বিদ্যুৎ

উৎপাদনে এগিয়ে সঞ্চালনে পিছিয়ে

মানসম্পন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সঞ্চালনে সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন

চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা তৈরি হলেও সঞ্চালনে পিছিয়ে রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বিদ্যুৎ বিভাগের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের গত এগার বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ৫ গুণ হলেও সঞ্চালন সক্ষমতা সে তুলানায় বাড়েনি। এই পরিপ্রেক্ষিতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ যেমন বিঘি্নত হচ্ছে, তেমনি পায়রা, মাতারবাড়ি, রূপপুরের মতো বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো যথাসময়ে বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসা নিয়েও অনিশ্চতয়তা তৈরি হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে মানসম্পন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণে রাষ্ট্রীয় ‘পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লি. (পিজিসিবি)’-এর সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

গত এগার বছরে (২০০৯-২০২০) বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বেড়েছে ১৭ হাজার ৮৪৫ মেগাওয়াট। ২০০৯ সালে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২২ হাজার ৭৮৭ মেগাওয়াট। গত এগার বছরে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ২৭টি থেকে ১১০টি বেড়ে বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা হয়েছে ১৩৭টি। গত এগার বছরে গ্রাহক বেড়েছে ২ কোটি ৫৪ লাখ। ২০০৯ সালে গ্রাহক ছিল এক কোটি ৮ লাখ। বর্তমান গ্রাহক সংখ্যা ৩ কোটি ৬২ লাখ। এ সময় বিদ্যুৎ সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠী ৪৭ শতাংশ থেকে ৯৬ শতাংশ হয়েছে; এগার বছরে বেড়েছে ৪৯ শতাংশ। দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন রেকর্ড হয়েছে ১২ হাজার ৮৯৩ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়েনি সঞ্চালন লাইন। ২০০৯ সালে সঞ্চালন লাইন ছিল ৮ হাজার সার্কিট কিলোমিটার। এগার বছরে ৪ হাজার ৭৩ সার্কিট কিলোমিটার বেড়ে বর্তমানে হয়েছে ১২ হাজার ৭৩ সার্কিট কিলোমিটার। এ সময় তবে বিতরণ লাইন ২ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটার থেকে ২ লাখ ৯৭ হাজার কিলোমিটার বেড়ে বর্তমানে হয়েছে ৫ লাখ ৫৭ হাজার কিলোমিটার। এগার বছরে গ্রিড সাব-স্টেশন ক্ষমতা ১৫ হাজার ৮৭০ এমভিএ থেকে ২৭ হাজার ৮১০ এমভিএ বেড়ে হয়েছে ৪৩ হাজার ৬৮০ এমভিএ।

বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে পটুয়াখালীতে নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটটির বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসার সময় (সিওডি) নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল। সব রকম প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও পটুয়াখালী-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভির সঞ্চালন লাইন প্রস্তুত না হওয়ায় এর সিওডি পিছিয়ে একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর করা হয়। কিন্তু তখনও সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ হয়নি। অবশেষে গত ১৩ জানুয়ারি জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট। চলতি বছরের জুনে দ্বিতীয় ইউনিট চালুর কথা রয়েছে।

পায়রার পাশাপাশি পটুয়াখালী, রামপাল, রূপপুর, মাতারবাড়ি ও মহেশখালীদের বেশ কয়েকটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে, যেগুলো চলতি বছর থেকে শুরু করে আগামী তিন-চার বছরের মধ্যে চালুর কথা রয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের পরিকল্পনা অনুযায়ী, রামপালের ১৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুকেন্দ্রটি ২০২১ সালের জুনে, মাতারবাড়িতে জাইকার সহযোগিতায় নির্মাণাধীন ১২০০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রটি ২০২৪ সালের জুনে, মহেশখালীতে পিডিবি ও জিইয়ের এলএনজিভিত্তিক ৩৬০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রের ১২০০ মেগাওয়াটের তিনটি ইউনিট যথাক্রমে ২০২৪, ২০২৫ ও ২০২৬ সালের জুনে উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে।

এসব কেন্দ্রর উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহের দায়িত্ব পিজিসিবির। সংস্থাটি নিজেদের কাজের ধীরগতির কারণে কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রর সিওডি পরিবর্তন চেয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, গত ৮ জানুয়ারি পিজিসিবি ‘বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে’ পটুয়াখালী এলাকায় নির্মিত ও নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য সিওডি পরিবর্তনের আবেদন করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে পায়রা, রামপাল, মাতারবাড়ি, রূপপুর, মহেশখালীসহ দেশের বিদ্যুৎ হাবগুলোর নির্মিতব্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সিওডি পরিবর্তনের বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগে গত ২২ জানুয়ারি এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ওই সভায় পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণে কারিগরি কিছু বিষয় আছে, যেখানে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ চাহিদা খুবই কম, সেখানে মেগা প্রকল্পের বিদ্যুৎ যুক্ত করতে কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে। তিনি বলেন, শীত মৌসুমে দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা থাকে গড়ে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট। জাতীয় গ্রিডে উৎপাদন সক্ষমতা ২০ হাজার মেগাওয়াট। এতো নিম্ন চাহিদার সময় বেইজলোড বিদ্যুৎকেন্দ্র যেগুলো কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ক্ষমতায় চালানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে সেগুলো চালানো চ্যালেঞ্জিং। বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো কীভাবে পরিচালনা করা হবে সে বিষয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) মতামত প্রয়োজন।

পিজিসিবির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, সারাদেশের বিদ্যুতের সঞ্চালন ও বিতরণের কাজ করে পিজিসিবি। বর্তমানে কোম্পানিটির অধীনে সারাদেশে ২৭টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, আগে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও গ্রাহক অনেক কম ছিল। তবে এখন তা বহুগুণে বেড়েছে। তার দাবি, পিজিসিবির লোকবল সংকটের কারণে অনেক ক্ষেত্রে বড় প্রকল্পের দায়িত্ব তুলনামূলক জুনিয়র কর্মকর্তাকে দিতে হচ্ছে। ফলে চাইলেও পিজিসিবি সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা আশানুরূপ উন্নতি করতে পারছে না।

সার্বিক বিষয়ে পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, পিজিসিবির প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবেই এগুচ্ছে। তবে নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ সঞ্চালন ব্যবস্থার জন্যই বিভিন্ন অঞ্চলের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালুর বিষয়ে সমন্বয় জরুরি।

image
আরও খবর
নদীতীরের ১১৩ ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থানান্তর করা হবে নৌপ্রতিমন্ত্রী
সিঙ্গাপুরে এক বাংলাদেশির অবস্থা আশঙ্কাজনক
ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদহার পুনর্বিবেচনার আশ্বাস অর্থমন্ত্রীর
গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে
দুর্বৃত্তের গুলিতে ইউপিডিএফ কর্মী নিহত
বনায়নের নামে চলছে হরিলুট
ঘনিয়ে আসছে মামলার রায়ের দিন
খালেদার জামিন প্রধানমন্ত্রীর হাতে নয় : কাদের
কেমিক্যাল গোডাউন রয়েছে আগের মতোই
নিহত ৬৭ জনের ময়না তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত
চাকরি ৯৭৭ দিন, ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ৭৫০ দিন
গাজীপুরে পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যু
অমর একুশ উদযাপনের প্রস্তুতি সম্পন্ন
ক্ষণগণনা : আর ২৫ দিন
আ-মরি বাংলা ভাষা

বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৭ ফল্গুন ১৪২৬, ২৫ জমাদিউল সানি ১৪৪১

বিদ্যুৎ

উৎপাদনে এগিয়ে সঞ্চালনে পিছিয়ে

মানসম্পন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সঞ্চালনে সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন

ফয়েজ আহমেদ তুষার |

image

চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা তৈরি হলেও সঞ্চালনে পিছিয়ে রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বিদ্যুৎ বিভাগের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের গত এগার বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ৫ গুণ হলেও সঞ্চালন সক্ষমতা সে তুলানায় বাড়েনি। এই পরিপ্রেক্ষিতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ যেমন বিঘি্নত হচ্ছে, তেমনি পায়রা, মাতারবাড়ি, রূপপুরের মতো বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো যথাসময়ে বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসা নিয়েও অনিশ্চতয়তা তৈরি হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে মানসম্পন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণে রাষ্ট্রীয় ‘পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লি. (পিজিসিবি)’-এর সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

গত এগার বছরে (২০০৯-২০২০) বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বেড়েছে ১৭ হাজার ৮৪৫ মেগাওয়াট। ২০০৯ সালে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২২ হাজার ৭৮৭ মেগাওয়াট। গত এগার বছরে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ২৭টি থেকে ১১০টি বেড়ে বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা হয়েছে ১৩৭টি। গত এগার বছরে গ্রাহক বেড়েছে ২ কোটি ৫৪ লাখ। ২০০৯ সালে গ্রাহক ছিল এক কোটি ৮ লাখ। বর্তমান গ্রাহক সংখ্যা ৩ কোটি ৬২ লাখ। এ সময় বিদ্যুৎ সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠী ৪৭ শতাংশ থেকে ৯৬ শতাংশ হয়েছে; এগার বছরে বেড়েছে ৪৯ শতাংশ। দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন রেকর্ড হয়েছে ১২ হাজার ৮৯৩ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়েনি সঞ্চালন লাইন। ২০০৯ সালে সঞ্চালন লাইন ছিল ৮ হাজার সার্কিট কিলোমিটার। এগার বছরে ৪ হাজার ৭৩ সার্কিট কিলোমিটার বেড়ে বর্তমানে হয়েছে ১২ হাজার ৭৩ সার্কিট কিলোমিটার। এ সময় তবে বিতরণ লাইন ২ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটার থেকে ২ লাখ ৯৭ হাজার কিলোমিটার বেড়ে বর্তমানে হয়েছে ৫ লাখ ৫৭ হাজার কিলোমিটার। এগার বছরে গ্রিড সাব-স্টেশন ক্ষমতা ১৫ হাজার ৮৭০ এমভিএ থেকে ২৭ হাজার ৮১০ এমভিএ বেড়ে হয়েছে ৪৩ হাজার ৬৮০ এমভিএ।

বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে পটুয়াখালীতে নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটটির বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসার সময় (সিওডি) নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল। সব রকম প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও পটুয়াখালী-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভির সঞ্চালন লাইন প্রস্তুত না হওয়ায় এর সিওডি পিছিয়ে একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর করা হয়। কিন্তু তখনও সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ হয়নি। অবশেষে গত ১৩ জানুয়ারি জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট। চলতি বছরের জুনে দ্বিতীয় ইউনিট চালুর কথা রয়েছে।

পায়রার পাশাপাশি পটুয়াখালী, রামপাল, রূপপুর, মাতারবাড়ি ও মহেশখালীদের বেশ কয়েকটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে, যেগুলো চলতি বছর থেকে শুরু করে আগামী তিন-চার বছরের মধ্যে চালুর কথা রয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের পরিকল্পনা অনুযায়ী, রামপালের ১৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুকেন্দ্রটি ২০২১ সালের জুনে, মাতারবাড়িতে জাইকার সহযোগিতায় নির্মাণাধীন ১২০০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রটি ২০২৪ সালের জুনে, মহেশখালীতে পিডিবি ও জিইয়ের এলএনজিভিত্তিক ৩৬০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রের ১২০০ মেগাওয়াটের তিনটি ইউনিট যথাক্রমে ২০২৪, ২০২৫ ও ২০২৬ সালের জুনে উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে।

এসব কেন্দ্রর উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহের দায়িত্ব পিজিসিবির। সংস্থাটি নিজেদের কাজের ধীরগতির কারণে কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রর সিওডি পরিবর্তন চেয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, গত ৮ জানুয়ারি পিজিসিবি ‘বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে’ পটুয়াখালী এলাকায় নির্মিত ও নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য সিওডি পরিবর্তনের আবেদন করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে পায়রা, রামপাল, মাতারবাড়ি, রূপপুর, মহেশখালীসহ দেশের বিদ্যুৎ হাবগুলোর নির্মিতব্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সিওডি পরিবর্তনের বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগে গত ২২ জানুয়ারি এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ওই সভায় পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণে কারিগরি কিছু বিষয় আছে, যেখানে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ চাহিদা খুবই কম, সেখানে মেগা প্রকল্পের বিদ্যুৎ যুক্ত করতে কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে। তিনি বলেন, শীত মৌসুমে দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা থাকে গড়ে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট। জাতীয় গ্রিডে উৎপাদন সক্ষমতা ২০ হাজার মেগাওয়াট। এতো নিম্ন চাহিদার সময় বেইজলোড বিদ্যুৎকেন্দ্র যেগুলো কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ক্ষমতায় চালানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে সেগুলো চালানো চ্যালেঞ্জিং। বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো কীভাবে পরিচালনা করা হবে সে বিষয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) মতামত প্রয়োজন।

পিজিসিবির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, সারাদেশের বিদ্যুতের সঞ্চালন ও বিতরণের কাজ করে পিজিসিবি। বর্তমানে কোম্পানিটির অধীনে সারাদেশে ২৭টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, আগে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও গ্রাহক অনেক কম ছিল। তবে এখন তা বহুগুণে বেড়েছে। তার দাবি, পিজিসিবির লোকবল সংকটের কারণে অনেক ক্ষেত্রে বড় প্রকল্পের দায়িত্ব তুলনামূলক জুনিয়র কর্মকর্তাকে দিতে হচ্ছে। ফলে চাইলেও পিজিসিবি সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা আশানুরূপ উন্নতি করতে পারছে না।

সার্বিক বিষয়ে পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, পিজিসিবির প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবেই এগুচ্ছে। তবে নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ সঞ্চালন ব্যবস্থার জন্যই বিভিন্ন অঞ্চলের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালুর বিষয়ে সমন্বয় জরুরি।