কবির ভাষায় মানুষ মানুষের জন্য ‘একটু সহানুভূতি কী মানুষ পেতে পারে না’ আমরা যারা সুস্থ ও সবল , ধনাঢ্য ব্যক্তি তাদের সামনে অসহায় দুস্থ মানবেতর বিকলাঙ্গ অথবা প্রতিবন্ধী মানুষগুলো সম্মুখে পড়লে মুখ ঘুরে দাঁড়াই। তাদের প্রতি নেই কোন সম্প্রীতি ও ভালোবাসা। বিধবা এক দুস্থ পঙ্গু মা তার ৩৫ বছরের একমাত্র প্রতিবন্ধী সন্তান জাকির হোসেনকে নিয়ে তার সংসার। ছেলেকে গলায় ও হাতে বেঁধে তাকে দেখা যায় উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে।
নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরসভার শৈলাডহর গ্রামে স্বামী মৃত আবদুস ছামাদের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। দু’মাস অন্তঃসত্ত্বার পর তার স্বামী মৃত্যুবরণ করেন। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার এক বছর পর আমেনা বেগম তার সন্তানকে নিয়ে একই গ্রামের বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। কিছুদিন পর ভগ্নিপতিও মারা যায়। বোনের ছেলে চান মিয়া ফকিরের বাড়িতে তিন টুকরা টিন ও পাতার ঝুঁপড়ি দিয়ে তৈরি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। প্রতিবন্ধী জাকির হোসেনের মাথা সর্বদাই গরম থাকে। তার ছেলে জাকির হোসেন (৩৫) প্রায় সময় হাউমাউ চিৎকার করে। নিজের মাথা ভেঙে ফেলতে চায়। মাথার চুলও ছিঁড়ে ফেলে। অনেক সময় তার শরীর কামড়াতে চায়। জাকির নিজের শরীর নিজের নোক দিয়ে নিজেই আঁচড় কাটতে থাকে। অনেক সময় শরীর দিয়ে রক্ত বের করে ফেলে। প্রতিদিনই জামেনা খাতুন তার প্রতিবন্ধী একমাত্র সন্তানকে নিয়ে গলায় রশি ও হাত বেঁধে ভিক্ষাবৃত্তির জন্য ঘর হতে বের হয়ে যায়। জামেন খাতুন এই সংবাদ প্রতিনিধিকে বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর আর কোন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়নি। প্রতিবন্ধী শিশুর দিকে তাকিয়ে সাড়া জীবনটা নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, আমার সন্তানের মৃত্যুর পর যেন আমার মৃত্যু হয়। আমি মরে গেলে আমার সন্তানের সেবা করার মতো আর কেউ নেই।
দুর্গাপুর সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, সরকারিভাবে তার মার জন্য বয়স্ক বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা নিয়মিত দেয়া হচ্ছে। তার অন্য কোন লোক নেই। তার মা নিজে অসুস্থ সন্তানটি প্রতিবন্ধী বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তবে তার বর্তমানে একটি নিজস্ব জায়গাসহ গৃহের প্রয়োজন। বর্তমানে সে অন্যের বাড়িতে বসবাস করছে। সন্তানটি কথা বলতে পারে না। শুধু মাও মাও করে। আমার বিশ্বাস চিকিৎসা করালে আমার কলিজার টুকরা ভালো হয়ে যেতো। তাই বর্তমানে গরিববান্ধব প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার আকূল আবেদন ছেলের চিকিৎসা ও একটি ঘরের ব্যবস্থা করার জন্য।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা খানমের সঙ্গে কথা বললে তিনি সংবাদকে বলেন, বিষয়টি অবশ্যই করুণ। একটি প্রতিবন্ধী শিশুকে গলায় বেঁধে রাস্তাঘাটে ভিক্ষাবৃত্তি করে যাচ্ছে। স্থানীয় কিছু ধনাঢ্য ব্যক্তি সাহায্যের হাত বাড়ালে তার একটু ব্যবস্থা করা যেতো। শিশুটির উন্নতমানের চিকিৎসাসহ একটি বাসস্থানের প্রয়োজন।
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৪ ফল্গুন ১৪২৬, ২২ জমাদিউল সানি ১৪৪১
প্রতিনিধি, দুর্গাপুর (নেত্রকোনা)
কবির ভাষায় মানুষ মানুষের জন্য ‘একটু সহানুভূতি কী মানুষ পেতে পারে না’ আমরা যারা সুস্থ ও সবল , ধনাঢ্য ব্যক্তি তাদের সামনে অসহায় দুস্থ মানবেতর বিকলাঙ্গ অথবা প্রতিবন্ধী মানুষগুলো সম্মুখে পড়লে মুখ ঘুরে দাঁড়াই। তাদের প্রতি নেই কোন সম্প্রীতি ও ভালোবাসা। বিধবা এক দুস্থ পঙ্গু মা তার ৩৫ বছরের একমাত্র প্রতিবন্ধী সন্তান জাকির হোসেনকে নিয়ে তার সংসার। ছেলেকে গলায় ও হাতে বেঁধে তাকে দেখা যায় উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে।
নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরসভার শৈলাডহর গ্রামে স্বামী মৃত আবদুস ছামাদের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। দু’মাস অন্তঃসত্ত্বার পর তার স্বামী মৃত্যুবরণ করেন। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার এক বছর পর আমেনা বেগম তার সন্তানকে নিয়ে একই গ্রামের বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। কিছুদিন পর ভগ্নিপতিও মারা যায়। বোনের ছেলে চান মিয়া ফকিরের বাড়িতে তিন টুকরা টিন ও পাতার ঝুঁপড়ি দিয়ে তৈরি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। প্রতিবন্ধী জাকির হোসেনের মাথা সর্বদাই গরম থাকে। তার ছেলে জাকির হোসেন (৩৫) প্রায় সময় হাউমাউ চিৎকার করে। নিজের মাথা ভেঙে ফেলতে চায়। মাথার চুলও ছিঁড়ে ফেলে। অনেক সময় তার শরীর কামড়াতে চায়। জাকির নিজের শরীর নিজের নোক দিয়ে নিজেই আঁচড় কাটতে থাকে। অনেক সময় শরীর দিয়ে রক্ত বের করে ফেলে। প্রতিদিনই জামেনা খাতুন তার প্রতিবন্ধী একমাত্র সন্তানকে নিয়ে গলায় রশি ও হাত বেঁধে ভিক্ষাবৃত্তির জন্য ঘর হতে বের হয়ে যায়। জামেন খাতুন এই সংবাদ প্রতিনিধিকে বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর আর কোন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়নি। প্রতিবন্ধী শিশুর দিকে তাকিয়ে সাড়া জীবনটা নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, আমার সন্তানের মৃত্যুর পর যেন আমার মৃত্যু হয়। আমি মরে গেলে আমার সন্তানের সেবা করার মতো আর কেউ নেই।
দুর্গাপুর সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, সরকারিভাবে তার মার জন্য বয়স্ক বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা নিয়মিত দেয়া হচ্ছে। তার অন্য কোন লোক নেই। তার মা নিজে অসুস্থ সন্তানটি প্রতিবন্ধী বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তবে তার বর্তমানে একটি নিজস্ব জায়গাসহ গৃহের প্রয়োজন। বর্তমানে সে অন্যের বাড়িতে বসবাস করছে। সন্তানটি কথা বলতে পারে না। শুধু মাও মাও করে। আমার বিশ্বাস চিকিৎসা করালে আমার কলিজার টুকরা ভালো হয়ে যেতো। তাই বর্তমানে গরিববান্ধব প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার আকূল আবেদন ছেলের চিকিৎসা ও একটি ঘরের ব্যবস্থা করার জন্য।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা খানমের সঙ্গে কথা বললে তিনি সংবাদকে বলেন, বিষয়টি অবশ্যই করুণ। একটি প্রতিবন্ধী শিশুকে গলায় বেঁধে রাস্তাঘাটে ভিক্ষাবৃত্তি করে যাচ্ছে। স্থানীয় কিছু ধনাঢ্য ব্যক্তি সাহায্যের হাত বাড়ালে তার একটু ব্যবস্থা করা যেতো। শিশুটির উন্নতমানের চিকিৎসাসহ একটি বাসস্থানের প্রয়োজন।