নিহত ১৬৬৯
প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনরে মূল ভূখণ্ডে মারা গেলেন আরও ১৪৩ জন। এনিয়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৬৯ জনে। গতকাল রোববার চীনের স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, এ ভাইরাসে নতুন করে আরও ২ হাজার ৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৮ হাজার ছাড়াল। রয়টার্স।
বার্তা সংস্থাটি তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও দেশটিতে কমতে শুরু করেছে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা। দেশটির স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার দেশটির মূল ভূখণ্ডে যেখানে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯শ’, একদিনের ব্যবধানে সেখানে প্রায় সাড়ে ৩শ’ কম আক্রান্ত হয়ে সংখ্যাটি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৪০ জনে।
আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশ ?মৃত্যু ঘটেছে হুবেই প্রদেশে। এই প্রদেশের উহান শহর থেকেই গতবছরের শেষে নভেল করোনাভাইরাস ছড়াতে শুরু করে। এদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক চীনা পর্যটক শনিবার মারা গেছেন ফ্রান্সে; ইউরোপে এ ভাইরাসে এটাই প্রথম মৃত্যু। দেশটির মূল ভূখণ্ডের বাইরে এর আগে হংকং, ফিলিপিন্স ও জাপানে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে বিশ্বে এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১৬৬৯ জনে।
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মতো। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু। এ ভাইরাসের কোন টিকা বা ভ্যাকসিন এখনও তৈরি হয়নি। ফলে এমন কোন চিকিৎসা এখনও মানুষের জানা নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। আপাতত একমাত্র উপায় হলো, যারা ইতোমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন বা এ ভাইরাস বহন করছেন- তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।
উহান থেকে ১৭৫ নাগরিককে
ফেরাল নেপাল
নভেল করোনাভাইরাসের উৎসস্থল চীনের উহান শহর থেকে ১৭৫ জনকে দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে নেপাল। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাহেন্দ্র শ্রেষ্ঠা জানিয়েছেন, গতকাল রোববার ভোররাতে ১৩৪ পুরুষ ও ৪১ নারীকে নিয়ে নেপাল এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামে। উহানে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীদের ফেরাতে তাদের অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখানোর পর সেখানে আটকে পড়া নাগরিকদের ফিরিয়ে নিলো নেপাল। ফেরত আসা নেপালিদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছেন শ্রেষ্ঠা। দেশে ফেরা এ নাগরিকদের রাজধানীর কাছে ভক্তপুর শহরে দুই সপ্তাহ ‘পৃথক অবস্থায়’ নজরদারির মধ্যে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, পৃথক অবস্থায় তারা চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবেন। দুই সপ্তাহ পরও সুস্থ থাকলে তাদেরকে বাসায় ফেরার অনুমতি দেওয়া হবে।
উহানে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীদের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে গত সপ্তাহে তাদের অভিভাবকরা নেপালের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছিল। সেসময় দেশটির সরকার জানায়, উহান থেকে ফেরত আনা লোকজনকে যেসব ভবনে ‘পৃথক করে রাখা হবে’ তা প্রস্তুত করতে সময় লাগছে, তাই তাদের ফিরিয়ে আনতে দেরি হচ্ছে। তবে চীনের বাইরে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার তুলনামূলক অনেক কম। নেপালে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত এক ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া গেছে।
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৪ ফল্গুন ১৪২৬, ২২ জমাদিউল সানি ১৪৪১
নিহত ১৬৬৯
সংবাদ ডেস্ক |
প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনরে মূল ভূখণ্ডে মারা গেলেন আরও ১৪৩ জন। এনিয়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৬৯ জনে। গতকাল রোববার চীনের স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, এ ভাইরাসে নতুন করে আরও ২ হাজার ৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৮ হাজার ছাড়াল। রয়টার্স।
বার্তা সংস্থাটি তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও দেশটিতে কমতে শুরু করেছে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা। দেশটির স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার দেশটির মূল ভূখণ্ডে যেখানে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯শ’, একদিনের ব্যবধানে সেখানে প্রায় সাড়ে ৩শ’ কম আক্রান্ত হয়ে সংখ্যাটি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৪০ জনে।
আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশ ?মৃত্যু ঘটেছে হুবেই প্রদেশে। এই প্রদেশের উহান শহর থেকেই গতবছরের শেষে নভেল করোনাভাইরাস ছড়াতে শুরু করে। এদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক চীনা পর্যটক শনিবার মারা গেছেন ফ্রান্সে; ইউরোপে এ ভাইরাসে এটাই প্রথম মৃত্যু। দেশটির মূল ভূখণ্ডের বাইরে এর আগে হংকং, ফিলিপিন্স ও জাপানে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে বিশ্বে এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১৬৬৯ জনে।
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মতো। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু। এ ভাইরাসের কোন টিকা বা ভ্যাকসিন এখনও তৈরি হয়নি। ফলে এমন কোন চিকিৎসা এখনও মানুষের জানা নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। আপাতত একমাত্র উপায় হলো, যারা ইতোমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন বা এ ভাইরাস বহন করছেন- তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।
উহান থেকে ১৭৫ নাগরিককে
ফেরাল নেপাল
নভেল করোনাভাইরাসের উৎসস্থল চীনের উহান শহর থেকে ১৭৫ জনকে দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে নেপাল। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাহেন্দ্র শ্রেষ্ঠা জানিয়েছেন, গতকাল রোববার ভোররাতে ১৩৪ পুরুষ ও ৪১ নারীকে নিয়ে নেপাল এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামে। উহানে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীদের ফেরাতে তাদের অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখানোর পর সেখানে আটকে পড়া নাগরিকদের ফিরিয়ে নিলো নেপাল। ফেরত আসা নেপালিদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছেন শ্রেষ্ঠা। দেশে ফেরা এ নাগরিকদের রাজধানীর কাছে ভক্তপুর শহরে দুই সপ্তাহ ‘পৃথক অবস্থায়’ নজরদারির মধ্যে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, পৃথক অবস্থায় তারা চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবেন। দুই সপ্তাহ পরও সুস্থ থাকলে তাদেরকে বাসায় ফেরার অনুমতি দেওয়া হবে।
উহানে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীদের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে গত সপ্তাহে তাদের অভিভাবকরা নেপালের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছিল। সেসময় দেশটির সরকার জানায়, উহান থেকে ফেরত আনা লোকজনকে যেসব ভবনে ‘পৃথক করে রাখা হবে’ তা প্রস্তুত করতে সময় লাগছে, তাই তাদের ফিরিয়ে আনতে দেরি হচ্ছে। তবে চীনের বাইরে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার তুলনামূলক অনেক কম। নেপালে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত এক ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া গেছে।