শিক্ষা আইন প্রণয়নে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর কাছে নতি স্বীকার নয়

শিক্ষা আইন এখনও খসড়াতেই আটকে আছে। ২০১০ সালে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়নের পর এক দশক পেরিয়ে গেলেও শিক্ষা আইন চূড়ান্ত করা হয়নি। খসড়া শিক্ষা আইনে কোচিং বাণিজ্যকে বৈধতা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠেছে, কোচিং ব্যবসায়ীদের চাপের কাছে সরকার নতি স্বীকার করছে। এ নিয়ে গতকাল সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

আইনের অভাবে জাতীয় শিক্ষানীতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। দেশে একটি শিক্ষা আইনের প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছে বহু বছর ধরে। অথচ শিক্ষা মন্ত্রণালয় খসড়া তৈরি আর কাটাছেঁড়া করতেই এক দশক পার করে দিয়েছে। কবে শিক্ষা আইন প্রণয়ন করা হবে আর কবে শিক্ষানীতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হবে সেটা কেউই জানে না। কোন গোষ্ঠীর চাপে সরকার যদি আইনই প্রণয়ন করতে না পারে তবে সেই আইনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ-সংশয় দেখা দেয়। সড়ক পরিবহন আইনের ক্ষেত্রেও এমনটা দেখা গেছে। পরিবহন মালিক শ্রমিকদের কারণে সরকার কঠোর কোন আইনই প্রণয়ন করতে পারেনি বহু বছর। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শেষ পর্যন্ত একটি আইন প্রণয়ন করা হলেও তা আর বাস্তবায়ন করা যায়নি। সরকারের নীতিনির্ধারকরা প্রকাশ্যেই বলছেন যে, আইন করা হয়েছে আইনের জন্য, প্রয়োজনের জন্য নয়।

কোচিং বাণিজ্য ও নোট-গাইডের ব্যবসা দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, সারা দেশে প্রতিবছর ৩২ হাজার কোটি টাকার কোচিং বাণিজ্য হয়। এতদিনে কোচিং বাণিজ্য বেড়েছে কমেনি। অভিযোগ রয়েছে, কোচিং বাণিজ্যের এ টাকার ভাগ নানা ভাবে শিক্ষা খাতের কর্তাব্যক্তিদের পকেটেও যায়। এ কারণে এসব কর্তাব্যক্তি চান যে, কোচিং বাণিজ্য বহাল থাকুক। প্রশ্ন হচ্ছে, কোচিং বাণিজ্য বহাল রেখে নোট-গাইড বন্ধ করা হবে কিভাবে। আর শ্রেণীকক্ষ ভিত্তিক পাঠদানই বা নিশ্চিত করা হবে কিভাবে। আইন প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্তরা শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছেন নাকি কোচিং বাণিজ্য চক্রের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষে কাজ করছেন সেই প্রশ্ন উঠেছে।

আমরা বলতে চাই, জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে আইন প্রণয়ন করতে হবে। আইন করতে হবে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে। কোন চক্রের পকেট ভারি করার লক্ষ্য নিয়ে আইন প্রণয়ন করলে চলবে না। কোন গোষ্ঠীর কাছে নতি স্বীকার না করে সরকার দ্রুত শিক্ষা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে সেটাই আমরা দেখতে চাই।

সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ১০ ফল্গুন ১৪২৬, ২৮ জমাদিউল সানি ১৪৪১

শিক্ষা আইন প্রণয়নে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর কাছে নতি স্বীকার নয়

শিক্ষা আইন এখনও খসড়াতেই আটকে আছে। ২০১০ সালে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়নের পর এক দশক পেরিয়ে গেলেও শিক্ষা আইন চূড়ান্ত করা হয়নি। খসড়া শিক্ষা আইনে কোচিং বাণিজ্যকে বৈধতা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠেছে, কোচিং ব্যবসায়ীদের চাপের কাছে সরকার নতি স্বীকার করছে। এ নিয়ে গতকাল সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

আইনের অভাবে জাতীয় শিক্ষানীতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। দেশে একটি শিক্ষা আইনের প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছে বহু বছর ধরে। অথচ শিক্ষা মন্ত্রণালয় খসড়া তৈরি আর কাটাছেঁড়া করতেই এক দশক পার করে দিয়েছে। কবে শিক্ষা আইন প্রণয়ন করা হবে আর কবে শিক্ষানীতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হবে সেটা কেউই জানে না। কোন গোষ্ঠীর চাপে সরকার যদি আইনই প্রণয়ন করতে না পারে তবে সেই আইনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ-সংশয় দেখা দেয়। সড়ক পরিবহন আইনের ক্ষেত্রেও এমনটা দেখা গেছে। পরিবহন মালিক শ্রমিকদের কারণে সরকার কঠোর কোন আইনই প্রণয়ন করতে পারেনি বহু বছর। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শেষ পর্যন্ত একটি আইন প্রণয়ন করা হলেও তা আর বাস্তবায়ন করা যায়নি। সরকারের নীতিনির্ধারকরা প্রকাশ্যেই বলছেন যে, আইন করা হয়েছে আইনের জন্য, প্রয়োজনের জন্য নয়।

কোচিং বাণিজ্য ও নোট-গাইডের ব্যবসা দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, সারা দেশে প্রতিবছর ৩২ হাজার কোটি টাকার কোচিং বাণিজ্য হয়। এতদিনে কোচিং বাণিজ্য বেড়েছে কমেনি। অভিযোগ রয়েছে, কোচিং বাণিজ্যের এ টাকার ভাগ নানা ভাবে শিক্ষা খাতের কর্তাব্যক্তিদের পকেটেও যায়। এ কারণে এসব কর্তাব্যক্তি চান যে, কোচিং বাণিজ্য বহাল থাকুক। প্রশ্ন হচ্ছে, কোচিং বাণিজ্য বহাল রেখে নোট-গাইড বন্ধ করা হবে কিভাবে। আর শ্রেণীকক্ষ ভিত্তিক পাঠদানই বা নিশ্চিত করা হবে কিভাবে। আইন প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্তরা শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছেন নাকি কোচিং বাণিজ্য চক্রের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষে কাজ করছেন সেই প্রশ্ন উঠেছে।

আমরা বলতে চাই, জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে আইন প্রণয়ন করতে হবে। আইন করতে হবে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে। কোন চক্রের পকেট ভারি করার লক্ষ্য নিয়ে আইন প্রণয়ন করলে চলবে না। কোন গোষ্ঠীর কাছে নতি স্বীকার না করে সরকার দ্রুত শিক্ষা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে সেটাই আমরা দেখতে চাই।