বাংলা ফন্ট চালু করল জাতিসংঘ

একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘বাংলা ভাষা’ সম্মানে জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনডিপি) ‘ইউএন বাংলা’ নামে একটি বাংলা ফন্ট উদ্বোধন করেছে। একই সঙ্গে সংস্থাটি তাদের গত বছরের (২০১৯) মানব উন্নয়ন রিপোর্টের সারসংক্ষেপ বাংলায় প্রকাশ করেছে।

গতকাল ঢাকার একটি হোটেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন এই ফন্ট উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব ও ইউএনডিপির এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক কান্নি উইগনারাজা, ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি উপস্থিত ছিলেন। ইউএনডিপির ২০১৯ সালের মানব উন্নয়ন রিপোর্টের সারসংক্ষেপ বাংলায় রচনা করেছেন ড. সেলিম জাহান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতিবেদন তৈরি প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকার পর সম্প্রতি অবসরে গেছেন।

নিম্ন আয়ের ঘরে জন্ম নেয়া শিশুদের গড় আয়ু কম হবে- ইউএনডিপির প্রতিবেদন

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেন, এই রিপোর্টে একটি তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য আছে। তা হলো, নিম্ন আয়ের ঘরে একটি শিশু জন্মালে তার গড় আয়ু হবে ৫৯ বছর। আর উচ্চ আয়ের ঘরে জন্মালে ওই শিশুর গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়াবে ৭৮ বছর। অর্থাৎ জন্ম থেকেই নিম্ন ও উচ্চ আয়ের মধ্যে বৈষম্য শুরু হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হচ্ছে। ২০৩০ সাল পর্যন্ত আমাদের পাঁচ থেকে ১০ লাখ কোটি ডলার তহবিল প্রয়োজন হবে। এর একটি অংশ সরকার সরবরাহ করবে। বাকি অংশ বেসরকারি খাত ও উচ্চ আয়ের দেশ এবং উন্নয়ন সংস্থাগুলোর দেয়ার কথা রয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, উচ্চ আয়ের দেশগুলো এখন স্বল্পোন্নত বা উন্নয়নশীল দেশকে নিজেদের দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সহায়তা দিচ্ছে না। এ প্রেক্ষাপটে ইউএনডিপির মতো সংস্থা বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে বলেও জানান তিনি।

বাংলাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা করার চেষ্টা চলছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাফতরিক ভাষা করার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। তবে তার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ দিতে হবে বাংলাদেশকে। এ সময় মন্ত্রী বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে এনজিও, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং সরকার পর্যায়ের সাহায্য প্রয়োজন। জিডিপির উন্নয়ন হলেও শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এখনও বৈষম্য আছে। ইউএনডিপির প্রশংসা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য অনেক দেশে জাতিসংঘের অর্থ অপচয় বা নষ্ট হয়, কিন্তু বাংলাদেশে এর পরিমাণ অত্যন্ত কম। এ কারণে ইউএনডিপি বাংলাদেশে একটি সফল উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।

ড. সেলিম জাহান বলেন, মানব উন্নয়ন রিপোর্ট প্রথম উদ্বোধন হয় ১৯৯০ সালে। তিনি জানান, এর পরের বছর এই রিপোর্ট বাংলায় প্রকাশিত হয়, সেটিরও রচয়িতা তিনিই ছিলেন। বাংলাদেশের জন্য প্রতিবছর সারাবিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এটি আমাদের নিজস্ব সম্পদ।

ইউএনডিপি জানায়, বাংলা বর্ণমালার যুক্তাক্ষর ও মাত্রাসহ অন্যান্য বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে এই ফন্ট তৈরি করা হয়েছে। যা সংস্থাটির ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে।

শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৯ ফল্গুন ১৪২৬, ২৭ জমাদিউল সানি ১৪৪১

বাংলা ফন্ট চালু করল জাতিসংঘ

কূটনৈতিক বার্তা পরিবেশক

একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘বাংলা ভাষা’ সম্মানে জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনডিপি) ‘ইউএন বাংলা’ নামে একটি বাংলা ফন্ট উদ্বোধন করেছে। একই সঙ্গে সংস্থাটি তাদের গত বছরের (২০১৯) মানব উন্নয়ন রিপোর্টের সারসংক্ষেপ বাংলায় প্রকাশ করেছে।

গতকাল ঢাকার একটি হোটেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন এই ফন্ট উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব ও ইউএনডিপির এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক কান্নি উইগনারাজা, ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি উপস্থিত ছিলেন। ইউএনডিপির ২০১৯ সালের মানব উন্নয়ন রিপোর্টের সারসংক্ষেপ বাংলায় রচনা করেছেন ড. সেলিম জাহান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতিবেদন তৈরি প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকার পর সম্প্রতি অবসরে গেছেন।

নিম্ন আয়ের ঘরে জন্ম নেয়া শিশুদের গড় আয়ু কম হবে- ইউএনডিপির প্রতিবেদন

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেন, এই রিপোর্টে একটি তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য আছে। তা হলো, নিম্ন আয়ের ঘরে একটি শিশু জন্মালে তার গড় আয়ু হবে ৫৯ বছর। আর উচ্চ আয়ের ঘরে জন্মালে ওই শিশুর গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়াবে ৭৮ বছর। অর্থাৎ জন্ম থেকেই নিম্ন ও উচ্চ আয়ের মধ্যে বৈষম্য শুরু হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হচ্ছে। ২০৩০ সাল পর্যন্ত আমাদের পাঁচ থেকে ১০ লাখ কোটি ডলার তহবিল প্রয়োজন হবে। এর একটি অংশ সরকার সরবরাহ করবে। বাকি অংশ বেসরকারি খাত ও উচ্চ আয়ের দেশ এবং উন্নয়ন সংস্থাগুলোর দেয়ার কথা রয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, উচ্চ আয়ের দেশগুলো এখন স্বল্পোন্নত বা উন্নয়নশীল দেশকে নিজেদের দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সহায়তা দিচ্ছে না। এ প্রেক্ষাপটে ইউএনডিপির মতো সংস্থা বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে বলেও জানান তিনি।

বাংলাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা করার চেষ্টা চলছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাফতরিক ভাষা করার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। তবে তার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ দিতে হবে বাংলাদেশকে। এ সময় মন্ত্রী বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে এনজিও, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং সরকার পর্যায়ের সাহায্য প্রয়োজন। জিডিপির উন্নয়ন হলেও শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এখনও বৈষম্য আছে। ইউএনডিপির প্রশংসা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য অনেক দেশে জাতিসংঘের অর্থ অপচয় বা নষ্ট হয়, কিন্তু বাংলাদেশে এর পরিমাণ অত্যন্ত কম। এ কারণে ইউএনডিপি বাংলাদেশে একটি সফল উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।

ড. সেলিম জাহান বলেন, মানব উন্নয়ন রিপোর্ট প্রথম উদ্বোধন হয় ১৯৯০ সালে। তিনি জানান, এর পরের বছর এই রিপোর্ট বাংলায় প্রকাশিত হয়, সেটিরও রচয়িতা তিনিই ছিলেন। বাংলাদেশের জন্য প্রতিবছর সারাবিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এটি আমাদের নিজস্ব সম্পদ।

ইউএনডিপি জানায়, বাংলা বর্ণমালার যুক্তাক্ষর ও মাত্রাসহ অন্যান্য বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে এই ফন্ট তৈরি করা হয়েছে। যা সংস্থাটির ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে।