২৫তম স্প্যান স্থাপন পদ্মা সেতুর

দৃশ্যমান পৌনে চার কিলোমিটার

স্বপ্নের পদ্মা সেতুর পৌনে চার কিলোমিটার অংশ দৃশ্যমান হয়েছে। বাকি আছে আর প্রায় আড়াই কিলোমিটার অংশ। গতকাল পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে ২৯ ও ৩০ নম্বর পিয়ারের উপর বসানো হয় ২৫তম স্প্যান।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের পদ্মা সেতুতে ৪২ পিয়ারের ৪১টি স্প্যান বসানো হবে। বাকি ১৭টি স্প্যান এ বছর জুলাইয়ের মধ্যেই শেষ হবে। ইতোমধ্যে ৩৮ পিয়ার নির্মাণ শেষ হয়েছে। বাকি ৪টি পিয়ার এ বছর এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে। এ পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। মূল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে ৮৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। নদী শাসনের কাজ ৬৬ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে প্রকল্প সূত্র জানায়। পদ্মা সেতু প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুল করিম মুরাদ সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল সকালে মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানটি ক্রেনে করে জাজিরা প্রান্তে আনা হয়। বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে স্প্যানটি ২৯ ও ৩০ নম্বর পিয়ারের উপর বসানো হয়।

এর আগে ১১ ফেব্রুয়ারি বসেছে ২৪তম স্প্যান, ২ ফেব্রুয়ারি ২৩তম স্প্যান, ২৩ জানুয়ারি মাওয়া প্রান্তের ৫ ও ৬ নম্বর পিয়ারের উপর বসানো হয় ২২তম স্প্যান, ১৪ জানুয়ারি পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে ৩২ ও ৩৩ নম্বর পিয়ারের উপর বসানো হয় ২১তম স্প্যান। প্রকল্প সূত্র জানায়, চলতি বছরে পদ্মা সেতুতে সবগুলো স্প্যান বসানো শেষ হয়ে যাবে এবং আগামী বছরের জুলাই মাস নাগাদ সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল করবে। একই সঙ্গে বেশিরভাগ পিয়ার প্রস্তুত হওয়ার ফলে চলতি বছর প্রতি মাসে তিনটি করে স্প্যান বসানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে জানুয়ারি মাসে বসেছে দুটি স্প্যান এবং ফেব্রুয়ারি মাসে বসানো হয়েছে তিনটি স্প্যান। প্রতিটি পিয়ারে রাখা হয়েছে ছয়টি পাইল। একটি থেকে আরেকটি পিয়ারের দূরত্ব ১৫০ মিটার। এই দূরত্বের লম্বা ইস্পাতের কাঠামো বা স্প্যান জোড়া দিয়েই পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে। স্প্যানগুলো চীন থেকে তৈরি করে বাংলাদেশে আনা হয়। সেতুতে দুই হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ৪১০টি রেল স্ল্যাব বসানো হয়েছে। দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১২৫টি স্ল্যাব বসানো শেষ হয়েছে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর সেতুর মূল কাজ শুরু হয়। ২০১৮ সালের মধ্যে নির্মাণের লক্ষ্য থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। সরকার এখন ২০২১ সালের জুন মাস নাগাদ কাজ শেষ হবে বলে আশা করছে। পদ্মা সেতুতে প্রথম স্প্যান ‘৭-এ’ ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। স্প্যান ‘৭-বি’ সেতুর ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি। স্প্যান ‘৭-সি’ সেতুর ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৮ সালের ১১ মার্চ। স্প্যান ‘৭-ই’ সেতুর ৪০ ও ৪১ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৮ সালের ১৩ মে। স্প্যান ‘৭-এফ’ সেতুর ৪১ ও ৪২ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৮ সালের ২৯ জুন। স্প্যান ‘১-এফ’ সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর পিয়ারে অস্থায়ীভাবে বসানো হয় ২০১৮ সালের ১২ অক্টোবর। স্প্যান ‘৬-এফ’ সেতুর ৩৬ ও ৩৭ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি। স্প্যান ‘৬-ই’ সেতুর ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। স্প্যান ‘৬-ডি’ সেতুর ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২২ মার্চ। স্প্যান ‘৩-এ’ সেতুর ১৩ ও ১৪ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল। স্প্যান ‘৬-সি’ সেতুর ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল। স্প্যান ‘৩-বি’ সেতুর ১৪ ও ১৫ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২৫ মে। স্প্যান ‘৩-সি’ সেতুর ১৫ ও ১৬ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২৯ জুন। স্প্যান ‘৪-এফ’ সেতুর ২৪ ও ২৫ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। স্প্যান ‘৪-ই’ সেতুর ২৩ ও ২৪ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর এবং স্প্যান ‘৩-ডি’ সেতুর ১৬ ও ১৭ নম্বর পিয়ারের উপর বসে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর। ২৬ নভেম্বর সেতুর ২২ ও ২৩ নম্বর পিয়ারে বসে স্প্যান ‘৪-ডি’। ১১ ডিসেম্বর ‘৩-ই’ স্প্যান বসে সেতুর ১৭ ও ১৮ নম্বর পিয়ারের উপর। ১৮ ডিসেম্বর ২১ ও ২২ নম্বর পিয়ারে উপর বসে স্প্যান ‘৪-সি’। ৩১ ডিসেম্বর ১৮ ও ১৯ নম্বর পিয়ারে বসে স্প্যান ‘৩-এফ’।

শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৯ ফল্গুন ১৪২৬, ২৭ জমাদিউল সানি ১৪৪১

২৫তম স্প্যান স্থাপন পদ্মা সেতুর

দৃশ্যমান পৌনে চার কিলোমিটার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক ও প্রতিনিধি, শরীয়তপুর

image

নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু

স্বপ্নের পদ্মা সেতুর পৌনে চার কিলোমিটার অংশ দৃশ্যমান হয়েছে। বাকি আছে আর প্রায় আড়াই কিলোমিটার অংশ। গতকাল পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে ২৯ ও ৩০ নম্বর পিয়ারের উপর বসানো হয় ২৫তম স্প্যান।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের পদ্মা সেতুতে ৪২ পিয়ারের ৪১টি স্প্যান বসানো হবে। বাকি ১৭টি স্প্যান এ বছর জুলাইয়ের মধ্যেই শেষ হবে। ইতোমধ্যে ৩৮ পিয়ার নির্মাণ শেষ হয়েছে। বাকি ৪টি পিয়ার এ বছর এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে। এ পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। মূল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে ৮৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। নদী শাসনের কাজ ৬৬ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে প্রকল্প সূত্র জানায়। পদ্মা সেতু প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুল করিম মুরাদ সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল সকালে মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানটি ক্রেনে করে জাজিরা প্রান্তে আনা হয়। বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে স্প্যানটি ২৯ ও ৩০ নম্বর পিয়ারের উপর বসানো হয়।

এর আগে ১১ ফেব্রুয়ারি বসেছে ২৪তম স্প্যান, ২ ফেব্রুয়ারি ২৩তম স্প্যান, ২৩ জানুয়ারি মাওয়া প্রান্তের ৫ ও ৬ নম্বর পিয়ারের উপর বসানো হয় ২২তম স্প্যান, ১৪ জানুয়ারি পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে ৩২ ও ৩৩ নম্বর পিয়ারের উপর বসানো হয় ২১তম স্প্যান। প্রকল্প সূত্র জানায়, চলতি বছরে পদ্মা সেতুতে সবগুলো স্প্যান বসানো শেষ হয়ে যাবে এবং আগামী বছরের জুলাই মাস নাগাদ সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল করবে। একই সঙ্গে বেশিরভাগ পিয়ার প্রস্তুত হওয়ার ফলে চলতি বছর প্রতি মাসে তিনটি করে স্প্যান বসানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে জানুয়ারি মাসে বসেছে দুটি স্প্যান এবং ফেব্রুয়ারি মাসে বসানো হয়েছে তিনটি স্প্যান। প্রতিটি পিয়ারে রাখা হয়েছে ছয়টি পাইল। একটি থেকে আরেকটি পিয়ারের দূরত্ব ১৫০ মিটার। এই দূরত্বের লম্বা ইস্পাতের কাঠামো বা স্প্যান জোড়া দিয়েই পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে। স্প্যানগুলো চীন থেকে তৈরি করে বাংলাদেশে আনা হয়। সেতুতে দুই হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ৪১০টি রেল স্ল্যাব বসানো হয়েছে। দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১২৫টি স্ল্যাব বসানো শেষ হয়েছে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর সেতুর মূল কাজ শুরু হয়। ২০১৮ সালের মধ্যে নির্মাণের লক্ষ্য থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। সরকার এখন ২০২১ সালের জুন মাস নাগাদ কাজ শেষ হবে বলে আশা করছে। পদ্মা সেতুতে প্রথম স্প্যান ‘৭-এ’ ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। স্প্যান ‘৭-বি’ সেতুর ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি। স্প্যান ‘৭-সি’ সেতুর ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৮ সালের ১১ মার্চ। স্প্যান ‘৭-ই’ সেতুর ৪০ ও ৪১ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৮ সালের ১৩ মে। স্প্যান ‘৭-এফ’ সেতুর ৪১ ও ৪২ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৮ সালের ২৯ জুন। স্প্যান ‘১-এফ’ সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর পিয়ারে অস্থায়ীভাবে বসানো হয় ২০১৮ সালের ১২ অক্টোবর। স্প্যান ‘৬-এফ’ সেতুর ৩৬ ও ৩৭ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি। স্প্যান ‘৬-ই’ সেতুর ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। স্প্যান ‘৬-ডি’ সেতুর ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২২ মার্চ। স্প্যান ‘৩-এ’ সেতুর ১৩ ও ১৪ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল। স্প্যান ‘৬-সি’ সেতুর ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল। স্প্যান ‘৩-বি’ সেতুর ১৪ ও ১৫ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২৫ মে। স্প্যান ‘৩-সি’ সেতুর ১৫ ও ১৬ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২৯ জুন। স্প্যান ‘৪-এফ’ সেতুর ২৪ ও ২৫ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। স্প্যান ‘৪-ই’ সেতুর ২৩ ও ২৪ নম্বর পিয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর এবং স্প্যান ‘৩-ডি’ সেতুর ১৬ ও ১৭ নম্বর পিয়ারের উপর বসে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর। ২৬ নভেম্বর সেতুর ২২ ও ২৩ নম্বর পিয়ারে বসে স্প্যান ‘৪-ডি’। ১১ ডিসেম্বর ‘৩-ই’ স্প্যান বসে সেতুর ১৭ ও ১৮ নম্বর পিয়ারের উপর। ১৮ ডিসেম্বর ২১ ও ২২ নম্বর পিয়ারে উপর বসে স্প্যান ‘৪-সি’। ৩১ ডিসেম্বর ১৮ ও ১৯ নম্বর পিয়ারে বসে স্প্যান ‘৩-এফ’।