গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে

একটি মহল রহস্যজনক কারণে এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করছে। তারা ফেসবুক ও টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সব গুজব ছড়াচ্ছে। মহাখালী আইইডিসিআর পরিচালক প্রফেসর ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিষয়ে গতকাল বাংলাদেশসহ বিশ্ব পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। এরমধ্যে করোনাভাইরাস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর বিষয় নিয়ে গতকাল আলোচনা হয়েছে। দেশ-বিদেশের বরাত দিয়ে নানা গুজবের সৃষ্টি হয়েছে। উদ্বেগজনকভাবে এর প্রসার ঘটছে। প্রচারিত এসব গুজবের প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গুজবের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের গণমাধ্যম পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আর গুজব নিরসনে জবাব প্রস্তুত করে তা প্রচারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কোন কিছু জানতে হলে আইইডিসিআর-এর হটলাইনে যোগাযোগ করার জন্য আহ্বান করা হয়েছে।

সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি : করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন আইইডিসিআর কর্তৃপক্ষ। তারা কয়েকটি স্বাস্থ্য বার্তা তুলে ধরেছেন এসব বার্তার মদ্যে রয়েছে, কোন উপসর্গ না থাকলে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই। চীন অথবা সিঙ্গাপুর অথবা আক্রান্ত দেশে ভ্রমণ না করলে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার কোন প্রয়োজন নেই।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি : আইইডিসিআর-এর ভাইরোলজি ল্যাবরেটরিতে সন্দেহজনক করোনাভাইরাস আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা করে এ যাবত কারো নমুনাতে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি। চীনের উহান ফেরত যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইন পরবর্তী আরও ১০ দিন ৩১২ জনকে সীমিত চলাচল ও নিজেদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি অবহিত করতে আইইডিসিআর-এর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তাদের প্রতি নির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ হটলাইনে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকেও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। তারা সবাই সুস্থ আছেন।

সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় : নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে দুই হাত ধোবেন (অন্তত ২০ সেকেন্ড যাবৎ), অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না। ইতোমধ্যে আক্রান্ত এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন। কাশির শিষ্টাচার মেনে চলুন। হাঁচি, কাশির সময় বাহু, টিস্যু, কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন। অসুস্থ পশু-পাখির সংস্পর্শ পরিহার করুন। মাছ-মাংস-ডিম ভালোভাবে রান্না করে খাবেন। অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন। জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত চীন ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন এবং এ সময় অন্য দেশ থেকে প্রয়োজন ব্যতীত বাংলাদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করুন ও অত্যাবশ্যকীয় ভ্রমণে সাবধানতা অবলম্বন করুন।

অভিযোগ রয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে বেশিরভাগ রোগীকে আইসিইউতে (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) রাখতে হয়। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ আইসিইউ সাপোর্ট নেই। আইসিইউ না থাকলে শ্বাসকষ্ট ও সংক্রামক রোগীর আইসিইউ সাপোর্ট দেয়া কঠিন হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চীনা নাগরিকদের ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বাংলাদেশে কড়াকড়ি আরোপ করা আরও কঠোর করা দরকার বলে অনেকেই মন্তব্য করেন। আবার অনেকেই ব্যবসায়িক কারণে চীনা নাগরিকদের সঙ্গে নানাভাবে তৎপরতা চালাচ্ছেন। অনেকে বিমানবন্দর দিয়ে আসলে ঝামেলায় পড়তে পারেন এমন আশঙ্কায় নেপালসহ অন্যান্য সীমান্ত দিয়ে দেশে ঢুকতে পারে বলে মন্তব্য করেন। কারণ চীনে করোনাভাইরাস ব্যাপক আকার ধারণ করছে। মৃত্যুর সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। তাই দেশের চেকপোস্ট বা ইমিগ্রেশন পয়েন্টগুলোতে সর্বোচ্চ সতর্ক হওয়া দরকার বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

আরও খবর
উৎপাদনে এগিয়ে সঞ্চালনে পিছিয়ে
নদীতীরের ১১৩ ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থানান্তর করা হবে নৌপ্রতিমন্ত্রী
সিঙ্গাপুরে এক বাংলাদেশির অবস্থা আশঙ্কাজনক
ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদহার পুনর্বিবেচনার আশ্বাস অর্থমন্ত্রীর
দুর্বৃত্তের গুলিতে ইউপিডিএফ কর্মী নিহত
বনায়নের নামে চলছে হরিলুট
ঘনিয়ে আসছে মামলার রায়ের দিন
খালেদার জামিন প্রধানমন্ত্রীর হাতে নয় : কাদের
কেমিক্যাল গোডাউন রয়েছে আগের মতোই
নিহত ৬৭ জনের ময়না তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত
চাকরি ৯৭৭ দিন, ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ৭৫০ দিন
গাজীপুরে পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যু
অমর একুশ উদযাপনের প্রস্তুতি সম্পন্ন
ক্ষণগণনা : আর ২৫ দিন
আ-মরি বাংলা ভাষা

বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৭ ফল্গুন ১৪২৬, ২৫ জমাদিউল সানি ১৪৪১

করোনাভাইরাস

গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে

বাকিবিল্লাহ |

একটি মহল রহস্যজনক কারণে এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করছে। তারা ফেসবুক ও টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সব গুজব ছড়াচ্ছে। মহাখালী আইইডিসিআর পরিচালক প্রফেসর ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিষয়ে গতকাল বাংলাদেশসহ বিশ্ব পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। এরমধ্যে করোনাভাইরাস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর বিষয় নিয়ে গতকাল আলোচনা হয়েছে। দেশ-বিদেশের বরাত দিয়ে নানা গুজবের সৃষ্টি হয়েছে। উদ্বেগজনকভাবে এর প্রসার ঘটছে। প্রচারিত এসব গুজবের প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গুজবের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের গণমাধ্যম পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আর গুজব নিরসনে জবাব প্রস্তুত করে তা প্রচারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কোন কিছু জানতে হলে আইইডিসিআর-এর হটলাইনে যোগাযোগ করার জন্য আহ্বান করা হয়েছে।

সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি : করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন আইইডিসিআর কর্তৃপক্ষ। তারা কয়েকটি স্বাস্থ্য বার্তা তুলে ধরেছেন এসব বার্তার মদ্যে রয়েছে, কোন উপসর্গ না থাকলে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই। চীন অথবা সিঙ্গাপুর অথবা আক্রান্ত দেশে ভ্রমণ না করলে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার কোন প্রয়োজন নেই।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি : আইইডিসিআর-এর ভাইরোলজি ল্যাবরেটরিতে সন্দেহজনক করোনাভাইরাস আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা করে এ যাবত কারো নমুনাতে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি। চীনের উহান ফেরত যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইন পরবর্তী আরও ১০ দিন ৩১২ জনকে সীমিত চলাচল ও নিজেদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি অবহিত করতে আইইডিসিআর-এর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তাদের প্রতি নির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ হটলাইনে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকেও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। তারা সবাই সুস্থ আছেন।

সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় : নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে দুই হাত ধোবেন (অন্তত ২০ সেকেন্ড যাবৎ), অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না। ইতোমধ্যে আক্রান্ত এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন। কাশির শিষ্টাচার মেনে চলুন। হাঁচি, কাশির সময় বাহু, টিস্যু, কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন। অসুস্থ পশু-পাখির সংস্পর্শ পরিহার করুন। মাছ-মাংস-ডিম ভালোভাবে রান্না করে খাবেন। অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন। জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত চীন ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন এবং এ সময় অন্য দেশ থেকে প্রয়োজন ব্যতীত বাংলাদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করুন ও অত্যাবশ্যকীয় ভ্রমণে সাবধানতা অবলম্বন করুন।

অভিযোগ রয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে বেশিরভাগ রোগীকে আইসিইউতে (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) রাখতে হয়। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ আইসিইউ সাপোর্ট নেই। আইসিইউ না থাকলে শ্বাসকষ্ট ও সংক্রামক রোগীর আইসিইউ সাপোর্ট দেয়া কঠিন হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চীনা নাগরিকদের ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বাংলাদেশে কড়াকড়ি আরোপ করা আরও কঠোর করা দরকার বলে অনেকেই মন্তব্য করেন। আবার অনেকেই ব্যবসায়িক কারণে চীনা নাগরিকদের সঙ্গে নানাভাবে তৎপরতা চালাচ্ছেন। অনেকে বিমানবন্দর দিয়ে আসলে ঝামেলায় পড়তে পারেন এমন আশঙ্কায় নেপালসহ অন্যান্য সীমান্ত দিয়ে দেশে ঢুকতে পারে বলে মন্তব্য করেন। কারণ চীনে করোনাভাইরাস ব্যাপক আকার ধারণ করছে। মৃত্যুর সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। তাই দেশের চেকপোস্ট বা ইমিগ্রেশন পয়েন্টগুলোতে সর্বোচ্চ সতর্ক হওয়া দরকার বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।