প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগের পারদ নামছে না। মানুষের এই উদ্বেগে অনেকটা আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু গুজব। যেখানে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পেছনে অদ্ভুত এবং অবিশ্বাস্য সব কারণকে দায়ী করার পাশাপাশি, করোনাভাইরাসের অনেক আজগুবি চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হচ্ছে। এই গুজব ছড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এ ধরনের গুজব এবং ফেক নিউজ ভাইরাসের মতোই ক্ষতিকর হতে পারে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে, যেগুলো জনমনে আতঙ্ক তৈরি করছে। আমরা অবশ্যই এর বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কখনও কখনও অজ্ঞতাবশত কিংবা উদ্দেশ্যমূলকভাবেই গুজব ছড়ানো হচ্ছে। যারা গুজব ছড়াচ্ছেন তাদের অনেকেই যে ধর্ম ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সেটাও সহজবোধ্য। দলমত নির্বিশেষে সারা বিশ্বের মানুষ যখন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে একযোগ লড়াই করছেন, তখনও কিছু ধান্দাবাজ ধর্ম ব্যবসায়ী গুজব ছড়ানোর মাধ্যম হিসেবে নানা রকম ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, ওয়াজ এবং ফেসবুক ও ইউটিউবকে ব্যবহার করছে এবং এটা করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই চলছে। এসব প্রচারণা নিশ্চিতভাবেই জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে ও ছোঁয়াচে রোগ বিস্তারের পক্ষে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। কাজেই গুজব সৃষ্টিকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোন দায়িত্ব নেই। চাইলেই যা ইচ্ছা তাই লিখে ফেলা যায়। প্রকাশ্যে না লিখলেও ইনবক্সে চালাচালি করা যায়। স্বাভাবিক সময়ে যাই হোক, জাতীয় সংকটের সময়ে এই ধরনের গুজব আতঙ্ক ছড়ায়। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা অনলাইন আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুজবের কারখানা হয়ে পড়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভয়ে প্রকাশ্য প্ল্যাটফর্মগুলো কিছুটা নিয়ন্ত্রিত বটে। কিন্তু থেমে নেই গোপন বার্তা আদান- প্রদানের মাধ্যমগুলো। ফেসবুকের মেসেঞ্জার বা হোয়াটসআপ মেসেজে চলছে গুজব আর আতঙ্কের অবাধ বিস্তার।
সরকার যদি সত্যিকার অর্থেই গুজব ঠেকানোর চেষ্টা করে তাহলে মানুষ অনেকটাই স্বস্তি ফিরে পাবে। আর অপপ্রচার, গুজব, আতঙ্ক আর বিভ্রান্তি ছড়ানো বন্ধের একমাত্র উপায় হলো তথ্যের অবাধপ্রবাহ নিশ্চিত করা। সরকারকে এ ব্যাপারে অবশ্যই দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
ফেক নিউজের রমরমা আটকাতে গ্রামেগঞ্জে ‘স্টোরি টেলিং’ বা গল্প বলার মাধ্যমে গ্রামবাসীদের শিক্ষিত করার প্রয়াস গ্রহণ করছে ভারতের তেলঙ্গানা পুলিশ। এই পদ্ধতিতে প্রথাগত শিক্ষার বাইরে প্রচলিত আঞ্চলিক গানের সুর ব্যবহার করে তাতে কথা বসিয়ে ফেক নিউজ বা গুজবের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের শিক্ষিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে ওই পুলিশ সংস্থা। বিভিন্ন সামাজিক কুসংস্কার ছাড়াও কি করে সঠিক পদ্ধতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হবে এবং কি করে ফেক নিউজ চিনে নিতে হবে সেই সব নিয়েই এই গানগুলো রচনা করা হচ্ছে। গুজব বন্ধে বাংলাদেশও ওই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে পারে।
মোদ্দা কথা হচ্ছে- যে কোন মূল্যে গুজব, গুজব সৃষ্টিকারী ব্যক্তি, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হবে। উৎস ধর্ম ব্যবসায়ীরা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আমরা দাবি করছি।
রবিবার, ০৫ এপ্রিল ২০২০ , ২২ চৈত্র ১৪২৬, ১০ শাবান ১৪৪১
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগের পারদ নামছে না। মানুষের এই উদ্বেগে অনেকটা আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু গুজব। যেখানে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পেছনে অদ্ভুত এবং অবিশ্বাস্য সব কারণকে দায়ী করার পাশাপাশি, করোনাভাইরাসের অনেক আজগুবি চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হচ্ছে। এই গুজব ছড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এ ধরনের গুজব এবং ফেক নিউজ ভাইরাসের মতোই ক্ষতিকর হতে পারে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে, যেগুলো জনমনে আতঙ্ক তৈরি করছে। আমরা অবশ্যই এর বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কখনও কখনও অজ্ঞতাবশত কিংবা উদ্দেশ্যমূলকভাবেই গুজব ছড়ানো হচ্ছে। যারা গুজব ছড়াচ্ছেন তাদের অনেকেই যে ধর্ম ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সেটাও সহজবোধ্য। দলমত নির্বিশেষে সারা বিশ্বের মানুষ যখন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে একযোগ লড়াই করছেন, তখনও কিছু ধান্দাবাজ ধর্ম ব্যবসায়ী গুজব ছড়ানোর মাধ্যম হিসেবে নানা রকম ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, ওয়াজ এবং ফেসবুক ও ইউটিউবকে ব্যবহার করছে এবং এটা করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই চলছে। এসব প্রচারণা নিশ্চিতভাবেই জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে ও ছোঁয়াচে রোগ বিস্তারের পক্ষে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। কাজেই গুজব সৃষ্টিকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোন দায়িত্ব নেই। চাইলেই যা ইচ্ছা তাই লিখে ফেলা যায়। প্রকাশ্যে না লিখলেও ইনবক্সে চালাচালি করা যায়। স্বাভাবিক সময়ে যাই হোক, জাতীয় সংকটের সময়ে এই ধরনের গুজব আতঙ্ক ছড়ায়। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা অনলাইন আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুজবের কারখানা হয়ে পড়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভয়ে প্রকাশ্য প্ল্যাটফর্মগুলো কিছুটা নিয়ন্ত্রিত বটে। কিন্তু থেমে নেই গোপন বার্তা আদান- প্রদানের মাধ্যমগুলো। ফেসবুকের মেসেঞ্জার বা হোয়াটসআপ মেসেজে চলছে গুজব আর আতঙ্কের অবাধ বিস্তার।
সরকার যদি সত্যিকার অর্থেই গুজব ঠেকানোর চেষ্টা করে তাহলে মানুষ অনেকটাই স্বস্তি ফিরে পাবে। আর অপপ্রচার, গুজব, আতঙ্ক আর বিভ্রান্তি ছড়ানো বন্ধের একমাত্র উপায় হলো তথ্যের অবাধপ্রবাহ নিশ্চিত করা। সরকারকে এ ব্যাপারে অবশ্যই দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
ফেক নিউজের রমরমা আটকাতে গ্রামেগঞ্জে ‘স্টোরি টেলিং’ বা গল্প বলার মাধ্যমে গ্রামবাসীদের শিক্ষিত করার প্রয়াস গ্রহণ করছে ভারতের তেলঙ্গানা পুলিশ। এই পদ্ধতিতে প্রথাগত শিক্ষার বাইরে প্রচলিত আঞ্চলিক গানের সুর ব্যবহার করে তাতে কথা বসিয়ে ফেক নিউজ বা গুজবের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের শিক্ষিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে ওই পুলিশ সংস্থা। বিভিন্ন সামাজিক কুসংস্কার ছাড়াও কি করে সঠিক পদ্ধতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হবে এবং কি করে ফেক নিউজ চিনে নিতে হবে সেই সব নিয়েই এই গানগুলো রচনা করা হচ্ছে। গুজব বন্ধে বাংলাদেশও ওই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে পারে।
মোদ্দা কথা হচ্ছে- যে কোন মূল্যে গুজব, গুজব সৃষ্টিকারী ব্যক্তি, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হবে। উৎস ধর্ম ব্যবসায়ীরা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আমরা দাবি করছি।