নিহত ৬৭ জনের ময়না তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত

তিনজনের পরিচয় এক বছরেও পাওয়া যায়নি

পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত হন ৭১ জন। এরমধ্যে ময়নাতদন্ত ছাড়াই ৪ জনের লাশ নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। নিহত বাকি ৬৭ জনের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত। এই ৬৭ জনের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৪৫ জনের পরিচয় শনাক্ত করে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর বাকি ২২ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডিতে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে স্বজনদের দেয়া ডিএনএ’র নমুনা থেকে আরও ১৯ মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়। তবে গত এক বছরেও তিনজনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। গতকাল ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর এসব তথ্য জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ড. সোহেল মাহমুদ।

তিনি জানান, এখনও তিনজনের মরদেহের পরিচয় পাওয়া যায়নি। এখন যদি কেউ দাবিদার থাকেন, স্বজনরা ডিএনএ’র নমুনা দিয়ে যান, তাহলে সেসব নমুনা ও মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। ডিএনএ রিপোর্ট পাওয়ার জন্য অপেক্ষার কারণেই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে দেরি হয়েছে। এছাড়াও আমাদের যে টিম কাজ শুরু করেছিলাম, তাদের অনেকে বদলিও হয়ে গেছেন। গত সপ্তাহে ফরেনসিক বিভাগ এই ডিএনএ রিপোর্ট পায়। এরপর প্রতিবেদন পূর্ণাঙ্গ করা হয়। এখন যেকোন সময় পুলিশের হাতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হবে।

এদিকে, বৃষ্টি আর দোলা- নামের মতো দু’জনের সম্পর্কটাও যেন ছিল আত্মার। মৃত্যুতেও আলাদা হয়নি সেই বন্ধন। প্রকৃতির অদ্ভূত অথচ নির্মম খেয়ালে একই দিনে, একসঙ্গে হারিয়ে যেতে হয়েছে দু’জনকে। আজিমপুর কবরস্থানের একই মাটিতেই হয়েছে শেষ শয্যা। চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ের ভয়াবহ আগুন দুই বান্ধবী ফাতেমাতুজ জোহরা বৃষ্টি ও রেহনুমা তারান্নুম দোলাকে কেড়ে নিয়ে মুছে দিয়েছে দুই পরিবারের আনন্দ। স্বজনরা দু’জনের স্মৃতিমাখা জিনিসগুলো হাতড়ে তাদের ছোঁয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু বারবারই সেসব হয়ে ওঠে কষ্টের কারণ। বৃষ্টি-দোলা ছাড়াও রানা-মাসুদ, আনোয়ারের মতো সেদিন হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোর স্বজনরা কেমন আছেন- তার উত্তর খুঁজতে গিয়ে মেলে কিছু বুকচাপা কষ্টের কথা।

গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের চাইল্ড কেয়ার বিভাগের শিক্ষার্থী বৃষ্টির বাসা হাজি রহিম বক্স লেনে আর ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের আইন বিভাগে পড়ুয়া দোলার বাসা শেখ সাহেব বাজার রোডে। চুড়িহাট্টার কাছেই দু’জনের বাসা। গত বছর ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে শিল্পকলা একাডেমিতে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে রিকশায় করে চুড়িহাট্টা মোড় দিয়ে বাসায় ফিরছিল বৃষ্টি আর দোলা। শৈশবে অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ার সময় দু’জনের যে বন্ধুত্ব, আগুনে তার সমাপ্তি ঘটেই সেখানেই। শুরুতে দুই পরিবার নিশ্চিত ছিল না, তাদের মেয়েরা মারা গেছে নাকি নিখোঁজ হয়েছে। দোলার বাবা দলিলুর রহমান দুলাল প্রথমে লালবাগ থানায় নিখোঁজ হওয়ার সাধারণ ডায়েরিও করেছিলেন। পরে ৭ মার্চ সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে বৃষ্টির এবং ১২ মার্চ দোলার মরদেহ শনাক্ত করে।

নিহত বৃষ্টির ছোট ভাই সামি জাবের শুভ জানান, আপুর খাটে এখন আমি আর সানি ভাইয়া ঘুমাই। বোনের বই আর প্রসাধনীগুলোর বিষয়ে শুভ বলে, এই বইগুলো এখন আমাদের কাছে আপুর স্মৃতি। মাঝে মধ্যে মা এসে বইগুলো দেখেন কিন্তু বাবা আসেন না। মায়ের সঙ্গে মাঝে মাঝে দোলাদের বাসায় যাওয়া হয় বলে জানায় শুভ। বৃষ্টি ও দোলা বেঁচে থাকতে যে সম্পর্ক ছিল দুই পরিবারের মধ্যে এখনও তা টিকে রয়েছে বলে জানান বৃষ্টির মা শামসুন্নাহার। তিনি বলেন, দুই পরিবার তো একই ধরনের ভুক্তভোগী। আর এই বেদনা কি ভোলা যায়? যতদিন বেঁচে থাকব, বয়ে বেড়াতে হবে এই বেদনা। দোলার মা সুফিয়া রহমান ছোট মেয়ে মালিয়া মেহবীন নুসাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করলেও হারিয়ে যাওয়া মেয়ের কথা কিছুতেই ভুলতে পারছেন না। সময় আর ফুরাচ্ছে না, যতদিন যাচ্ছে কষ্টও বয়ে যাচ্ছে। এই যন্ত্রণা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বহন করতে হবে। দোলার বাবা এখন আর দলিল লেখার কাজ করে না। মেয়েকে হারিয়ে উদাসীন হয়ে গেছেন। সারাদিন বাসায় কম্পিউটারে মেয়ের পুরনো স্মৃতি দেখেন আর বাসার ছাদে উঠে গাছে পানি দেন। কোথাও তেমন একটা বের হন না।

এছাড়া চুড়িহাট্টার আগুনে দগ্ধ হয়ে পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজবাড়ির রিকশাচালক আনোয়ার হোসেন (৫৫)। আনোয়ারের মৃত্যুর পর ইসলামবাগের বাসা ছেড়ে ছোট ছোট তিন ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে কামরাঙ্গীরচরে ঠাঁই নিয়েছেন স্ত্রী হাজেরা বেগম। স্বামী হারানোর পর একটি খেলনার কারখানায় কাজ নিয়েছেন হাজেরা। বেতন পান পাঁচ হাজার টাকা। তা থেকে দুই হাজার টাকা বাসা ভাড়া দিয়ে মাত্র তিন হাজার টাকায় চলতে হয়। চরম অর্থকষ্টে হাঁপিয়ে উঠেছেন হাজেরা। সে জীবিত থাকতে পুরো সংসারের দায়িত্ব পালন করত। এখন আর পারি না। সরকার থেকে চিকিৎসার সময় পঞ্চাশ হাজার টাকা আর মারা যাওয়ার পর বিশ হাজার টাকা দিয়েছে, আর কোন টাকা দেয়া হয়নি। শ্রম মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, চুড়িহাট্টায় নিহত ৭১ জনের মধ্যে ২৭ জন শ্রমিক। সেই তালিকায় আনোয়ার হোসেন, মজিবুর রহমান হাওলাদারের নামও রয়েছে। তাদের পরিবারকে শীঘ্রই সরকারি অনুদান দেয়া হবে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ১১টার দিকে পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকার চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের সামনে একটি পিকআপের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আশপাশের ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট সাড়ে চার ঘণ্টা কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়।

আরও খবর
উৎপাদনে এগিয়ে সঞ্চালনে পিছিয়ে
নদীতীরের ১১৩ ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থানান্তর করা হবে নৌপ্রতিমন্ত্রী
সিঙ্গাপুরে এক বাংলাদেশির অবস্থা আশঙ্কাজনক
ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদহার পুনর্বিবেচনার আশ্বাস অর্থমন্ত্রীর
গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে
দুর্বৃত্তের গুলিতে ইউপিডিএফ কর্মী নিহত
বনায়নের নামে চলছে হরিলুট
ঘনিয়ে আসছে মামলার রায়ের দিন
খালেদার জামিন প্রধানমন্ত্রীর হাতে নয় : কাদের
কেমিক্যাল গোডাউন রয়েছে আগের মতোই
চাকরি ৯৭৭ দিন, ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ৭৫০ দিন
গাজীপুরে পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যু
অমর একুশ উদযাপনের প্রস্তুতি সম্পন্ন
ক্ষণগণনা : আর ২৫ দিন
আ-মরি বাংলা ভাষা

বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৭ ফল্গুন ১৪২৬, ২৫ জমাদিউল সানি ১৪৪১

নিহত ৬৭ জনের ময়না তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত

তিনজনের পরিচয় এক বছরেও পাওয়া যায়নি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত হন ৭১ জন। এরমধ্যে ময়নাতদন্ত ছাড়াই ৪ জনের লাশ নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। নিহত বাকি ৬৭ জনের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত। এই ৬৭ জনের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৪৫ জনের পরিচয় শনাক্ত করে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর বাকি ২২ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডিতে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে স্বজনদের দেয়া ডিএনএ’র নমুনা থেকে আরও ১৯ মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়। তবে গত এক বছরেও তিনজনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। গতকাল ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর এসব তথ্য জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ড. সোহেল মাহমুদ।

তিনি জানান, এখনও তিনজনের মরদেহের পরিচয় পাওয়া যায়নি। এখন যদি কেউ দাবিদার থাকেন, স্বজনরা ডিএনএ’র নমুনা দিয়ে যান, তাহলে সেসব নমুনা ও মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। ডিএনএ রিপোর্ট পাওয়ার জন্য অপেক্ষার কারণেই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে দেরি হয়েছে। এছাড়াও আমাদের যে টিম কাজ শুরু করেছিলাম, তাদের অনেকে বদলিও হয়ে গেছেন। গত সপ্তাহে ফরেনসিক বিভাগ এই ডিএনএ রিপোর্ট পায়। এরপর প্রতিবেদন পূর্ণাঙ্গ করা হয়। এখন যেকোন সময় পুলিশের হাতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হবে।

এদিকে, বৃষ্টি আর দোলা- নামের মতো দু’জনের সম্পর্কটাও যেন ছিল আত্মার। মৃত্যুতেও আলাদা হয়নি সেই বন্ধন। প্রকৃতির অদ্ভূত অথচ নির্মম খেয়ালে একই দিনে, একসঙ্গে হারিয়ে যেতে হয়েছে দু’জনকে। আজিমপুর কবরস্থানের একই মাটিতেই হয়েছে শেষ শয্যা। চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ের ভয়াবহ আগুন দুই বান্ধবী ফাতেমাতুজ জোহরা বৃষ্টি ও রেহনুমা তারান্নুম দোলাকে কেড়ে নিয়ে মুছে দিয়েছে দুই পরিবারের আনন্দ। স্বজনরা দু’জনের স্মৃতিমাখা জিনিসগুলো হাতড়ে তাদের ছোঁয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু বারবারই সেসব হয়ে ওঠে কষ্টের কারণ। বৃষ্টি-দোলা ছাড়াও রানা-মাসুদ, আনোয়ারের মতো সেদিন হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোর স্বজনরা কেমন আছেন- তার উত্তর খুঁজতে গিয়ে মেলে কিছু বুকচাপা কষ্টের কথা।

গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের চাইল্ড কেয়ার বিভাগের শিক্ষার্থী বৃষ্টির বাসা হাজি রহিম বক্স লেনে আর ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের আইন বিভাগে পড়ুয়া দোলার বাসা শেখ সাহেব বাজার রোডে। চুড়িহাট্টার কাছেই দু’জনের বাসা। গত বছর ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে শিল্পকলা একাডেমিতে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে রিকশায় করে চুড়িহাট্টা মোড় দিয়ে বাসায় ফিরছিল বৃষ্টি আর দোলা। শৈশবে অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ার সময় দু’জনের যে বন্ধুত্ব, আগুনে তার সমাপ্তি ঘটেই সেখানেই। শুরুতে দুই পরিবার নিশ্চিত ছিল না, তাদের মেয়েরা মারা গেছে নাকি নিখোঁজ হয়েছে। দোলার বাবা দলিলুর রহমান দুলাল প্রথমে লালবাগ থানায় নিখোঁজ হওয়ার সাধারণ ডায়েরিও করেছিলেন। পরে ৭ মার্চ সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে বৃষ্টির এবং ১২ মার্চ দোলার মরদেহ শনাক্ত করে।

নিহত বৃষ্টির ছোট ভাই সামি জাবের শুভ জানান, আপুর খাটে এখন আমি আর সানি ভাইয়া ঘুমাই। বোনের বই আর প্রসাধনীগুলোর বিষয়ে শুভ বলে, এই বইগুলো এখন আমাদের কাছে আপুর স্মৃতি। মাঝে মধ্যে মা এসে বইগুলো দেখেন কিন্তু বাবা আসেন না। মায়ের সঙ্গে মাঝে মাঝে দোলাদের বাসায় যাওয়া হয় বলে জানায় শুভ। বৃষ্টি ও দোলা বেঁচে থাকতে যে সম্পর্ক ছিল দুই পরিবারের মধ্যে এখনও তা টিকে রয়েছে বলে জানান বৃষ্টির মা শামসুন্নাহার। তিনি বলেন, দুই পরিবার তো একই ধরনের ভুক্তভোগী। আর এই বেদনা কি ভোলা যায়? যতদিন বেঁচে থাকব, বয়ে বেড়াতে হবে এই বেদনা। দোলার মা সুফিয়া রহমান ছোট মেয়ে মালিয়া মেহবীন নুসাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করলেও হারিয়ে যাওয়া মেয়ের কথা কিছুতেই ভুলতে পারছেন না। সময় আর ফুরাচ্ছে না, যতদিন যাচ্ছে কষ্টও বয়ে যাচ্ছে। এই যন্ত্রণা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বহন করতে হবে। দোলার বাবা এখন আর দলিল লেখার কাজ করে না। মেয়েকে হারিয়ে উদাসীন হয়ে গেছেন। সারাদিন বাসায় কম্পিউটারে মেয়ের পুরনো স্মৃতি দেখেন আর বাসার ছাদে উঠে গাছে পানি দেন। কোথাও তেমন একটা বের হন না।

এছাড়া চুড়িহাট্টার আগুনে দগ্ধ হয়ে পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজবাড়ির রিকশাচালক আনোয়ার হোসেন (৫৫)। আনোয়ারের মৃত্যুর পর ইসলামবাগের বাসা ছেড়ে ছোট ছোট তিন ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে কামরাঙ্গীরচরে ঠাঁই নিয়েছেন স্ত্রী হাজেরা বেগম। স্বামী হারানোর পর একটি খেলনার কারখানায় কাজ নিয়েছেন হাজেরা। বেতন পান পাঁচ হাজার টাকা। তা থেকে দুই হাজার টাকা বাসা ভাড়া দিয়ে মাত্র তিন হাজার টাকায় চলতে হয়। চরম অর্থকষ্টে হাঁপিয়ে উঠেছেন হাজেরা। সে জীবিত থাকতে পুরো সংসারের দায়িত্ব পালন করত। এখন আর পারি না। সরকার থেকে চিকিৎসার সময় পঞ্চাশ হাজার টাকা আর মারা যাওয়ার পর বিশ হাজার টাকা দিয়েছে, আর কোন টাকা দেয়া হয়নি। শ্রম মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, চুড়িহাট্টায় নিহত ৭১ জনের মধ্যে ২৭ জন শ্রমিক। সেই তালিকায় আনোয়ার হোসেন, মজিবুর রহমান হাওলাদারের নামও রয়েছে। তাদের পরিবারকে শীঘ্রই সরকারি অনুদান দেয়া হবে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ১১টার দিকে পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকার চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের সামনে একটি পিকআপের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আশপাশের ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট সাড়ে চার ঘণ্টা কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়।