নদীতীরের ১১৩ ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থানান্তর করা হবে নৌপ্রতিমন্ত্রী

ঢাকার চারপাশের নদীতীরে গড়ে উঠেছে ১১৩ ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব স্থাপনা স্থানান্তর হবে বলে জানিয়েছেন নৌ-প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, কোন মসজিদ ভাঙা হবে না, আমরা সমন্বয় করব। নদীর জায়গায় মসজিদ হবে না, স্থানান্তর হবে, তবে সেটা আলোচনা করেই হবে। এখানে কোন ফোর্স অ্যাপ্লাই করা হবে না। অনেকেই এই বিষয়গুলো নিয়ে একটা অস্থিরতা, কিছু কথাবার্তা তারা চালাচালি করছে। যেটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। অতীতেও আমরা দেখেছি এই ধরনের ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে অনেকে রাজনীতি করার চেষ্টা করেছে, তারা কিন্তু ধর্মের প্রতি সম্মান দেখাননি। ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে এগুলো করেছেন। গতকাল সচিবালয়ে নৌ-মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীর তীরভূমিতে বিদ্যমান মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় স্থাপনা স্থানান্তরের বিষয়ে এক সভায় তিনি একথা বলেন। এ সময় নৌ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আবদুস সামাদ, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নুরুল ইসলাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, বিআইডব্লিউটিএ, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধিসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভার শুরুতে নৌ-প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকাকে বসবাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকার চারপাশের নদীগুলো দখলমুক্ত করে নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলতে চাই। গত এক বছর ধরে যে উচ্ছেদ অভিযান চলছে, তা মোটামুটি বাধাহীনভাবেই এগিয়ে চলছে। সেখানে আমাদের কিছু কিছু বিষয় আছে যেগুলো সরাসরি ধর্মীয় অনুভূতির সঙ্গে জড়িত। এছাড়া মসজিদ মাদ্রাসা, এতিমখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শ্মশানঘাটসহ অন্যান্য কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেগুলো আমাদের অনুভূতির সঙ্গে যুক্ত। সেগুলোতে আমরা কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করিনি, আমরা আলোচনা করছি।

সরকারি অর্থায়নে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে জানিয়ে খালিদ মাহমুদ বলেন, সেই আলোকেই আমরা আলোচনা করেছি। ঢাকার আশপাশে নদীর তীরে যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেগুলো যদি পরিকল্পিতভাবে করতে পারি, এর সংখ্যা অনেক কম। এটা করলে যখন আমরা নদী দিয়ে চলাচল করব, এই ধরনের সুদৃশ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দেখব সেটাও আমাদের ভালোলাগার একটা বিষয় হবে। বিদেশি মেহমানরাও যখন নদীতে ভ্রমণ করবেন, দেখবেন বাংলাদেশ সরকার একটি সুন্দর চিন্তা-ভাবনা নিয়ে একই ডিজাইনের এই প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তুলেছে। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি। আলোচনার মাধ্যমে যখন সুন্দর সিদ্ধান্ত আসবে, তখনই আমরা বাস্তবায়নে যাব। এখানে স্থাপনা নির্মাণ, জায়গা নির্মাণের ব্যাপার আছে। (নদী দখল করে) এক জায়গায় তিন-চারটি প্রতিষ্ঠান হয়ে গেছে, সেগুলোতে এক জায়গায় সমন্বয় করা যায় কিনা! এগুলো নিয়ে সার্ভে হচ্ছে। কোন জায়গায় এগুলো করা যায়। এজন্য একটি প্রকল্প করতে হবে। প্রকল্প করে অনুমোদন নেয়ার পর আমরা বাস্তবায়নে যাব। অনুমোদন দেয়া প্রকল্পগুলো আমরা বাস্তবায়নে আছি, অনেক ধরনের বাধা আসছে।

সভায় জানানো হয়, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা ও ধলেশ্বরী নদী দখল করে ১১৩টি ধর্মীয় স্থাপনা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও মাজার রয়েছে ৭৭টি; কবরস্থান ও মৃত ব্যক্তির গোসলখানা ৫টি; ঈদগাহ একটি; স্কুল ও কলেজ ১৪টি; স্নানঘাট, মন্দির ও শ্মশানঘাট ১৩টি এবং অন্য স্থাপনা ৩টি।

বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৭ ফল্গুন ১৪২৬, ২৫ জমাদিউল সানি ১৪৪১

ঢাকার চারপাশে

নদীতীরের ১১৩ ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থানান্তর করা হবে নৌপ্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

ঢাকার চারপাশের নদীতীরে গড়ে উঠেছে ১১৩ ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব স্থাপনা স্থানান্তর হবে বলে জানিয়েছেন নৌ-প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, কোন মসজিদ ভাঙা হবে না, আমরা সমন্বয় করব। নদীর জায়গায় মসজিদ হবে না, স্থানান্তর হবে, তবে সেটা আলোচনা করেই হবে। এখানে কোন ফোর্স অ্যাপ্লাই করা হবে না। অনেকেই এই বিষয়গুলো নিয়ে একটা অস্থিরতা, কিছু কথাবার্তা তারা চালাচালি করছে। যেটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। অতীতেও আমরা দেখেছি এই ধরনের ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে অনেকে রাজনীতি করার চেষ্টা করেছে, তারা কিন্তু ধর্মের প্রতি সম্মান দেখাননি। ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে এগুলো করেছেন। গতকাল সচিবালয়ে নৌ-মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীর তীরভূমিতে বিদ্যমান মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় স্থাপনা স্থানান্তরের বিষয়ে এক সভায় তিনি একথা বলেন। এ সময় নৌ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আবদুস সামাদ, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নুরুল ইসলাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, বিআইডব্লিউটিএ, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধিসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভার শুরুতে নৌ-প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকাকে বসবাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকার চারপাশের নদীগুলো দখলমুক্ত করে নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলতে চাই। গত এক বছর ধরে যে উচ্ছেদ অভিযান চলছে, তা মোটামুটি বাধাহীনভাবেই এগিয়ে চলছে। সেখানে আমাদের কিছু কিছু বিষয় আছে যেগুলো সরাসরি ধর্মীয় অনুভূতির সঙ্গে জড়িত। এছাড়া মসজিদ মাদ্রাসা, এতিমখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শ্মশানঘাটসহ অন্যান্য কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেগুলো আমাদের অনুভূতির সঙ্গে যুক্ত। সেগুলোতে আমরা কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করিনি, আমরা আলোচনা করছি।

সরকারি অর্থায়নে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে জানিয়ে খালিদ মাহমুদ বলেন, সেই আলোকেই আমরা আলোচনা করেছি। ঢাকার আশপাশে নদীর তীরে যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেগুলো যদি পরিকল্পিতভাবে করতে পারি, এর সংখ্যা অনেক কম। এটা করলে যখন আমরা নদী দিয়ে চলাচল করব, এই ধরনের সুদৃশ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দেখব সেটাও আমাদের ভালোলাগার একটা বিষয় হবে। বিদেশি মেহমানরাও যখন নদীতে ভ্রমণ করবেন, দেখবেন বাংলাদেশ সরকার একটি সুন্দর চিন্তা-ভাবনা নিয়ে একই ডিজাইনের এই প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তুলেছে। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি। আলোচনার মাধ্যমে যখন সুন্দর সিদ্ধান্ত আসবে, তখনই আমরা বাস্তবায়নে যাব। এখানে স্থাপনা নির্মাণ, জায়গা নির্মাণের ব্যাপার আছে। (নদী দখল করে) এক জায়গায় তিন-চারটি প্রতিষ্ঠান হয়ে গেছে, সেগুলোতে এক জায়গায় সমন্বয় করা যায় কিনা! এগুলো নিয়ে সার্ভে হচ্ছে। কোন জায়গায় এগুলো করা যায়। এজন্য একটি প্রকল্প করতে হবে। প্রকল্প করে অনুমোদন নেয়ার পর আমরা বাস্তবায়নে যাব। অনুমোদন দেয়া প্রকল্পগুলো আমরা বাস্তবায়নে আছি, অনেক ধরনের বাধা আসছে।

সভায় জানানো হয়, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা ও ধলেশ্বরী নদী দখল করে ১১৩টি ধর্মীয় স্থাপনা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও মাজার রয়েছে ৭৭টি; কবরস্থান ও মৃত ব্যক্তির গোসলখানা ৫টি; ঈদগাহ একটি; স্কুল ও কলেজ ১৪টি; স্নানঘাট, মন্দির ও শ্মশানঘাট ১৩টি এবং অন্য স্থাপনা ৩টি।