থেমে আছে তিনশ’ বছরের পুরনো কাঞ্চন নাথের মন্দির সংস্কার কাজ

চট্টগ্রামে অর্থের অভাবে বন্ধ রয়েছে প্রায় ৩০০ বছরেরও অধিক পুরনো শিবমন্দিরের সংস্কার কাজ। চট্টগ্রাম শহর থেকে অক্সিজেন হয়ে ফটিকছড়ি বিবিরহাট অতিক্রম করে মধ্য কাঞ্চন নগরের কাঞ্চন হাটখোলা নামক স্থানে খর¯স্রোতা ধুরং খালের পাশ ধার ৫ মিনিট হাঁটলেই দেখা মিলে ঐতিহাসিক বাবা কাঞ্চন নাথের ওই মন্দিরটির। মন্দিরের আশপাশে অবকাঠামো নির্মাণ এবং সংস্কার কাজ শুরু হলেও অর্থের অভাবে পুরোপুরি কাজ বন্ধ রয়েছে বলে গত সোমবার সরেজমিন এ তথ্য জানা গেছে। এ মন্দিরের ২ কি.মি. এর মধ্যে কোন হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতি না থাকলেও গত ৫০ বছর ধরে আজ অবধি মো. ইফসুফ নামে একজন ধার্মিক মুসলমান এ মন্দিরটির দেখাশোনা করেন।

গত সোমবার মন্দিরটি সরেজমিন পরিদর্শনে এসব তথ্য জানা যায়। মো. ইফসুফের ভাষ্যমতে, বছরে শ্রাবণ মাসে হঠাৎ করে দেখা মিলে বিরাট আকারের একটি সাপের। সাপটি এসে শিব লিঙ্গটিকে পেঁচিয়ে থাকে। কারও কোন দিন ক্ষতি করেনি, বরং দেখা দিয়ে হঠাৎ করে অদৃশ্য হয়ে যায়। একবার এ মন্দিরটি পরিষ্কার করতে গিয়ে দুই একটা গাছ কেটে ফেলেন। সেদিন রাতেই তাকে এক বানর স্বপ্নে দেখা দিয়ে গাছ কাটতে নিষেধ করে। এর পর তিনি আর কোন গাছ কাটেননি। আরেকবার এক ব্যক্তি মন্দিরের বেল গাছের শাখা কাটতে গেলে গাছে অলৌকিকভাবে একটি সাপ ফণা ধরে চলে আসে, সে কাঠুরির পুরো দেহ নিথর হয়ে যায়। পরে সবাই ওনাকে গাছ থেকে নামিয়ে আনে। অশৌচ অবস্থায় এক রং মিস্ত্রী মন্দিরের রং করার জন্য মূল মন্দিরের ওপর উঠলে অজ্ঞান হয়ে যায়। ইতিহাসের আলোকে জানা গেছে, আনুমানিক ১৬০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে মাটি থেকে স্বয়ং উদ্ভব হয় এই শিব লিঙ্গটি। সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ, মহেশখালীর আদিনাথ ও কাঞ্চন নগরের কাঞ্চন নাথ একই সময়ে পরিচিতি পায়। পরবর্তীতে বাবা কাঞ্চন নাথের নামে ইউনিয়নটির নামকরণ করা হয়। চট্টগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য গ্রন্থে এ মন্দিরটির কথা উল্লেখ রয়েছে।

সরেজমিন মন্দিরের ইতিহাস খোঁজ নিতে গিয়ে কথা হয়েছিল সত্তর বছর বয়স্ক নুরুল আলম, নুরুল হক ও মন্দিরের বর্তমান পুরোহিত বাবুল ভট্টাচার্যের সঙ্গে। তারা জানিয়েছেন, গ্রামটিতে লালা তিলকচান বাবু নামে এক জমিদার ছিলেন। তার অনেকগুলো গাভী ছিল। হরিজন সম্প্রদায়ের একজন রাখাল গাভীগুলো দেখাশোনা করতেন। প্রতিদিন দুপুরে একটি গাভী কোথায় চলে যেত খুঁজে পাওয়া যেত না। কিন্তু বিকেল হতে হতে গাভীটি গোয়ালে ফেরত আসত। এরকম প্রতিদিন ঘটত। উপায়ন্তর না দেখে রাখাল বিষয়টি জমিদার বাবুকে জানান। তখন লালা তিলকচান বলেন, গরুটির ওপর লক্ষ্য রাখতে। রাখাল পরের দিন গাভীটির ওপর লক্ষ্য করতে গিয়ে দেখেন বর্তমানে যে জায়গায় বাবা কাঞ্চন নাথ শিবলিঙ্গ অবস্থিত সে জায়গায় দুধ প্রদান করছে।

তখন রাখাল বিষয়টি জমিদার লালা তিলকচান বাবুকে জানানোর পর পরের দিন তিনি স্বচক্ষে দেখতে পান যে, গাভীটি প্রতিদিনের মতো দুধ প্রদান করছে একই জায়গায়। তিনি জায়গাটির পাশে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাভীটি অদৃশ্য হয়ে যায়। লালা তিলকচান বাবু বন-জঙ্গল পরিবেষ্টিত জায়গাটি পরিষ্কার করে দেখতে পান পাথরের কিছু অংশ। তার কিছু বোধগম্য হয়ে ওঠেনি তখন। তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। কিন্তু কৌতূহল ও চিন্তায় তিনি রাতে ঘুমাতে পারছিলেন না। অজানা কারণে তিনি হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়লে মহাদেব বাবা শিব স্বপ্নাদেশ করে বলেন, সবার মঙ্গলের জন্য আমি ওইখানে অধিষ্ঠিত হয়েছি। এতে ঘুম ভেঙে যায় তিলকচান বাবুর। তিনি পাথরখ- প্রাথমিক অবস্থায় পুরোপুরি তুলে আনার চেষ্টা করতে গিয়ে কুঠারের আঘাতে ভেঙে যায় শিব লিঙ্গটি এবং তিনি যতই মাটি খনন করছিলেন ততই দেখতে পাচ্ছিলেন অনন্ত, সীমানাহীন শিবলিঙ্গটি। সে রাতে আবারও স্বপ্নাদেশ পান যে কুঠারের আঘাতে তিনি কষ্ট পাননি। তিনি ওইভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে চান এবং তিলক বাবুকে বলেন ওইখানে মন্দির স্থাপনের জন্য। সেভাবেই কাজ শেষ করেন জমিদার বাবু। পরবর্তীতে তিলকচান বাবুর দেহত্যাগের পর তার ছেলে মানিক ও কাঞ্চন ওই এলাকার জমিদার হন। তৎসময় থেকে কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন ও মানিকপুর ইউনিয়ন নামে পরিচিত। কালক্রমে ওই এলাকা নানা কারণে হিন্দু জনশূন্য হতে থাকে ১৯৭১ পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে জনৈক সাধক ভারত থেকে এসে এ মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করেন। আবারও এ মন্দিরটিতে পূজা শুরু হয়।

মন্দিরের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক বাবু তপস নাথ ও অর্থ সম্পাদক ডা. দিলিপ কান্তি দে জানান, প্রতিবছর শিব চতুদ্দশীতে ভক্তরা প্রায় ১০০০ লিটার ডাবের পানি ও দুধ দিয়ে বাবাকে ¯স্নান করান, কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় মন্দিরের শিব ¯স্নানের পানি মন্দিরের বহির্গমন লাইন দিয়ে বের হয়ে অজানা কারণে অদৃশ্য হয়ে যায়। বাইরের এক হাত মাটিও ভিজে না।

বর্তমান সহসভাপতি সাধন চন্দ্র দাশ বলেন, ১৯৯২ সাল থেকে ১৭/১৮ বছর সবধরনের পূজা-অর্চনা না হওয়াতে বাবা কাঞ্চন নাথ মন্দিরের পরিচিতি হ্রাস পায়। কিন্তু স্বয়ংভূ বাবা শিব তথা কাঞ্চননাথ আবার স্ব-মহিমায় আত্মপ্রকাশ করে নিজের মহিমা ফুটিয়ে তোলেন। বর্তমান সময়ে নিত্য পূজাসহ উত্তরায়ণ তিথি পৌষ সংক্রান্তিতে গীতা পাঠ ও শিব চতুর্দ্দশীতে বাৎসরিক মহোৎসব ও বিশাল মেলা অনুষ্ঠিত হয় মহাসমারোহে। পাশাপাশি প্রায় ৩৫০০ জন ভক্তের প্রসাদের ব্যবস্থা করা হয়। তবে ২০০৬ সাল থেকে এ মন্দিরের উন্নয়নকল্পে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়।

মন্দির পরিচালনা পর্ষদের বর্তমান সভাপতি নির্মল কান্তি দেব বলেন, নতুন কমিটির তত্ত্বাবধানে মন্দির পুনঃসংস্কার, হারিয়ে যাওয়া সীমানা প্রায় ৫ কানি ১৫ গণ্ডা জমি উদ্ধার, কিছু অংশ সীমানা নির্মাণ, অফিস ঘরসহ , নলকূপ বসানো হয়েছে। তিনি বলেন, একার পক্ষে সব কাজ করা দুরূহ ও কষ্টসাধ্য। তাই ডাক্তার ফিরোজ সাহেবের ছেলে আযম সাহেব মন্দিরের পুকুর সংস্কার ও জলাচারের জন্য পুকুরঘাট নির্মাণ করেন। বর্তমানে অর্থের অভাবে সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে বলে তিনি জানান।

বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৭ ফল্গুন ১৪২৬, ২৫ জমাদিউল সানি ১৪৪১

চট্টগ্রামে অর্থের অভাবে

থেমে আছে তিনশ’ বছরের পুরনো কাঞ্চন নাথের মন্দির সংস্কার কাজ

নিরুপম দাশগুপ্ত, চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামে অর্থের অভাবে বন্ধ রয়েছে প্রায় ৩০০ বছরেরও অধিক পুরনো শিবমন্দিরের সংস্কার কাজ। চট্টগ্রাম শহর থেকে অক্সিজেন হয়ে ফটিকছড়ি বিবিরহাট অতিক্রম করে মধ্য কাঞ্চন নগরের কাঞ্চন হাটখোলা নামক স্থানে খর¯স্রোতা ধুরং খালের পাশ ধার ৫ মিনিট হাঁটলেই দেখা মিলে ঐতিহাসিক বাবা কাঞ্চন নাথের ওই মন্দিরটির। মন্দিরের আশপাশে অবকাঠামো নির্মাণ এবং সংস্কার কাজ শুরু হলেও অর্থের অভাবে পুরোপুরি কাজ বন্ধ রয়েছে বলে গত সোমবার সরেজমিন এ তথ্য জানা গেছে। এ মন্দিরের ২ কি.মি. এর মধ্যে কোন হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতি না থাকলেও গত ৫০ বছর ধরে আজ অবধি মো. ইফসুফ নামে একজন ধার্মিক মুসলমান এ মন্দিরটির দেখাশোনা করেন।

গত সোমবার মন্দিরটি সরেজমিন পরিদর্শনে এসব তথ্য জানা যায়। মো. ইফসুফের ভাষ্যমতে, বছরে শ্রাবণ মাসে হঠাৎ করে দেখা মিলে বিরাট আকারের একটি সাপের। সাপটি এসে শিব লিঙ্গটিকে পেঁচিয়ে থাকে। কারও কোন দিন ক্ষতি করেনি, বরং দেখা দিয়ে হঠাৎ করে অদৃশ্য হয়ে যায়। একবার এ মন্দিরটি পরিষ্কার করতে গিয়ে দুই একটা গাছ কেটে ফেলেন। সেদিন রাতেই তাকে এক বানর স্বপ্নে দেখা দিয়ে গাছ কাটতে নিষেধ করে। এর পর তিনি আর কোন গাছ কাটেননি। আরেকবার এক ব্যক্তি মন্দিরের বেল গাছের শাখা কাটতে গেলে গাছে অলৌকিকভাবে একটি সাপ ফণা ধরে চলে আসে, সে কাঠুরির পুরো দেহ নিথর হয়ে যায়। পরে সবাই ওনাকে গাছ থেকে নামিয়ে আনে। অশৌচ অবস্থায় এক রং মিস্ত্রী মন্দিরের রং করার জন্য মূল মন্দিরের ওপর উঠলে অজ্ঞান হয়ে যায়। ইতিহাসের আলোকে জানা গেছে, আনুমানিক ১৬০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে মাটি থেকে স্বয়ং উদ্ভব হয় এই শিব লিঙ্গটি। সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ, মহেশখালীর আদিনাথ ও কাঞ্চন নগরের কাঞ্চন নাথ একই সময়ে পরিচিতি পায়। পরবর্তীতে বাবা কাঞ্চন নাথের নামে ইউনিয়নটির নামকরণ করা হয়। চট্টগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য গ্রন্থে এ মন্দিরটির কথা উল্লেখ রয়েছে।

সরেজমিন মন্দিরের ইতিহাস খোঁজ নিতে গিয়ে কথা হয়েছিল সত্তর বছর বয়স্ক নুরুল আলম, নুরুল হক ও মন্দিরের বর্তমান পুরোহিত বাবুল ভট্টাচার্যের সঙ্গে। তারা জানিয়েছেন, গ্রামটিতে লালা তিলকচান বাবু নামে এক জমিদার ছিলেন। তার অনেকগুলো গাভী ছিল। হরিজন সম্প্রদায়ের একজন রাখাল গাভীগুলো দেখাশোনা করতেন। প্রতিদিন দুপুরে একটি গাভী কোথায় চলে যেত খুঁজে পাওয়া যেত না। কিন্তু বিকেল হতে হতে গাভীটি গোয়ালে ফেরত আসত। এরকম প্রতিদিন ঘটত। উপায়ন্তর না দেখে রাখাল বিষয়টি জমিদার বাবুকে জানান। তখন লালা তিলকচান বলেন, গরুটির ওপর লক্ষ্য রাখতে। রাখাল পরের দিন গাভীটির ওপর লক্ষ্য করতে গিয়ে দেখেন বর্তমানে যে জায়গায় বাবা কাঞ্চন নাথ শিবলিঙ্গ অবস্থিত সে জায়গায় দুধ প্রদান করছে।

তখন রাখাল বিষয়টি জমিদার লালা তিলকচান বাবুকে জানানোর পর পরের দিন তিনি স্বচক্ষে দেখতে পান যে, গাভীটি প্রতিদিনের মতো দুধ প্রদান করছে একই জায়গায়। তিনি জায়গাটির পাশে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাভীটি অদৃশ্য হয়ে যায়। লালা তিলকচান বাবু বন-জঙ্গল পরিবেষ্টিত জায়গাটি পরিষ্কার করে দেখতে পান পাথরের কিছু অংশ। তার কিছু বোধগম্য হয়ে ওঠেনি তখন। তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। কিন্তু কৌতূহল ও চিন্তায় তিনি রাতে ঘুমাতে পারছিলেন না। অজানা কারণে তিনি হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়লে মহাদেব বাবা শিব স্বপ্নাদেশ করে বলেন, সবার মঙ্গলের জন্য আমি ওইখানে অধিষ্ঠিত হয়েছি। এতে ঘুম ভেঙে যায় তিলকচান বাবুর। তিনি পাথরখ- প্রাথমিক অবস্থায় পুরোপুরি তুলে আনার চেষ্টা করতে গিয়ে কুঠারের আঘাতে ভেঙে যায় শিব লিঙ্গটি এবং তিনি যতই মাটি খনন করছিলেন ততই দেখতে পাচ্ছিলেন অনন্ত, সীমানাহীন শিবলিঙ্গটি। সে রাতে আবারও স্বপ্নাদেশ পান যে কুঠারের আঘাতে তিনি কষ্ট পাননি। তিনি ওইভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে চান এবং তিলক বাবুকে বলেন ওইখানে মন্দির স্থাপনের জন্য। সেভাবেই কাজ শেষ করেন জমিদার বাবু। পরবর্তীতে তিলকচান বাবুর দেহত্যাগের পর তার ছেলে মানিক ও কাঞ্চন ওই এলাকার জমিদার হন। তৎসময় থেকে কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন ও মানিকপুর ইউনিয়ন নামে পরিচিত। কালক্রমে ওই এলাকা নানা কারণে হিন্দু জনশূন্য হতে থাকে ১৯৭১ পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে জনৈক সাধক ভারত থেকে এসে এ মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করেন। আবারও এ মন্দিরটিতে পূজা শুরু হয়।

মন্দিরের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক বাবু তপস নাথ ও অর্থ সম্পাদক ডা. দিলিপ কান্তি দে জানান, প্রতিবছর শিব চতুদ্দশীতে ভক্তরা প্রায় ১০০০ লিটার ডাবের পানি ও দুধ দিয়ে বাবাকে ¯স্নান করান, কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় মন্দিরের শিব ¯স্নানের পানি মন্দিরের বহির্গমন লাইন দিয়ে বের হয়ে অজানা কারণে অদৃশ্য হয়ে যায়। বাইরের এক হাত মাটিও ভিজে না।

বর্তমান সহসভাপতি সাধন চন্দ্র দাশ বলেন, ১৯৯২ সাল থেকে ১৭/১৮ বছর সবধরনের পূজা-অর্চনা না হওয়াতে বাবা কাঞ্চন নাথ মন্দিরের পরিচিতি হ্রাস পায়। কিন্তু স্বয়ংভূ বাবা শিব তথা কাঞ্চননাথ আবার স্ব-মহিমায় আত্মপ্রকাশ করে নিজের মহিমা ফুটিয়ে তোলেন। বর্তমান সময়ে নিত্য পূজাসহ উত্তরায়ণ তিথি পৌষ সংক্রান্তিতে গীতা পাঠ ও শিব চতুর্দ্দশীতে বাৎসরিক মহোৎসব ও বিশাল মেলা অনুষ্ঠিত হয় মহাসমারোহে। পাশাপাশি প্রায় ৩৫০০ জন ভক্তের প্রসাদের ব্যবস্থা করা হয়। তবে ২০০৬ সাল থেকে এ মন্দিরের উন্নয়নকল্পে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়।

মন্দির পরিচালনা পর্ষদের বর্তমান সভাপতি নির্মল কান্তি দেব বলেন, নতুন কমিটির তত্ত্বাবধানে মন্দির পুনঃসংস্কার, হারিয়ে যাওয়া সীমানা প্রায় ৫ কানি ১৫ গণ্ডা জমি উদ্ধার, কিছু অংশ সীমানা নির্মাণ, অফিস ঘরসহ , নলকূপ বসানো হয়েছে। তিনি বলেন, একার পক্ষে সব কাজ করা দুরূহ ও কষ্টসাধ্য। তাই ডাক্তার ফিরোজ সাহেবের ছেলে আযম সাহেব মন্দিরের পুকুর সংস্কার ও জলাচারের জন্য পুকুরঘাট নির্মাণ করেন। বর্তমানে অর্থের অভাবে সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে বলে তিনি জানান।