তদন্তের আগে বিবৃতি দেয়ার কাজটি বন্ধ করুন

কুয়েতে মানব পাচারের সঙ্গে এক সংসদ সদস্যের সম্পৃক্ততার বিষয়ে দুই মন্ত্রী দুই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন কুয়েতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ খবরকে ‘ফেক নিউজ’ বলেছেন। তবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনকে তদন্তের অনুরোধ জানাবেন বলেও জানান।

কুয়েতের আরবি দৈনিক আল কাবাস ও অনলাইন পত্রিকা আরব টাইমস গত সপ্তাহে বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্যসহ তিন সদস্যের একটি মানব পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কূটনৈতিক সূত্র জানায়, এ সংসদ সদস্য হলেন লক্ষ্মীপুর-২ থেকে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত শহিদ ইসলাম। ওই সংসদ সদস্যের দেশে আসা এবং মানব পাচারের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আয়ের বিষয়গুলো কুয়েতের গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসেছে।

মানব পাচারের সঙ্গে একজন সংসদ সদস্যের জড়িত থাকার অভিযোগ উদ্বেগজনক এবং একই সঙ্গে রহস্যাবৃত। বিষয়টি অবশ্যই তদন্তের দাবি রাখে। কাজেই এ ব্যাপারে দুদকসহ অন্যান্য রাষ্ট্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে সেটাই প্রত্যাশা।

প্রশ্ন হলো, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কী করে বিষয়টিকে ভুয়া খবর বলে অগ্রাহ্য করলেন। কুয়েতের উল্লিখিত গণমাধ্যম প্রতিবেদনের সময় তাদের তথ্যসূত্র জানিয়েছে। সেই তথ্যসূত্রের বরাত দিয়েই তারা খবর প্রকাশ করেছে। অথচ সেসব বিবেচনা না করে, কোনরকম তদন্তের আগেই একটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কী করে নিশ্চিত হলেন যে, মানব পাচারের খবরটি ভুয়া এবং কোন সংসদ সদস্য এমন অনিয়ম করেননি। আমরা জানতে চাই, এভাবে আগ বাড়িয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাওয়া এবং বিবৃতি দিয়ে কোনকিছু আড়াল করার চেষ্টা কার স্বার্থে?

আমরা মনে করি, খবরের সত্যতা যাচাইয়ের দায়িত্ব দুদক এবং তদন্তকারী সংস্থারই থাকা উচিত। এর আগে কোন মন্ত্রী যদি বিষয়টির সত্যাসত্য বিচার করেন তবে তা তদন্তকে বাধাগ্রস্ত করবে। এক্ষেত্রে সেতুমন্ত্রী যা বলেছেন সেটা প্রণিধানযোগ্য। অর্থাৎ আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। তদন্তে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৫ ফল্গুন ১৪২৬, ২৩ জমাদিউল সানি ১৪৪১

মানব পাচারের সঙ্গে সংসদ সদস্যের জড়িত থাকার খবরটি উদ্বেগজনক

তদন্তের আগে বিবৃতি দেয়ার কাজটি বন্ধ করুন

কুয়েতে মানব পাচারের সঙ্গে এক সংসদ সদস্যের সম্পৃক্ততার বিষয়ে দুই মন্ত্রী দুই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন কুয়েতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ খবরকে ‘ফেক নিউজ’ বলেছেন। তবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনকে তদন্তের অনুরোধ জানাবেন বলেও জানান।

কুয়েতের আরবি দৈনিক আল কাবাস ও অনলাইন পত্রিকা আরব টাইমস গত সপ্তাহে বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্যসহ তিন সদস্যের একটি মানব পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কূটনৈতিক সূত্র জানায়, এ সংসদ সদস্য হলেন লক্ষ্মীপুর-২ থেকে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত শহিদ ইসলাম। ওই সংসদ সদস্যের দেশে আসা এবং মানব পাচারের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আয়ের বিষয়গুলো কুয়েতের গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসেছে।

মানব পাচারের সঙ্গে একজন সংসদ সদস্যের জড়িত থাকার অভিযোগ উদ্বেগজনক এবং একই সঙ্গে রহস্যাবৃত। বিষয়টি অবশ্যই তদন্তের দাবি রাখে। কাজেই এ ব্যাপারে দুদকসহ অন্যান্য রাষ্ট্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে সেটাই প্রত্যাশা।

প্রশ্ন হলো, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কী করে বিষয়টিকে ভুয়া খবর বলে অগ্রাহ্য করলেন। কুয়েতের উল্লিখিত গণমাধ্যম প্রতিবেদনের সময় তাদের তথ্যসূত্র জানিয়েছে। সেই তথ্যসূত্রের বরাত দিয়েই তারা খবর প্রকাশ করেছে। অথচ সেসব বিবেচনা না করে, কোনরকম তদন্তের আগেই একটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কী করে নিশ্চিত হলেন যে, মানব পাচারের খবরটি ভুয়া এবং কোন সংসদ সদস্য এমন অনিয়ম করেননি। আমরা জানতে চাই, এভাবে আগ বাড়িয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাওয়া এবং বিবৃতি দিয়ে কোনকিছু আড়াল করার চেষ্টা কার স্বার্থে?

আমরা মনে করি, খবরের সত্যতা যাচাইয়ের দায়িত্ব দুদক এবং তদন্তকারী সংস্থারই থাকা উচিত। এর আগে কোন মন্ত্রী যদি বিষয়টির সত্যাসত্য বিচার করেন তবে তা তদন্তকে বাধাগ্রস্ত করবে। এক্ষেত্রে সেতুমন্ত্রী যা বলেছেন সেটা প্রণিধানযোগ্য। অর্থাৎ আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। তদন্তে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।