বাঙালির ইতিহাসের অবিস্মরণীয় দিন একুশে ফেব্রুয়ারি। একুশ আমাদের চেতনায়; একুশ আমাদের মননে। একুশ আমাদের গৌরবের; একুশ আমাদের স্বজন হারানোর শোককেও মনে করিয়ে দেয়। ১৯৫২ সালের এদিন ভোরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমবেত হওয়া ছাত্রদের চারদিক থেকে ঘিরে রাখে পুলিশ। অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বের হওয়া মাত্রই তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছিল। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এক দলে দশজন করে ছাত্র ছিল। প্রথম দলটির নেতৃত্ব দেন আলী আজমল। দ্বিতীয় দলের নেতৃত্ব দেন ইব্রাহীম তাহা ও আবদুস সামাদ। তৃতীয় দলের নেতৃত্ব দেন আনোয়ারুল হক খান ও আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ। তিনটি দলের সবাইকেই আটক করে পুলিশ। চতুর্থ দলটি বের হয় সাফিয়া খাতুনের নেতৃত্বে। এ দলে ছিলেন সুফিয়া ইব্রাহীম, রওশন আরা বাচ্ছু, শামসুন্নাহার প্রমুখ। এরপর এসএ বারী, শামসুল হক, আনোয়ারুল আজিম, সাইয়িদ আতিকুল্লাহ, সৈয়দ ফজলে আলীর নেতৃত্বে আরও দুটি দল বের হয়। বাংলা একাডেমি সম্পাদিত একুশের সঙ্কলন ১৯৮০ থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
এছাড়াও এদিন কিছু ছোট ছেলেমেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর নির্দেশে মেডিকেল কলেজের পার্শ্ববর্তী দেয়াল ভেঙে তাদের বের করা হয়। পুলিশ টের পাওয়ার আগে একই স্থান দিয়ে বেরিয়ে আসেন বহু আন্দোলনকারী। মেডিকেল কলেজের সামনে জড়ো হন তারা। দুপুর আনুমানিক ২টার সময় পরিষদ সদস্যরা পরিষদ ভবনের দিকে যাওয়ার সময় ছাত্ররা তাদের পথরোধ করে। পরিষদে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি ওঠানো ও পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদ করার অনুরোধ করা হয়। এ সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছের একটি রাস্তায় ছাত্রদের সমাবেশ চলতে থাকে। এক পর্যায়ে ছাত্ররা পরিষদ ভবনের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ তাদের প্রতিরোধে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। লাঠিচার্জ কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ চলতে থাকে। তবে বিক্ষোভ থামানো যাচ্ছিল না কিছুতেই। আর তারপর বিকেল ৪টার দিকে ঘটে সেই মর্মান্তিক ঘটনা। মায়ের ভাষার সম্মান রক্ষার্থে রাজপথে নামা সন্তানদের ওপর গুলিবর্ষণ করে পুলিশ। তাদের রক্তে লাল হয় মাটি। এ মাটি ছুঁয়ে পরে নতুন শপথ নেয় বাঙালি। এভাবেই আসে স্বাধীনতা।
বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৭ ফল্গুন ১৪২৬, ২৫ জমাদিউল সানি ১৪৪১
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
বাঙালির ইতিহাসের অবিস্মরণীয় দিন একুশে ফেব্রুয়ারি। একুশ আমাদের চেতনায়; একুশ আমাদের মননে। একুশ আমাদের গৌরবের; একুশ আমাদের স্বজন হারানোর শোককেও মনে করিয়ে দেয়। ১৯৫২ সালের এদিন ভোরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমবেত হওয়া ছাত্রদের চারদিক থেকে ঘিরে রাখে পুলিশ। অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বের হওয়া মাত্রই তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছিল। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এক দলে দশজন করে ছাত্র ছিল। প্রথম দলটির নেতৃত্ব দেন আলী আজমল। দ্বিতীয় দলের নেতৃত্ব দেন ইব্রাহীম তাহা ও আবদুস সামাদ। তৃতীয় দলের নেতৃত্ব দেন আনোয়ারুল হক খান ও আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ। তিনটি দলের সবাইকেই আটক করে পুলিশ। চতুর্থ দলটি বের হয় সাফিয়া খাতুনের নেতৃত্বে। এ দলে ছিলেন সুফিয়া ইব্রাহীম, রওশন আরা বাচ্ছু, শামসুন্নাহার প্রমুখ। এরপর এসএ বারী, শামসুল হক, আনোয়ারুল আজিম, সাইয়িদ আতিকুল্লাহ, সৈয়দ ফজলে আলীর নেতৃত্বে আরও দুটি দল বের হয়। বাংলা একাডেমি সম্পাদিত একুশের সঙ্কলন ১৯৮০ থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
এছাড়াও এদিন কিছু ছোট ছেলেমেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর নির্দেশে মেডিকেল কলেজের পার্শ্ববর্তী দেয়াল ভেঙে তাদের বের করা হয়। পুলিশ টের পাওয়ার আগে একই স্থান দিয়ে বেরিয়ে আসেন বহু আন্দোলনকারী। মেডিকেল কলেজের সামনে জড়ো হন তারা। দুপুর আনুমানিক ২টার সময় পরিষদ সদস্যরা পরিষদ ভবনের দিকে যাওয়ার সময় ছাত্ররা তাদের পথরোধ করে। পরিষদে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি ওঠানো ও পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদ করার অনুরোধ করা হয়। এ সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছের একটি রাস্তায় ছাত্রদের সমাবেশ চলতে থাকে। এক পর্যায়ে ছাত্ররা পরিষদ ভবনের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ তাদের প্রতিরোধে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। লাঠিচার্জ কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ চলতে থাকে। তবে বিক্ষোভ থামানো যাচ্ছিল না কিছুতেই। আর তারপর বিকেল ৪টার দিকে ঘটে সেই মর্মান্তিক ঘটনা। মায়ের ভাষার সম্মান রক্ষার্থে রাজপথে নামা সন্তানদের ওপর গুলিবর্ষণ করে পুলিশ। তাদের রক্তে লাল হয় মাটি। এ মাটি ছুঁয়ে পরে নতুন শপথ নেয় বাঙালি। এভাবেই আসে স্বাধীনতা।