‘অদৃশ্য কারণে পাচার করা টাকা ফেরতের উদ্যোগ থেমে গেছে’

সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় ধনিক শ্রেণী ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করছে। এভাবে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এক অদৃশ্য কারণে পাচার করা টাকা ফেরতের উদ্যোগ থেমে গেছে বলে মনে করেন বক্তারা।

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট-উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ। সভায় অধ্যাপক এমএম আকাশ, রেটিং প্রতিষ্ঠান ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা মোজাফফর আহমেদ, অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এমএম আকাশ বলেন, ফারমার্স ব্যাংক রক্ষা করতে রাষ্ট্রীয়ত্ত খাতের ব্যাংকগুলোকে দিয়ে শেয়ার কেনানো হয়েছে। এভাবে সব ক্ষেত্রে কার্পেটের নিচে ময়লা লুকিয়ে ফেলা হচ্ছে, যার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। দেশে খেলাপি ঋণ কত, তা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল স্পষ্ট করে দেখিয়েছে। এর পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংক খাত তদারকির দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে এখন খারাপ কোন ঋণকে খেলাপি করতে পারেন না। তাদের ফোন করতে হয়। ওপরের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। ফলে ব্যাংক খাতের প্রকৃত চিত্র আসছে না।

মোজাফফর আহমেদ বলেন, রেটিং করায় আমরা ব্যাংকগুলোর ভেতরের খবর জানি। ব্যাংকগুলোয় করপোরেট গভর্নেন্স বলতে কিছু নেই। চেয়ারম্যানরাই ব্যাংক পরিচালনা করে। এর ফলে ৫ শতাংশ মূলধন দিয়ে তারা পুরো ব্যাংক পরিচালনা করছে। আমি মনে করি, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের হার ৪০ শতাংশ। আলাদা কোম্পানি গঠন করে খেলাপি ঋণ আদায়ের উদ্যোগ সফল হবে না। মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, আমাদের অর্থমন্ত্রী এক নম্বর হয়েছেন। এর পরদিন দেখলেন পরিস্থিতি খারাপ। সারাবিশ্বে মন্দার ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। আমদের অর্থনীতির সব সূচক খারাপ হয়ে যাচ্ছে। সামষ্টিক অর্থনীতি ধসে যাওয়ার উপক্রম। যারা এমন পরিস্থিতিতেও অর্থনীতিকে ভালো বলছেন, তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। তাদের বিচার দাবি করছি। কিছু মানুষের লুটপাটের চাপ সব আমানতকারী কেন নেবে?

আনু মুহাম্মদ বলেন, অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংক যদি তাদের যথাযথ ভূমিকা পালন করে, তাহলে কী তাদের পদটিকে থাকবে? ব্যাংক লুটপাট, ব্যাংক দখল, পরিবেশ ধ্বংস এখন উন্নয়নের অংশ হয়ে গেছে।

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, বাংলাদেশে চরম বৈষম্য চলছে। এটাকে কী উন্নয়ন বলা যায়? গড় আয় বেশি হলেই তো উন্নয়ন হয় না। বাংলাদেশের ব্যাংক ব্যবস্থা ধনী ও ডাকাতবান্ধব।

আরও খবর
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউশন আইন অনুমোদন
নজরদারিতে নজর নেই
নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে
দক্ষ কর্মী নিতে চায় কাতার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
শীতলক্ষ্যার পূর্ব পাড়ে ৩ হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ
বাংলাদেশে কর্মরত চীনা নাগরিকদের ফিরতে নিষেধ করা হয়েছে চীনা রাষ্ট্রদূত
আইনি সেবা নিতে আসা নাগরিকদের সহযোগিতা করতে হবে
ছন্দ-কবিতা, গল্পে বইমেলা মাতাচ্ছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা
রাজধানীতে ভাষা সংগ্রামীদের মিলনমেলা
জীবনানন্দ দাশ বাংলা কবিতার প্রধান পুরুষ
রেললাইনে দুই যুবকের লাশ
দিনে গার্মেন্ট কর্মী রাতে খুনি
খালেদার স্বাস্থ্যের অবস্থা খারাপ মুক্তি দিন রিজভী

মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৫ ফল্গুন ১৪২৬, ২৩ জমাদিউল সানি ১৪৪১

‘অদৃশ্য কারণে পাচার করা টাকা ফেরতের উদ্যোগ থেমে গেছে’

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় ধনিক শ্রেণী ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করছে। এভাবে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এক অদৃশ্য কারণে পাচার করা টাকা ফেরতের উদ্যোগ থেমে গেছে বলে মনে করেন বক্তারা।

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট-উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ। সভায় অধ্যাপক এমএম আকাশ, রেটিং প্রতিষ্ঠান ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা মোজাফফর আহমেদ, অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এমএম আকাশ বলেন, ফারমার্স ব্যাংক রক্ষা করতে রাষ্ট্রীয়ত্ত খাতের ব্যাংকগুলোকে দিয়ে শেয়ার কেনানো হয়েছে। এভাবে সব ক্ষেত্রে কার্পেটের নিচে ময়লা লুকিয়ে ফেলা হচ্ছে, যার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। দেশে খেলাপি ঋণ কত, তা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল স্পষ্ট করে দেখিয়েছে। এর পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংক খাত তদারকির দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে এখন খারাপ কোন ঋণকে খেলাপি করতে পারেন না। তাদের ফোন করতে হয়। ওপরের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। ফলে ব্যাংক খাতের প্রকৃত চিত্র আসছে না।

মোজাফফর আহমেদ বলেন, রেটিং করায় আমরা ব্যাংকগুলোর ভেতরের খবর জানি। ব্যাংকগুলোয় করপোরেট গভর্নেন্স বলতে কিছু নেই। চেয়ারম্যানরাই ব্যাংক পরিচালনা করে। এর ফলে ৫ শতাংশ মূলধন দিয়ে তারা পুরো ব্যাংক পরিচালনা করছে। আমি মনে করি, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের হার ৪০ শতাংশ। আলাদা কোম্পানি গঠন করে খেলাপি ঋণ আদায়ের উদ্যোগ সফল হবে না। মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, আমাদের অর্থমন্ত্রী এক নম্বর হয়েছেন। এর পরদিন দেখলেন পরিস্থিতি খারাপ। সারাবিশ্বে মন্দার ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। আমদের অর্থনীতির সব সূচক খারাপ হয়ে যাচ্ছে। সামষ্টিক অর্থনীতি ধসে যাওয়ার উপক্রম। যারা এমন পরিস্থিতিতেও অর্থনীতিকে ভালো বলছেন, তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। তাদের বিচার দাবি করছি। কিছু মানুষের লুটপাটের চাপ সব আমানতকারী কেন নেবে?

আনু মুহাম্মদ বলেন, অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংক যদি তাদের যথাযথ ভূমিকা পালন করে, তাহলে কী তাদের পদটিকে থাকবে? ব্যাংক লুটপাট, ব্যাংক দখল, পরিবেশ ধ্বংস এখন উন্নয়নের অংশ হয়ে গেছে।

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, বাংলাদেশে চরম বৈষম্য চলছে। এটাকে কী উন্নয়ন বলা যায়? গড় আয় বেশি হলেই তো উন্নয়ন হয় না। বাংলাদেশের ব্যাংক ব্যবস্থা ধনী ও ডাকাতবান্ধব।