ভোলায় বিশ দিনে ৫ ধর্ষণ

নোয়াখালীতে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ৪ আসামি রিমান্ডে

ভোলায় একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। ২০ দিনে ৫টি ঘটনায় তোলপাড় প্রশাসনে। দৌলতখানে কলেজ ক্যাম্পাসে ২ সন্তানের জননীকে গণধর্ষণ, চরফ্যাশনে পর্যটন কেন্দ্র কুকরীমুখরীতে আটকে রেখে তরুণীকে গণধর্ষণ, ইলিশায় পোস্ট অফিসে শিশু শিক্ষার্থী ধর্ষণ, এমন সব আলোচতি ঘটনার রেশ না কাটতে গত রোববার রাতে ফের জেলা সদরের চরসামাইয়া ইউনিয়নে ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। ওই শিশুকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল ভোরে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ধর্ষক মো. রায়হান ও তার সহযোগী মো. হেলাল উদ্দিনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহসিন আল ফারুক। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মীর সাফিন মাহমুদ জানান, প্রতিটি ঘটনায় ধর্ষকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তারপরও ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর দাবি জানান তিনি। এদিকে সর্বশেষ নির্যাতনের শিকার ওই শিশুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ভোলা সদরের চর সামাইয়া ইউনিয়নের সাহেবের চর এলাকায় মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণী ছাত্রীকে ঘরে একা পেয়ে সেলিমের বখাটে ছেলে রায়হান ও তার দোসর মো. হেলাল উদ্দিন ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে। ওই সময় শিক্ষার্থীর মা বাড়ি ছিলেন না। শিক্ষার্থীর ডাক চিৎকারে এলাকার মানুষ ছুটে এলে পালিয়ে যায় বখাটেরা। স্থানীয়রা ওই শিশুকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করান। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তারা। ধর্ষণের ঘটনায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর পিতা বাদী হয়ে ভোলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। রাত থেকেই পুলিশের অভিযান শুরু হয়। ভোরে ধর্ষকরা গ্রেফতার হয়। অপরদিকে বুধবার রাত ১০টার দিকে ভোলার দৌলতখান সড়কে হালিমা খাতুন স্কুল-কলেজে ক্যাম্পাসে এক নারীকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ করা হয়। ওই ঘটনায় দুইজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এর এক সপ্তাহ আগে চরফ্যাশনে কুকরীতে তরুণী ধর্ষণের সময় ৫ ধর্ষককে কোস্টগার্ড সদস্যরা আটক করে। এছাড়া ইলিশায় শিশু ধর্ষক পোস্ট অফিস স্টাফ শেরআলীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ছাড়া রাজাপুরে অপর এক ধর্ষণের ঘটনায় আটক হয় একজন। গত ২০ দিন একের পর এক ঘটনায় ক্ষোভ জানান নাগরিক কমিটির সভাপতি মো. আবু তাহের, প্রেসক্লাব সভাপতি এম হাবিবুর রহমান।

সোনাইমুড়িতে ছাত্রী ধর্ষণ হত্যা ॥ ৪ আসামি রিমান্ডে

প্রতিনিধি, নোয়াখালী

সোনাইমুড়ীর বজরা ইউনিয়নে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে দশম শ্রেণীর ছাত্রী রিয়া মনিকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে হত্যা মামলায় ৪ আসামিকে ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন নোয়াখালী শিশু আদালতের বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ শামছু উদ্দিন খালেদ।

নোয়াখালী শিশু আদালত সূত্র জানায়, গত ২০ জানুয়ারি প্রতিদিনের মতো সোনাইমুড়ী থানার বজরা ইউনিয়নের রশিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী তানজিমা আক্তার রিয়া মনি (১৬) স্কুল ছুটির পর বাড়ি আসছিল। পথে পার্শ্ববর্তী এলাকার মোস্তফার ছেলে হাবিবুর রহমান (১৮), আবদুর রাজ্জাকের ছেলে জয়নাল আবেদীন (১৮), মহব্বত আলীর ছেলে ইমন (১৮), জয়নাল আবেদীনের ছেলে জাকের হোসেন ফয়েজ (১৯) ও মজিবুলের ছেলে রাকিব (১৮) তাকে জোরপূর্বক ধরে পার্শ্ববর্তী ১টি পরিত্যাক্ত বাগান বাড়িতে নিয়ে যায় এবং তার মুখে উড়না পেঁচিয়ে তাকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে এবং পরবর্র্তীতে হত্যা করে লাশ বাগানের ভেতর লুকিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। একই দিন রাতেই সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে ২১ জানুয়ারি রিয়া মনির মা জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় মামলা করলে পুলিশ জয়নাল আবেদীন, ইমন, জাকের হোসেন ফয়েজ, জয়নাল আবেদীন ও রাকিবকে গ্রেফতার করে। ইতোমধ্যে ২৭ জানুয়ারি মামলাটি নোয়াখালী পিবিআই তদন্তের দায়িত্ব নেন এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই সাব-ইন্সপেক্টর মোর্শেদ আলম ১৬ ফেব্রুয়ারি আসামিদের ৫ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষে দীর্ঘ শোনানির পর শিশু আদালতের বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ শামছু উদ্দিন খালেদ আসামি হাবিবুর রহমান (১৮), ইমন (১৮), ফয়েজ (১৯) ও রাকিব (১৮) প্রত্যেকে ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং আদেশে উল্লেখ করেন যে, মামলাটি পরিকল্পিতভাবে খুন করে লাশ গুম করে সম্পর্কিত ৩০২/২০১/৩৪ ধারার অপরাধে আনিত মামলা হলেও কের্স ডকেটে সামিল থাকা সুরতহাল রিপোর্টে ভিকটিম তানজিম আক্তার রিয়া মনির যৌনাঙ্গে বীর্য থাকার স্পষ্টতা রয়েছে। ময়নাতদন্তের ২৮ দিন পরও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আদালতে শামিল হয়নি। দ্রুত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট শামিল করার জন্য জেলা সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিবিআই নোয়াখালীকে আদেশের কপি দেয়ার আদেশ দেয়া হয়।

আরও খবর
৯ লাখ ২৬ হাজার শিক্ষক প্রশিক্ষণ পেলেও প্রশ্ন নোট-গাইড থেকে
খালেদার প্যারোলে মুক্তির সিদ্ধান্ত আদালতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত করতে সহযোগিতা জরুরি
সরকারি চিকিৎসকদের বাইরে প্র্যাকটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
এখন নারীরাও ভারতীয় সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিতে পারবেন সুপ্রিম কোর্ট
অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের ৮৩তম জন্মবার্ষিকী আজ
কীভাবে মেট্রোরেলে চড়বেন তথ্য দিতে ঢাকায় মকআপ ট্রেন
গ্যাস বিস্ফোরণে নিহত ১, দগ্ধ ৭
ক্ষণগণনা : আর ২৭ দিন
আ-মরি বাংলা ভাষা
মোবাইল টাওয়ারের বিকিরণে ক্ষতির কিছু পাওয়া যায়নি বিটিআরসি
কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতার চেয়ে বন্দীর সংখ্যা দ্বিগুণ
বন নয়, বাঁশ বাগান
বন নয়, বাঁশ বাগান

মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৫ ফল্গুন ১৪২৬, ২৩ জমাদিউল সানি ১৪৪১

ভোলায় বিশ দিনে ৫ ধর্ষণ

নোয়াখালীতে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ৪ আসামি রিমান্ডে

প্রতিনিধি, ভোলা

ভোলায় একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। ২০ দিনে ৫টি ঘটনায় তোলপাড় প্রশাসনে। দৌলতখানে কলেজ ক্যাম্পাসে ২ সন্তানের জননীকে গণধর্ষণ, চরফ্যাশনে পর্যটন কেন্দ্র কুকরীমুখরীতে আটকে রেখে তরুণীকে গণধর্ষণ, ইলিশায় পোস্ট অফিসে শিশু শিক্ষার্থী ধর্ষণ, এমন সব আলোচতি ঘটনার রেশ না কাটতে গত রোববার রাতে ফের জেলা সদরের চরসামাইয়া ইউনিয়নে ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। ওই শিশুকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল ভোরে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ধর্ষক মো. রায়হান ও তার সহযোগী মো. হেলাল উদ্দিনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহসিন আল ফারুক। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মীর সাফিন মাহমুদ জানান, প্রতিটি ঘটনায় ধর্ষকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তারপরও ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর দাবি জানান তিনি। এদিকে সর্বশেষ নির্যাতনের শিকার ওই শিশুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ভোলা সদরের চর সামাইয়া ইউনিয়নের সাহেবের চর এলাকায় মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণী ছাত্রীকে ঘরে একা পেয়ে সেলিমের বখাটে ছেলে রায়হান ও তার দোসর মো. হেলাল উদ্দিন ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে। ওই সময় শিক্ষার্থীর মা বাড়ি ছিলেন না। শিক্ষার্থীর ডাক চিৎকারে এলাকার মানুষ ছুটে এলে পালিয়ে যায় বখাটেরা। স্থানীয়রা ওই শিশুকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করান। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তারা। ধর্ষণের ঘটনায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর পিতা বাদী হয়ে ভোলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। রাত থেকেই পুলিশের অভিযান শুরু হয়। ভোরে ধর্ষকরা গ্রেফতার হয়। অপরদিকে বুধবার রাত ১০টার দিকে ভোলার দৌলতখান সড়কে হালিমা খাতুন স্কুল-কলেজে ক্যাম্পাসে এক নারীকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ করা হয়। ওই ঘটনায় দুইজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এর এক সপ্তাহ আগে চরফ্যাশনে কুকরীতে তরুণী ধর্ষণের সময় ৫ ধর্ষককে কোস্টগার্ড সদস্যরা আটক করে। এছাড়া ইলিশায় শিশু ধর্ষক পোস্ট অফিস স্টাফ শেরআলীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ছাড়া রাজাপুরে অপর এক ধর্ষণের ঘটনায় আটক হয় একজন। গত ২০ দিন একের পর এক ঘটনায় ক্ষোভ জানান নাগরিক কমিটির সভাপতি মো. আবু তাহের, প্রেসক্লাব সভাপতি এম হাবিবুর রহমান।

সোনাইমুড়িতে ছাত্রী ধর্ষণ হত্যা ॥ ৪ আসামি রিমান্ডে

প্রতিনিধি, নোয়াখালী

সোনাইমুড়ীর বজরা ইউনিয়নে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে দশম শ্রেণীর ছাত্রী রিয়া মনিকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে হত্যা মামলায় ৪ আসামিকে ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন নোয়াখালী শিশু আদালতের বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ শামছু উদ্দিন খালেদ।

নোয়াখালী শিশু আদালত সূত্র জানায়, গত ২০ জানুয়ারি প্রতিদিনের মতো সোনাইমুড়ী থানার বজরা ইউনিয়নের রশিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী তানজিমা আক্তার রিয়া মনি (১৬) স্কুল ছুটির পর বাড়ি আসছিল। পথে পার্শ্ববর্তী এলাকার মোস্তফার ছেলে হাবিবুর রহমান (১৮), আবদুর রাজ্জাকের ছেলে জয়নাল আবেদীন (১৮), মহব্বত আলীর ছেলে ইমন (১৮), জয়নাল আবেদীনের ছেলে জাকের হোসেন ফয়েজ (১৯) ও মজিবুলের ছেলে রাকিব (১৮) তাকে জোরপূর্বক ধরে পার্শ্ববর্তী ১টি পরিত্যাক্ত বাগান বাড়িতে নিয়ে যায় এবং তার মুখে উড়না পেঁচিয়ে তাকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে এবং পরবর্র্তীতে হত্যা করে লাশ বাগানের ভেতর লুকিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। একই দিন রাতেই সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে ২১ জানুয়ারি রিয়া মনির মা জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় মামলা করলে পুলিশ জয়নাল আবেদীন, ইমন, জাকের হোসেন ফয়েজ, জয়নাল আবেদীন ও রাকিবকে গ্রেফতার করে। ইতোমধ্যে ২৭ জানুয়ারি মামলাটি নোয়াখালী পিবিআই তদন্তের দায়িত্ব নেন এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই সাব-ইন্সপেক্টর মোর্শেদ আলম ১৬ ফেব্রুয়ারি আসামিদের ৫ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষে দীর্ঘ শোনানির পর শিশু আদালতের বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ শামছু উদ্দিন খালেদ আসামি হাবিবুর রহমান (১৮), ইমন (১৮), ফয়েজ (১৯) ও রাকিব (১৮) প্রত্যেকে ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং আদেশে উল্লেখ করেন যে, মামলাটি পরিকল্পিতভাবে খুন করে লাশ গুম করে সম্পর্কিত ৩০২/২০১/৩৪ ধারার অপরাধে আনিত মামলা হলেও কের্স ডকেটে সামিল থাকা সুরতহাল রিপোর্টে ভিকটিম তানজিম আক্তার রিয়া মনির যৌনাঙ্গে বীর্য থাকার স্পষ্টতা রয়েছে। ময়নাতদন্তের ২৮ দিন পরও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আদালতে শামিল হয়নি। দ্রুত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট শামিল করার জন্য জেলা সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিবিআই নোয়াখালীকে আদেশের কপি দেয়ার আদেশ দেয়া হয়।