বিপিও শিল্পের অগ্রগতি সমুন্নত রাখতে করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের সহযোগিতা চায় বাক্কো

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো) করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছে। ১৫০টিরও অধিক সদস্য প্রতিষ্ঠান এবং ৫০ হাজার দক্ষ জনশক্তির এই বিশাল পরিবার বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতোমধ্যে সচেতনতামূলক নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকলেও, অর্থনীতিতে চলমান এই বিরূপ প্রভাবের ফলে অনেক বিপিও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ফলে এই শিল্পে ক্ষতি নিরূপণ এবং ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়ে বাক্কো তার সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বেশ কিছু মত বিনিময় সভার আয়োজন করে।

সভায় মতামত দেয়া হয়, এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে বর্তমান পরিস্থিতিতে দক্ষ জনশক্তির বেতন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে। আর এই বেতন ভাতা নিশ্চিত করা বিপিও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে কষ্ট সাধ্য ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। যেহেতু বিপিও সেক্টর সম্পূর্ণভাবে বিভিন্ন বৈদেশিক প্রতিষ্ঠানের কাজ প্রদানের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়, সেহেতু করোনাভাইরাসের প্রভাবে বৈদেশিক প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ প্রদান করা বন্ধ করে দেয়ায়, আপাতদৃষ্টিতে কর্ম সংকট সৃষ্টি হবার কারণে বিপিও সেক্টর তাদের কর্মীদের বেতন-ভাতা প্রদান করতে হিমশিম খাচ্ছে। সঙ্গে বিপিও প্রতিষ্ঠানগুলোর বাড়ি ভাড়া এবং ইউটিলিটি বিল দিতেও হিমশিম খাচ্ছে বাক্কো’র সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো। এছাড়া বর্তমান করোনাভাইরাস নিয়ে চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বলা হচ্ছে সমগ্র বিশে^ এমন মন্দা অবস্থা আরও অন্তত ৩ থেকে ৪ মাস স্থায়ী হতে পারে। ফলে বাক্কো’র সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো যদি বেতন বাতা, বাড়ি ভাড়া ও ইউটিলিটি বিল প্রদান করতে না পারে, আগামী তিন মাসের মধ্যে এই শিল্প হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।

এমতাবস্থায়, সরকার কর্তৃক প্রণোদনা প্রদান করা হলে উক্ত ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব। দেশীয় পর্যায়ে বিপিও নিয়ে কাজ করা জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিন্স মজুমদার জানান, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় ক্ষুদ্র এবং মাঝারি বিপিও প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখা হলেও প্রতিমাসে প্রতিষ্ঠানগুলোকে অফিস ভাড়া, ইউটিলিটি বিল (বিদ্যুৎ বিল, ইন্টারনেট বিল, গ্যাস বিল ও পানি বিল) ও অন্যান্য খরচ বাবদ অর্থ প্রদান করতে হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে, আয় না থাকা সত্ত্বেও ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, তার নিজের প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই ৩০ শতাংশ কাজ হারিয়েছে, ফলশ্রুতিতে তিনি কর্মী ছাটাই করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাই, এই খাতে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুদান প্রদান করা না হলে ভবিষ্যতে বেকারত্বের হার বাড়তে পারে।

বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় এবং রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে বাক্কো কর্তৃক এক লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রাকে সমুন্নত রাখতে করোনা দুর্যোগকে প্রতিহত করতে বাক্কো সব রকম প্রচেষ্টা করবে। ইতিমধ্যে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে এই বিষয়গুলো অবহিত করে চিঠি দেয়া হয়েছে এবং সরকার তাদের সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেছে।

দেশের বর্তমান বিপিও শিল্পের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ করণীয় পদক্ষেপগুলোকে সমন্বয় করছেন বাক্কোর সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন। তিনি বাক্কোর সকল সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধৈর্যধারণ করে কাজ করার এবং সরকারের উপর আস্থা রাখার জন্য অনুরোধ জানান। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

মঙ্গলবার, ০৭ এপ্রিল ২০২০ , ২৪ চৈত্র ১৪২৬, ১২ শাবান ১৪৪১

বিপিও শিল্পের অগ্রগতি সমুন্নত রাখতে করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের সহযোগিতা চায় বাক্কো

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো) করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছে। ১৫০টিরও অধিক সদস্য প্রতিষ্ঠান এবং ৫০ হাজার দক্ষ জনশক্তির এই বিশাল পরিবার বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতোমধ্যে সচেতনতামূলক নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকলেও, অর্থনীতিতে চলমান এই বিরূপ প্রভাবের ফলে অনেক বিপিও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ফলে এই শিল্পে ক্ষতি নিরূপণ এবং ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়ে বাক্কো তার সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বেশ কিছু মত বিনিময় সভার আয়োজন করে।

সভায় মতামত দেয়া হয়, এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে বর্তমান পরিস্থিতিতে দক্ষ জনশক্তির বেতন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে। আর এই বেতন ভাতা নিশ্চিত করা বিপিও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে কষ্ট সাধ্য ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। যেহেতু বিপিও সেক্টর সম্পূর্ণভাবে বিভিন্ন বৈদেশিক প্রতিষ্ঠানের কাজ প্রদানের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়, সেহেতু করোনাভাইরাসের প্রভাবে বৈদেশিক প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ প্রদান করা বন্ধ করে দেয়ায়, আপাতদৃষ্টিতে কর্ম সংকট সৃষ্টি হবার কারণে বিপিও সেক্টর তাদের কর্মীদের বেতন-ভাতা প্রদান করতে হিমশিম খাচ্ছে। সঙ্গে বিপিও প্রতিষ্ঠানগুলোর বাড়ি ভাড়া এবং ইউটিলিটি বিল দিতেও হিমশিম খাচ্ছে বাক্কো’র সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো। এছাড়া বর্তমান করোনাভাইরাস নিয়ে চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বলা হচ্ছে সমগ্র বিশে^ এমন মন্দা অবস্থা আরও অন্তত ৩ থেকে ৪ মাস স্থায়ী হতে পারে। ফলে বাক্কো’র সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো যদি বেতন বাতা, বাড়ি ভাড়া ও ইউটিলিটি বিল প্রদান করতে না পারে, আগামী তিন মাসের মধ্যে এই শিল্প হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।

এমতাবস্থায়, সরকার কর্তৃক প্রণোদনা প্রদান করা হলে উক্ত ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব। দেশীয় পর্যায়ে বিপিও নিয়ে কাজ করা জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিন্স মজুমদার জানান, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় ক্ষুদ্র এবং মাঝারি বিপিও প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখা হলেও প্রতিমাসে প্রতিষ্ঠানগুলোকে অফিস ভাড়া, ইউটিলিটি বিল (বিদ্যুৎ বিল, ইন্টারনেট বিল, গ্যাস বিল ও পানি বিল) ও অন্যান্য খরচ বাবদ অর্থ প্রদান করতে হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে, আয় না থাকা সত্ত্বেও ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, তার নিজের প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই ৩০ শতাংশ কাজ হারিয়েছে, ফলশ্রুতিতে তিনি কর্মী ছাটাই করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাই, এই খাতে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুদান প্রদান করা না হলে ভবিষ্যতে বেকারত্বের হার বাড়তে পারে।

বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় এবং রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে বাক্কো কর্তৃক এক লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রাকে সমুন্নত রাখতে করোনা দুর্যোগকে প্রতিহত করতে বাক্কো সব রকম প্রচেষ্টা করবে। ইতিমধ্যে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে এই বিষয়গুলো অবহিত করে চিঠি দেয়া হয়েছে এবং সরকার তাদের সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেছে।

দেশের বর্তমান বিপিও শিল্পের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ করণীয় পদক্ষেপগুলোকে সমন্বয় করছেন বাক্কোর সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন। তিনি বাক্কোর সকল সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধৈর্যধারণ করে কাজ করার এবং সরকারের উপর আস্থা রাখার জন্য অনুরোধ জানান। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।