বই হোক আত্মার খোরাক

বই মানুষের পরম বন্ধু। রহস্যময় এ পৃথিবীতে অজানাকে জানা ও অচেনাকে চেনার যে আজন্ম কৌতূহল মানুষের, তা বই পড়ে মেটানো যায়। একটি ভালো বই-ই হচ্ছে মনের খোরাক যোগানোর অন্যতম উপায়। বইপড়ার গুরুত্ব বোঝাতে পারস্যের খ্যাতনামা কবি ও দার্শনিক ওমর খৈয়াম দারুণ একটি কথা বলে গেছেন- ‘রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, কিন্তু বইখানা অনন্ত যৌবনা— যদি তেমন বই হয়। ’ সত্যিকারার্থেই বইয়ের শ্রেষ্ঠত্ব সর্বাগ্রে। বই আমাদের মায়া-মমতা, সহানুভূতি, মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করে। সত্য ও সুন্দরের পথ দেখায়। বই শাশ্বত ও চিরন্তন সম্পদ। যার সঙ্গে পার্থিব কোনো ধন-সম্পদের তুলনা হতে পারে না। মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রসারিত করে, মনকে করে উদার। যার ফলে মানুষের মন হয় সুশোভিত। পৃথিবীর মহান মানুষের জীবনালেখ্য দেখলে জানা যাবে, তাদের সাধনায় বই জিনিসটি ছিল সবার আগে।

যেকোন আদর্শ মানবের চরিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তাদের চরিত্র অসংখ্য অনুপম গুণের সমাবেশে গঠিত হয়েছিল। পরোপকারী মনোবৃত্তি, পরদুঃখে কাতরতা, ক্ষমাশীলতা, সততা, সাহস, ধৈর্য্য, নিষ্ঠা, অনমনীয়তা, নির্ভীকতা, উদারতা, দূরদর্শিতা, প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব, দেশপ্রেম, মানবিক মূল্যবোধ প্রভৃতি মহৎগুণ তাদের চরিত্রকে করেছে মহান ও মহিমান্বিত। কিভাবে তাদের চরিত্রে এতসব গুণের সমন্বয় ঘটেছিল? যদি এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয় তাহলে দেখা যাবে এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে তাদের দুর্নিবার বইপ্রেম। আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে বই পড়ার গুরুত্ব অপরিসীম। মার্কিন লেখক রে ব্রাডবেরি বলেছিলেন, ‘একটি সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে তোমাকে বই পোড়াতে হবে না। গ্রেফ মানুষের বই পড়া বন্ধ করতে পারলেই হলো।’ তার মানে হলো, আমরা যদি বই না পড়ি তাহলে আমাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি আপনাআপনিই ধ্বংস হয়ে যাবে, কোনো যুদ্ধবিগ্রহের দরকার হবে না। বিশ্ববিজয়ী বীর নেপোলিয়ন বলেছিলেন, ‘অন্তত খাঁ হাজার বই সঙ্গে না থাকলে জীবন অচল।’ জন মেকলে বলেন, ‘প্রচুর বই নিয়ে গরিব হয়ে চিলেকোঠায় বসবাস করব, তবু এমন রাজা হতে চাই না, যে বই পড়ে না।’ আমাদের জীবসত্তা জাগ্রত থাকলেও মানবসত্তা জাগ্রত করার প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে বই। ঘুণেধরা এই সমাজের যাবতীয় অধঃপতন ঠেকাতে বইয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। একটি সুস্থ, সুন্দর, আলোকিত নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলতে বই পড়ার কোন বিকল্প নেই। আর তাই, বই হোক আমাদের আত্মার খোরাক।

কাজী আশফিক রাসেল

শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৯ ফল্গুন ১৪২৬, ২৭ জমাদিউল সানি ১৪৪১

বই হোক আত্মার খোরাক

বই মানুষের পরম বন্ধু। রহস্যময় এ পৃথিবীতে অজানাকে জানা ও অচেনাকে চেনার যে আজন্ম কৌতূহল মানুষের, তা বই পড়ে মেটানো যায়। একটি ভালো বই-ই হচ্ছে মনের খোরাক যোগানোর অন্যতম উপায়। বইপড়ার গুরুত্ব বোঝাতে পারস্যের খ্যাতনামা কবি ও দার্শনিক ওমর খৈয়াম দারুণ একটি কথা বলে গেছেন- ‘রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, কিন্তু বইখানা অনন্ত যৌবনা— যদি তেমন বই হয়। ’ সত্যিকারার্থেই বইয়ের শ্রেষ্ঠত্ব সর্বাগ্রে। বই আমাদের মায়া-মমতা, সহানুভূতি, মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করে। সত্য ও সুন্দরের পথ দেখায়। বই শাশ্বত ও চিরন্তন সম্পদ। যার সঙ্গে পার্থিব কোনো ধন-সম্পদের তুলনা হতে পারে না। মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রসারিত করে, মনকে করে উদার। যার ফলে মানুষের মন হয় সুশোভিত। পৃথিবীর মহান মানুষের জীবনালেখ্য দেখলে জানা যাবে, তাদের সাধনায় বই জিনিসটি ছিল সবার আগে।

যেকোন আদর্শ মানবের চরিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তাদের চরিত্র অসংখ্য অনুপম গুণের সমাবেশে গঠিত হয়েছিল। পরোপকারী মনোবৃত্তি, পরদুঃখে কাতরতা, ক্ষমাশীলতা, সততা, সাহস, ধৈর্য্য, নিষ্ঠা, অনমনীয়তা, নির্ভীকতা, উদারতা, দূরদর্শিতা, প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব, দেশপ্রেম, মানবিক মূল্যবোধ প্রভৃতি মহৎগুণ তাদের চরিত্রকে করেছে মহান ও মহিমান্বিত। কিভাবে তাদের চরিত্রে এতসব গুণের সমন্বয় ঘটেছিল? যদি এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয় তাহলে দেখা যাবে এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে তাদের দুর্নিবার বইপ্রেম। আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে বই পড়ার গুরুত্ব অপরিসীম। মার্কিন লেখক রে ব্রাডবেরি বলেছিলেন, ‘একটি সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে তোমাকে বই পোড়াতে হবে না। গ্রেফ মানুষের বই পড়া বন্ধ করতে পারলেই হলো।’ তার মানে হলো, আমরা যদি বই না পড়ি তাহলে আমাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি আপনাআপনিই ধ্বংস হয়ে যাবে, কোনো যুদ্ধবিগ্রহের দরকার হবে না। বিশ্ববিজয়ী বীর নেপোলিয়ন বলেছিলেন, ‘অন্তত খাঁ হাজার বই সঙ্গে না থাকলে জীবন অচল।’ জন মেকলে বলেন, ‘প্রচুর বই নিয়ে গরিব হয়ে চিলেকোঠায় বসবাস করব, তবু এমন রাজা হতে চাই না, যে বই পড়ে না।’ আমাদের জীবসত্তা জাগ্রত থাকলেও মানবসত্তা জাগ্রত করার প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে বই। ঘুণেধরা এই সমাজের যাবতীয় অধঃপতন ঠেকাতে বইয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। একটি সুস্থ, সুন্দর, আলোকিত নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলতে বই পড়ার কোন বিকল্প নেই। আর তাই, বই হোক আমাদের আত্মার খোরাক।

কাজী আশফিক রাসেল

শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।