গতকাল সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষের উদযাপন নিয়ে দেশবাসী যতটা উৎসাহ উদ্দীপনা থাকা দরকার ছিল আমাদের বিবেচনায় তা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। মূলত, বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে আজকের বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে যে দৈন্যতা, নিপীড়ন, বৈষম্য, শোষণ চলছে তা সম্ভব হতো না। খোদ আওয়ামী লীগের মতো দল থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি নির্বাসনে চলে যাচ্ছে, মাফিয়া, সন্ত্রাসবাদী, পেশিশক্তি ও সাম্প্রদায়িকতাবাদীরা আওয়ামী লীগে বিভিন্ন পর্যায়ে অবস্থান নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টার লিপ্ত রয়েছে। অন্যদিকে দেশে লুটেরা মাফিয়া ও সাম্প্রদায়িক শক্তিসমূহ অর্থপাচার, ব্যাংক লুট, সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদীদের গডফাদার হয়ে গণতন্ত্র ও জনমানুষের অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। নারী-শিশু নিপীড়ন সব সময় থেকে এখন প্রকট সংকটে নিষ্পতিত। মানুষ কোমলমতি শিশুদের নিয়ে নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রয়েছে। গণতন্ত্রের নামে ভোটার বিহীন নির্বাচন প্রক্রিয়া আমাদের ইতিহাসকে বিকৃত করতে বিশেষ ভূমিকায় ষড়যন্ত্রকারীরা এখন অবতীর্ণ। ভোটের গণতন্ত্রের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে এবং নির্বাচন কমিশন এর পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিতে হবে। সর্বস্তরে জবাবদিহিতা ও আইনের সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এখন দরকার অসাম্প্রদায়িক চেতনার শক্তির উদ্যোগে জাতীয় জাগরণ গড়ে তোলা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে শ্রেণী-পেশার ছাত্র-যুব সংস্কৃতির শক্তিসমুহের উদ্যোগে দেশ বাঁচাও, মুক্তিযুদ্ধ বাঁচাও স্লোগান সামনে নিয়ে অগ্রসর হতে হবে। সংগঠনের সভাপতি জিয়াউদ্দিন তারেক আলীর সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তিনি বলেন, আমরা দেশের নিরীহ জনগণের অধিকার নিশ্চিত করার তাগিদ থেকে দীর্ঘ দুই দশক সময় থেকে জনমত গঠনে নিয়োজিত আছে। আমরা মনে করি, সমাজের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বা, সংখ্যালঘু, আদিবাসীসহ সব নাগরিকদের সমান অধিকার নিশ্চিত করা না গেলে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বাঁচানো যাবে না, এখানে শোষণ-বৈষম্যের পাহাড় তৈরি করে রাষ্ট্র ব্যবস্থা আমাদের অসাম্প্রদায়িক ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশের চেতনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। আমরা মানবিক রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠার দেশবাসীকে সোচ্চার হবার আহ্বান জানাই।

সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও স্বয়ং অর্থমন্ত্রীর সংশয়ের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতির-সামগ্রিক অবস্থা আমাদের উদ্বিগ্ন করছে। এখানে কর্মক্ষম ও সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী বেকারত্বের হার ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে শিল্প উৎপাদন ব্যবসা-বাণিজ্যে বিশ্বব্যাপী যে স্থবিরতা তৈরি হচ্ছে তার প্রভাব আমাদের দেশেও পড়তে শুরু করেছে। দেশে দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণহীনতা নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনকে সংকটাপন্ন করে তুলছে। প্রতিনিয়ত বাজার ব্যবস্থার ঊর্ধ্বমুখীতা, মজুতদারী ও অসৎ ব্যবসায়ী নিয়ন্ত্রিত ব্যবসা-বাণিজ্য সারাদেশে সামাজিক সংকটকে ঘণীভূত করছে। সঞ্চয় পত্রের সুদের হার কমানোর ঘোষণা দেশে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে হতাশা তৈরি করবে, বিশেষ করে অবসর প্রাপ্ত শ্রেণী-পেশার মানুষদের জীবন-জীবিকার অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা দেখা দেবে। অন্যদিকে শিক্ষা ব্যবস্থার বানিজ্যিকীকরণ, নারী-শিশু নিপীড়ন, সাম্প্রদায়িকতাবাদীদের সঙ্গে গাটছাড়া নীতি দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে বিপদগ্রস্থ করে তুলবে, ইতোমধ্যে ধর্মসভার নাম করে সাম্প্রদায়িক শক্তিসমুহ তৃণমূলে কৌশলে-জঙ্গিবাদীদের অবস্থান সুদৃঢ় করার কাজে সক্রিয় রয়েছে। এই কাজে ক্ষমতাসীন দলের তৃণমূল নেতারা ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের মন্ত্রী আমলারাও সাম্প্রদায়িক শক্তির সহায়তা দিয়ে থাকেন।

সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডা. সারওয়ার আলী, অধ্যাপক এমএম আকাশ, খুশি কবীর, অ্যাডভোকেট এসএমএ সবুর, নুরুর রহমান সেলিম, রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, মফিজুল ইসলাম কামাল, এমএ সামাদ, রোবায়েত ফেরদৌস সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ।